মুক্তিযুদ্ধের বীর নায়ক by কেয়া চৌধুরী
১৪ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল এমএ রব বীরউত্তমের ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯১৯ সালের ১ জানুয়ারি এমএ রব জন্মগ্রহণ করেন হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার খাগাউড়া নামক গ্রামে। হাজী মোহাম্মদ মনর ও রাশিদা খাতুনের পুত্র এমএ রব ছোটবেলা থেকে ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী ও মেধাবী ছাত্র।
শিক্ষাগত জীবনে ভালো ফলাফলের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সিলেটের এমসি কলেজসহ আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ পর্যন্ত। লেখাপড়া শেষ করে ১৯৪৩ সালে তিনি যোগ দেন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে। প্রশিক্ষণ, নিষ্ঠা ও দক্ষতার মধ্যে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যান সামনের দিকে অর্থাৎ ১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। পরে দেশ বিভাগের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে।
১৯৬৯ সালে চাকরি থেকে অবসর নিয়ে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে হবিগঞ্জের বানিয়াচং-আজমিরিগঞ্জ আসন থেকে নির্বাচন করেন ও বিপুল ভোটে জয়ী হন। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের এপ্রিল মাসে মুক্তিবাহিনীর চিফ অব স্টাফ পদে নিযুক্ত হন। তৎকালীন সময়ে তিনি আগরতলায় তার হেডকোয়ার্টার স্থাপন করেন। সেখান থেকে তিনি সেক্টর ১, ২, ৩, ৪ ও ৫-কে সার্বিক সাহায্য প্রদান করতে থাকেন। বিশেষ করে রণক্ষেত্রের মুক্তিকামী মানুষ স্বাধীনতা অর্জনের প্রয়াসে যে সাহসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল, তা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার জন্য বহির্বিশ্বের সংবাদকর্মীদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন কর্নেল (অব.) এমএ রব। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য কৃতিত্বের জন্য স্বাধীনতার পর তাকে বীরউত্তম উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
ব্যক্তিগত জীবনে এমএ রব অত্যন্ত বিনয়ী ও সাদাসিধা প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও তার কাছে অনায়াসে সাধারণ মানুষের আনাগোনা ছিল। সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয়তার কারণেই ১৯৭৩ সালের নির্বাচনেও তিনি জনপ্রতিনিধিত্ব অর্জন করেন। সততা ও সাহসিকতার প্রতীক ছিলেন কর্নেল রব। সেনা কর্মকর্তা বা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যে পরিমণ্ডলেই তিনি অবস্থান করেন না কেন মানুষের তরে জীবন উৎসর্গ করাই ছিল তার মূল লক্ষ্য। সে কারণেই তিনি মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে আত্মনিয়োগ করেছিলেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠানে।
এমএ রব বঙ্গবন্ধুর একজন আদর্শের সৈনিক ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর প্রাণনাশের পর এমএ রব দারুণ ভেঙে পড়েন এবং ১৪ নভেম্বর বলতে গেলে বিনা চিকিৎসায় জনাব রব ইন্তেকাল করেন।
মুক্তিযুদ্ধের এত বছর পার হয়ে গেলেও এমএ রবকে তার বীরত্বের মূল্যায়নের নিরিখে পরিচিত করা হয়নি নতুন প্রজন্মকে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তেমন আলোচনা হয়নি তাকে নিয়ে। এমনকি বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘরে স্থান পায়নি তার জীবনী সংবলিত ছবি।
তবে 'এমএ রব চত্বর' নামে হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ গোলচত্বরটি সরকারিভাবে চেতনায় '৭১ সংগঠনটির উদ্যোগে ২০০৯ সালে গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। হবিগঞ্জের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত শায়েস্তাগঞ্জের এ স্থানটি এ বীরের নামে (এমএ রব চত্বর) হওয়ায় হবিগঞ্জের মানুষ সন্তুোষ প্রকাশ করেন ও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
কেয়া চৌধুরী :সদস্য সচিব, চেতনায় '৭১, হবিগঞ্জ
১৯৬৯ সালে চাকরি থেকে অবসর নিয়ে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে হবিগঞ্জের বানিয়াচং-আজমিরিগঞ্জ আসন থেকে নির্বাচন করেন ও বিপুল ভোটে জয়ী হন। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের এপ্রিল মাসে মুক্তিবাহিনীর চিফ অব স্টাফ পদে নিযুক্ত হন। তৎকালীন সময়ে তিনি আগরতলায় তার হেডকোয়ার্টার স্থাপন করেন। সেখান থেকে তিনি সেক্টর ১, ২, ৩, ৪ ও ৫-কে সার্বিক সাহায্য প্রদান করতে থাকেন। বিশেষ করে রণক্ষেত্রের মুক্তিকামী মানুষ স্বাধীনতা অর্জনের প্রয়াসে যে সাহসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল, তা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার জন্য বহির্বিশ্বের সংবাদকর্মীদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন কর্নেল (অব.) এমএ রব। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য কৃতিত্বের জন্য স্বাধীনতার পর তাকে বীরউত্তম উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
ব্যক্তিগত জীবনে এমএ রব অত্যন্ত বিনয়ী ও সাদাসিধা প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও তার কাছে অনায়াসে সাধারণ মানুষের আনাগোনা ছিল। সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয়তার কারণেই ১৯৭৩ সালের নির্বাচনেও তিনি জনপ্রতিনিধিত্ব অর্জন করেন। সততা ও সাহসিকতার প্রতীক ছিলেন কর্নেল রব। সেনা কর্মকর্তা বা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যে পরিমণ্ডলেই তিনি অবস্থান করেন না কেন মানুষের তরে জীবন উৎসর্গ করাই ছিল তার মূল লক্ষ্য। সে কারণেই তিনি মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে আত্মনিয়োগ করেছিলেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠানে।
এমএ রব বঙ্গবন্ধুর একজন আদর্শের সৈনিক ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর প্রাণনাশের পর এমএ রব দারুণ ভেঙে পড়েন এবং ১৪ নভেম্বর বলতে গেলে বিনা চিকিৎসায় জনাব রব ইন্তেকাল করেন।
মুক্তিযুদ্ধের এত বছর পার হয়ে গেলেও এমএ রবকে তার বীরত্বের মূল্যায়নের নিরিখে পরিচিত করা হয়নি নতুন প্রজন্মকে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তেমন আলোচনা হয়নি তাকে নিয়ে। এমনকি বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘরে স্থান পায়নি তার জীবনী সংবলিত ছবি।
তবে 'এমএ রব চত্বর' নামে হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ গোলচত্বরটি সরকারিভাবে চেতনায় '৭১ সংগঠনটির উদ্যোগে ২০০৯ সালে গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। হবিগঞ্জের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত শায়েস্তাগঞ্জের এ স্থানটি এ বীরের নামে (এমএ রব চত্বর) হওয়ায় হবিগঞ্জের মানুষ সন্তুোষ প্রকাশ করেন ও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
কেয়া চৌধুরী :সদস্য সচিব, চেতনায় '৭১, হবিগঞ্জ
No comments