মন্ত্রণালয়ের সামারি লিখছেন কারা, নানা প্রশ্ন by দীন ইসলাম
সরকারের
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয়ের সামারি (সার
সংক্ষেপ) লিখছেন কারা? এমন প্রশ্ন এখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়,
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, অর্থ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তাদের। তারা বলছেন, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এখন সামারি লিখতে চান
না। মেধা শুন্যতার কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তারা
দপ্তর, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরের কর্মকর্তাদের এ কাজে নিয়োজিত করছেন। এর
বাইরে সাবেক অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের সামারি তৈরির জন্য ডেকে আনা হচ্ছে।
‘বাইরের’ লোক দিয়ে সামারি তৈরির কারণে এগুলো থাকছে ভুলে ভরা। সংশ্লিষ্ট
সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রিসভা, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও
অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিসহ বিভিন্ন মন্ত্রিসভা কমিটি’র
বৈঠকে মন্ত্রণালয় বা বিভাগগুলো তাদের এজেন্ডার উপস্থাপন করে থাকে। এসব
বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা তাদের এজেন্ডা সার সংক্ষেপ
পড়ে শোনান।
এসব সামারি বৈঠকে উপস্থিত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিবসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে দেয়া হয়। সামারিতে ভুল থাকায় অনেক সময় মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্রয় সংক্রান্ত প্রস্তাবের সার সংক্ষেপ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীন দপ্তর, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরগুলো তৈরি করে দিচ্ছে। প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে উপস্থাপিত সার সংক্ষেপেও মন্ত্রণালয় হাত না দেয়ার নজির রয়েছে। মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অধিকাংশই দাপ্তরিক কাজের চেয়ে নিজের পদ-পদবি ঠিক রাখতে ব্যস্ত। রুলস অব বিজনেসসহ সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার। এ কারণেই প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো সার-সংক্ষেপগুলোতে প্রায়ই নানা ভুলভ্রান্তি ধরা পড়ছে। সূত্রে জানা গেছে, কোনো কোনো সচিবের দক্ষতা ও উপস্থাপিত সারসংক্ষেপ দেখে কখনও কখনও খোদ প্রধানমন্ত্রীই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রশাসনে দক্ষ, যোগ্য ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তার সংকটের কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এমন মনোভাবের কথা জানিয়ে সচিবদের সতর্ক করে এর আগেও একাধিক বার চিঠি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। তবে এ পর্যন্ত তেমন কোনো ইতিবাচক ফল আসেনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো সারসংক্ষেপে ব্যাপক ভুল থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করার পাশাপাশি নির্ভুলভাবে সারসংক্ষেপ পাঠানোর তাগিদ দেয়া হয়। ১৪ই ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক (প্রশাসন) দেওয়ান ড. হুমায়ুন কবীর স্বাক্ষরিত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থা থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন বিষয়ে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়। কিছু সারসংক্ষেপ ক্রটিপূর্ণ হওয়ায় তা নিষ্পত্তিতে অনাকাঙ্খিত বিলম্ব হয়। এ অবস্থায় সার-সংক্ষেপ প্রস্তুতকালে এ সংক্রান্ত সচিবালয়ের গাইডলাইন অনুসরণ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। এর আগে ২০১৩ সালের ২২শে সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওই সময়ের সিনিয়র সচিব (বর্তমানে ইতালীতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত) আবদুস সোবহান সিকদার কর্মকর্তাদের সাতটি বিষয়ে সতর্ক থেকে সারসংক্ষেপ প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়ে অফিস আদেশ জারি করেছিলেন। ওই চিঠিতে বলা হয়েছিল বেশিরভাগ প্রস্তাবের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের নীতিগত সিদ্ধান্তসহ সুস্পষ্ট ও যৌক্তিক মতামত থাকে না। প্রস্তাবের ফরোয়ার্ডিংয়ের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি সংযুক্ত থাকে না। প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক কাঠামোর হালনাগাদ কপি পাঠানো হয় না। পদ সৃষ্টি, সংরক্ষণ ও স্থায়ীকরণ ইত্যাদির ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মতিপত্রে উল্লিখিত শর্তাদি যথারীতি প্রতিপালন করা হয় না। এমনকি প্রস্তাবিত নিয়োগবিধি ও সাংগঠনিক কাঠামো প্রতিষ্ঠান প্রধান ও প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের সচিব বা সিনিয়র সচিবের স্বাক্ষর থাকে না। এছাড়া ২০১২ সালের ১১ই নভেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ের এক সারসংক্ষেপ নিয়ে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমান বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। এজন্য সারসংক্ষেপ তৈরিতে আরও সতর্কতা এবং পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে নথি পাঠানোর অনুরোধ করে একটি আধা সরকারি পত্র (ডিও লেটার) দেন। একই সঙ্গে মন্ত্রিসভা, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি, প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সারসংক্ষেপে ভুল-ভ্রান্তি থাকায় তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠানোর ঘটনা অহরহই ঘটছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করে চলেছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নিজেরা সামারি তৈরি না করার কারণে একই ভুল বার বার থেকে যাচ্ছে। কারণ যারা সামারি তৈরি করছে তারা বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন না। এজন্য একই ভুল থেকে যাচ্ছে।
এসব সামারি বৈঠকে উপস্থিত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিবসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে দেয়া হয়। সামারিতে ভুল থাকায় অনেক সময় মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্রয় সংক্রান্ত প্রস্তাবের সার সংক্ষেপ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীন দপ্তর, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরগুলো তৈরি করে দিচ্ছে। প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে উপস্থাপিত সার সংক্ষেপেও মন্ত্রণালয় হাত না দেয়ার নজির রয়েছে। মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অধিকাংশই দাপ্তরিক কাজের চেয়ে নিজের পদ-পদবি ঠিক রাখতে ব্যস্ত। রুলস অব বিজনেসসহ সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার। এ কারণেই প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো সার-সংক্ষেপগুলোতে প্রায়ই নানা ভুলভ্রান্তি ধরা পড়ছে। সূত্রে জানা গেছে, কোনো কোনো সচিবের দক্ষতা ও উপস্থাপিত সারসংক্ষেপ দেখে কখনও কখনও খোদ প্রধানমন্ত্রীই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রশাসনে দক্ষ, যোগ্য ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তার সংকটের কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এমন মনোভাবের কথা জানিয়ে সচিবদের সতর্ক করে এর আগেও একাধিক বার চিঠি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। তবে এ পর্যন্ত তেমন কোনো ইতিবাচক ফল আসেনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো সারসংক্ষেপে ব্যাপক ভুল থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করার পাশাপাশি নির্ভুলভাবে সারসংক্ষেপ পাঠানোর তাগিদ দেয়া হয়। ১৪ই ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক (প্রশাসন) দেওয়ান ড. হুমায়ুন কবীর স্বাক্ষরিত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থা থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন বিষয়ে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়। কিছু সারসংক্ষেপ ক্রটিপূর্ণ হওয়ায় তা নিষ্পত্তিতে অনাকাঙ্খিত বিলম্ব হয়। এ অবস্থায় সার-সংক্ষেপ প্রস্তুতকালে এ সংক্রান্ত সচিবালয়ের গাইডলাইন অনুসরণ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। এর আগে ২০১৩ সালের ২২শে সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওই সময়ের সিনিয়র সচিব (বর্তমানে ইতালীতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত) আবদুস সোবহান সিকদার কর্মকর্তাদের সাতটি বিষয়ে সতর্ক থেকে সারসংক্ষেপ প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়ে অফিস আদেশ জারি করেছিলেন। ওই চিঠিতে বলা হয়েছিল বেশিরভাগ প্রস্তাবের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের নীতিগত সিদ্ধান্তসহ সুস্পষ্ট ও যৌক্তিক মতামত থাকে না। প্রস্তাবের ফরোয়ার্ডিংয়ের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি সংযুক্ত থাকে না। প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক কাঠামোর হালনাগাদ কপি পাঠানো হয় না। পদ সৃষ্টি, সংরক্ষণ ও স্থায়ীকরণ ইত্যাদির ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মতিপত্রে উল্লিখিত শর্তাদি যথারীতি প্রতিপালন করা হয় না। এমনকি প্রস্তাবিত নিয়োগবিধি ও সাংগঠনিক কাঠামো প্রতিষ্ঠান প্রধান ও প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের সচিব বা সিনিয়র সচিবের স্বাক্ষর থাকে না। এছাড়া ২০১২ সালের ১১ই নভেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ের এক সারসংক্ষেপ নিয়ে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমান বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। এজন্য সারসংক্ষেপ তৈরিতে আরও সতর্কতা এবং পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে নথি পাঠানোর অনুরোধ করে একটি আধা সরকারি পত্র (ডিও লেটার) দেন। একই সঙ্গে মন্ত্রিসভা, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি, প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সারসংক্ষেপে ভুল-ভ্রান্তি থাকায় তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠানোর ঘটনা অহরহই ঘটছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করে চলেছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নিজেরা সামারি তৈরি না করার কারণে একই ভুল বার বার থেকে যাচ্ছে। কারণ যারা সামারি তৈরি করছে তারা বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন না। এজন্য একই ভুল থেকে যাচ্ছে।
No comments