ঈদের দিনে তিন বেলা সাজ by সুখী চম্পা
ঈদের
রঙে সবাই যেন রঙিন হয়ে উঠে। যেমন পোশাকে, তেমনি সাজে। অনেকের নতুন পোশাক
হয়তো কেনা হয়ে গেছে। পোশাকের পরপরই এর সঙ্গে মিলিয়ে সাজটা কেমন হবে, তা
নিয়ে চলে বিস্তর গবেষণা। ঈদের দিন বেলায় বেলায় যেমন চলে নতুন পোশাক পরা।
সঙ্গে বদলে যায় সাজের ধরনও। ঈদের সাজ তিনবেলায় হয়ে ওঠে তিন রকম। সাজের সময়
শুধু পোশাক নয় আবহাওয়ার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।
একটা সময় ছিল যখন ঈদের দিনে তিন বেলা সাজের জন্য স্থানিয় বিউটি সেলুনগুলোতে আগের রাত থেকেই ভীর লেগে যেত। সময়ের সাথে সাথে প্রযুক্তি এগিয়েছে। এখন ঈদের দিনে নিজেকে আকর্ষণীয় করে সাজাতে পার্লারে না এসে ইউটিউব ভিডিও কিংবা টিউটোরিয়াল দেখে নিজেকে সাজাতে পারেন মনের মতো। তবে বেলা বুঝে সাজেও তাই থাকা চাই ভিন্নতা। ঈদে তিন বেলার সাজের পরামর্শ দিয়েছেন গোল্ডেন কেয়ার বিউটি স্যালুনের বিউটিশিয়ান ও রূপবিশেষজ্ঞ সুরমা ডি কস্তা।
সকালে হালকা ও স্নিগ্ধ সাজ
যেহেতু গরম মৌসুম তাই ঈদের দিন সকালের সাজটা হতে হবে হালকা, আরামদায়ক, স্নিগ্ধ আর সতেজ। ঈদের দিন সকালের সাজটা একটু সতেজ হলেই দেখতে ভালো লাগবে। এই সময় হালকা মেকআপ মানানসই। নিজের ত্বককে এক শেড উজ্জ্বল দেখানোর জন্য প্রাইমারের ব্যবহার করতে হবে। এরপর পুরো মুখে হালকা ফেস পাউডার লাগাতে পারেন। মুখে যদি হালকা দাগ থাকে, তা ঢাকতে কনসিলারের ব্যবহার করা যায়। সকালের স্নিগ্ধ সাজে বেস মেকআপে শুধু কমপ্যাক্ট পাউডার দিয়ে তার ওপর ফেস পাউডার লাগিয়ে নিতে হবে। গালে দিন হালকা গোলাপি ব্লাশন। এতে একদিকে যেমন স্বস্তিতে থাকবেন তেমনি আপনাকে যারা দেখবেন তাদের চোখেও স্নিগ্ধতা ও শীতল অনুভব করবেন। অনেকেই ন্যাচারাল সাজের সময় চোখে শ্যাডোর ব্যবহার এড়িয়ে যান। এতে করে সাজার পর চোখ ম্যাড়মেড়ে দেখায়। ন্যাচারাল মেকআপে হালকা বাদামি রঙের শ্যাডো ব্যবহার করতে পারেন। এই শ্যাডো চোখকে ফুটিয়ে তোলে। ঈদের সকালে যাঁদের সালোয়ার-কামিজ পরার ইচ্ছা আছে, তাদের চোখে ঘন মাসকারা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন সুরমা ডি কস্তা। শাড়ির সঙ্গে চোখের কোণে ব্লেন্ড করে নেওয়া কাজল ভালো দেখাবে। এক্ষেত্রে মেকওভারের ব্রান্ড সম্পর্কে অবস্যই সচেতন হতে হবে। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে ন্যুড রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করা ভালো। এছাড়া ঠোঁটে হালকা করে লাগিয়ে নিতে পারেন পছন্দসই বাঙ্গি, বাদামি, গোলাপি, কফি রঙের লিপস্টিক। কপালে দিতে পারেন ছোট্ট টিপ। এখন ছোট টিপের ফ্যাশনটা বেশি চলছে। সকালের স্নিগ্ধ সাজের সঙ্গে অ্যান্টিক, মুক্তা, পুঁতি কিংবা স্টোনের ছোট গহনা পরা যেতে পারে।
দুপুরে হয়ে উঠুন অনন্যা
ঈদের দুপুরের সাজে হয়ে উঠতে পারেন অনন্যা। দুপুরের সাজে উৎসবের আমেজ আনতে মুখের বেইসটাকে ফোকাস করা যেতে পারে। তবে বেসটা কিছুটা সকালের মতো হালকা রাখতে হবে। নয়তো রোদ গরমে মেকআপ তো নষ্ট হবেই আপনিও থাকবেন অস্বস্তিতে। প্রাইমার, ফাউন্ডেশ আর বিবি ক্রিমের ব্যবহারে বেস তৈরি করতে হবে। এরপর কনট্যুরিং করার সময় যেন মুখের টি জোন ফুটে ওঠে এটা মাথায় রাখতে হবে। ফেস পাউডার বা কমপ্যাক্ট পাউডারের হালকা প্রলেপ দিতে হবে। এবার হাইলাইটার দিয়ে টি জোনকে ফুটিয়ে তুলুন। কনট্যুর এরিয়ার ওপরে ব্লাশন বোনেও হাইলাইটারের ব্যবহার করা যায়। এবার হালকা রঙের ব্লাশন দিন। এই সময় চোখের সাজে আনতে পারেন হালকা স্মোকি ভাব। দুপরে যে পোশাকটি পরবেন সেই পোশাক থেকে যেকোনো একটা রং নিদৃষ্ট করুন। সেই রঙের হালকা টোনের শ্যাডো দিয়ে পুরো চোখটাকে সাজিয়ে তুললে হবে। এরপর হালকা ছাই রঙের শ্যাডো দিয়ে চোখের কোণে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। শাড়ি পরলে ভিন্ন ভিন্ন রঙের পেনসিল লাইনার ব্যবহার করুন। চোখের নিচে বাদামি শ্যাডো দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। দুপুরের সাজেও বেছে নিতে পারেন লিপস্টিকে ন্যুড কালার। এছাড়া একটু ভারি বেস, ন্যাচারাল অথবা হালকা টোনের লিপস্টিক তো থাকছেই। স্টোন আর মেটালে গহনা এ বেলায় বেশ মানাবে।
রাতে সাজুন জমকালো
রাতের সাজটা বেশ জমকালো করতে পারেন। রাতের নিমন্ত্রণের সাজে প্রথমেই লাগিয়ে নিন প্রাইমার। রাতের বেলার সাজেও বেজকে ফোকাস করতে হবে। তবে দুপুরের সঙ্গে রাতের সাজের পার্থক্য থাকবে চোখে। এর ওপর ফাউন্ডেশন, প্যানকেক কিংবা প্যানস্টিক দিয়ে বেস করুন। মুখে দাগ থাকলে কনসিলার দিয়ে দাগ ঢেকে দিন। এরপর ব্যবহার করুন স্কিনটোন ফেস পাউডার। চাইলে লিকুইড বেসও করতে পারেন। রাতের সাজে সিরাম ব্যবহার করুন। এতে সাজে গার্জিয়াল লুক আসবে। রাতে চোখের সাজে থাকবে রঙের বাহার। অর্থাৎ পোশাকের সঙ্গে বিপরীত (কনট্রাস্ট) রঙের ব্যবহার থাকবে চোখে। এখন বাজারে একটু চকমকে আইশ্যাডো পাওয়া যায়। চোখে স্মোকি লুক এনে চোখের পাতাজুড়ে একটু চকচকে (গ্লসি) শ্যাডো লাগিয়ে নিলেই পূর্ণ হবে রাতের সাজ। চোখের মতো লিপস্টিকের রংও হবে বিপরীত। চোখের সাজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এ বেলায়। স্মোকি কিন্তু উজ্জ্বল হলে পুরো সাজটিই জমবে ভালো। এর পরের অংশে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কোনো রং এবং তার ওপরের অংশে সোনালি বা রুপালি আইশ্যাডো লাগান। অর্থাৎ তিনটি রঙের মিশ্রণে চোখ দুটোকে সাজাতে পারেন। চোখের সাজটি উজ্জ্বল হলে এর সঙ্গে কফি, বেগুনি, ডার্ক মেরুন কিংবা বাদামি ম্যাট লিপস্টিক মানাবে। দিন-রাত সব বেলার সাজেই লিপসেলার ব্যবহার করতে পারেন। লিপসেলার মেকআপ রিমুভার ছাড়া ওঠে না। খাবার সময়ও তাই নষ্ট হয় না। ঠোঁটের ওপর গ্লিটার ব্যবহারও এখন চলছে। রাতের সাজে ব্লাশন বেছে নিন গাঢ় শেডের মেরুন, গোলাপি কিংবা বাদামি থেকে। ঈদের রাতের সাজের সঙ্গে গোল্ড, স্টোন, ফ্রেন্সি, মেটাল, পুঁতিসহ সব ধরনের গহনাই ভালো লাগবে।
ঈদের তিনবেলার পোশাক
ঈদের সকালটায় কাজের ঝক্কিঝামেলা সামলাতে পোশাকটা হওয়া উচিত আরামদায়ক। এ সময় টিনএজাররা পরতে পারেন ফতুয়া, কুর্তা, টপস, জিন্স, পালাজ্জো প্রভৃতি। তরুণী কিংবা মাঝবয়সীদের ভালো লাগবে হালকা রঙ ও নকশার সুতি, টাঙ্গাইল, তাঁতের শাড়ি। চাইলে সালোয়ার-কামিজও পরতে পারেন। দুপুরের কড়া রোদে মানানসই হবে সুতি জামদানি, হাতের কাজের সুতি শাড়ি, কুচি প্রিন্ট শাড়ি, হাফসিল্ক, জুট কটন, জামদানি হাফসিল্কের শাড়িগুলো। তরুণীরা বেছে নিতে পারেন সিøভলেস কিংবা ফুলসিøভ সালোয়ার-কামিজ। এ সময় নকশা করা পোশাকই ভালো লাগবে। টিনরা এ সময় টিউনিক, কুর্তায় থাকবে সাবলীল। ঈদের রাতে পার্টি কিংবা বেড়াতে যাওয়ার জন্য বেছে নিন জমকালো পোশাক। হতে পারে তা শাড়ি, গাউন, লং কামিজ কিংবা ওয়েস্টার্ন পোশাক। তবে শাড়িতে অনেক বেশি গার্জিয়াস লাগবে। এর সঙ্গে ব্যাকলেস, কলার স্টাইল, সিঙ্গেল সোল্ডার ব্লাউজে আপনি হাজির হতে পারবেন পারফেক্ট পার্টি সাজে।
ঈদের সকালে চুল সাজাতে
ঈদের সকালে কাজের ব্যস্ততার শেষ নেই। এসময় এমন হেয়ার স্টাইল বেছে নিতে হবে যাতে আরামবোধ করেন। সকালের দিকটায় পনিটেইল কিংবা উঁচু করে হাত খোঁপা করতে পারেন। আবার ঘাড়ের ওপর লুজ হাত খোঁপা করে বেলি কিংবা পছন্দমতো কোনো ফুল কিংবা ফুলের মালা জড়িয়ে রাখলেও স্নিগ্ধতায় ভরে উঠবে চারপাশ। দুপুরের সাজে এলোবেণি, খেজুর বেণি, ফ্রান্স বেণিসহ বিভিন্ন ধরনের স্টাইলিশ বেণি ভালো লাগবে। ফ্রন্টসেটিং করে উঁচু করে পেঁচানো খোঁপাও করতে পারেন। খোঁপা কিংবা বেণিতে গুঁজে দিতে পারেন ছোট কোনো ফুল। প্লাস্টিকে কাঠাল চাপাও দারুন মানাবে।
তবে রাতের নিমন্ত্রণের বিভিন্ন ধরনের ফেন্সি খোঁপা করে তাক লাগাতে পারেন প্রিয়জনদের। রোল, বেণি, টুইস্ট নানাভাবে ফ্রন্টসেট করে পেছনে খোঁপা করতে পারেন। এছাড়া চুলটাকে কার্ল, ব্লোডাই কিংবা সামনে পাপ আর পেছনে আয়রন করে ছেড়েও রাখতে পারেন। ফেঞ্চ স্টাইলের খোঁপা করেও নজরকাড়া হয়ে উঠতে পারেন। ফ্রেঞ্চ খোঁপা যেভাবে করবেন। একপাশে সিঁথি করে কপালের এক পাশ পুরো ঢেকে দিন। আরেক পাশ ব্যাক কোম্ব করে আঁচড়ে নিন। এবার পেছনের চুলগুলোকে ফ্রেঞ্চ স্টাইলে ঘুরিয়ে খোঁপা করে নিন। ব্যস, চুলের সাজেও এসে যাবে ঈদের আমেজ।
সুগন্ধি
এখন আবাহাওয়াটাই একটু কড়া। তাই অতিরিক্ত কড়া বা ঝাঝালো সুগন্ধি না ব্যবহার করাই ভালো। অতিরিক্ত গরমে ঝাঝালো সুগন্ধি ঘামের সঙ্গে মিশে বাজে গন্ধের সৃষ্টি করতে পারে। তাই ২৪ ঘণ্টা হালকা বডি স্প্রে বা পারফিউম ব্যবহার করা যেতে পারে। বাজারে বিভিন্ন ফ্লেভারের সুগন্ধির মধ্যে থেকে পছন্দসই সুগন্ধি নির্বাচন ও ব্যবহারটাও একধরনের ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক বলেই মনে করেন এই রুপবিশেষজ্ঞ।
একটা সময় ছিল যখন ঈদের দিনে তিন বেলা সাজের জন্য স্থানিয় বিউটি সেলুনগুলোতে আগের রাত থেকেই ভীর লেগে যেত। সময়ের সাথে সাথে প্রযুক্তি এগিয়েছে। এখন ঈদের দিনে নিজেকে আকর্ষণীয় করে সাজাতে পার্লারে না এসে ইউটিউব ভিডিও কিংবা টিউটোরিয়াল দেখে নিজেকে সাজাতে পারেন মনের মতো। তবে বেলা বুঝে সাজেও তাই থাকা চাই ভিন্নতা। ঈদে তিন বেলার সাজের পরামর্শ দিয়েছেন গোল্ডেন কেয়ার বিউটি স্যালুনের বিউটিশিয়ান ও রূপবিশেষজ্ঞ সুরমা ডি কস্তা।
সকালে হালকা ও স্নিগ্ধ সাজ
যেহেতু গরম মৌসুম তাই ঈদের দিন সকালের সাজটা হতে হবে হালকা, আরামদায়ক, স্নিগ্ধ আর সতেজ। ঈদের দিন সকালের সাজটা একটু সতেজ হলেই দেখতে ভালো লাগবে। এই সময় হালকা মেকআপ মানানসই। নিজের ত্বককে এক শেড উজ্জ্বল দেখানোর জন্য প্রাইমারের ব্যবহার করতে হবে। এরপর পুরো মুখে হালকা ফেস পাউডার লাগাতে পারেন। মুখে যদি হালকা দাগ থাকে, তা ঢাকতে কনসিলারের ব্যবহার করা যায়। সকালের স্নিগ্ধ সাজে বেস মেকআপে শুধু কমপ্যাক্ট পাউডার দিয়ে তার ওপর ফেস পাউডার লাগিয়ে নিতে হবে। গালে দিন হালকা গোলাপি ব্লাশন। এতে একদিকে যেমন স্বস্তিতে থাকবেন তেমনি আপনাকে যারা দেখবেন তাদের চোখেও স্নিগ্ধতা ও শীতল অনুভব করবেন। অনেকেই ন্যাচারাল সাজের সময় চোখে শ্যাডোর ব্যবহার এড়িয়ে যান। এতে করে সাজার পর চোখ ম্যাড়মেড়ে দেখায়। ন্যাচারাল মেকআপে হালকা বাদামি রঙের শ্যাডো ব্যবহার করতে পারেন। এই শ্যাডো চোখকে ফুটিয়ে তোলে। ঈদের সকালে যাঁদের সালোয়ার-কামিজ পরার ইচ্ছা আছে, তাদের চোখে ঘন মাসকারা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন সুরমা ডি কস্তা। শাড়ির সঙ্গে চোখের কোণে ব্লেন্ড করে নেওয়া কাজল ভালো দেখাবে। এক্ষেত্রে মেকওভারের ব্রান্ড সম্পর্কে অবস্যই সচেতন হতে হবে। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে ন্যুড রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করা ভালো। এছাড়া ঠোঁটে হালকা করে লাগিয়ে নিতে পারেন পছন্দসই বাঙ্গি, বাদামি, গোলাপি, কফি রঙের লিপস্টিক। কপালে দিতে পারেন ছোট্ট টিপ। এখন ছোট টিপের ফ্যাশনটা বেশি চলছে। সকালের স্নিগ্ধ সাজের সঙ্গে অ্যান্টিক, মুক্তা, পুঁতি কিংবা স্টোনের ছোট গহনা পরা যেতে পারে।
দুপুরে হয়ে উঠুন অনন্যা
ঈদের দুপুরের সাজে হয়ে উঠতে পারেন অনন্যা। দুপুরের সাজে উৎসবের আমেজ আনতে মুখের বেইসটাকে ফোকাস করা যেতে পারে। তবে বেসটা কিছুটা সকালের মতো হালকা রাখতে হবে। নয়তো রোদ গরমে মেকআপ তো নষ্ট হবেই আপনিও থাকবেন অস্বস্তিতে। প্রাইমার, ফাউন্ডেশ আর বিবি ক্রিমের ব্যবহারে বেস তৈরি করতে হবে। এরপর কনট্যুরিং করার সময় যেন মুখের টি জোন ফুটে ওঠে এটা মাথায় রাখতে হবে। ফেস পাউডার বা কমপ্যাক্ট পাউডারের হালকা প্রলেপ দিতে হবে। এবার হাইলাইটার দিয়ে টি জোনকে ফুটিয়ে তুলুন। কনট্যুর এরিয়ার ওপরে ব্লাশন বোনেও হাইলাইটারের ব্যবহার করা যায়। এবার হালকা রঙের ব্লাশন দিন। এই সময় চোখের সাজে আনতে পারেন হালকা স্মোকি ভাব। দুপরে যে পোশাকটি পরবেন সেই পোশাক থেকে যেকোনো একটা রং নিদৃষ্ট করুন। সেই রঙের হালকা টোনের শ্যাডো দিয়ে পুরো চোখটাকে সাজিয়ে তুললে হবে। এরপর হালকা ছাই রঙের শ্যাডো দিয়ে চোখের কোণে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। শাড়ি পরলে ভিন্ন ভিন্ন রঙের পেনসিল লাইনার ব্যবহার করুন। চোখের নিচে বাদামি শ্যাডো দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। দুপুরের সাজেও বেছে নিতে পারেন লিপস্টিকে ন্যুড কালার। এছাড়া একটু ভারি বেস, ন্যাচারাল অথবা হালকা টোনের লিপস্টিক তো থাকছেই। স্টোন আর মেটালে গহনা এ বেলায় বেশ মানাবে।
রাতে সাজুন জমকালো
রাতের সাজটা বেশ জমকালো করতে পারেন। রাতের নিমন্ত্রণের সাজে প্রথমেই লাগিয়ে নিন প্রাইমার। রাতের বেলার সাজেও বেজকে ফোকাস করতে হবে। তবে দুপুরের সঙ্গে রাতের সাজের পার্থক্য থাকবে চোখে। এর ওপর ফাউন্ডেশন, প্যানকেক কিংবা প্যানস্টিক দিয়ে বেস করুন। মুখে দাগ থাকলে কনসিলার দিয়ে দাগ ঢেকে দিন। এরপর ব্যবহার করুন স্কিনটোন ফেস পাউডার। চাইলে লিকুইড বেসও করতে পারেন। রাতের সাজে সিরাম ব্যবহার করুন। এতে সাজে গার্জিয়াল লুক আসবে। রাতে চোখের সাজে থাকবে রঙের বাহার। অর্থাৎ পোশাকের সঙ্গে বিপরীত (কনট্রাস্ট) রঙের ব্যবহার থাকবে চোখে। এখন বাজারে একটু চকমকে আইশ্যাডো পাওয়া যায়। চোখে স্মোকি লুক এনে চোখের পাতাজুড়ে একটু চকচকে (গ্লসি) শ্যাডো লাগিয়ে নিলেই পূর্ণ হবে রাতের সাজ। চোখের মতো লিপস্টিকের রংও হবে বিপরীত। চোখের সাজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এ বেলায়। স্মোকি কিন্তু উজ্জ্বল হলে পুরো সাজটিই জমবে ভালো। এর পরের অংশে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কোনো রং এবং তার ওপরের অংশে সোনালি বা রুপালি আইশ্যাডো লাগান। অর্থাৎ তিনটি রঙের মিশ্রণে চোখ দুটোকে সাজাতে পারেন। চোখের সাজটি উজ্জ্বল হলে এর সঙ্গে কফি, বেগুনি, ডার্ক মেরুন কিংবা বাদামি ম্যাট লিপস্টিক মানাবে। দিন-রাত সব বেলার সাজেই লিপসেলার ব্যবহার করতে পারেন। লিপসেলার মেকআপ রিমুভার ছাড়া ওঠে না। খাবার সময়ও তাই নষ্ট হয় না। ঠোঁটের ওপর গ্লিটার ব্যবহারও এখন চলছে। রাতের সাজে ব্লাশন বেছে নিন গাঢ় শেডের মেরুন, গোলাপি কিংবা বাদামি থেকে। ঈদের রাতের সাজের সঙ্গে গোল্ড, স্টোন, ফ্রেন্সি, মেটাল, পুঁতিসহ সব ধরনের গহনাই ভালো লাগবে।
ঈদের তিনবেলার পোশাক
ঈদের সকালটায় কাজের ঝক্কিঝামেলা সামলাতে পোশাকটা হওয়া উচিত আরামদায়ক। এ সময় টিনএজাররা পরতে পারেন ফতুয়া, কুর্তা, টপস, জিন্স, পালাজ্জো প্রভৃতি। তরুণী কিংবা মাঝবয়সীদের ভালো লাগবে হালকা রঙ ও নকশার সুতি, টাঙ্গাইল, তাঁতের শাড়ি। চাইলে সালোয়ার-কামিজও পরতে পারেন। দুপুরের কড়া রোদে মানানসই হবে সুতি জামদানি, হাতের কাজের সুতি শাড়ি, কুচি প্রিন্ট শাড়ি, হাফসিল্ক, জুট কটন, জামদানি হাফসিল্কের শাড়িগুলো। তরুণীরা বেছে নিতে পারেন সিøভলেস কিংবা ফুলসিøভ সালোয়ার-কামিজ। এ সময় নকশা করা পোশাকই ভালো লাগবে। টিনরা এ সময় টিউনিক, কুর্তায় থাকবে সাবলীল। ঈদের রাতে পার্টি কিংবা বেড়াতে যাওয়ার জন্য বেছে নিন জমকালো পোশাক। হতে পারে তা শাড়ি, গাউন, লং কামিজ কিংবা ওয়েস্টার্ন পোশাক। তবে শাড়িতে অনেক বেশি গার্জিয়াস লাগবে। এর সঙ্গে ব্যাকলেস, কলার স্টাইল, সিঙ্গেল সোল্ডার ব্লাউজে আপনি হাজির হতে পারবেন পারফেক্ট পার্টি সাজে।
ঈদের সকালে চুল সাজাতে
ঈদের সকালে কাজের ব্যস্ততার শেষ নেই। এসময় এমন হেয়ার স্টাইল বেছে নিতে হবে যাতে আরামবোধ করেন। সকালের দিকটায় পনিটেইল কিংবা উঁচু করে হাত খোঁপা করতে পারেন। আবার ঘাড়ের ওপর লুজ হাত খোঁপা করে বেলি কিংবা পছন্দমতো কোনো ফুল কিংবা ফুলের মালা জড়িয়ে রাখলেও স্নিগ্ধতায় ভরে উঠবে চারপাশ। দুপুরের সাজে এলোবেণি, খেজুর বেণি, ফ্রান্স বেণিসহ বিভিন্ন ধরনের স্টাইলিশ বেণি ভালো লাগবে। ফ্রন্টসেটিং করে উঁচু করে পেঁচানো খোঁপাও করতে পারেন। খোঁপা কিংবা বেণিতে গুঁজে দিতে পারেন ছোট কোনো ফুল। প্লাস্টিকে কাঠাল চাপাও দারুন মানাবে।
তবে রাতের নিমন্ত্রণের বিভিন্ন ধরনের ফেন্সি খোঁপা করে তাক লাগাতে পারেন প্রিয়জনদের। রোল, বেণি, টুইস্ট নানাভাবে ফ্রন্টসেট করে পেছনে খোঁপা করতে পারেন। এছাড়া চুলটাকে কার্ল, ব্লোডাই কিংবা সামনে পাপ আর পেছনে আয়রন করে ছেড়েও রাখতে পারেন। ফেঞ্চ স্টাইলের খোঁপা করেও নজরকাড়া হয়ে উঠতে পারেন। ফ্রেঞ্চ খোঁপা যেভাবে করবেন। একপাশে সিঁথি করে কপালের এক পাশ পুরো ঢেকে দিন। আরেক পাশ ব্যাক কোম্ব করে আঁচড়ে নিন। এবার পেছনের চুলগুলোকে ফ্রেঞ্চ স্টাইলে ঘুরিয়ে খোঁপা করে নিন। ব্যস, চুলের সাজেও এসে যাবে ঈদের আমেজ।
সুগন্ধি
এখন আবাহাওয়াটাই একটু কড়া। তাই অতিরিক্ত কড়া বা ঝাঝালো সুগন্ধি না ব্যবহার করাই ভালো। অতিরিক্ত গরমে ঝাঝালো সুগন্ধি ঘামের সঙ্গে মিশে বাজে গন্ধের সৃষ্টি করতে পারে। তাই ২৪ ঘণ্টা হালকা বডি স্প্রে বা পারফিউম ব্যবহার করা যেতে পারে। বাজারে বিভিন্ন ফ্লেভারের সুগন্ধির মধ্যে থেকে পছন্দসই সুগন্ধি নির্বাচন ও ব্যবহারটাও একধরনের ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক বলেই মনে করেন এই রুপবিশেষজ্ঞ।
No comments