ট্রেনে-স্টেশনে কিশোর অপরাধীরা বেপরোয়া: ঘটছে ছিনতাই, ধর্ষণ ও নৃশংস খুন by রেজোয়ান বিশ্বাস
কালের কণ্ঠ অনলাইন, ১৪ জুলাই, ২০১৯:
কমলাপুরসহ
সারা দেশে রেলস্টেশনকেন্দ্রিক কয়েক শ ভাসমান কিশোর অপরাধীর তালিকা করেও
তাদের ধরতে পারছে না পুলিশ। ট্রেনে এক এলাকায় অপরাধ করে আরেক এলাকায় গাঢাকা
দেওয়ার কারণেই তাদের ধরতে বেগ পেতে হচ্ছে বলে পুলিশ দাবি করছে। এর ফলে
চলন্ত ট্রেনে ছিনতাই, ছুরিকাঘাত ও ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে খুন-জখম, এমনকি
ট্রেনে ধর্ষণের মতো অপরাধে জড়িয়ে গেছে কিশোর অপরাধীরা। তাদের দিয়ে অস্ত্র ও
মাদক এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে বহন করানো হচ্ছে বলে পুলিশের একাধিক
প্রতিবেদনেই উঠে এসেছে। তবে কিশোর অপরাধ দমনে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষেরও দায় আছে
বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ অবস্থায় পুলিশের পক্ষ থেকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এতে টিকিটে ট্রেনযাত্রীদের নাম থাকা এবং স্টেশনকেন্দ্রিক ভাসমান লোকজনের ওপর নজরদারি ব্যবস্থার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তবে ট্রেনযাত্রীদের অভিযোগ, রেল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি জিআরপি পুলিশের দায়িত্বহীনতার কারণেও অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। অন্যদিকে পুলিশ ট্রেনকেন্দ্রিক কিশোর অপরাধীদের তালিকা করলেও তাদের সংখ্যা জানাতে পারেনি রেলওয়ে পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
রেলওয়ে পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. সামসুদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ট্রেনকেন্দ্রিক অপরাধীদের বেশির ভাগই কিশোর। সামাজিক নানা কারণে এরা অপরাধ জগতে পা বাড়াচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যারাই ট্রেনে যাত্রীদের ছিনতাইয়ের পর হত্যা ও ধর্ষণ করেছে তাদের বেশির ভাগকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নেওয়া হয়েছে।
রেলওয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ভাসমান কিশোররাই ট্রেনের ভেতরে ও স্টেশনকেন্দ্রিক সব অপরাধের কেন্দ্রে রয়েছে। এসব অপরাধীর তালিকার পাশাপাশি তাদের কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় তার চিন্তাভাবনা চলছে। এ ক্ষেত্রে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা একটি পরামর্শমূলক প্রস্তাব বা সুপারিশ করেছি। সেটা যাচাই-বাছাই চলছে। এটা বাস্তবায়িত হলে তার সুফল প্রতিটি যাত্রীই পাবে। তিনি জানান, এই সুপারিশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—স্টেশনকেন্দ্রিক ভাসমান লোকজনের ওপর নাজরদারি রাখা ও ট্রেনের টিকিটে যাত্রীদের নাম লেখা থাকতে হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জিআরপি বা রেলওয়ে পুলিশের কারণেও অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পুলিশ থাকতেও অপরাধীরা কিভাবে ছাদে উঠে ছিনতাই করছে জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, অনেক সময় লুকিয়ে এসব অপরাধী ট্রেনে ওঠে।
আরমান শেখ নামে এক ট্রেনযাত্রী কালের কণ্ঠকে বলেন, ব্যবসার কাজে তিনি নিয়মিত রাতে ও দিনে ট্রেনে যাওয়া-আসা করেন। এতে ট্রেনকেন্দ্রিক জিআরপি পুলিশের অনেক দায়িত্বহীনতা তার চোখে পড়ে। ট্রেনে মাদক কারবারি, কালোবাজারিদের পাশাপাশি কিশোর অপরাধীদের দেখেও না দেখার ভান করে অর্থের বিনিময়ে পুলিশ তাদের সুযোগ করে দেয়। মূলত জিআরপি পুলিশের ব্যর্থতার কারণেই ধর্ষণ ও ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটছে।
ট্রেন ও স্টেশনকেন্দ্রিক অপরাধের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে ঘৃণ্য ঘটনা ঘটেছে গত বুধবার কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি ট্রেনে। সম্রাট নামে এক বখাটে এক শিশুকে ট্রেনে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ ঘটনার কিছুদিন আগে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের টয়লেটে মুখ চেপে ধরে এক কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। এরও আগে কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকায় কিছু মালপত্র কিনতে আসা চার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোস্তাক আহমেদ, আবুল কালাম, হোসেন ও আলামিনের কাছ থেকে টাকা, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাদের মধ্যে তিনজনকে চলন্ত ট্রেন থেকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। এতে মোস্তফা নামে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। বাকিরা এখন পঙ্গু হয়ে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। রেলওয়ে পুলিশ বলছে, তারা গত এক বছরে অর্ধশতাধিক অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে।
রেলওয়ে পুলিশের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব কিশোর অপরাধীর বেশির ভাগ ছিন্নমূল শিশু। তাদের বেশির ভাগ বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে না। বেশির ভাগই মাদকাসক্ত। অবহেলা আর ঠিকমতো পারিবারিক বন্ধনে না থাকার কারণে এরা অপরাধ জগতে পা বাড়াচ্ছে। এরা ট্রেনেই থাকে, ট্রেনেই ঘুমায় আবার স্ট্রেশনেই ঘর তৈরি করে। তাদের অনেকেই মা-বাবার নামও জানে না। এরা এক এলাকায় অপরাধ করে অন্য এলাকায় চলে যায়। ঢাকায় অপরাধ করে ওরা যায় রংপুরে। আবার রংপুরে যে অপরাধ করে চলে আসে ঢাকায়। অথবা চট্টগ্রামে চলে যায়। সেখান থেকে আবার সিলেট না হয় রাজশাহী না হয় অন্য এলাকায় চলে যায়।
ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম বলেন, গত প্রায় এক বছরে ট্রেনের ছাদ থেকে ফেলে হত্যা, দুটি ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বেশির ভাগ অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কিশোর সংশোধনাগার কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
এ অবস্থায় পুলিশের পক্ষ থেকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এতে টিকিটে ট্রেনযাত্রীদের নাম থাকা এবং স্টেশনকেন্দ্রিক ভাসমান লোকজনের ওপর নজরদারি ব্যবস্থার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তবে ট্রেনযাত্রীদের অভিযোগ, রেল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি জিআরপি পুলিশের দায়িত্বহীনতার কারণেও অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। অন্যদিকে পুলিশ ট্রেনকেন্দ্রিক কিশোর অপরাধীদের তালিকা করলেও তাদের সংখ্যা জানাতে পারেনি রেলওয়ে পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
রেলওয়ে পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. সামসুদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ট্রেনকেন্দ্রিক অপরাধীদের বেশির ভাগই কিশোর। সামাজিক নানা কারণে এরা অপরাধ জগতে পা বাড়াচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যারাই ট্রেনে যাত্রীদের ছিনতাইয়ের পর হত্যা ও ধর্ষণ করেছে তাদের বেশির ভাগকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নেওয়া হয়েছে।
রেলওয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ভাসমান কিশোররাই ট্রেনের ভেতরে ও স্টেশনকেন্দ্রিক সব অপরাধের কেন্দ্রে রয়েছে। এসব অপরাধীর তালিকার পাশাপাশি তাদের কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় তার চিন্তাভাবনা চলছে। এ ক্ষেত্রে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা একটি পরামর্শমূলক প্রস্তাব বা সুপারিশ করেছি। সেটা যাচাই-বাছাই চলছে। এটা বাস্তবায়িত হলে তার সুফল প্রতিটি যাত্রীই পাবে। তিনি জানান, এই সুপারিশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—স্টেশনকেন্দ্রিক ভাসমান লোকজনের ওপর নাজরদারি রাখা ও ট্রেনের টিকিটে যাত্রীদের নাম লেখা থাকতে হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জিআরপি বা রেলওয়ে পুলিশের কারণেও অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পুলিশ থাকতেও অপরাধীরা কিভাবে ছাদে উঠে ছিনতাই করছে জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, অনেক সময় লুকিয়ে এসব অপরাধী ট্রেনে ওঠে।
আরমান শেখ নামে এক ট্রেনযাত্রী কালের কণ্ঠকে বলেন, ব্যবসার কাজে তিনি নিয়মিত রাতে ও দিনে ট্রেনে যাওয়া-আসা করেন। এতে ট্রেনকেন্দ্রিক জিআরপি পুলিশের অনেক দায়িত্বহীনতা তার চোখে পড়ে। ট্রেনে মাদক কারবারি, কালোবাজারিদের পাশাপাশি কিশোর অপরাধীদের দেখেও না দেখার ভান করে অর্থের বিনিময়ে পুলিশ তাদের সুযোগ করে দেয়। মূলত জিআরপি পুলিশের ব্যর্থতার কারণেই ধর্ষণ ও ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটছে।
ট্রেন ও স্টেশনকেন্দ্রিক অপরাধের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে ঘৃণ্য ঘটনা ঘটেছে গত বুধবার কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি ট্রেনে। সম্রাট নামে এক বখাটে এক শিশুকে ট্রেনে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ ঘটনার কিছুদিন আগে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের টয়লেটে মুখ চেপে ধরে এক কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। এরও আগে কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকায় কিছু মালপত্র কিনতে আসা চার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোস্তাক আহমেদ, আবুল কালাম, হোসেন ও আলামিনের কাছ থেকে টাকা, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাদের মধ্যে তিনজনকে চলন্ত ট্রেন থেকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। এতে মোস্তফা নামে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। বাকিরা এখন পঙ্গু হয়ে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। রেলওয়ে পুলিশ বলছে, তারা গত এক বছরে অর্ধশতাধিক অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে।
রেলওয়ে পুলিশের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব কিশোর অপরাধীর বেশির ভাগ ছিন্নমূল শিশু। তাদের বেশির ভাগ বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে না। বেশির ভাগই মাদকাসক্ত। অবহেলা আর ঠিকমতো পারিবারিক বন্ধনে না থাকার কারণে এরা অপরাধ জগতে পা বাড়াচ্ছে। এরা ট্রেনেই থাকে, ট্রেনেই ঘুমায় আবার স্ট্রেশনেই ঘর তৈরি করে। তাদের অনেকেই মা-বাবার নামও জানে না। এরা এক এলাকায় অপরাধ করে অন্য এলাকায় চলে যায়। ঢাকায় অপরাধ করে ওরা যায় রংপুরে। আবার রংপুরে যে অপরাধ করে চলে আসে ঢাকায়। অথবা চট্টগ্রামে চলে যায়। সেখান থেকে আবার সিলেট না হয় রাজশাহী না হয় অন্য এলাকায় চলে যায়।
ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম বলেন, গত প্রায় এক বছরে ট্রেনের ছাদ থেকে ফেলে হত্যা, দুটি ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বেশির ভাগ অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কিশোর সংশোধনাগার কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
No comments