সৌদি থেকে এক কাপড়ে ফিরলেন ১৭৫ জন by রোকনুজ্জামান পিয়াস
মেহেরপুরের
সেলিম রেজা। সৌদি আরবে গেছেন ২০০৬ সালে। এর মধ্যে দু’বার ছুটিতে বাড়িও
এসেছিলেন। কিন্তু শেষবার যখন ছুটি শেষ করে সৌদি ফিরেন, তখনই জীবনের চরম
বাস্তবতা দেখলেন। মাসের পর মাস কাজ করেছেন কিন্তু বেতন পাননি। বাধ্য হয়ে
পালিয়েছেন। নতুন মালিক দিয়ে আকামা করেছিলেন। কিন্তু সেই আকামার মেয়াদ শেষ
হওয়ার আগেই মালিক হুরুপ (বাতিল) করে দিয়েছে। বছর পার না হতেই নতুন আকামা
করে দেয়ার নাম করে আবারও ১০ হাজার রিয়াল দাবি করেন মালিক। উপায় না পেয়ে
সেলিম নিজেই পুলিশের কাছে ধরা দেন। এরপর ২০ দিন ডিপোর্টেশন সেন্টারে রেখে
দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয় তাকে।
সেলিম রেজা রোববার রাতে দেশে ফেরেন। রাত ১১টা ৭ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি-৮০৪ ফ্লাইটে করে তার সঙ্গে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান আরও ১৭৪ বাংলাদেশি। সেলিমের মতো তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফিরেছেন তারাও।
এসব কর্মীরা ফিরেছেন এক কাপড়ে। তাদের কেউ ফিরেছেন খালি পায়ে, কারও মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি, চেহারায় ক্লান্তির ছাপ, কেউবা ফিরেছেন কর্মস্থলের পোশাকেই। তাদের সকলের হাত ছিলো খালি। একবারে শুণ্য, নিঃস্ব হয়ে ফিরেছেন তারা। বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফেরার সম্বলটুকুও ছিলো না তাদের। রাতেই ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম বিমান বন্দরে খাবার সরবরাহসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জরুরি সেবা দিয়েছে।
সেলিম জানান, তিনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন সেটি ছিলো একটি নির্মাণ কোম্পানি। ৫ হাজার কর্মী কাজ করতো। ছাঁটাই করতে করতে বর্তমান কর্মীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ২০০ জনে। কিন্তু এই ২০০ জনও ঠিকমতো বেতন পাচ্ছেন না। আকামা থাকার পরও অনেককে কোন কারণ ছাড়াই ধরে নিয়ে যাচ্ছে সেদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আবার অনেকে বেতন না পেয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন অন্যত্র। দীর্ঘদিনের তিক্ত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সেলিম জানান, সৌদি আরবজুড়ে বিদেশি শ্রমিকদের মধ্যে এক ধরনের অরাজকতা বিরাজ করছে। ছাড় পাচ্ছেন না বৈধ কাগজপত্র থাকা কর্মীরাও। অধিকাংশ কর্মীই বেতন পাচ্ছেন না মাসের পর মাস।
ফেরত আরেকজন টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার মনির হোসেন। বছর দুয়েক আগে ৫ লাখ টাকা খরচ করে তিনি দেশটিতে হাউজ ড্রাইভারের কাজ নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ওই মালিকের অধীনে কোন কাজই ছিলো না। তাই মালিকের অনুমতি নিয়েও মোটা অঙ্কের উৎকোচ দিয়ে অন্যত্র কাজ নেন তিনি। কিন্তু আকামা মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন আকামা করে দেয়নি মালিক। এদিকে, পূর্বে যেখানে কাজ করতেন সেখানে বেতন না পাওয়ায় আরেক জায়গায় কাজ খুঁজতে বের হন। আর তখনই পুলিশ তাকে পাকড়াও করে। এরপর ১৪দিন ডিপার্টটেশন সেন্টারে থাকার পর তাকে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
ফিরে আসা এই ১৭৫ জনের একজন চাঁদপুরের বাবুল হোসেন। তার অভিযোগ, সৌদিতে ৬ মাসের বৈধ আকামা থাকা সত্ত্বেও কর্মস্থল থেকে ধরে তাকে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তার কোন কথা শোনেনি সে দেশের প্রশাসন। প্রত্যেকের অভিযোগ প্রায় একই।
ফেরত কর্মীরা জানান, প্রতিদিন শত শত কর্মীকে সেদেশের প্রশাসন গ্রেপ্তার করছে। রিয়াদ ডিপার্টেশন ক্যাম্পে এখনও হাজার খানেক বাংলাদেশি কর্মী বন্দি রয়েছেন।
টাঙ্গাইলের আলিম, নরসিংদীর মো. জোবাইর, লক্ষ্মীপুরের ফরিদ, মুন্সিগঞ্জের শরিফ হোসেন, মেহেরপুরের সেলিম রেজাসহ অনেকের অভিযোগ তাদের বৈধ আকামা থাকা সত্ত্বেও তাদের জোরপূর্বক ধরে জেলখানা পাঠিয়ে দিচ্ছে। এরপর কিছুদিন সেখানে রেখে দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে।
কয়েকজন কর্মীর অভিযোগ, তাদের কফিল (মালিক) আকামা নতুন করে নবায়ন করেনি বা আকামা বাতিল করে দিয়েছে। ফলে তাদের আর সেদেশে থাকতে দেয়া হচ্ছে না। এক্ষেত্রে সৌদিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের কোন সহযোগিতা করেনি বলেও অভিযোগ করেন ফিরে আসা এসব কর্মীরা। তারা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখনই ব্যবস্থা না নিলে বড় সমস্যা তৈরি হতে পারে সৌদি আরবের শ্রমবাজারে।
দেশটির সংবাদ মাধ্যম সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রম এবং আবাসন আইন অমান্য করায় সৌদি সরকার অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩৮ লাখ বিদেশিকে আটক করেছে। ২০১৭ সাল থেকে দেশটির সরকার এই আটক অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আটক ৩৭ লাখ ৯০ হাজার ১৭৩ জনের মধ্যে ২৯ লাখ ৫০০ জন আবাসন আইন অমান্য, ৫ লাখ ৮৩ হাজার ৬০২ জন শ্রম আইন অমান্য এবং ২ লাখ ৪৭ হাজার ২২০ জনকে সীমান্ত আইন অমান্য করায় আটক করা হয়েছে।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত জুন থেকে ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৫২১ জন বিদেশি আটক হয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালের নভেম্বর থেকে ৯ লাখ ৪০ হাজার ১০০ বিদেশিকে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
অবৈধ একজনও সৌদিতে থাকতে পারবে না: এদিকে, রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের বরাতে আমাদের কূটনৈতিক রিপোর্টার জানান, সৌদি আরবে অবৈধ বাংলাদেশীদের দেশে ফেরানো নিয়ে এক অরাজক পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। দেশটিতে কত অবৈধ রয়েছে তা খোদ সৌদি সরকারও জানে না। তবে তাদের ধরতে সৌদি পুলিশ প্রতিদিনই অভিযান চালাচ্ছে ২০১২ সাল থেকে। লাখে লাখে অবৈধরা ধরা পড়ছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশীও আছেন। তাদের নাগরিকত্ব যাচাই এবং ট্রাভেল পাস ইস্যুর জন্য চাপ বাড়ছে দূতাবাসের ওপর। অনেক আগে সৌদি পাড়ি জমানো কিছু রোহিঙ্গাও আসছেন ট্রাভেল পাসের জন্য। ফলে, নাগরিকত্বের বিষয়টি নিশ্চিত না হয়ে কাউকেই ট্রাভেল পাস ইস্যু করা যাচ্ছে না।
ঢাকা থেকে নাগরিকত্বের রিপোর্ট পেতে সময় লাগছে। এক কর্মকর্তা বলেন, সৌদি আরবে এখনও বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে রোহিঙ্গাদের যাওয়া অব্যাহত রয়েছে। দেশটিতে তারা বিশেষ সুবিধা পায়। ফলে, ওই মোহ তাদের সৌদির প্রতি আগ্রহী করে তুলছে। অসাধু পাচারকারীরা সূযোগটি নিচ্ছে। তারা মোটা অংকের বিনিময়ে সৌদি আরবে রোহিঙ্গাদের বাংলাদশী পাসপোর্ট দিয়ে পাচার করছে। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, গত ৬ মাসে লাখো বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী সৌদি আরব গেছেন। এর মধ্যে ’শ খানেক রোহিঙ্গা থাকা অস্বাভাবিক নয়। তবে এটা নিশ্চিত যে অবৈধ হয়ে পড়া একজন রোহিঙ্গাকেও বাংলাদেশে ফেরার ট্রাভেল পার্স ইস্যু করেনি রিয়াদস্থ দূতাবাস। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, একজন অবৈধও সৌদি থাকতে পারবেন না। তবে আশার দিক হচ্ছে বাংলাদেশি যারা অবৈধ হওয়ার কারণে দেশে ফিরছেন তারা নতুন করে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করে দেশটিতে ফের যেতে পারবেন। আগে ২ বছরের মধ্যে রি-এন্ট্রির সুযোগ ছিল না। এখন সেই বাধা কেটেছে। দু’বছর নয়, পরদিনই তারা চাইলে বৈধভাবে সৌদি যেতে পারবেন।
সেলিম রেজা রোববার রাতে দেশে ফেরেন। রাত ১১টা ৭ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি-৮০৪ ফ্লাইটে করে তার সঙ্গে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান আরও ১৭৪ বাংলাদেশি। সেলিমের মতো তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফিরেছেন তারাও।
এসব কর্মীরা ফিরেছেন এক কাপড়ে। তাদের কেউ ফিরেছেন খালি পায়ে, কারও মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি, চেহারায় ক্লান্তির ছাপ, কেউবা ফিরেছেন কর্মস্থলের পোশাকেই। তাদের সকলের হাত ছিলো খালি। একবারে শুণ্য, নিঃস্ব হয়ে ফিরেছেন তারা। বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফেরার সম্বলটুকুও ছিলো না তাদের। রাতেই ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম বিমান বন্দরে খাবার সরবরাহসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জরুরি সেবা দিয়েছে।
সেলিম জানান, তিনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন সেটি ছিলো একটি নির্মাণ কোম্পানি। ৫ হাজার কর্মী কাজ করতো। ছাঁটাই করতে করতে বর্তমান কর্মীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ২০০ জনে। কিন্তু এই ২০০ জনও ঠিকমতো বেতন পাচ্ছেন না। আকামা থাকার পরও অনেককে কোন কারণ ছাড়াই ধরে নিয়ে যাচ্ছে সেদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আবার অনেকে বেতন না পেয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন অন্যত্র। দীর্ঘদিনের তিক্ত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সেলিম জানান, সৌদি আরবজুড়ে বিদেশি শ্রমিকদের মধ্যে এক ধরনের অরাজকতা বিরাজ করছে। ছাড় পাচ্ছেন না বৈধ কাগজপত্র থাকা কর্মীরাও। অধিকাংশ কর্মীই বেতন পাচ্ছেন না মাসের পর মাস।
ফেরত আরেকজন টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার মনির হোসেন। বছর দুয়েক আগে ৫ লাখ টাকা খরচ করে তিনি দেশটিতে হাউজ ড্রাইভারের কাজ নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ওই মালিকের অধীনে কোন কাজই ছিলো না। তাই মালিকের অনুমতি নিয়েও মোটা অঙ্কের উৎকোচ দিয়ে অন্যত্র কাজ নেন তিনি। কিন্তু আকামা মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন আকামা করে দেয়নি মালিক। এদিকে, পূর্বে যেখানে কাজ করতেন সেখানে বেতন না পাওয়ায় আরেক জায়গায় কাজ খুঁজতে বের হন। আর তখনই পুলিশ তাকে পাকড়াও করে। এরপর ১৪দিন ডিপার্টটেশন সেন্টারে থাকার পর তাকে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
ফিরে আসা এই ১৭৫ জনের একজন চাঁদপুরের বাবুল হোসেন। তার অভিযোগ, সৌদিতে ৬ মাসের বৈধ আকামা থাকা সত্ত্বেও কর্মস্থল থেকে ধরে তাকে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তার কোন কথা শোনেনি সে দেশের প্রশাসন। প্রত্যেকের অভিযোগ প্রায় একই।
ফেরত কর্মীরা জানান, প্রতিদিন শত শত কর্মীকে সেদেশের প্রশাসন গ্রেপ্তার করছে। রিয়াদ ডিপার্টেশন ক্যাম্পে এখনও হাজার খানেক বাংলাদেশি কর্মী বন্দি রয়েছেন।
টাঙ্গাইলের আলিম, নরসিংদীর মো. জোবাইর, লক্ষ্মীপুরের ফরিদ, মুন্সিগঞ্জের শরিফ হোসেন, মেহেরপুরের সেলিম রেজাসহ অনেকের অভিযোগ তাদের বৈধ আকামা থাকা সত্ত্বেও তাদের জোরপূর্বক ধরে জেলখানা পাঠিয়ে দিচ্ছে। এরপর কিছুদিন সেখানে রেখে দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে।
কয়েকজন কর্মীর অভিযোগ, তাদের কফিল (মালিক) আকামা নতুন করে নবায়ন করেনি বা আকামা বাতিল করে দিয়েছে। ফলে তাদের আর সেদেশে থাকতে দেয়া হচ্ছে না। এক্ষেত্রে সৌদিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের কোন সহযোগিতা করেনি বলেও অভিযোগ করেন ফিরে আসা এসব কর্মীরা। তারা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখনই ব্যবস্থা না নিলে বড় সমস্যা তৈরি হতে পারে সৌদি আরবের শ্রমবাজারে।
দেশটির সংবাদ মাধ্যম সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রম এবং আবাসন আইন অমান্য করায় সৌদি সরকার অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩৮ লাখ বিদেশিকে আটক করেছে। ২০১৭ সাল থেকে দেশটির সরকার এই আটক অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আটক ৩৭ লাখ ৯০ হাজার ১৭৩ জনের মধ্যে ২৯ লাখ ৫০০ জন আবাসন আইন অমান্য, ৫ লাখ ৮৩ হাজার ৬০২ জন শ্রম আইন অমান্য এবং ২ লাখ ৪৭ হাজার ২২০ জনকে সীমান্ত আইন অমান্য করায় আটক করা হয়েছে।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত জুন থেকে ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৫২১ জন বিদেশি আটক হয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালের নভেম্বর থেকে ৯ লাখ ৪০ হাজার ১০০ বিদেশিকে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
অবৈধ একজনও সৌদিতে থাকতে পারবে না: এদিকে, রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের বরাতে আমাদের কূটনৈতিক রিপোর্টার জানান, সৌদি আরবে অবৈধ বাংলাদেশীদের দেশে ফেরানো নিয়ে এক অরাজক পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। দেশটিতে কত অবৈধ রয়েছে তা খোদ সৌদি সরকারও জানে না। তবে তাদের ধরতে সৌদি পুলিশ প্রতিদিনই অভিযান চালাচ্ছে ২০১২ সাল থেকে। লাখে লাখে অবৈধরা ধরা পড়ছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশীও আছেন। তাদের নাগরিকত্ব যাচাই এবং ট্রাভেল পাস ইস্যুর জন্য চাপ বাড়ছে দূতাবাসের ওপর। অনেক আগে সৌদি পাড়ি জমানো কিছু রোহিঙ্গাও আসছেন ট্রাভেল পাসের জন্য। ফলে, নাগরিকত্বের বিষয়টি নিশ্চিত না হয়ে কাউকেই ট্রাভেল পাস ইস্যু করা যাচ্ছে না।
ঢাকা থেকে নাগরিকত্বের রিপোর্ট পেতে সময় লাগছে। এক কর্মকর্তা বলেন, সৌদি আরবে এখনও বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে রোহিঙ্গাদের যাওয়া অব্যাহত রয়েছে। দেশটিতে তারা বিশেষ সুবিধা পায়। ফলে, ওই মোহ তাদের সৌদির প্রতি আগ্রহী করে তুলছে। অসাধু পাচারকারীরা সূযোগটি নিচ্ছে। তারা মোটা অংকের বিনিময়ে সৌদি আরবে রোহিঙ্গাদের বাংলাদশী পাসপোর্ট দিয়ে পাচার করছে। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, গত ৬ মাসে লাখো বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী সৌদি আরব গেছেন। এর মধ্যে ’শ খানেক রোহিঙ্গা থাকা অস্বাভাবিক নয়। তবে এটা নিশ্চিত যে অবৈধ হয়ে পড়া একজন রোহিঙ্গাকেও বাংলাদেশে ফেরার ট্রাভেল পার্স ইস্যু করেনি রিয়াদস্থ দূতাবাস। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, একজন অবৈধও সৌদি থাকতে পারবেন না। তবে আশার দিক হচ্ছে বাংলাদেশি যারা অবৈধ হওয়ার কারণে দেশে ফিরছেন তারা নতুন করে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করে দেশটিতে ফের যেতে পারবেন। আগে ২ বছরের মধ্যে রি-এন্ট্রির সুযোগ ছিল না। এখন সেই বাধা কেটেছে। দু’বছর নয়, পরদিনই তারা চাইলে বৈধভাবে সৌদি যেতে পারবেন।
No comments