ধোনির জুয়ায় জিতল ভারত
আউট হওয়ার পর মাথা নিচু করে অনেকক্ষণ মূর্তির মতো বসে রইলেন ওয়েইন পারনেল। ১ রানের অভাবিত, অসাধারণ এক জয় পেয়ে তখন উৎসবে মেতেছে ভারতীয়রা। মধ্যমণি ৪ উইকেট নেওয়া মুনাফ প্যাটেল। আর শেষ ক্যাচটি নেওয়া যুবরাজ সিং তখন দৌড়ে প্রায় পুরো মাঠ চক্কর দিয়ে ফেলেছেন! যাঁর ৪ উইকেট দক্ষিণ আফ্রিকাকে এনে দিয়েছিল টানা দ্বিতীয় জয়ের সুযোগ, সেই লোনওয়াবো সতসোবে তখন শূন্যদৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে।২ উইকেট হাতে নিয়ে জয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ছিল ৪ রান। বল বাকি তখনো ৪৮টি। ৪৩তম ওভারেই খেলা শেষ করে দিলেন মুনাফ, ২ রান দিয়ে আউট করলেন মরনে মরকেল ও পারনেলকে। দুজনই কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ। প্রায় পুরোটা সময় যে ভারতের হারটাকে মনে হচ্ছিল অবধারিত, তারাই হাসল জয়ের হাসি। সিরিজে এখন ১-১-এ সমতা। ওই ওভারের আগে পয়েন্ট ফিল্ডার ছিল একটু পেছনে। এগিয়ে আনতেই দুটো ক্যাচ জমা পড়ল সেখানে! ধোনি জানালেন, তিনি স্রেফ জুয়া খেলেছিলেন, ‘যখন একটি-দুটি উইকেট প্রয়োজন আর প্রতিপক্ষের দরকার ৩ রান, তখন মাথায় অনেক কিছুই কাজ করে। ফিল্ডার কাছে রাখব নাকি বাউন্ডারিতে! টস হারার পর অনেক সময় যেমন মনে হয়, ‘‘ইস, টেল না চেয়ে যদি হেড চাইতাম’, পয়েন্ট এগিয়ে আনার ব্যাপারটাও ছিল ও রকম। আমি ইউসুফকে এগিয়ে আনলাম, ক্যাচ ওখানেই গেল।’সহজ জয়ের রাস্তায় থাকা দক্ষিণ আফ্রিকার পথ হারানোর শুরু অবশ্য ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে। জয়ের জন্য ১৯ ওভারে দরকার মাত্র ৪৬ রান, হাতে ৬ উইকেট। ছড়ানো মাঠে দু-এক রান করে নিলেই যখন জয় এসে যায় অনায়াসে, গ্রায়েম স্মিথের হঠাৎই মনে হলো খেলা দ্রুত শেষ করে দেওয়া দরকার। নিলেন ব্যাটিং পাওয়ার প্লে, দ্বিতীয় ওভারেই মুনাফের স্লোয়ার স্টাম্পে টেনে বোল্ড হন ৭৭ রানে থাকা স্মিথ। পরের ওভারে আউট ডেভিড মিলার, এক ওভার পরে বোথা। পাওয়ার প্লের ৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা তোলে ২০ রান স্মিথ অবশ্য পাওয়ার প্লেকে না দুষে দায় নিয়েছেন নিজের কাঁধেই, ‘পাওয়ার প্লে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঠিকই ছিল, দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা অনেক উইকেট হারালাম। এই ম্যাচ জিততে না পারাটা হতাশাজনক। আমরা মোটেও আত্মতুষ্টিতে ভুগছিলাম না, তবে আমরা স্মার্ট ব্যাটিং করতে পারিনি। উইকেটে শট খেলা সহজ ছিল না। তাড়াহুড়ো না করে আমাদের উচিত ছিল দেখেশুনে খেলা।’
সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ আগামীকাল, কেপটাউনে।
সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ আগামীকাল, কেপটাউনে।
No comments