চুকনগর গণহত্যা by সৈয়দ দীদার বখ্ত
স্বাধীনতার
সুবর্ণজয়ন্তী সমাগত। নানা অধ্যায়ে বিভক্ত মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপঞ্জি।
মার্চের উত্তাল দিনগুলোতে গর্জে উঠেছিল বাংলার কৃষক, শ্রমিকসহ আপামর
মুক্তিকামী জনতা। পঁচিশে মার্চের ক্র্যাকডাউন, গেরিলা যুদ্ধ, ঘটনাবহুল
একাত্তর। মুক্তিযুদ্ধকালীন সেই দিনগুলো উঠে এসেছে সিনিয়র সাংবাদিক ও সাবেক
তথ্য প্রতিমন্ত্রী
সৈয়দ দীদার বখ্তের লেখায়।
৭১ সালের মে মাস। সমস্ত মাসজুড়ে চলেছিল গণহত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, অত্যাচার এবং অনির্বচনীয় ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ।
ভারত থেকে দেশে ফিরে এসে কীভাবে আমার মা, স্ত্রী, পুত্র ও তিন মাসের রুগ্ন কন্যা সন্তানকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখবো তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছিল। এদিকে, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়মিত ট্রেনিং দিতে হচ্ছে। দলে দলে দামাল যুবকরা এসে ভারতে গিয়ে ট্রেনিং নেয়ার তাগিদ দিচ্ছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গ্রামের ছেলেদের অস্ত্রের ট্রেনিং দেয়া খুব দুরূহ ব্যাপার ছিল। প্রথমত অস্ত্রের স্বল্পতা, দ্বিতীয়ত জায়গার অভাব। তাই আগ্রহী ছেলেদের ভারতে পাঠাবার ব্যবস্থা করতে হচ্ছিল।
এদিকে, দিন দিন রাজাকারদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছে। তারা এলাকাজুড়ে যাকে ইচ্ছে তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের ইচ্ছেমতো বাড়ি বাড়ি হামলা, লুণ্ঠন, অত্যাচার করেই চলেছে। প্রতিদিন খবর আসছে রাজাকাররা আওয়ামী লীগ ও ন্যাপের কর্মীদের ধরে নিয়ে নদীর পাড়ে দাঁড় করিয়ে গুলি করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দিচ্ছে। এমতাবস্থায় গ্রামের যুবক ছেলেরা বাড়িতে থাকতে পারছে না। রাজাকারদের ভয়ে তারা গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে। এই ভয়াবহ অবস্থায় দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে প্রত্যাঘাতের জন্যই তারা দলে দলে ট্রেনিং নেয়ার জন্য দেশ ছেড়ে ভারতের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিচ্ছে।
আমার মা, স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাকে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠাবার তাগিদ অনুভব করছি। তার জন্য আমার মামাতো ভাইকে ডেকে পাঠালাম। মামার বাড়ি যশোরের অভয়নগর থানায় সিদ্দিপাশা গ্রামে। মামাতো ভাই ছাকায়ত চলে এসেছে ঠিক ওই দিনই সংঘটিত হলো আরেক নৃশংস নরহত্যা। আমার গ্রামের বাড়ি তেঁতুলিয়া থেকে মাত্র ৬ কি.মি. দূরে চুকনগরে।
দিনটি ছিল ২০শে মে। খবর পেলাম ডুমুরিয়া, দাকোপ, বটিয়াঘাটা ও খুলনার দক্ষিণ অঞ্চলের নিম্নবর্ণের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা রাজাকার শান্তি কমিটির লোকদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ভিটে-মাটি ছেড়ে সপরিবারে ভারতে পাড়ি দেয়ার উদ্দেশ্যে চুকনগরের বাজার সংলগ্ন খেলার মাঠে জড়ো হয়েছিল। একটু বিশ্রাম নিয়ে সন্ধ্যায় তারা পাড়ি জমাবে ভারতের উদ্দেশ্যে।
এ সময়ে ১০টা ১১টার দিকে একদল পাকিস্তানি সেনা এসে তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি করে হত্যাযজ্ঞ ঘটালো। কয়েক হাজার পুরুষ-মহিলা শিশুকে তারা গুলি করে হত্যা করলো। এই হত্যাযজ্ঞ থেকে কোনো প্রাণই রক্ষা পায়নি। হাজার হাজার লাশ এই খেলার মাঠে পড়ে রইল। পাশেই নদী। এমন কেউই ছিল না যে লাশ সৎকার করবে। অন্তত নদীতে লাশ ভাসিয়ে দেবে।
খবর পেয়ে আমি দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে সাইকেলে করে চুকনগর গেলাম। এই নৃশংস ভয়াবহ দৃশ্য দেখার জন্য। আশপাশে কোনো জীবিত লোক দেখতে পেলাম না। ভয় পেয়ে আশপাশের গ্রাম থেকে লোকজন দূরের কোনো নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে বলে মনে হলো।
পৃথিবীর ইতিহাসে এত বড় নৃশংস হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করে এর প্রতিশোধ স্পৃহায় আমার শিরা উপশিরায় রক্তপ্রবাহ আগুনের দাহে জ্বলে উঠল।
আমার যতদূর মনে পড়ে ৩/৪ দিন কয়েক হাজার মানুষের গলিত লাশ চুকনগরের ওই খেলার মাঠে শকুনের আহার হিসেবে পড়েছিল। যে খেলার মাঠে আমি ছাত্রাবস্থায় বহুবার ফুটবল খেলেছি- সেই মাঠ এখন বধ্যভূমি। পাকিস্তানি সেনাদের নৃশংশতার নিদর্শন নিয়ে রক্তের হোলি খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে।
এই ঘটনার পর মা, স্ত্রীকে বোরকা পরিয়ে রিকশায় করে কেশবপুর হয়ে বাসে করে পাঠানোর ব্যবস্থা করলাম। ভয়ে ছিলাম ঠিকমতো পৌঁছাতে পারবে কি না। পরদিন সংবাদ পেলাম ওরা ঠিকমতো পৌঁছতে পেরেছে।
এখানে একটা কথা না বললেই নয়। আমার মা ও স্ত্রী দু’জনেই শঙ্কিত ছিলেন আমাদের নিয়ে। আমরা চার ভাই সবাই মুক্তিযুদ্ধে- মাকে বলতে শুনেছি। ছেলেরা দেশের জন্য যুদ্ধ করছে। আল্লাহ ওদের সহায় হোন এই আশা। দেশ একদিন স্বাধীন হবেই এটা আমার বিশ্বাস। এত অত্যাচার এত হত্যা আল্লাহ নিশ্চয়ই বিচার করবেন। স্ত্রীকে বলতে শুনেছি- ও চিরকাল দেশের জন্যে কাজ করেছে, লোকের উপকার করেছে তার সামনে অন্য কোনো পথ খোলা নেই। সে যা করছে এটাই সঠিক বলে আমি মনে করি। দালালি করার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো। আমি তার পাশেই থাকবো। আমার স্ত্রী তখন তালা কলেজের অধ্যাপক। আমার মা এবং আমার স্ত্রীর এই ত্যাগ কখনো ভুলবো না ভুলতে পারি না।
এই সময়ে পাকিস্তান সরকার প্রতিটি ইউনিয়নে ইউনিয়নে চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে শান্তি কমিটি গঠন করেই চলছে। এই শান্তি কমিটির একমাত্র কাজ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করবার মতো কোনো পরিবারকে ডেকে নিয়ে হুমকি দেয়া, সাহসী দেশপ্রেমিক যুবকদের সম্পর্কে রাজাকার সেনাবাহিনীকে খোঁজ দেয়া। তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হত্যা বা কারাগারে নিক্ষেপ করা। সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য তাগিদ দেয়া মেরে ফেলার হুমকি দেয়া। শান্তি কমিটির পরামর্শ মতো দেশ প্রেমিক, অবিচারের প্রতিবাদী ব্যক্তিদের বাড়ি থেকে তুলে এনে হত্যা করা। এটাই ছিল শান্তি কমিটির কাজ।
এদিকে, রাজাকারদের অত্যাচারে কোনো যুবক তার বাড়িতে থাকতে সাহস করে না। হয় তারা অন্য এলাকায় গিয়ে থাকতে বাধ্য হয় অথবা দেশের টানে দেশকে এই বর্বর অত্যাচারী জাহেলদের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের সৈনিক হিসেবে যোগদান করছে। এটাই ছিল তখনকার সময়ের প্রতিদিনকার চিত্র। আমরা দেশপ্রেমিক যুবকদের একত্রিত করে তাদের মুক্তিযুদ্ধের জন্যে প্রস্তুত করার সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। প্রায় প্রতিটি গ্রামে আমরা ঘাঁটি সৃষ্টি করে রাজাকারদের প্রতিহত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মনে দুর্বার সাহস, চোখে স্বপ্নিল স্বাধীনতার অপার স্বপ্নে আমাদের পথ চলা অব্যাহত গতিতে এগিয়ে চলছে। দেশের মানুষকে মুক্ত করার জন্যে। চলবে।
সৈয়দ দীদার বখ্তের লেখায়।
৭১ সালের মে মাস। সমস্ত মাসজুড়ে চলেছিল গণহত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, অত্যাচার এবং অনির্বচনীয় ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ।
ভারত থেকে দেশে ফিরে এসে কীভাবে আমার মা, স্ত্রী, পুত্র ও তিন মাসের রুগ্ন কন্যা সন্তানকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখবো তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছিল। এদিকে, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়মিত ট্রেনিং দিতে হচ্ছে। দলে দলে দামাল যুবকরা এসে ভারতে গিয়ে ট্রেনিং নেয়ার তাগিদ দিচ্ছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গ্রামের ছেলেদের অস্ত্রের ট্রেনিং দেয়া খুব দুরূহ ব্যাপার ছিল। প্রথমত অস্ত্রের স্বল্পতা, দ্বিতীয়ত জায়গার অভাব। তাই আগ্রহী ছেলেদের ভারতে পাঠাবার ব্যবস্থা করতে হচ্ছিল।
এদিকে, দিন দিন রাজাকারদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছে। তারা এলাকাজুড়ে যাকে ইচ্ছে তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের ইচ্ছেমতো বাড়ি বাড়ি হামলা, লুণ্ঠন, অত্যাচার করেই চলেছে। প্রতিদিন খবর আসছে রাজাকাররা আওয়ামী লীগ ও ন্যাপের কর্মীদের ধরে নিয়ে নদীর পাড়ে দাঁড় করিয়ে গুলি করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দিচ্ছে। এমতাবস্থায় গ্রামের যুবক ছেলেরা বাড়িতে থাকতে পারছে না। রাজাকারদের ভয়ে তারা গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে। এই ভয়াবহ অবস্থায় দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে প্রত্যাঘাতের জন্যই তারা দলে দলে ট্রেনিং নেয়ার জন্য দেশ ছেড়ে ভারতের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিচ্ছে।
আমার মা, স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাকে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠাবার তাগিদ অনুভব করছি। তার জন্য আমার মামাতো ভাইকে ডেকে পাঠালাম। মামার বাড়ি যশোরের অভয়নগর থানায় সিদ্দিপাশা গ্রামে। মামাতো ভাই ছাকায়ত চলে এসেছে ঠিক ওই দিনই সংঘটিত হলো আরেক নৃশংস নরহত্যা। আমার গ্রামের বাড়ি তেঁতুলিয়া থেকে মাত্র ৬ কি.মি. দূরে চুকনগরে।
দিনটি ছিল ২০শে মে। খবর পেলাম ডুমুরিয়া, দাকোপ, বটিয়াঘাটা ও খুলনার দক্ষিণ অঞ্চলের নিম্নবর্ণের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা রাজাকার শান্তি কমিটির লোকদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ভিটে-মাটি ছেড়ে সপরিবারে ভারতে পাড়ি দেয়ার উদ্দেশ্যে চুকনগরের বাজার সংলগ্ন খেলার মাঠে জড়ো হয়েছিল। একটু বিশ্রাম নিয়ে সন্ধ্যায় তারা পাড়ি জমাবে ভারতের উদ্দেশ্যে।
এ সময়ে ১০টা ১১টার দিকে একদল পাকিস্তানি সেনা এসে তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি করে হত্যাযজ্ঞ ঘটালো। কয়েক হাজার পুরুষ-মহিলা শিশুকে তারা গুলি করে হত্যা করলো। এই হত্যাযজ্ঞ থেকে কোনো প্রাণই রক্ষা পায়নি। হাজার হাজার লাশ এই খেলার মাঠে পড়ে রইল। পাশেই নদী। এমন কেউই ছিল না যে লাশ সৎকার করবে। অন্তত নদীতে লাশ ভাসিয়ে দেবে।
খবর পেয়ে আমি দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে সাইকেলে করে চুকনগর গেলাম। এই নৃশংস ভয়াবহ দৃশ্য দেখার জন্য। আশপাশে কোনো জীবিত লোক দেখতে পেলাম না। ভয় পেয়ে আশপাশের গ্রাম থেকে লোকজন দূরের কোনো নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে বলে মনে হলো।
পৃথিবীর ইতিহাসে এত বড় নৃশংস হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করে এর প্রতিশোধ স্পৃহায় আমার শিরা উপশিরায় রক্তপ্রবাহ আগুনের দাহে জ্বলে উঠল।
আমার যতদূর মনে পড়ে ৩/৪ দিন কয়েক হাজার মানুষের গলিত লাশ চুকনগরের ওই খেলার মাঠে শকুনের আহার হিসেবে পড়েছিল। যে খেলার মাঠে আমি ছাত্রাবস্থায় বহুবার ফুটবল খেলেছি- সেই মাঠ এখন বধ্যভূমি। পাকিস্তানি সেনাদের নৃশংশতার নিদর্শন নিয়ে রক্তের হোলি খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে।
এই ঘটনার পর মা, স্ত্রীকে বোরকা পরিয়ে রিকশায় করে কেশবপুর হয়ে বাসে করে পাঠানোর ব্যবস্থা করলাম। ভয়ে ছিলাম ঠিকমতো পৌঁছাতে পারবে কি না। পরদিন সংবাদ পেলাম ওরা ঠিকমতো পৌঁছতে পেরেছে।
এখানে একটা কথা না বললেই নয়। আমার মা ও স্ত্রী দু’জনেই শঙ্কিত ছিলেন আমাদের নিয়ে। আমরা চার ভাই সবাই মুক্তিযুদ্ধে- মাকে বলতে শুনেছি। ছেলেরা দেশের জন্য যুদ্ধ করছে। আল্লাহ ওদের সহায় হোন এই আশা। দেশ একদিন স্বাধীন হবেই এটা আমার বিশ্বাস। এত অত্যাচার এত হত্যা আল্লাহ নিশ্চয়ই বিচার করবেন। স্ত্রীকে বলতে শুনেছি- ও চিরকাল দেশের জন্যে কাজ করেছে, লোকের উপকার করেছে তার সামনে অন্য কোনো পথ খোলা নেই। সে যা করছে এটাই সঠিক বলে আমি মনে করি। দালালি করার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো। আমি তার পাশেই থাকবো। আমার স্ত্রী তখন তালা কলেজের অধ্যাপক। আমার মা এবং আমার স্ত্রীর এই ত্যাগ কখনো ভুলবো না ভুলতে পারি না।
এই সময়ে পাকিস্তান সরকার প্রতিটি ইউনিয়নে ইউনিয়নে চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে শান্তি কমিটি গঠন করেই চলছে। এই শান্তি কমিটির একমাত্র কাজ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করবার মতো কোনো পরিবারকে ডেকে নিয়ে হুমকি দেয়া, সাহসী দেশপ্রেমিক যুবকদের সম্পর্কে রাজাকার সেনাবাহিনীকে খোঁজ দেয়া। তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হত্যা বা কারাগারে নিক্ষেপ করা। সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য তাগিদ দেয়া মেরে ফেলার হুমকি দেয়া। শান্তি কমিটির পরামর্শ মতো দেশ প্রেমিক, অবিচারের প্রতিবাদী ব্যক্তিদের বাড়ি থেকে তুলে এনে হত্যা করা। এটাই ছিল শান্তি কমিটির কাজ।
এদিকে, রাজাকারদের অত্যাচারে কোনো যুবক তার বাড়িতে থাকতে সাহস করে না। হয় তারা অন্য এলাকায় গিয়ে থাকতে বাধ্য হয় অথবা দেশের টানে দেশকে এই বর্বর অত্যাচারী জাহেলদের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের সৈনিক হিসেবে যোগদান করছে। এটাই ছিল তখনকার সময়ের প্রতিদিনকার চিত্র। আমরা দেশপ্রেমিক যুবকদের একত্রিত করে তাদের মুক্তিযুদ্ধের জন্যে প্রস্তুত করার সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। প্রায় প্রতিটি গ্রামে আমরা ঘাঁটি সৃষ্টি করে রাজাকারদের প্রতিহত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মনে দুর্বার সাহস, চোখে স্বপ্নিল স্বাধীনতার অপার স্বপ্নে আমাদের পথ চলা অব্যাহত গতিতে এগিয়ে চলছে। দেশের মানুষকে মুক্ত করার জন্যে। চলবে।
No comments