ডাকসু নির্বাচন: ৬ ঘণ্টা ভোট কার স্বার্থে by মুনির হোসেন
২৮
বছর পর নির্বাচন। দীর্ঘ এ সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থী বেড়েছে কয়েক গুণ।
পরিবর্তন ও পরিবর্ধন এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কিছুতে। অনেক নিয়মনীতিও
এখন সেকেলে। যুগের চাহিদা অনুযায়ী সেগুলোর কিছু অকার্যকর, কিছুকে করা হচ্ছে
আধুনিকীকরণ। কিন্তু আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ
(ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায়
আড়াই যুগের পুরনো নিয়ম অনুসারে। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই ভোটগ্রহণের সময়
বাড়ানোর জন্য বারবার দাবি করেছে ছাত্রলীগ ছাড়া ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো ও
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। দাবি আদায়ে বিভিন্ন কর্মসূচির পাশাপাশি ভিসি
অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানকে স্মারকলিপিও দিয়েছেন অনেকে।
গতকাল দুপুরেও একই দাবিতে ভিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
কিন্তু অধিকাংশের দাবিকে অগ্রাহ্য করে ২৮ বছরের পুরনো নিয়মে ছয় ঘণ্টা ভোটগ্রহণের পক্ষে শক্ত অবস্থান কর্তৃপক্ষের। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে- ছয় ঘণ্টা ভোট কার স্বার্থে? ক্ষমতাসীনদের বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলো ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দাবি- নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসনিক নীল নকশার অন্যতম দৃষ্টান্ত ছয় ঘণ্টা ভোটগ্রহণ। তারা বলছেন, ছয় ঘণ্টা ভোটগ্রহণের মধ্যদিয়ে ছাত্রলীগকে জিতিয়ে আনতে চায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এমন অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে কিছুটা বিব্রত প্রশাসন। এ বিষয়ে জানতে ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ও চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. এসএম মাহফুজুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। আর রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরীন জানান, নির্বাচনের বিষয়ে তাদের কথা বলতে ‘না’ আছে। যা বলার চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক এসএম মাহফুজুর রহমান নিজে বলবেন। আরেক রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম বলেন, ‘ভোটগ্রহণের সময় যা ঠিক করা হয়েছে, সেটি এখন আর কিছু করার নেই। এ সময়ের মধ্যেই হলগুলোকে সকলের ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
এজন্য প্রয়োজনে বুথের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া আছে। হলগুলো তাদের চাহিদা অনুযায়ী বুথ তৈরি করে নেবে।’ নির্বাচননের জন্য যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে তা কোনোভাবেই সঠিক নয় মন্তব্য করে বাম জোটের ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দী বলেন, ‘ভোটগ্রহণের সময় বাড়ানোর জন্য আমরা বারবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলেছি- এত স্বল্প সময়ের মধ্যে ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীর ভোটাধিকার প্রয়োগ সম্ভব না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইচ্ছে করেই এ সময়টা বাড়াচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো পর্যন্ত যতগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে তা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোট প্রদানে অনুৎসাহিত করছে। এসব সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষে অন্তরায়।’ নন্দী বলেন, ‘প্রশাসন আমাদের দাবি বারবার অগ্রাহ্য করছে। আমরা মনে করি এর মধ্যদিয়ে প্রশাসনের নিশ্চয় বড় ধরনের কোনো দুরভিসন্ধি আছে। কারণ, তারা জানে যত ভোট কম পড়বে তত ছাত্রলীগের জন্য ভালো হবে। কারণ, ছাত্রলীগের সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয়তা নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আহ্বান জানাচ্ছি প্রশাসন এখনো সময় আছে ভোটের সময় বাড়াবে এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ভোটাধিকার প্রদানে পরিবেশ নিশ্চিত করবে।’ জিএস পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী এ আর এম আসিফুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসন যেভাবে আগাচ্ছে আমার কাছে মনে হচ্ছে সবকিছুই সাজানো।
একটি পক্ষকে জিতিয়ে দিতে প্রশাসনিক নীল নকশা চলছে। ৪৩ হাজার ভোট, সেখানে ভোটগ্রহণের সময় রাখা হয়েছে ছয় ঘণ্টা। ছয় ঘণ্টা সময়ের মধ্যে সব ভোটারের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত হবে বলে আমরা মনে করি না। আমরা ভোটগ্রহণের সময় বাড়িয়ে দশ ঘণ্টা করার পক্ষে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসন আমাদের দাবি মানছে না। এর থেকে প্রমাণিত হয়- প্রশাসন চায় না যেসব শিক্ষার্থী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করুক।’ কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের মনোনীত এজিএস প্রার্থী ফারুক হাসান বলেন, ‘ছয় ঘণ্টার মধ্যে ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীর ভোটগ্রহণ কোনোভাবেই সম্ভব না। আমরাসহ অধিকাংশ ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন বারবার ভোটের সময় বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছিল। কিন্তু প্রশাসন সেটি মানছেন না। তারা ৯০ সালের নির্বাচনের একটি নিয়মে অনঢ় রয়েছেন। যদিও এখনকার শিক্ষার্থী তখন থেকে দ্বিগুণ।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের কমন দাবি না মানার পেছনে হয়তো বা প্রশাসনের কোনো দুরভিসন্ধি থাকতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা চাই প্রশাসন বিষয়টি পুনঃবিবেচনা করবে। আমরা যেভাবে প্রস্তাব দিয়েছি ৮টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ ও প্রতি ১০০ জনের বিপরীতে একটি করে বুথ করবে। কারণ তারা চাইলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে পারে। যদি তা না করে তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অতীতের মতো সব অপতৎপরতাকে রুখে দেবে।’ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মনোনীত জিএস পদপ্রার্থী আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক বলেন, ‘আমরা আজও ডাকসুর সভাপতি ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান স্যারের সঙ্গে দেখা করেছি এবং আমরা বলেছি যে ভোটগ্রহণের সময় বাড়ানোর জন্য। যাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটা শিক্ষার্থী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকে একটি কথা বলে আসছি যে, তড়িগড়ি করে এ নির্বাচনটা একটা গোষ্ঠীকে সুবিধা দেয়ার জন্য কি না? এখনো সকল প্রক্রিয়ায় আমরা তা দেখতে পাচ্ছি। সময় কম রাখার পেছনে আমরা মনে করি- হলগুলোতে ছাত্রলীগের একক আধিপত্য রয়েছে। তাই শুধু হলে অবস্থানরতদের ভোটগ্রহণে প্রশাসনের অপকৌশল হচ্ছে কি না সেটা নিয়ে আমরা শঙ্কায় রয়েছি।’
কোটা আন্দোলনকারীদের প্যানেলের ইশতেহার: এদিকে আসন্ন ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে ইশতেহার ঘোষণা করেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ মনোনীতি প্যানেল। গতকাল মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজেদের ইশতেহার ঘোষণা করেন এ প্যানেল থেকে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নুরুল হক নুর। এসময় অন্যান্য প্রার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।
কোটা আন্দোলনকারীদের ইশতেহারের মধ্যে রয়েছে- মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে লিবারেশন ওয়ার স্টাডিজ সেন্টার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা; হলগুলো থেকে বহিরাগত ও অছাত্রদের বিতাড়িত করে প্রথম বর্ষ থেকেই শিক্ষার্থীদের বৈধ সিট প্রাপ্তির উদ্যোগ নেয়া; গেস্টরুম, গণরুম ও জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ সম্পূর্ণরূপে বিলোপ সাধন করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া ও ক্যান্টিনে খাবারের গুণগত মান নিশ্চিত করা এবং ন্যায্যমূল্যে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার নিশ্চিত করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন, ক্যাফেটেরিয়া, ডাইনিং এবং দোকানে খাবারের মান যাচাইয়ের জন্য খাদ্যমান নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন ও রুটের সংখ্যা বৃদ্ধি করা; পরিবহন সংক্রান্ত খাতে বার্ষিক বাজেটের ন্যূনতম ২ শতাংশ বরাদ্দ রাখা; লাইব্রেরির সময়সূচির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সর্বশেষ বাসের সময় নির্ধারণ করা; বাসে ডিজিটাল সেবা নিশ্চিতের পাশাপাশি প্রত্যেকটি বাসে ওয়াইফাই সেবা নিশ্চিত করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে পরিবহন সেবার উন্নয়ন করা; বহিরাগত যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা; ক্যাম্পাসে রিকশা ভাড়া নির্ধারণ করা; বিশেষ পরিবহন সার্ভিস চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং পরিবেশের উন্নয়নের স্বার্থে গ্রিন ক্যাম্পাস কর্মসূচির উদ্যোগ গ্রহণ করা; বার্ষিক সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্যাগ গ্রহণ করা; গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বার্ষিক বৃত্তির ব্যবস্থা করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যা তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য ডাকসুর ‘সেবা ডেস্ক’ চালু করা; বৈশ্বিক জ্ঞান ও বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ বিনির্মাণের স্বার্থে আন্তর্জাতিক সভা-সেমিনার ও বিতর্ক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা; রাজনৈতিক প্রভাব বলয়ের বাইরে সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর স্বাধীন কার্যক্রম আরও গতিশীল করা; শিক্ষার্থীদের নিয়মিত আইটি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা; প্রথম বর্ষ থেকেই শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল বাংলাদেশের আওতায় নিয়ে আসা; চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান গ্রন্থাগারের পরিধি বৃদ্ধি করা; গবেষণা খাতে বাজেটের ন্যূনতম ২০ শতাংশ বরাদ্দ রাখা; জালিয়াতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা করা; কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের বাণিজ্যিক ব্যবহার সীমিত করা; মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবন বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া; মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন করা; নামে-বেনামে নেয়া বিবিধ ফি বন্ধ করা; সাত কলেজের অধিভুক্তি সমস্যার যৌক্তিক সমাধান; ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ফার্মেসি স্থাপন করা; বিদেশে উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত কনসালটেন্সি স্থাপন করা; বাণিজ্যিক সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ করা; অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে যাওয়ার সমস্যার সহজ সমাধান করা; প্রক্টোরিয়াল টিমকে আরও শক্তিশালী করা।
ছাত্র ফেডারেশনের ৪১ দফা, ভিসি নয়, ডাকসু সভাপতি হবে শিক্ষার্থীরা
ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে ৪১ দফা ইশতেহার দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। গতকাল মধুর ক্যান্টিনে এ ইশতেহারে ঘোষণা করেন জিএস প্রার্থী উম্মে হাবিবা বেনজীর। এসময় তিনি নির্বাচিত হলে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। ঘোষণা দেন-নির্বাচিত হলে ডাকসুর সভাপতি হবে শিক্ষার্থীদের থেকে ভিসি নয়, সেলক্ষ্যে কাজ করবেন তিনি। ছাত্র ফেডারেশনের ইশতেহারের মধ্যে রয়েছে- রেজিস্ট্রার বিল্ডিং ও প্রশাসনিক কাজ ডিজিটালাইজড করা; ক্যাম্পাসে যেকোনো ধরনের নিপীড়ন, নির্যাতন, মারধর, হয়রানি কিংবা ভয়ভীতির ঘটনায় শিক্ষার্থীদের তাৎক্ষণিক সহায়তায় বিশেষ নিরাপত্তা টিম ও ইমার্জেন্সি হেল্পলাইন চালু করা; ক্যাম্পাসের যান চলাচল যৌক্তিক নিয়ন্ত্রণ, বাইপাস রাস্তা নির্মাণ, রিকশা ভাড়ার চার্ট তৈরি নিশ্চিতকরণ; চাঁদাবাজি ও ছিনতাই কঠোরভাবে নির্মূল করা; বহিরাগতদের অবাধ আগমন যৌক্তিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণ; অন্তর্ভুক্তি কলেজ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান; খেলার মাঠ ও টিএসসির বাণিজ্যিক ব্যবহার বন্ধ; বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত আয়-ব্যয়ের হিসাবে কঠোর জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ; প্রক্টোরিয়াল টিমের পেশাদারিত্ব বৃদ্ধি ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ; গেস্টরুম প্রথা চিরতরে নিষিদ্ধ করা; গণরুম ব্যবস্থা স্থায়ীভাবে বন্ধ করে ১ম বর্ষেই ‘নো ফ্লোরিং, নো সিঙ্গেল’ নীতিতে ও দুই-তলা বিছানা পদ্ধতিতে বৈধ সিট; মাসিক ক্যান্টিন মনিটরিং; শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি হলে কাউন্সেলিং সেন্টার স্থাপন; ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয়ভাবে মডেল ফার্মেসি স্থাপন ও ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা; মশা ও ছারপোকা নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণ; শিক্ষক মূল্যায়নে রেটিং পদ্ধতি চালু; বিশেষজ্ঞ বোর্ডের মাধ্যমে গবেষণার বাজেট নির্ধারণ; যৌন নিপীড়ন ও প্লেজারিজমের (লেখাচুরি) অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিষয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ; লাইব্রেরি ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা; সক্ষমতা ছাড়া নতুন ডিপার্টমেন্ট চালুর প্রক্রিয়া বন্ধ করা; আদিবাসীসহ সব জাতিগোষ্ঠী, ধর্ম ও বর্ণের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত; টিএসসিভিত্তিক সংগঠনগুলোকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করে গণতান্ত্রিক ও স্বাধীন করা; অনলাইনে ও অফলাইনে নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যেকোনো ধরনের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দ্রুত গ্রহণ ও বিচারে টাস্কফোর্স গঠন; ভূমিকম্পসহ যেকোনো দুর্যোগে দ্রুত সাড়া দানের স্বার্থে মেয়েদের হলের কলাপসিবল গেটে তালা লাগানো স্থায়ীভাবে বন্ধ করা; রাত ৯টা পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর জন্য বাস চালু ও জরুরি রুটে ট্রিপ বাড়ানো; মেয়েদের প্রতিটি হলে ওষুধ ও স্যানিটারি উপকরণ সমৃদ্ধ ফার্মেসি স্থাপন এবং রাতে ‘ইমার্জেন্সি মেডিকেল ট্রিটমেন্ট’ এর জন্য দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত; হলে প্রবেশের সময়সীমা নির্ধারণে মেয়েদের হলে গণভোট গ্রহণ; হলে প্রবেশের সময়সীমা পর্যন্ত প্রতি ঘণ্টায় লাইব্রেরি থেকে মেয়েদের হলে স্পেশাল বাস ট্রিপ চালু করা; মেয়েদের হলে ২৪ ঘণ্টা রিডিং রুম খোলা রাখা; মেয়েদের সব হলে মেয়ে শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে প্রবেশের সুযোগ নিশ্চিত; মেয়েদের হলে মার্শাল আর্ট সেন্টার স্থাপন ইত্যাদি।
গতকাল দুপুরেও একই দাবিতে ভিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
কিন্তু অধিকাংশের দাবিকে অগ্রাহ্য করে ২৮ বছরের পুরনো নিয়মে ছয় ঘণ্টা ভোটগ্রহণের পক্ষে শক্ত অবস্থান কর্তৃপক্ষের। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে- ছয় ঘণ্টা ভোট কার স্বার্থে? ক্ষমতাসীনদের বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলো ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দাবি- নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসনিক নীল নকশার অন্যতম দৃষ্টান্ত ছয় ঘণ্টা ভোটগ্রহণ। তারা বলছেন, ছয় ঘণ্টা ভোটগ্রহণের মধ্যদিয়ে ছাত্রলীগকে জিতিয়ে আনতে চায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এমন অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে কিছুটা বিব্রত প্রশাসন। এ বিষয়ে জানতে ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ও চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. এসএম মাহফুজুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। আর রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরীন জানান, নির্বাচনের বিষয়ে তাদের কথা বলতে ‘না’ আছে। যা বলার চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক এসএম মাহফুজুর রহমান নিজে বলবেন। আরেক রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম বলেন, ‘ভোটগ্রহণের সময় যা ঠিক করা হয়েছে, সেটি এখন আর কিছু করার নেই। এ সময়ের মধ্যেই হলগুলোকে সকলের ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
এজন্য প্রয়োজনে বুথের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া আছে। হলগুলো তাদের চাহিদা অনুযায়ী বুথ তৈরি করে নেবে।’ নির্বাচননের জন্য যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে তা কোনোভাবেই সঠিক নয় মন্তব্য করে বাম জোটের ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দী বলেন, ‘ভোটগ্রহণের সময় বাড়ানোর জন্য আমরা বারবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলেছি- এত স্বল্প সময়ের মধ্যে ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীর ভোটাধিকার প্রয়োগ সম্ভব না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইচ্ছে করেই এ সময়টা বাড়াচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো পর্যন্ত যতগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে তা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোট প্রদানে অনুৎসাহিত করছে। এসব সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষে অন্তরায়।’ নন্দী বলেন, ‘প্রশাসন আমাদের দাবি বারবার অগ্রাহ্য করছে। আমরা মনে করি এর মধ্যদিয়ে প্রশাসনের নিশ্চয় বড় ধরনের কোনো দুরভিসন্ধি আছে। কারণ, তারা জানে যত ভোট কম পড়বে তত ছাত্রলীগের জন্য ভালো হবে। কারণ, ছাত্রলীগের সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয়তা নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আহ্বান জানাচ্ছি প্রশাসন এখনো সময় আছে ভোটের সময় বাড়াবে এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ভোটাধিকার প্রদানে পরিবেশ নিশ্চিত করবে।’ জিএস পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী এ আর এম আসিফুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসন যেভাবে আগাচ্ছে আমার কাছে মনে হচ্ছে সবকিছুই সাজানো।
একটি পক্ষকে জিতিয়ে দিতে প্রশাসনিক নীল নকশা চলছে। ৪৩ হাজার ভোট, সেখানে ভোটগ্রহণের সময় রাখা হয়েছে ছয় ঘণ্টা। ছয় ঘণ্টা সময়ের মধ্যে সব ভোটারের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত হবে বলে আমরা মনে করি না। আমরা ভোটগ্রহণের সময় বাড়িয়ে দশ ঘণ্টা করার পক্ষে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসন আমাদের দাবি মানছে না। এর থেকে প্রমাণিত হয়- প্রশাসন চায় না যেসব শিক্ষার্থী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করুক।’ কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের মনোনীত এজিএস প্রার্থী ফারুক হাসান বলেন, ‘ছয় ঘণ্টার মধ্যে ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীর ভোটগ্রহণ কোনোভাবেই সম্ভব না। আমরাসহ অধিকাংশ ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন বারবার ভোটের সময় বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছিল। কিন্তু প্রশাসন সেটি মানছেন না। তারা ৯০ সালের নির্বাচনের একটি নিয়মে অনঢ় রয়েছেন। যদিও এখনকার শিক্ষার্থী তখন থেকে দ্বিগুণ।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের কমন দাবি না মানার পেছনে হয়তো বা প্রশাসনের কোনো দুরভিসন্ধি থাকতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা চাই প্রশাসন বিষয়টি পুনঃবিবেচনা করবে। আমরা যেভাবে প্রস্তাব দিয়েছি ৮টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ ও প্রতি ১০০ জনের বিপরীতে একটি করে বুথ করবে। কারণ তারা চাইলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে পারে। যদি তা না করে তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অতীতের মতো সব অপতৎপরতাকে রুখে দেবে।’ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মনোনীত জিএস পদপ্রার্থী আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক বলেন, ‘আমরা আজও ডাকসুর সভাপতি ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান স্যারের সঙ্গে দেখা করেছি এবং আমরা বলেছি যে ভোটগ্রহণের সময় বাড়ানোর জন্য। যাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটা শিক্ষার্থী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকে একটি কথা বলে আসছি যে, তড়িগড়ি করে এ নির্বাচনটা একটা গোষ্ঠীকে সুবিধা দেয়ার জন্য কি না? এখনো সকল প্রক্রিয়ায় আমরা তা দেখতে পাচ্ছি। সময় কম রাখার পেছনে আমরা মনে করি- হলগুলোতে ছাত্রলীগের একক আধিপত্য রয়েছে। তাই শুধু হলে অবস্থানরতদের ভোটগ্রহণে প্রশাসনের অপকৌশল হচ্ছে কি না সেটা নিয়ে আমরা শঙ্কায় রয়েছি।’
কোটা আন্দোলনকারীদের প্যানেলের ইশতেহার: এদিকে আসন্ন ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে ইশতেহার ঘোষণা করেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ মনোনীতি প্যানেল। গতকাল মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজেদের ইশতেহার ঘোষণা করেন এ প্যানেল থেকে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নুরুল হক নুর। এসময় অন্যান্য প্রার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।
কোটা আন্দোলনকারীদের ইশতেহারের মধ্যে রয়েছে- মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে লিবারেশন ওয়ার স্টাডিজ সেন্টার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা; হলগুলো থেকে বহিরাগত ও অছাত্রদের বিতাড়িত করে প্রথম বর্ষ থেকেই শিক্ষার্থীদের বৈধ সিট প্রাপ্তির উদ্যোগ নেয়া; গেস্টরুম, গণরুম ও জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ সম্পূর্ণরূপে বিলোপ সাধন করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া ও ক্যান্টিনে খাবারের গুণগত মান নিশ্চিত করা এবং ন্যায্যমূল্যে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার নিশ্চিত করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন, ক্যাফেটেরিয়া, ডাইনিং এবং দোকানে খাবারের মান যাচাইয়ের জন্য খাদ্যমান নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন ও রুটের সংখ্যা বৃদ্ধি করা; পরিবহন সংক্রান্ত খাতে বার্ষিক বাজেটের ন্যূনতম ২ শতাংশ বরাদ্দ রাখা; লাইব্রেরির সময়সূচির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সর্বশেষ বাসের সময় নির্ধারণ করা; বাসে ডিজিটাল সেবা নিশ্চিতের পাশাপাশি প্রত্যেকটি বাসে ওয়াইফাই সেবা নিশ্চিত করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে পরিবহন সেবার উন্নয়ন করা; বহিরাগত যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা; ক্যাম্পাসে রিকশা ভাড়া নির্ধারণ করা; বিশেষ পরিবহন সার্ভিস চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং পরিবেশের উন্নয়নের স্বার্থে গ্রিন ক্যাম্পাস কর্মসূচির উদ্যোগ গ্রহণ করা; বার্ষিক সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্যাগ গ্রহণ করা; গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বার্ষিক বৃত্তির ব্যবস্থা করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যা তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য ডাকসুর ‘সেবা ডেস্ক’ চালু করা; বৈশ্বিক জ্ঞান ও বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ বিনির্মাণের স্বার্থে আন্তর্জাতিক সভা-সেমিনার ও বিতর্ক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা; রাজনৈতিক প্রভাব বলয়ের বাইরে সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর স্বাধীন কার্যক্রম আরও গতিশীল করা; শিক্ষার্থীদের নিয়মিত আইটি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা; প্রথম বর্ষ থেকেই শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল বাংলাদেশের আওতায় নিয়ে আসা; চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান গ্রন্থাগারের পরিধি বৃদ্ধি করা; গবেষণা খাতে বাজেটের ন্যূনতম ২০ শতাংশ বরাদ্দ রাখা; জালিয়াতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা করা; কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের বাণিজ্যিক ব্যবহার সীমিত করা; মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবন বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া; মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন করা; নামে-বেনামে নেয়া বিবিধ ফি বন্ধ করা; সাত কলেজের অধিভুক্তি সমস্যার যৌক্তিক সমাধান; ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ফার্মেসি স্থাপন করা; বিদেশে উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত কনসালটেন্সি স্থাপন করা; বাণিজ্যিক সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ করা; অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে যাওয়ার সমস্যার সহজ সমাধান করা; প্রক্টোরিয়াল টিমকে আরও শক্তিশালী করা।
ছাত্র ফেডারেশনের ৪১ দফা, ভিসি নয়, ডাকসু সভাপতি হবে শিক্ষার্থীরা
ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে ৪১ দফা ইশতেহার দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। গতকাল মধুর ক্যান্টিনে এ ইশতেহারে ঘোষণা করেন জিএস প্রার্থী উম্মে হাবিবা বেনজীর। এসময় তিনি নির্বাচিত হলে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। ঘোষণা দেন-নির্বাচিত হলে ডাকসুর সভাপতি হবে শিক্ষার্থীদের থেকে ভিসি নয়, সেলক্ষ্যে কাজ করবেন তিনি। ছাত্র ফেডারেশনের ইশতেহারের মধ্যে রয়েছে- রেজিস্ট্রার বিল্ডিং ও প্রশাসনিক কাজ ডিজিটালাইজড করা; ক্যাম্পাসে যেকোনো ধরনের নিপীড়ন, নির্যাতন, মারধর, হয়রানি কিংবা ভয়ভীতির ঘটনায় শিক্ষার্থীদের তাৎক্ষণিক সহায়তায় বিশেষ নিরাপত্তা টিম ও ইমার্জেন্সি হেল্পলাইন চালু করা; ক্যাম্পাসের যান চলাচল যৌক্তিক নিয়ন্ত্রণ, বাইপাস রাস্তা নির্মাণ, রিকশা ভাড়ার চার্ট তৈরি নিশ্চিতকরণ; চাঁদাবাজি ও ছিনতাই কঠোরভাবে নির্মূল করা; বহিরাগতদের অবাধ আগমন যৌক্তিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণ; অন্তর্ভুক্তি কলেজ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান; খেলার মাঠ ও টিএসসির বাণিজ্যিক ব্যবহার বন্ধ; বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত আয়-ব্যয়ের হিসাবে কঠোর জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ; প্রক্টোরিয়াল টিমের পেশাদারিত্ব বৃদ্ধি ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ; গেস্টরুম প্রথা চিরতরে নিষিদ্ধ করা; গণরুম ব্যবস্থা স্থায়ীভাবে বন্ধ করে ১ম বর্ষেই ‘নো ফ্লোরিং, নো সিঙ্গেল’ নীতিতে ও দুই-তলা বিছানা পদ্ধতিতে বৈধ সিট; মাসিক ক্যান্টিন মনিটরিং; শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি হলে কাউন্সেলিং সেন্টার স্থাপন; ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয়ভাবে মডেল ফার্মেসি স্থাপন ও ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা; মশা ও ছারপোকা নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণ; শিক্ষক মূল্যায়নে রেটিং পদ্ধতি চালু; বিশেষজ্ঞ বোর্ডের মাধ্যমে গবেষণার বাজেট নির্ধারণ; যৌন নিপীড়ন ও প্লেজারিজমের (লেখাচুরি) অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিষয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ; লাইব্রেরি ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা; সক্ষমতা ছাড়া নতুন ডিপার্টমেন্ট চালুর প্রক্রিয়া বন্ধ করা; আদিবাসীসহ সব জাতিগোষ্ঠী, ধর্ম ও বর্ণের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত; টিএসসিভিত্তিক সংগঠনগুলোকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করে গণতান্ত্রিক ও স্বাধীন করা; অনলাইনে ও অফলাইনে নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যেকোনো ধরনের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দ্রুত গ্রহণ ও বিচারে টাস্কফোর্স গঠন; ভূমিকম্পসহ যেকোনো দুর্যোগে দ্রুত সাড়া দানের স্বার্থে মেয়েদের হলের কলাপসিবল গেটে তালা লাগানো স্থায়ীভাবে বন্ধ করা; রাত ৯টা পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর জন্য বাস চালু ও জরুরি রুটে ট্রিপ বাড়ানো; মেয়েদের প্রতিটি হলে ওষুধ ও স্যানিটারি উপকরণ সমৃদ্ধ ফার্মেসি স্থাপন এবং রাতে ‘ইমার্জেন্সি মেডিকেল ট্রিটমেন্ট’ এর জন্য দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত; হলে প্রবেশের সময়সীমা নির্ধারণে মেয়েদের হলে গণভোট গ্রহণ; হলে প্রবেশের সময়সীমা পর্যন্ত প্রতি ঘণ্টায় লাইব্রেরি থেকে মেয়েদের হলে স্পেশাল বাস ট্রিপ চালু করা; মেয়েদের হলে ২৪ ঘণ্টা রিডিং রুম খোলা রাখা; মেয়েদের সব হলে মেয়ে শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে প্রবেশের সুযোগ নিশ্চিত; মেয়েদের হলে মার্শাল আর্ট সেন্টার স্থাপন ইত্যাদি।
No comments