ভলিউম বই বাঁধানোর টাকাও মেরে খেয়েছেন তারা by জাবেদ রহিম বিজন
ইউনিয়ন
ভূমি অফিসের রেজিস্টার, বিএস ও এসএ ভলিউম বই বাঁধাইয়ের টাকাও আত্মসাৎ
হয়েছে নবীনগরে। সহকারী কমিশনার (এসি ল্যান্ড) জেপি দেওয়ান আর অফিস সহকারী
(নাজির) মিহির কুমার ঘোষের লাগামছাড়া অনিয়ম-দুর্নীতির এমন অনেক অভিযোগ এখন
সেখানকার ভূমি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুখে মুখে। সহকারী কমিশনারের (ভূমি)
বিদায় অনুষ্ঠানেও এর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ইউনিয়নের ভূমি সহকারী
কর্মকর্তাদের কেউ কেউ। জেপি দেওয়ানকে উদ্দেশ্য করে এক ভূমি সহকারী
কর্মকর্তা বলেন, ‘যা করছেন না করছেন, মন থেকে মাফ করে দিয়েছি’। সাধারণ
মানুষের বিস্ত্তর অভিযোগ তো আছেই। সম্প্রতি এনিয়ে দৈনিক মানবজমিনে রিপোর্ট
প্রকাশের পর অফিস সহকারী মিহির কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি করে
জেলা প্রশাসন। শিবপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে বলিউম বই আছে ২৬টি। এরমধ্যে শুধু
পরিদর্শন বইটি বাঁধাই করা হয়েছে। ওই ভূমি অফিসের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়
তারা সবকটি বলিউম বই বাঁধাই করার জন্যে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে
নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু বাজেট নেই বলে সেগুলো ফেরত দেয়া হয়। বড়িকান্দি
ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ৩২টি বইয়ের মধ্যে বাঁধাই করা হয়েছে ১৭টি। লাউর-ফতেহপুর
ইউনিয়নে ৪০টি বইয়ের মধ্যে বাঁধাই করা হয়েছে ১৩টি। সলিমগঞ্জ ইউনিয়নে ৫০টি
বইয়ের মধ্যে বাঁধাই করা হয়েছে ২৮টি বই। নবীনগর উপজেলায় ১৫টি ইউনিয়ন ভূমি
অফিস রয়েছে। সব অফিসেই নামকাওয়াস্তে কয়েকটি ভলিউম বই বাঁধাই করার অভিযোগ
রয়েছে। তবে আগস্ট মাসে এসি ল্যান্ড জেপি দেওয়ান তার অফিসিয়াল ফেসবুক আইডিতে
ভলিউম বই বিতরণের ছবিসহ একটি পোস্ট দেন। যাতে লেখা হয়- ‘আজ নবীনগর উপজেলার
সকল ইউনিয়ন ভূমি অফিসে রেজিস্টার, বিএস ও এসএ ভলিউমসমূহ মখমলের কাপড়ে
বাঁধাইপূর্বক ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে’।
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম দাবি করেন- তারা মোট ১৭১২টি
ভলিউম বই বাঁধিয়েছেন। একাজের জন্যে মোট বরাদ্দ পেয়েছিলেন ৪ লাখ ২০ হাজার
টাকার মতো। এ থেকে ভ্যাট বাদে ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকার কাজ করতে পেরেছেন।
২০১৭ সালের আগস্টে নবীনগর সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে অফিস সহকারী হিসেবে যোগদেন মিহির কুমার ঘোষ। তার যোগদানের পর থেকে গোটা নবীনগরের ভূমি সেক্টরে অনিয়ম-দুর্নীতি চরমে উঠে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) জেপি দেওয়ানও ছিলেন তার মতোই বেপরোয়া। ফলে এই উপজেলায় ভূমির দুর্নীতি হয়ে পড়ে লাগামছাড়া। পদে পদে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ নেয়া ছাড়া কোনো কাজ করেননি তারা। একটি মিসকেসের জন্যে ১ লাখ টাকা ঘুষ নেন মিহির কুমার ঘোষ। বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের মুছা মিয়া মানবজমিনের এ প্রতিবেদকের কাছে টাকা দেয়ার কথা স্বীকার করেন। জানান, থোল্লাকান্দি মৌজায় থাকা তার জমির দাগ নম্বর ২২৩৫, ২২৩৬ ও ২২৩৭ এর স্থলে ২২০৫, ২২০৬ ও ২২০৭ লিপিবদ্ধ হয়। ওই দাগ নাম্বার পরিবর্তনের জন্যে মিসকেস করেন তিনি। এর জন্যে কয়েক মাস ঘুরে হয়রান হন। একাধিকবার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে দেখা করেন। সর্বশেষ সহকারী কমিশনার তাকে এ বিষয়ে মিহিরের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। মিহিরের কাছে যাওয়ার পর সে তার কাছে ১ লাখ টাকা দাবি করেন। এই টাকা দেয়ার পর ১৫ দিনের মধ্যে কাজ হয়ে যায়। নামজারি ও জমা খারিজের সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে মিহিরের বিরুদ্ধে। নামজারিতে ত্রুটির জন্যে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা, ছোটখাটো রেকর্ড সংশোধনের জন্যে ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা, ভিপি নামজারির জন্যে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া খাসজমি বন্দোবস্তে নিজের নামে ১০ হাজার এবং সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নামে আরো ২০ হাজার টাকা আদায় করেন মিহির। বাজার ভিটি নবায়নের নামেও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করা হয় তার বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে ৫০০ টাকার ডিসিআরের জন্যে ২ হাজার টাকা নেয়া হয়। ভিপি লিজের ফাইল নবায়নেও দিতে হয় তাকে মোটা অঙ্কের টাকা।
শিবপুর মৌজার বিনিময় মামলার (৩৩/৬৯-৭০) একটি ফাইল গায়েব করে দেয়ার অভিযোগও করেন মো. শাহ আলম নামের এক ভুক্তভোগী মিহিরের বিরুদ্ধে। জেলা শহরে পাঁচতলা বাড়ি রয়েছে মিহিরের। রয়েছে গাড়ি। ঢাকায় একটি হাসপাতালের মালিক বলেও তার প্রতিবেশীরা জানান। জেলা শহর থেকে নবীনগরের কর্মস্থলে যাতায়তে রিজার্ভ স্পিডবোট ব্যবহার করেন এই সরকারি কর্মচারী। যাওয়া- আসা বাবদ মোট ৩ হাজার টাকা রিজার্ভের ভাড়া গুনেন। অন্যদিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জেপি দেওয়ান ২ বছর কর্মরত ছিলেন এখানে। ইংল্যান্ডে প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়ে ১৪ই আগস্ট নবীনগর থেকে বিদায় নেন তিনি। দু-বছর কর্মকালে নানা কারণে আলোচিত ছিলেন এই কর্মকর্তা। মোবাইল কোর্ট দিয়ে লোকজনকে ধরে এনে নিজেই মারধর করেছেন। ব্যক্তি বিশেষের জায়গা কলেজের নামে নামজারি করে দেয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আলোচিত। সলিমগঞ্জ এলাকার বাড়াইল গ্রামের কিতাব আলী ও ছিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন ৩৩৮ ও ৩৪১ দাগের মোট ৪২ শতক জায়গা গত ৮ই জুলাই জেপি দেওয়ান নামজারির কোনো প্রস্তাব ছাড়াই স্থানীয় সলিমগঞ্জ কলেজের নামে নামজারি করে দেন। সলিমগঞ্জ বাজারে ২০১৮ সালে মো. মাসুম নামের একজনকে আধাশতক সরকারি জায়গা বন্দোবস্ত দেয়া হয়। পরে এই বন্দোবস্ত বাতিল করে আরেকজনকে দেয়া হয়। মাসুমের বিরুদ্ধে মামলা করে তাকে জেলে পাঠানো হয়।
২০১৭ সালের আগস্টে নবীনগর সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে অফিস সহকারী হিসেবে যোগদেন মিহির কুমার ঘোষ। তার যোগদানের পর থেকে গোটা নবীনগরের ভূমি সেক্টরে অনিয়ম-দুর্নীতি চরমে উঠে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) জেপি দেওয়ানও ছিলেন তার মতোই বেপরোয়া। ফলে এই উপজেলায় ভূমির দুর্নীতি হয়ে পড়ে লাগামছাড়া। পদে পদে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ নেয়া ছাড়া কোনো কাজ করেননি তারা। একটি মিসকেসের জন্যে ১ লাখ টাকা ঘুষ নেন মিহির কুমার ঘোষ। বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের মুছা মিয়া মানবজমিনের এ প্রতিবেদকের কাছে টাকা দেয়ার কথা স্বীকার করেন। জানান, থোল্লাকান্দি মৌজায় থাকা তার জমির দাগ নম্বর ২২৩৫, ২২৩৬ ও ২২৩৭ এর স্থলে ২২০৫, ২২০৬ ও ২২০৭ লিপিবদ্ধ হয়। ওই দাগ নাম্বার পরিবর্তনের জন্যে মিসকেস করেন তিনি। এর জন্যে কয়েক মাস ঘুরে হয়রান হন। একাধিকবার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে দেখা করেন। সর্বশেষ সহকারী কমিশনার তাকে এ বিষয়ে মিহিরের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। মিহিরের কাছে যাওয়ার পর সে তার কাছে ১ লাখ টাকা দাবি করেন। এই টাকা দেয়ার পর ১৫ দিনের মধ্যে কাজ হয়ে যায়। নামজারি ও জমা খারিজের সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে মিহিরের বিরুদ্ধে। নামজারিতে ত্রুটির জন্যে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা, ছোটখাটো রেকর্ড সংশোধনের জন্যে ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা, ভিপি নামজারির জন্যে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া খাসজমি বন্দোবস্তে নিজের নামে ১০ হাজার এবং সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নামে আরো ২০ হাজার টাকা আদায় করেন মিহির। বাজার ভিটি নবায়নের নামেও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করা হয় তার বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে ৫০০ টাকার ডিসিআরের জন্যে ২ হাজার টাকা নেয়া হয়। ভিপি লিজের ফাইল নবায়নেও দিতে হয় তাকে মোটা অঙ্কের টাকা।
শিবপুর মৌজার বিনিময় মামলার (৩৩/৬৯-৭০) একটি ফাইল গায়েব করে দেয়ার অভিযোগও করেন মো. শাহ আলম নামের এক ভুক্তভোগী মিহিরের বিরুদ্ধে। জেলা শহরে পাঁচতলা বাড়ি রয়েছে মিহিরের। রয়েছে গাড়ি। ঢাকায় একটি হাসপাতালের মালিক বলেও তার প্রতিবেশীরা জানান। জেলা শহর থেকে নবীনগরের কর্মস্থলে যাতায়তে রিজার্ভ স্পিডবোট ব্যবহার করেন এই সরকারি কর্মচারী। যাওয়া- আসা বাবদ মোট ৩ হাজার টাকা রিজার্ভের ভাড়া গুনেন। অন্যদিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জেপি দেওয়ান ২ বছর কর্মরত ছিলেন এখানে। ইংল্যান্ডে প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়ে ১৪ই আগস্ট নবীনগর থেকে বিদায় নেন তিনি। দু-বছর কর্মকালে নানা কারণে আলোচিত ছিলেন এই কর্মকর্তা। মোবাইল কোর্ট দিয়ে লোকজনকে ধরে এনে নিজেই মারধর করেছেন। ব্যক্তি বিশেষের জায়গা কলেজের নামে নামজারি করে দেয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আলোচিত। সলিমগঞ্জ এলাকার বাড়াইল গ্রামের কিতাব আলী ও ছিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন ৩৩৮ ও ৩৪১ দাগের মোট ৪২ শতক জায়গা গত ৮ই জুলাই জেপি দেওয়ান নামজারির কোনো প্রস্তাব ছাড়াই স্থানীয় সলিমগঞ্জ কলেজের নামে নামজারি করে দেন। সলিমগঞ্জ বাজারে ২০১৮ সালে মো. মাসুম নামের একজনকে আধাশতক সরকারি জায়গা বন্দোবস্ত দেয়া হয়। পরে এই বন্দোবস্ত বাতিল করে আরেকজনকে দেয়া হয়। মাসুমের বিরুদ্ধে মামলা করে তাকে জেলে পাঠানো হয়।
No comments