যেভাবে ওসামাকে খুঁজে পায় মার্কিন বাহিনী
আন্তর্জাতিক
জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সাবেক প্রধান প্রয়াত ওসামা বিন লাদেনের অবস্থান
সম্পর্কে মার্কিন গোয়েন্দারা প্রথম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছিলেন
আল-কায়েদার সদস্য খালিদ বিন আত্তাশের কাছ থেকে। আত্তাশ যুক্তরাষ্ট্রে
নাইন-ইলেভেন হামলা এবং আফ্রিকায় একাধিক দূতাবাসে বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত
ছিলেন। ওসামাকে খুঁজে বের করতে মার্কিন বাহিনী যেসব কৌশল নিয়েছিল তার
বিস্তারিত উঠে এসেছে পাকিস্তানের বিচার বিভাগীয় তদন্তে। ওই ঘটনা তদন্তে
গঠিত অ্যাবোটাবাদ কমিশনের ওই প্রতিবেদন অবশ্য এখনো প্রকাশিত হয়নি। করাচি
থেকে ২০০২ সালে আত্তাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়
ওসামার ডান হাত বলে পরিচিত কুয়েতি নাগরিক আবু আহমেদ আলি কুয়েতিকে। আর এই
কুয়েতির সূত্র ধরেই মার্কিনরা ওসামাকে খুঁজে পায়। কুয়েতির খোঁজে মার্কিন
গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ নজরদারির জন্য পাকিস্তানকে চারটি ফোন নম্বর দেয়।
তবে এসব ফোন ব্যবহারকারীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাকিস্তানের কাছেও
গোপন রেখেছিল সিআইএ। এসব ফোন অধিকাংশ সময় বন্ধ পাওয়া যেত। ২০০১ সালের
অক্টোবর বা নভেম্বরে ওসামা পরিবার করাচিতে অবস্থান নেয়। কুয়েতি তখন
সঙ্গেই ছিলেন। ওসামা ২০০২ সালে সপরিবারে পেশোয়ারে যান। ওই বছরের মাঝামাঝি
তাঁদের সঙ্গে আবার যোগ দেন কুয়েতি। সেখান থেকে তাঁরা সোয়াত উপত্যকায় চলে
যান। সেখানে ওসামার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন তাঁর সহযোগী খালিদ শেখ
মোহাম্মদ। তিনি এক মাস পরই রাওয়ালপিন্ডিতে গ্রেপ্তার হন। এতে আতঙ্কিত
ওসামা পরিবার নিয়ে হরিপুরে চলে যান। পরিবারটির সঙ্গে হরিপুরে ২০০৫ সাল
পর্যন্ত অবস্থান করেন কুয়েতি ও তাঁর ভাই ইব্রার। তখনই সবাই মিলে
অ্যাবোটাবাদে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কুয়েতি ভুয়া পরিচয়ে
অ্যাবোটাবাদে জমি কিনে বাড়ি নির্মাণের কাজ তত্ত্বাবধান করেন। বাড়িটি
নির্মাণে বিভিন্ন অনিয়ম হলেও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তা বন্ধ করতে কোনো উদ্যোগ
নেয়নি। তিনতলা বাড়িতে একাধিক স্ত্রীসহ ওসামা পরিবারের পাশাপাশি কুয়েতি
পরিবারের জন্যও জায়গা রাখা হয়। ওসামা কখনোই টেলিফোন, ইন্টারনেট বা কেব্ল
সংযোগ ব্যবহার করতেন না। তবে বিভিন্ন শহরে অবস্থানকালে তিনি মাঝে মাঝে ডিশ
অ্যান্টেনার মাধ্যমে আল-জাজিরা টেলিভিশন দেখতেন। মার্কিন কমান্ডো বাহিনী
যখন লাদেনের ঘরে ঢুকে পড়ে, তখন তিনি সশস্ত্র ছিলেন এবং গ্রেনেড খুঁজছিলেন।
ডন।
No comments