বিদায় রোনালদো
টেলিভিশন ধারাভাষ্যকার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করে জনপ্রিয় অভিনেতা, সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন রোনাল্ড রিগ্যান। দারুণ বর্ণময় এই মানুষটি দুনিয়ার আরও অনেক মানুষের মতো প্রভাবিত করেছিলেন পর্তুগালের এক মালি হোসে ডিনিস অ্যাভেইরোকে।
রিগ্যানের নামেই ডিনিস তাঁর ছেলের নাম রাখলেন ‘রোনাল্ডো’। ২০০৪ সালে দুনিয়ার সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট রিগ্যান যখন মারা গেলেন, ইংল্যান্ডে বসে তখন ‘রাজত্ব’ শুরু করেছেন তাঁর নামের সেই ছেলেটি। সেই ‘রাজত্ব’ এত বড় হলো যে অনেকেই আলোচনা শুরু করে দিলেন—এই ছেলেটিই বর্তমান সময়ের সেরা ফুটবলার।
সেই ছেলেটির নাম ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। বর্তমান সময়ের সেরা ফুটবলার রোনালদো কি না, এ নিয়ে তর্ক চলতে পারে। কিন্তু নিজেকে তর্কাতীত করে ফেলার একটা সুযোগ এসেছিল রোনালদোর সামনে।
সে সুযোগ নিতে পারলেন না রোনালদো। নিজের পারফরম্যান্স মাঝারি মানেরই রইল, দল বিদায় নিল দ্বিতীয় পর্ব থেকে। সব মিলিয়ে হতাশায়, ক্ষোভে ভেঙে পড়লেন রোনালদো। সেই হতাশার বহিঃপ্রকাশও ঘটল। স্পেনের বিপক্ষে হারের পর সাংবাদিকেরা রোনালদোকে ঘিরে ধরেছিলেন। সাবেক বিশ্বসেরা ফুটবলারের কাছ থেকে সবাই হারের ব্যাখ্যা চাচ্ছিলেন। কিন্তু চটে উঠলেন রোনালদো। মিক্সড জোনে দাঁড়িয়ে বলে উঠলেন, ‘আমি কী করে পর্তুগালের বিদায়ের ব্যাখ্যা দেব? যান, কার্লোস কুইরোজের সঙ্গে কথা বলুন।’
রোনালদোর ফেটে পড়ার কারণটা বোঝা যায়। অনেক অনেক প্রত্যাশার চাপ নিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে এসেছিলেন। চাপ ছিল ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেরও। ২০০৮ সালের ফিফা বর্ষসেরা ও ২০০৯ সালের দ্বিতীয় সেরা রোনালদোকে লড়তে হচ্ছিল নিজের সঙ্গেই।
২০০৭-০৮ মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে সব মিলিয়ে ৪৯ ম্যাচে ৪২ গোল করেছিলেন। পরের মৌসুমে ম্যানইউতেই নিজেকে একটু হারিয়ে খুঁজছিলেন। গত মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদে এসে আবার খুঁজে পেলেন ফর্মটা। ফলে বিশ্বকাপে নিজেকে প্রমাণের চাপও গেল বেড়ে।
কৈশোরে বাবাকে মদে চুর হয়ে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে দেখেছেন। ফুটবল থেকে টাকা আয় করে বাড়ি পাঠিয়েছেন বাবার চিকিৎসার জন্য, বাবা সেই টাকা দিয়ে আরও মদ খেয়েছেন। শেষ পর্যন্ত বাবার অকাল মৃত্যু দেখেছেন। এমন সব ধাক্কা সামলানো রোনালদোর ওপর আরও চাপ হয়ে এসেছিল পর্তুগালের দীর্ঘদিনের অপূর্ণ স্বপ্ন। ইউসেবিও পারেননি, পারেনি পর্তুগালের সোনালি প্রজন্ম। তাই পর্তুগিজরা যেন হামলে পড়েছিল রোনালদোর ওপর—‘আমাদের কিছু একটা এনে দিতে হবে।’
চাপটা কি ভেঙে ফেলল রোনালদোকে? এক কথায় উত্তর দেওয়া কঠিন। ফিফার ওয়েবসাইট বলছে, বিদায়ের আগ পর্যন্ত দারুণ খেলেছেন এই পর্তুগিজ উইঙ্গার। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচেই ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন। কিন্তু যাঁরা খেলা দেখেছেন, এই তথ্যের সঙ্গে একমত হওয়ার লোক হয়তো খুব বেশি পাওয়া যাবে না।
অন্তত ম্যানইউতেই ডিফেন্স ভেঙেচুরে বিদ্যুৎ চমকের মতো যাঁরা রোনালদোকে ছুটতে দেখেছেন, তাঁরা এই রোনালদোকে কেন ‘সেরা’ বলে মানবেন! এটা ঠিক যে কিছু গোল তৈরি করে দিয়েছেন, নিজে একটা গোল করেছেন, দু-একটা ঝলকও দেখিয়েছেন; কিন্তু সেই রোনালদোকে যে দেখা যায়নি!
রোনালদোকে দেখা গেল না শেষ ম্যাচেও। নিজেই বিশ্বকাপ থেকে এমন বর্ণহীন বিদায় মেনে নিতে পারছিলেন না। সে জন্যই কি অমন চটে উঠলেন সাংবাদিকদের ওপর? রোনালদো অবশ্য অন্য ব্যাখ্যা দিলেন, ‘একটু পর কার্লোস কুইরোজের সংবাদ সম্মেলন ছিল বলেই আমি কোচকে জিজ্ঞেস করতে বলেছিলাম। কারণ, ওই সময়ে আমি কোনো ব্যাখ্যা দেওয়ার মতো অবস্থায় ছিলাম না। আমি কখনো কল্পনাই করিনি, আমার এই নিরীহ বাক্যগুলো এত বিতর্ক তৈরি করবে। আমি আপনাদের অনুরোধ করি, সব জায়গায় ভুত খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন না।’
তবে শেষ বেলায় নিজের হতাশাটা আর গোপন করতে পারলেন না, ‘আমি খুবই কষ্ট পাচ্ছি। আমার তো একা একা কষ্ট পাওয়ার অধিকারটা অন্তত আছে। আমি একেবারে বিধ্বস্ত হয়ে গেছি, পুরোপুরি বিধ্বস্ত।’
রিগ্যানের নামেই ডিনিস তাঁর ছেলের নাম রাখলেন ‘রোনাল্ডো’। ২০০৪ সালে দুনিয়ার সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট রিগ্যান যখন মারা গেলেন, ইংল্যান্ডে বসে তখন ‘রাজত্ব’ শুরু করেছেন তাঁর নামের সেই ছেলেটি। সেই ‘রাজত্ব’ এত বড় হলো যে অনেকেই আলোচনা শুরু করে দিলেন—এই ছেলেটিই বর্তমান সময়ের সেরা ফুটবলার।
সেই ছেলেটির নাম ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। বর্তমান সময়ের সেরা ফুটবলার রোনালদো কি না, এ নিয়ে তর্ক চলতে পারে। কিন্তু নিজেকে তর্কাতীত করে ফেলার একটা সুযোগ এসেছিল রোনালদোর সামনে।
সে সুযোগ নিতে পারলেন না রোনালদো। নিজের পারফরম্যান্স মাঝারি মানেরই রইল, দল বিদায় নিল দ্বিতীয় পর্ব থেকে। সব মিলিয়ে হতাশায়, ক্ষোভে ভেঙে পড়লেন রোনালদো। সেই হতাশার বহিঃপ্রকাশও ঘটল। স্পেনের বিপক্ষে হারের পর সাংবাদিকেরা রোনালদোকে ঘিরে ধরেছিলেন। সাবেক বিশ্বসেরা ফুটবলারের কাছ থেকে সবাই হারের ব্যাখ্যা চাচ্ছিলেন। কিন্তু চটে উঠলেন রোনালদো। মিক্সড জোনে দাঁড়িয়ে বলে উঠলেন, ‘আমি কী করে পর্তুগালের বিদায়ের ব্যাখ্যা দেব? যান, কার্লোস কুইরোজের সঙ্গে কথা বলুন।’
রোনালদোর ফেটে পড়ার কারণটা বোঝা যায়। অনেক অনেক প্রত্যাশার চাপ নিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে এসেছিলেন। চাপ ছিল ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেরও। ২০০৮ সালের ফিফা বর্ষসেরা ও ২০০৯ সালের দ্বিতীয় সেরা রোনালদোকে লড়তে হচ্ছিল নিজের সঙ্গেই।
২০০৭-০৮ মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে সব মিলিয়ে ৪৯ ম্যাচে ৪২ গোল করেছিলেন। পরের মৌসুমে ম্যানইউতেই নিজেকে একটু হারিয়ে খুঁজছিলেন। গত মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদে এসে আবার খুঁজে পেলেন ফর্মটা। ফলে বিশ্বকাপে নিজেকে প্রমাণের চাপও গেল বেড়ে।
কৈশোরে বাবাকে মদে চুর হয়ে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে দেখেছেন। ফুটবল থেকে টাকা আয় করে বাড়ি পাঠিয়েছেন বাবার চিকিৎসার জন্য, বাবা সেই টাকা দিয়ে আরও মদ খেয়েছেন। শেষ পর্যন্ত বাবার অকাল মৃত্যু দেখেছেন। এমন সব ধাক্কা সামলানো রোনালদোর ওপর আরও চাপ হয়ে এসেছিল পর্তুগালের দীর্ঘদিনের অপূর্ণ স্বপ্ন। ইউসেবিও পারেননি, পারেনি পর্তুগালের সোনালি প্রজন্ম। তাই পর্তুগিজরা যেন হামলে পড়েছিল রোনালদোর ওপর—‘আমাদের কিছু একটা এনে দিতে হবে।’
চাপটা কি ভেঙে ফেলল রোনালদোকে? এক কথায় উত্তর দেওয়া কঠিন। ফিফার ওয়েবসাইট বলছে, বিদায়ের আগ পর্যন্ত দারুণ খেলেছেন এই পর্তুগিজ উইঙ্গার। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচেই ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন। কিন্তু যাঁরা খেলা দেখেছেন, এই তথ্যের সঙ্গে একমত হওয়ার লোক হয়তো খুব বেশি পাওয়া যাবে না।
অন্তত ম্যানইউতেই ডিফেন্স ভেঙেচুরে বিদ্যুৎ চমকের মতো যাঁরা রোনালদোকে ছুটতে দেখেছেন, তাঁরা এই রোনালদোকে কেন ‘সেরা’ বলে মানবেন! এটা ঠিক যে কিছু গোল তৈরি করে দিয়েছেন, নিজে একটা গোল করেছেন, দু-একটা ঝলকও দেখিয়েছেন; কিন্তু সেই রোনালদোকে যে দেখা যায়নি!
রোনালদোকে দেখা গেল না শেষ ম্যাচেও। নিজেই বিশ্বকাপ থেকে এমন বর্ণহীন বিদায় মেনে নিতে পারছিলেন না। সে জন্যই কি অমন চটে উঠলেন সাংবাদিকদের ওপর? রোনালদো অবশ্য অন্য ব্যাখ্যা দিলেন, ‘একটু পর কার্লোস কুইরোজের সংবাদ সম্মেলন ছিল বলেই আমি কোচকে জিজ্ঞেস করতে বলেছিলাম। কারণ, ওই সময়ে আমি কোনো ব্যাখ্যা দেওয়ার মতো অবস্থায় ছিলাম না। আমি কখনো কল্পনাই করিনি, আমার এই নিরীহ বাক্যগুলো এত বিতর্ক তৈরি করবে। আমি আপনাদের অনুরোধ করি, সব জায়গায় ভুত খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন না।’
তবে শেষ বেলায় নিজের হতাশাটা আর গোপন করতে পারলেন না, ‘আমি খুবই কষ্ট পাচ্ছি। আমার তো একা একা কষ্ট পাওয়ার অধিকারটা অন্তত আছে। আমি একেবারে বিধ্বস্ত হয়ে গেছি, পুরোপুরি বিধ্বস্ত।’
No comments