জনবল ও অত্যাধুনিক যন্ত্র সংকটে ফায়ার সার্ভিস by রুদ্র মিজান
বড়
কোনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে হিমশিম খায় ফায়ার সংশ্লিষ্ট সার্ভিস স্টেশন।
জরুরি ঘণ্টি বাজাতে হয় বিভিন্ন ফায়ার স্টেশনে। ততক্ষণে আগুন বাড়তেই থাকে।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডগুলোতে জনবল সংকটের বিষয়টি তীব্রভাবে অনুভব
করেছেন কর্তৃপক্ষ। অনেক কিছুতেই পরিবর্তন এসেছে। উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।
কিন্তু ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কাঙ্খিত তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি।
মহকুমা থেকে জেলা হয়েছে ১৯৮২ সালে।
কিন্তু জেলার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পদ বাড়েনি ফায়ার সার্ভিসের। এমনকি অগ্নি নির্বাপনের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সঙ্কটেও রয়েছে এই অধিদপ্তর।
২১টি মহকুমা থেকে হয়েছে ৬৪ জেলা। ফায়ার সার্ভিসের মহকুমাগুলোর দায়িত্ব পালন করতেন ২১ জন সহকারী পরিচালক। মহকুমা ব্যবস্থা পরিবর্তন হলেও পদ বাড়েনি। সমপর্যায়ের সরকারি অন্যান্য বিভাগের কর্মরতদের চেয়ে তারা বেতনও পান কম। সেভাবে বাড়েনি ফায়ারম্যানের সংখ্যাও। তবে বেড়েছে ফায়ার স্টেশন। নয় বছর আগে সারাদেশে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ছিলো ২০৬টি। এখন ৪৪২টি। সারা দেশে প্রায় ১০ হাজারের মতো জনবল থাকলেও ফায়ারম্যানের সংখ্যা কম। যে কারণে অপারেশনে কাজ করেন ছয় সহস্রাধিক ফায়ারম্যান। ২০শে ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রন করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। একে একে নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও গাজীপুর থেকেও ফায়ারম্যানরা অগ্নিনির্বাপনে অংশ নেন। ২৭টি ইউনিটের সদস্যরা সারারাত চেষ্টা চালিয়ে পরদিন সকালে আগুন নিয়ন্ত্রন করেন। একইভাবে গত ২৮ শে মার্চ বনানীর এফ আর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে ঢাকার বারিধারা, কুর্মিটোলা, মিরপুরসহ সদর দপ্তরের ফায়ারম্যানরা অংশ নেন।
এতে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ করেন। সারা দেশে গত বছরের হিসেবে প্রথম শ্রেণির ফয়ার স্টেশন ৭৩টি। বাকিগুলো দ্বিতীয় শ্রেণির। প্রথম শ্রেণির ফায়ার স্টেশনগুলোতে ৩৫ জন করে জনবল থাকার কথা। এরমধ্যে ফায়ারম্যান থাকার কথা ২২ জন। কিন্তু বাস্তবে ১৫-১৬ জনের বেশি ফায়ারম্যান নেই প্রথম শ্রেণির স্টেশনেও। একইভাবে দ্বিতীয় শ্রেণির ফায়ার স্টেশনগুলোতে মোট জনবল থাকার কথা ২৭ জন করে। এরমধ্যে ফায়ারম্যান থাকার কথা ১৬ জন করে। কিন্তু এসব স্টেশনে ৮-১০ জনের বেশি ফায়ারম্যান নেই।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জনসংখ্যা বেড়েছে। অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যাও বেড়েছে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের জনবল বাড়েনি। ফায়ার সার্ভিসের অন্তত ৩০ হাজার জনবল প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে কর্মরতরা জানান, প্রতিটি বিভাগে একজন করে আট জন পরিচালক থাকার কথা। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরে মাত্র তিন জন পরিচালক রয়েছেন। বিভাগীয় পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করছেন উপ-পরিচালকরা। এই অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক রয়েছেন ১৪ জন। জেলা পর্যায়ে সহকারী পরিচালকদের দায়িত্ব পালনের নিয়ম থাকলেও সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন উপ-সহকারী পরিচালকরা। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে সহকারী পরিচালক রয়েছেন ২৭ ও উপ-সহকারী পরিচালক রয়েছেন ৭৭ জন।
সূত্রমতে, জনবল সঙ্কট থাকায় ফায়ারম্যানরা টানা দুই থেকে তিন দিন অপারেশনে থাকলেও প্রয়োজনীয় বিশ্রাম ও খাবারের সুযোগ পান না। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে কর্মরতদের বেতন নিয়েও রয়েছে অসন্তোষ। একজন ফায়ারম্যান জানান, ফায়ারম্যানদের বেতন স্কেল-পুলিশ কনস্টেবল, বিজিবি জোয়ান ও কারারক্ষীদের চেয়ে এক গ্রেড নিচে। তিনি জানান, ফায়ার স্টেশন অফিসারদের নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায় পুলিশের সাব ইন্সপেক্টরদের মতোই। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের চাকরিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অধীনে। ১৯৮২ সাল পর্যন্ত এই দুটি পদে বেতনও সমান ছিলো। পর্যায়ক্রমে পুলিশের উপ-পরিদর্শকদের বেতন বেড়েছে, কিন্তু সেভাবে বাড়েনি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসারদের বেতন। স্টেশন অফিসারদের বেতন দ্বাদশ গ্রেডে, অন্যদিকে পুলিশের উপ-পরিদর্শকদের বেতন দশম গ্রেডে। তবে কর্মরতরা জানান, বেতন আরও কমে গিয়েছিলো। ১৩ তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছিলেন তারা।
সম্প্রতি সরকার এক গ্রেড উন্নীত করায় তারা বেতন পাচ্ছেন ১২তম গ্রেডে। জনবলের পাশাপাশি বাড়ানো দরকার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও। সারা দেশে ল্যাডার (মই) রয়েছে ২০টি। ঢাকায় রয়েছে মাত্র ৯টি। এরমধ্যে সম্প্রতি সর্বোচ্চ ৬৪ মিটারের দুটি ল্যাডার কেনা হয়েছে। টেকনিক্যাল কারণে এখনও তা ব্যবহার করা হয়নি। এছাড়াও ৫৪ মিটার ও ২৭ মিটারের ল্যাডার রয়েছে। বিশেষায়িত গাড়িও বাড়ানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসে বিশেষায়িত গাড়ি এখন প্রায় ৬শ’ টি। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মনে করেন, ল্যাডারসহ অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আরও প্রয়োজন।
এসব প্রয়োজনের বিষয়ে অবগত আছেন সরকারের সংশ্লিষ্টরা। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আশা করেন, শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরকে দ্রুত আধুনিকায়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৯শে মার্চ গণভবনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর বৈঠকে তিনি এমন নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন অগ্নিনির্বাপণের জন্য আধুনিক সব যন্ত্রপাতি শিগগিরই যুক্ত হবে ফায়ার সার্ভিসে। দ্রুততার সঙ্গে এ প্রতিষ্ঠানকে আধুনিকায়ন করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। ফায়ার সার্ভিস যতটুকু সমৃদ্ধ হয়েছে, তার সরকারের আমলেই হয়েছে বলে বৈঠকে মন্তব্য করেন তিনি।
কিন্তু জেলার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পদ বাড়েনি ফায়ার সার্ভিসের। এমনকি অগ্নি নির্বাপনের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সঙ্কটেও রয়েছে এই অধিদপ্তর।
২১টি মহকুমা থেকে হয়েছে ৬৪ জেলা। ফায়ার সার্ভিসের মহকুমাগুলোর দায়িত্ব পালন করতেন ২১ জন সহকারী পরিচালক। মহকুমা ব্যবস্থা পরিবর্তন হলেও পদ বাড়েনি। সমপর্যায়ের সরকারি অন্যান্য বিভাগের কর্মরতদের চেয়ে তারা বেতনও পান কম। সেভাবে বাড়েনি ফায়ারম্যানের সংখ্যাও। তবে বেড়েছে ফায়ার স্টেশন। নয় বছর আগে সারাদেশে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ছিলো ২০৬টি। এখন ৪৪২টি। সারা দেশে প্রায় ১০ হাজারের মতো জনবল থাকলেও ফায়ারম্যানের সংখ্যা কম। যে কারণে অপারেশনে কাজ করেন ছয় সহস্রাধিক ফায়ারম্যান। ২০শে ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রন করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। একে একে নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও গাজীপুর থেকেও ফায়ারম্যানরা অগ্নিনির্বাপনে অংশ নেন। ২৭টি ইউনিটের সদস্যরা সারারাত চেষ্টা চালিয়ে পরদিন সকালে আগুন নিয়ন্ত্রন করেন। একইভাবে গত ২৮ শে মার্চ বনানীর এফ আর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে ঢাকার বারিধারা, কুর্মিটোলা, মিরপুরসহ সদর দপ্তরের ফায়ারম্যানরা অংশ নেন।
এতে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ করেন। সারা দেশে গত বছরের হিসেবে প্রথম শ্রেণির ফয়ার স্টেশন ৭৩টি। বাকিগুলো দ্বিতীয় শ্রেণির। প্রথম শ্রেণির ফায়ার স্টেশনগুলোতে ৩৫ জন করে জনবল থাকার কথা। এরমধ্যে ফায়ারম্যান থাকার কথা ২২ জন। কিন্তু বাস্তবে ১৫-১৬ জনের বেশি ফায়ারম্যান নেই প্রথম শ্রেণির স্টেশনেও। একইভাবে দ্বিতীয় শ্রেণির ফায়ার স্টেশনগুলোতে মোট জনবল থাকার কথা ২৭ জন করে। এরমধ্যে ফায়ারম্যান থাকার কথা ১৬ জন করে। কিন্তু এসব স্টেশনে ৮-১০ জনের বেশি ফায়ারম্যান নেই।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জনসংখ্যা বেড়েছে। অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যাও বেড়েছে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের জনবল বাড়েনি। ফায়ার সার্ভিসের অন্তত ৩০ হাজার জনবল প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে কর্মরতরা জানান, প্রতিটি বিভাগে একজন করে আট জন পরিচালক থাকার কথা। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরে মাত্র তিন জন পরিচালক রয়েছেন। বিভাগীয় পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করছেন উপ-পরিচালকরা। এই অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক রয়েছেন ১৪ জন। জেলা পর্যায়ে সহকারী পরিচালকদের দায়িত্ব পালনের নিয়ম থাকলেও সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন উপ-সহকারী পরিচালকরা। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে সহকারী পরিচালক রয়েছেন ২৭ ও উপ-সহকারী পরিচালক রয়েছেন ৭৭ জন।
সূত্রমতে, জনবল সঙ্কট থাকায় ফায়ারম্যানরা টানা দুই থেকে তিন দিন অপারেশনে থাকলেও প্রয়োজনীয় বিশ্রাম ও খাবারের সুযোগ পান না। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে কর্মরতদের বেতন নিয়েও রয়েছে অসন্তোষ। একজন ফায়ারম্যান জানান, ফায়ারম্যানদের বেতন স্কেল-পুলিশ কনস্টেবল, বিজিবি জোয়ান ও কারারক্ষীদের চেয়ে এক গ্রেড নিচে। তিনি জানান, ফায়ার স্টেশন অফিসারদের নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায় পুলিশের সাব ইন্সপেক্টরদের মতোই। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের চাকরিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অধীনে। ১৯৮২ সাল পর্যন্ত এই দুটি পদে বেতনও সমান ছিলো। পর্যায়ক্রমে পুলিশের উপ-পরিদর্শকদের বেতন বেড়েছে, কিন্তু সেভাবে বাড়েনি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসারদের বেতন। স্টেশন অফিসারদের বেতন দ্বাদশ গ্রেডে, অন্যদিকে পুলিশের উপ-পরিদর্শকদের বেতন দশম গ্রেডে। তবে কর্মরতরা জানান, বেতন আরও কমে গিয়েছিলো। ১৩ তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছিলেন তারা।
সম্প্রতি সরকার এক গ্রেড উন্নীত করায় তারা বেতন পাচ্ছেন ১২তম গ্রেডে। জনবলের পাশাপাশি বাড়ানো দরকার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও। সারা দেশে ল্যাডার (মই) রয়েছে ২০টি। ঢাকায় রয়েছে মাত্র ৯টি। এরমধ্যে সম্প্রতি সর্বোচ্চ ৬৪ মিটারের দুটি ল্যাডার কেনা হয়েছে। টেকনিক্যাল কারণে এখনও তা ব্যবহার করা হয়নি। এছাড়াও ৫৪ মিটার ও ২৭ মিটারের ল্যাডার রয়েছে। বিশেষায়িত গাড়িও বাড়ানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসে বিশেষায়িত গাড়ি এখন প্রায় ৬শ’ টি। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মনে করেন, ল্যাডারসহ অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আরও প্রয়োজন।
এসব প্রয়োজনের বিষয়ে অবগত আছেন সরকারের সংশ্লিষ্টরা। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আশা করেন, শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরকে দ্রুত আধুনিকায়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৯শে মার্চ গণভবনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর বৈঠকে তিনি এমন নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন অগ্নিনির্বাপণের জন্য আধুনিক সব যন্ত্রপাতি শিগগিরই যুক্ত হবে ফায়ার সার্ভিসে। দ্রুততার সঙ্গে এ প্রতিষ্ঠানকে আধুনিকায়ন করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। ফায়ার সার্ভিস যতটুকু সমৃদ্ধ হয়েছে, তার সরকারের আমলেই হয়েছে বলে বৈঠকে মন্তব্য করেন তিনি।
No comments