দুবাইয়ে নজিরবিহীন শ্রমিক ধর্মঘট চলছে
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সর্ববৃহৎ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান আরবটেকের হাজার হাজার শ্রমিক গত শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছেন। রোববার এই ধর্মঘট আরও ব্যাপক আকার ধারণ করে। মজুরি বৃদ্ধি ও সেই সঙ্গে অতিরিক্ত কাজের পারিশ্রমিক প্রদানের দাবিতে তাঁরা এ ধর্মঘট শুরু করেছেন। উপসাগরীয় আরব দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে শ্রমিকদের এমন বিক্ষোভের ঘটনা একেবারেই বিরল। দেশটিতে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন নিষিদ্ধ। উপসাগরীয় দেশগুলোতে কর্মরত শ্রমিকদের বেশির ভাগই অভিবাসী। তাঁরা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপালসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে চুক্তি ভিত্তিতে ওই সব দেশে যান। এসব দেশে শ্রমিকদের কর্মবিরতি বা ধর্মঘটকে সাধারণ ঘটনা হিসেবে দেখা হয় না। আরব আমিরাতের সরকারি তালিকাভুক্ত বৃহত্তম নির্মাণ প্রতিষ্ঠান আরবটেকে শনিবার থেকে শ্রমিকদের কর্মবিরতি শুরু হলেও রোববার তা প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন প্রকল্পে ছড়িয়ে পড়ে। দুজন শ্রমিক জানান, প্রতিষ্ঠানটির কয়েক হাজার শ্রমিক রোববার কাজে যোগ দেননি। এদিন তাঁরা নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করেন। মজুরি বৃদ্ধি না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আরবটেকের একজন সহযোগী ঠিকাদার (সাব-কন্ট্রাক্টর) এ খবর নিশ্চিত করে বলেন, প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে তিনি একটি প্রকল্প থেকে তাঁর শ্রমিকদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন। একজন শ্রমিক অভিযোগ করেন, এই প্রকল্পে শ্রমিকদের মাসে ১৬০ থেকে ১৯০ ডলার মজুরি দেওয়া হয়। আবার তাঁদের অতিরিক্ত সময়ের পারিশ্রমিকও দেওয়া হয় না। তবে আরবটেকের পক্ষ নিয়ে দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, শ্রমিকদের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ীই বেতন-ভাতা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। মজুরির বাইরে প্রতিষ্ঠানটি শ্রমিকদের বিনা মূল্যে খাবার, যাতায়াত, বাসস্থান, চিকিৎসা খরচ এবং বিমা ও অন্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। আর্থিক মূল্যে এগুলো শ্রমিকদের মজুরির সমপরিমাণ হবে।
আরবটেকের একজন মুখপাত্র জানান, বর্তমান পরিস্থিতির দ্রুত অবসানে শ্রম মন্ত্রণালয় ও পুলিশের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের আলোচনা চলছে। শ্রম মন্ত্রণালয় বলেছে, শ্রমিক-সংকট নিরসনবিষয়ক শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটি কমিটি কর্মবিরতির বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে।
No comments