রায়বেরিলির শিরায় শিরায় লেখা সোনিয়ার নাম by সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়
বেরিলিকে কে বিখ্যাত করেছেন? রাজা মেহদি আলি খান, নাকি সুরকার মদন মোহন?
এভাবে জিজ্ঞেস করলে কারও মগজের ঘণ্টি না–ও বেজে উঠতে পারে। বেরিলি কী? কোনো জায়গা বা জনপদ হলে সেটা ভারতের কোন জেলায়, তেমন প্রশ্নও উঠতে পারে। কিন্তু একটু খেই ধরিয়ে দেওয়ার মতো যদি মুম্বাইয়ের পুরোনো দিনের ডাকসাইটে সুন্দরী অভিনেত্রী সাধনার নামটি উচ্চারণ করা হয়, আশি কি নব্বই শতাংশ মানুষ সঙ্গে সঙ্গে গুনগুনিয়ে উঠবেন সেই অমর গানের কলি, ‘ঝুমকা গিরা রে, বেরিলি কি বাজার মে ঝুমকা গিরা রে’। মেরা সায়া সিনেমার জন্য গানটি লিখেছিলেন রাজা মেহদি আলি খান। সুর দিয়েছিলেন মদন মোহন। কণ্ঠ আশা ভোঁসলের। পর্দায় নেচে–গেয়ে মাত করেছিলেন সাধনা। উত্তর প্রদেশের অকিঞ্চিৎকর জনপদ বেরিলির বিখ্যাত হওয়া সেই প্রথম।
তবে, বেরিলির মতোই যদি প্রশ্ন করা হয়, ভারতের রাজনৈতিক মানচিত্রে রায়বেরিলিকে কে চিরবিখ্যাত করে গেছেন, তাহলে ব্যক্তির জায়গায় উঠে আসবে এক পরিবারের নাম। গান্ধী পরিবার। রায়বেরিলির সঙ্গে গান্ধী পরিবারের সম্পর্ক হলো শীতের সঙ্গে লেপের মতো। সম্পর্কের সেই পারিবারিক ধারাবাহিকতা রক্ষার দায়িত্বে এখন রয়েছেন সোনিয়া গান্ধী।
এই সোনিয়া বৃহস্পতিবার রায়বেরিলি আসবেন বলে ঘুম উবে গেছে কিশোরীলাল শর্মার। পঞ্চমবারের মতো সোনিয়ার নির্বাচন পরিচালনার প্রধান দায়িত্ব তাঁর বলেই নয়, কবে থেকে যে তিনি ম্যাডামের ‘ম্যান ফ্রাইডে’ হয়ে গেছেন নিজেই ভুলে গেছেন। রায়বেরিলি শহরের তিলক ভবনে বুধবার দুপুরে তিলধারণের স্থান নেই। গমগম করছে গোটা চত্বর। সব ব্লকের সব বুথের ভোট পরিচালকদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। হাতে হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বুথভিত্তিক ভোটার তালিকা। আগামী রোববার তাঁদের করণীয় কী কী সবাইকে পাখি পড়ানোর মতো করে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সোনিয়া গান্ধী এই কেন্দ্রে এবারের মতো শেষ জনসভাটি করতে আসছেন। অসুস্থ শরীর সত্ত্বেও এটা হবে তাঁর তৃতীয় রায়বেরিলি সফর। কিন্তু তাতে কী, ভোটের এই শেষ প্রহরে রায়বেরিলি ও আমেথির মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। প্রচারের শেষ দিন শুক্রবার তিনি ফিরে যাবেন অন্যত্র।
কিশোরীলাল বললেন, সম্পর্কটা ১০০ বছরের বেশি পুরোনো। ১৯৫৭ সালে এখান থেকে জেতেন ফিরোজ গান্ধী। ১৯৬৭ থেকে পরপর দুবার জিতে ইন্দিরা গান্ধী রায়বেরিলিতে হারেন রাজ নারায়ণের কাছে, ১৯৭৭ সালে। তারপর এখানে আর ফেরেননি ইন্দিরা। কিন্তু গান্ধী পরিবারের আত্মীয় শীলা কল ১৯৮০ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত পরপর পাঁচবার এই কেন্দ্রের সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। শীলার পর দুবার এখান থেকে ভোটে যেতেন রাজীব গান্ধীর বন্ধু ক্যাপ্টেন সতীশ শর্মা। এরপর মাত্র দুবার কেন্দ্রটি দখল করেছিল বিজেপি। কিন্তু ১৯৯৯ সাল থেকে ফের কংগ্রেসের কবজায়। সোনিয়ার খাসতালুকও সেই ১৯৯৯ থেকে।
অর্থাৎ, রায়বেরিলিতে মোট ভোট হয়েছে কুড়িবার। মাত্র তিনবার কংগ্রেসের হাত থেকে বেরিয়ে কেন্দ্রটা কোল পেতে দিয়েছিল বিরোধীদের। কিশোরীলাল বললেন, ‘অসুস্থ শরীর নিয়েও সোনিয়া ভোটে দাঁড়াতে রাজি হয়েছেন। এবার এটা তাঁর তৃতীয় সফর। রায়বেরিলির মানুষ তাঁকে বলেছেন, আসার প্রয়োজন নেই। কেন্দ্রের মানুষজনের হৃদয়ে তাঁর বাস।’
ঠিক এই কথাটাই অদ্ভুতভাবে বললেন গোকুলপুর গ্রামের রামস্বরূপ জয়সোয়াল ও শিবপ্রতাপ। ‘রায়বেরিলির ডিএনএতে সোনিয়া গান্ধীর নাম লেখা রয়েছে। তাঁকে হারানোর স্বপ্ন কারও তাই না দেখাই ভালো।’
এই স্বপ্নটা এবার যিনি দেখছেন, এই তল্লাটের তামাম কংগ্রেসির কাছে তিনি এক ‘নির্ভেজাল গদ্দার’।
এবার সোনিয়ার প্রতিপক্ষ যিনি, গান্ধী পরিবারের ছত্রচ্ছায়ায় তিনি লালিত। দীনেশ প্রতাপ সিং স্থানীয় ব্যবসায়ী। কংগ্রেস ও ব্যবসা তাঁর জীবনে এই সেদিন পর্যন্ত সমান্তরাল রেললাইনের মতো চলেছে। দুই বছর আগে হঠাৎ দলত্যাগ করে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপি তাঁকে বিধান পরিষদের সদস্য করে দেয়। এত দিন কংগ্রেস করে আসা দীনেশ প্রচারে প্রকাশ্যে সোনিয়া বা গান্ধী পরিবারের নিন্দে করছেন না। কিন্তু মোদি–মাহাত্ম্য প্রচারের মধ্য দিয়ে বোঝাতে চাইছেন, গান্ধী পরিবারের আর কিছু দেওয়ার ক্ষমতা নেই। বিকাশ ও উন্নয়ন এখন নরেন্দ্র মোদির মুখাপেক্ষী এবং কংগ্রেসের কক্ষচ্যুত।
সোনিয়াবিরোধী প্রচারটা এবার কী রকম, তার একটা নমুনা বরং দিই। উড়ুয়া বলে একটা গ্রাম আছে রায়বেরিলি জেলায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সব সাংসদকে একটা করে গ্রাম দত্তক নিতে বলেছিলেন। সোনিয়া দত্তক নেন উড়ুয়াকে। আদর্শ গ্রাম গড়ে তোলার জন্য যা যা কাজ দরকার, যে পরিমাণ অর্থ খরচের প্রয়োজন এবং পরিকল্পনা রূপায়ণে কেন্দ্র ও রাজ্যের যে সহযোগিতা প্রয়োজন, সদিচ্ছা সত্ত্বেও সোনিয়া তা করতে পারছেন না অসহযোগিতার জন্য। এই না পারাকেই বড় করে তুলে ধরছেন প্রতিপক্ষ দীনেশ প্রতাপ সিংয়েরা, অসহযোগিতার কথাটি অনুচ্চারিত রেখে। কংগ্রেস আবার বড় করে তুলে ধরছে ওই অসহযোগিতার কথাই।
ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের মতোই আমেথি ও রায়বেরিলি পাশাপাশি দুই জনপদ। একনিশ্বাসে উচ্চারিত হয়ে আসছে সেই কবে থেকে। একটা সময় ছিল, যখন একই সঙ্গে এই দুই অঞ্চলের বিকাশ চোখ ধাঁধিয়ে দিত। জাতীয় সড়কের দুপাশে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে তার প্রমাণ। রাজ্যে টানা তিরিশ বছর কংগ্রেস ক্ষমতার বাইরে। ২০১৪ পর্যন্ত কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকলেও রাজ্য সরকারের অসহযোগিতায় এই দুই ভিভিআইপি কেন্দ্রের জৌলুশ অসহযোগিতার কারণে অনেকটাই ফিকে হয়েছে। আমেথি ও রায়বেরিলির মানুষজনের কাছে আজ আর সেই সুদিন নেই। কিন্তু গান্ধী পরিবার তাঁদের যে গরিমা দিয়েছে, সেটাও যে ভোলার নয়! কৃতজ্ঞতাবশত রাজ্যের দুই প্রতিপক্ষ সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি বহু বছর ধরে এই দুই কেন্দ্রে প্রার্থী দেয় না। এবারেও দেয়নি। দিলেও সোনিয়ার জয় ঠেকানো সম্ভবত অসম্ভব। সোনিয়ার অপারগতা, তাঁর দলের ক্রমাগত শক্তিহীনতায় রায়বেরিলির মানুষ ক্ষুণ্ন। কিন্তু ক্ষুব্ধ নন। ক্ষুব্ধ হলে কেউ ওভাবে বলতে পারে না, ‘রায়বেরিলির শিরায় শিরায় সোনিয়া গান্ধীর নাম লেখা আছে। তাঁকে হারানোর স্বপ্ন কারও না দেখাই ভালো।’
এভাবে জিজ্ঞেস করলে কারও মগজের ঘণ্টি না–ও বেজে উঠতে পারে। বেরিলি কী? কোনো জায়গা বা জনপদ হলে সেটা ভারতের কোন জেলায়, তেমন প্রশ্নও উঠতে পারে। কিন্তু একটু খেই ধরিয়ে দেওয়ার মতো যদি মুম্বাইয়ের পুরোনো দিনের ডাকসাইটে সুন্দরী অভিনেত্রী সাধনার নামটি উচ্চারণ করা হয়, আশি কি নব্বই শতাংশ মানুষ সঙ্গে সঙ্গে গুনগুনিয়ে উঠবেন সেই অমর গানের কলি, ‘ঝুমকা গিরা রে, বেরিলি কি বাজার মে ঝুমকা গিরা রে’। মেরা সায়া সিনেমার জন্য গানটি লিখেছিলেন রাজা মেহদি আলি খান। সুর দিয়েছিলেন মদন মোহন। কণ্ঠ আশা ভোঁসলের। পর্দায় নেচে–গেয়ে মাত করেছিলেন সাধনা। উত্তর প্রদেশের অকিঞ্চিৎকর জনপদ বেরিলির বিখ্যাত হওয়া সেই প্রথম।
তবে, বেরিলির মতোই যদি প্রশ্ন করা হয়, ভারতের রাজনৈতিক মানচিত্রে রায়বেরিলিকে কে চিরবিখ্যাত করে গেছেন, তাহলে ব্যক্তির জায়গায় উঠে আসবে এক পরিবারের নাম। গান্ধী পরিবার। রায়বেরিলির সঙ্গে গান্ধী পরিবারের সম্পর্ক হলো শীতের সঙ্গে লেপের মতো। সম্পর্কের সেই পারিবারিক ধারাবাহিকতা রক্ষার দায়িত্বে এখন রয়েছেন সোনিয়া গান্ধী।
এই সোনিয়া বৃহস্পতিবার রায়বেরিলি আসবেন বলে ঘুম উবে গেছে কিশোরীলাল শর্মার। পঞ্চমবারের মতো সোনিয়ার নির্বাচন পরিচালনার প্রধান দায়িত্ব তাঁর বলেই নয়, কবে থেকে যে তিনি ম্যাডামের ‘ম্যান ফ্রাইডে’ হয়ে গেছেন নিজেই ভুলে গেছেন। রায়বেরিলি শহরের তিলক ভবনে বুধবার দুপুরে তিলধারণের স্থান নেই। গমগম করছে গোটা চত্বর। সব ব্লকের সব বুথের ভোট পরিচালকদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। হাতে হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বুথভিত্তিক ভোটার তালিকা। আগামী রোববার তাঁদের করণীয় কী কী সবাইকে পাখি পড়ানোর মতো করে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সোনিয়া গান্ধী এই কেন্দ্রে এবারের মতো শেষ জনসভাটি করতে আসছেন। অসুস্থ শরীর সত্ত্বেও এটা হবে তাঁর তৃতীয় রায়বেরিলি সফর। কিন্তু তাতে কী, ভোটের এই শেষ প্রহরে রায়বেরিলি ও আমেথির মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। প্রচারের শেষ দিন শুক্রবার তিনি ফিরে যাবেন অন্যত্র।
কিশোরীলাল বললেন, সম্পর্কটা ১০০ বছরের বেশি পুরোনো। ১৯৫৭ সালে এখান থেকে জেতেন ফিরোজ গান্ধী। ১৯৬৭ থেকে পরপর দুবার জিতে ইন্দিরা গান্ধী রায়বেরিলিতে হারেন রাজ নারায়ণের কাছে, ১৯৭৭ সালে। তারপর এখানে আর ফেরেননি ইন্দিরা। কিন্তু গান্ধী পরিবারের আত্মীয় শীলা কল ১৯৮০ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত পরপর পাঁচবার এই কেন্দ্রের সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। শীলার পর দুবার এখান থেকে ভোটে যেতেন রাজীব গান্ধীর বন্ধু ক্যাপ্টেন সতীশ শর্মা। এরপর মাত্র দুবার কেন্দ্রটি দখল করেছিল বিজেপি। কিন্তু ১৯৯৯ সাল থেকে ফের কংগ্রেসের কবজায়। সোনিয়ার খাসতালুকও সেই ১৯৯৯ থেকে।
অর্থাৎ, রায়বেরিলিতে মোট ভোট হয়েছে কুড়িবার। মাত্র তিনবার কংগ্রেসের হাত থেকে বেরিয়ে কেন্দ্রটা কোল পেতে দিয়েছিল বিরোধীদের। কিশোরীলাল বললেন, ‘অসুস্থ শরীর নিয়েও সোনিয়া ভোটে দাঁড়াতে রাজি হয়েছেন। এবার এটা তাঁর তৃতীয় সফর। রায়বেরিলির মানুষ তাঁকে বলেছেন, আসার প্রয়োজন নেই। কেন্দ্রের মানুষজনের হৃদয়ে তাঁর বাস।’
ঠিক এই কথাটাই অদ্ভুতভাবে বললেন গোকুলপুর গ্রামের রামস্বরূপ জয়সোয়াল ও শিবপ্রতাপ। ‘রায়বেরিলির ডিএনএতে সোনিয়া গান্ধীর নাম লেখা রয়েছে। তাঁকে হারানোর স্বপ্ন কারও তাই না দেখাই ভালো।’
এই স্বপ্নটা এবার যিনি দেখছেন, এই তল্লাটের তামাম কংগ্রেসির কাছে তিনি এক ‘নির্ভেজাল গদ্দার’।
এবার সোনিয়ার প্রতিপক্ষ যিনি, গান্ধী পরিবারের ছত্রচ্ছায়ায় তিনি লালিত। দীনেশ প্রতাপ সিং স্থানীয় ব্যবসায়ী। কংগ্রেস ও ব্যবসা তাঁর জীবনে এই সেদিন পর্যন্ত সমান্তরাল রেললাইনের মতো চলেছে। দুই বছর আগে হঠাৎ দলত্যাগ করে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপি তাঁকে বিধান পরিষদের সদস্য করে দেয়। এত দিন কংগ্রেস করে আসা দীনেশ প্রচারে প্রকাশ্যে সোনিয়া বা গান্ধী পরিবারের নিন্দে করছেন না। কিন্তু মোদি–মাহাত্ম্য প্রচারের মধ্য দিয়ে বোঝাতে চাইছেন, গান্ধী পরিবারের আর কিছু দেওয়ার ক্ষমতা নেই। বিকাশ ও উন্নয়ন এখন নরেন্দ্র মোদির মুখাপেক্ষী এবং কংগ্রেসের কক্ষচ্যুত।
সোনিয়াবিরোধী প্রচারটা এবার কী রকম, তার একটা নমুনা বরং দিই। উড়ুয়া বলে একটা গ্রাম আছে রায়বেরিলি জেলায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সব সাংসদকে একটা করে গ্রাম দত্তক নিতে বলেছিলেন। সোনিয়া দত্তক নেন উড়ুয়াকে। আদর্শ গ্রাম গড়ে তোলার জন্য যা যা কাজ দরকার, যে পরিমাণ অর্থ খরচের প্রয়োজন এবং পরিকল্পনা রূপায়ণে কেন্দ্র ও রাজ্যের যে সহযোগিতা প্রয়োজন, সদিচ্ছা সত্ত্বেও সোনিয়া তা করতে পারছেন না অসহযোগিতার জন্য। এই না পারাকেই বড় করে তুলে ধরছেন প্রতিপক্ষ দীনেশ প্রতাপ সিংয়েরা, অসহযোগিতার কথাটি অনুচ্চারিত রেখে। কংগ্রেস আবার বড় করে তুলে ধরছে ওই অসহযোগিতার কথাই।
ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের মতোই আমেথি ও রায়বেরিলি পাশাপাশি দুই জনপদ। একনিশ্বাসে উচ্চারিত হয়ে আসছে সেই কবে থেকে। একটা সময় ছিল, যখন একই সঙ্গে এই দুই অঞ্চলের বিকাশ চোখ ধাঁধিয়ে দিত। জাতীয় সড়কের দুপাশে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে তার প্রমাণ। রাজ্যে টানা তিরিশ বছর কংগ্রেস ক্ষমতার বাইরে। ২০১৪ পর্যন্ত কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকলেও রাজ্য সরকারের অসহযোগিতায় এই দুই ভিভিআইপি কেন্দ্রের জৌলুশ অসহযোগিতার কারণে অনেকটাই ফিকে হয়েছে। আমেথি ও রায়বেরিলির মানুষজনের কাছে আজ আর সেই সুদিন নেই। কিন্তু গান্ধী পরিবার তাঁদের যে গরিমা দিয়েছে, সেটাও যে ভোলার নয়! কৃতজ্ঞতাবশত রাজ্যের দুই প্রতিপক্ষ সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি বহু বছর ধরে এই দুই কেন্দ্রে প্রার্থী দেয় না। এবারেও দেয়নি। দিলেও সোনিয়ার জয় ঠেকানো সম্ভবত অসম্ভব। সোনিয়ার অপারগতা, তাঁর দলের ক্রমাগত শক্তিহীনতায় রায়বেরিলির মানুষ ক্ষুণ্ন। কিন্তু ক্ষুব্ধ নন। ক্ষুব্ধ হলে কেউ ওভাবে বলতে পারে না, ‘রায়বেরিলির শিরায় শিরায় সোনিয়া গান্ধীর নাম লেখা আছে। তাঁকে হারানোর স্বপ্ন কারও না দেখাই ভালো।’
No comments