স্মরণ-চায়ের দেশের নান্দনিক ভাস্কর্য by বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন
ভাস্কর্যটির দিকে তাকালেই জুড়িয়ে যায় মন! চা-গাছের দিগন্ত প্লাবিত শতাব্দীপ্রাচীন সৌন্দর্যের মাঝে এটি যেন চায়ের দেশে নবস্থাপিত এক সৌন্দর্য। এটি অরণ্য ভূমির সৌন্দর্য শোভিত চা শিল্পাঞ্চলের বিশাল গৌরব ও সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের পরিচয় বহন করে আছে। দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশে চা শিল্পের প্রাণ হচ্ছে নারী চা শ্রমিক।
এ বিষয়টিকে নিয়েই গড়ে তোলা হয়েছে চোখজুড়ানো মনোমুঙ্কর এ ভাস্কর্য। চা বাগানের 'চা-গাছ' এবং চা শিল্পের সঙ্গে সবচেয়ে নিবিড়ভাবে জড়িত চা জনপদের 'নারী চা শ্রমিক' এ দুটি বিষয়কে প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে এখানে। এই নান্দনিক ভাস্কর্যটি বৃহত্তর সিলেটের চায়ের সুবিশাল ঐতিহ্যকে স্পর্শ করে রয়েছে এবং সর্বাধিক চা বাগানবেষ্টিত এ এলাকার গুরুত্বকে অনেকাংশে বাড়িয়ে দিয়েছে। এর পাশ দিয়ে প্রতিদিন চলে যাওয়া হাজার হাজার যাত্রীকে এ ভাস্কর্যটি স্বাগত জানায় নীরবে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের একপাশে অবস্থিত শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাতগাঁও চা বাগানে গত বছরের মার্চ মাসে এটি নির্মিত হয়েছে। চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলের প্রবেশদ্বারে স্থাপিত এক নারী চা শ্রমিকের চা পাতা উত্তোলনের দৃশ্যসংবলিত 'চায়ের দেশে স্বাগতম' শিরোনামের এ ভাস্কর্যটি দেশি-বিদেশি প্রকৃতিপ্রেমীসহ সবার দৃষ্টি কেড়েছে। এ ভাস্কর্যটির সৌন্দর্য এক নজর দেখে এ পথে দূর-দূরান্তে যাতায়াতকারী অগণিত মানুষ বিমুগ্ধ হয়ে যায়। প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক পর্যটক ও দর্শনার্থী ভিড় করছেন এই দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্যের নিচে। এই মনোমুঙ্কর ভাস্কর্যটির নকশা প্রস্তুত করেন চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমীর সিনিয়র আর্ট টিচার সঞ্জিত রায়। ভাস্কর সঞ্জিত রায় কালের কণ্ঠকে জানান, 'চা শিল্পাঞ্চলের দেড় শতাধিক বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে চা গাছ থেকে এক নারী শ্রমিকের চা পাতা তোলার দৃশ্যটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এখানে। এর উচ্চতা ২৪ ফুট এবং নিচের বেইজমেন্ট দৈর্ঘ্যে আট ফুট এবং প্রস্থে আট ফুট। এটি নির্মাণ করতে ইট-সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। এক নারী চা-কন্যা ও চা-গাছের আদলে ইট-সিমেন্টের ঢালাই কেটে কেটে তৈরি করা হয়েছে এ ভাস্কর্যটি। নিজ হাতে এ ভাস্কর্যটি নির্মাণ করতে আমার সময় লেগেছে এক মাস ২০ দিন।'
সাতগাঁও চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, 'বৃহত্তর সিলেটের সবচেয়ে বেশি চা বাগান রয়েছে শ্রীমঙ্গল উপজেলায়। সে বিষয়টি মাথায় রেখে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং সাতগাঁও চা বাগানের সৌজন্যে নির্মিত এ ভাস্কর্যটির ব্যয়ভার বহন করে সাতগাঁও চা বাগান কর্তৃপক্ষ। প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে এটি।' শ্রীমঙ্গলের হস্তশিল্প পণ্য নির্মাতা ও প্রকৃতিপ্রেমী পার্থ সারথি দাশ জানান, 'চায়ের দেশে স্বাগতম' এ ভাস্কর্যটি খুবই নান্দনিক। পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে শুধু সাতগাঁও বাগানেই নয়, শ্রীমঙ্গলের বিশেষ বিশেষ স্থানগুলোতে চায়ের ঐতিহ্য বহনকারী এমন দৃষ্টিকাড়া ভাস্কর্য নির্মাণ করা যেতে পারে।
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন
সাতগাঁও চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, 'বৃহত্তর সিলেটের সবচেয়ে বেশি চা বাগান রয়েছে শ্রীমঙ্গল উপজেলায়। সে বিষয়টি মাথায় রেখে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং সাতগাঁও চা বাগানের সৌজন্যে নির্মিত এ ভাস্কর্যটির ব্যয়ভার বহন করে সাতগাঁও চা বাগান কর্তৃপক্ষ। প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে এটি।' শ্রীমঙ্গলের হস্তশিল্প পণ্য নির্মাতা ও প্রকৃতিপ্রেমী পার্থ সারথি দাশ জানান, 'চায়ের দেশে স্বাগতম' এ ভাস্কর্যটি খুবই নান্দনিক। পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে শুধু সাতগাঁও বাগানেই নয়, শ্রীমঙ্গলের বিশেষ বিশেষ স্থানগুলোতে চায়ের ঐতিহ্য বহনকারী এমন দৃষ্টিকাড়া ভাস্কর্য নির্মাণ করা যেতে পারে।
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন
No comments