৪২ বছরে ২৬৫০টি কবর খনন করেছেন মনু মিয়া by আশরাফুল ইসলাম
মনু
মিয়া শেষ ঠিকানার কারিগর। মনের গহিনের পরম দরদ আর অপার ভালবাসা দিয়ে তিনি
সাজান মুসলিম সমপ্রদায়ের শেষ ঠিকানা- কবর। কারো মৃত্যু সংবাদ কানে
আসামাত্রই খুন্তি, কোদাল, ছুরি, করাত, দা, ছেনাসহ সহায়ক সব যন্ত্রপাতি নিয়ে
ছুটে যান কবরস্থানে। মানুষের অন্তিম যাত্রায় একান্ত সহযাত্রীর মতো তিনি
বাড়িয়ে দেন তার আন্তরিক দু’হাত। এভাবেই কবর খননের কাজ করে তিনি পার করে
দিয়েছেন তার ষাট বছরের জীবনের সুদীর্ঘ ৪২টি বছর। কোনো ধরনের পারিশ্রমিক
কিংবা বকশিশ না নিয়ে এ পর্যন্ত ২৬৫০টি কবরের খনন করেছেন।
ব্যতিক্রমী পন্থায় মানুষের প্রতি নিঃস্বার্থ সেবাপরায়ণতার এক অনন্য প্রতীক- জীবনের অন্তিম যাত্রায় মাটিরঘরের নিবেদিত শিল্পী মনু মিয়া। দূরের যাত্রায় দ্রুত পৌঁছাতে নিজের ধানীজমি বিক্রি করে কিনেছেন একটি ঘোড়া। ঘোড়ার পিঠে তুলে নেন তার যাবতীয় হাতিয়ার-যন্ত্র।
সেই ঘোড়ায় সওয়ার হয়েই শেষ ঠিকানা সাজাতে মনু মিয়া এখন ছুটে চলেন গ্রাম থেকে গ্রামে।
কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের এক কৃষক পরিবারে জন্ম মনু মিয়ার। পিতা আবদুল হেকিম মিয়া এবং মাতা সারবানুর দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে মনু মিয়া তৃতীয়।
ছোটবেলায় মনু মিয়া ছিলেন অত্যন্ত ডানপিটে ও দুরন্ত স্বভাবের। সে কারণে বাবা আবদুল হেকিম মিয়া ছেলেকে স্কুলে পাঠালেও লেখাপড়ায় এগোতে পারেননি। বরং স্কুল কামাই করে বন্ধুদের সঙ্গে হা-ডু-ডু, ডাংগুলি ও ফুটবল নিয়ে মাঠে পড়ে থাকার পাশাপাশি নানা রকম দুষ্টুমিই ছিল তার কাজ। এরপরও ছোট ছেলে হিসেবে বাবা-মায়েরর খুব আদরের ছিলেন মনু মিয়া। কৈশোরেই তার আবদার রক্ষা করতে বাবা আবদুল হেকিম মিয়াকে ঘোড়া পর্যন্ত কিনে দিতে হয়েছিল। হাসিখুশি আর হৈ-হল্লায় মেতে থাকা মনু মিয়ার জীবনে হঠাৎ করেই ঘটে ছন্দপতন। মাত্র ১৮ বছর বয়সে মনু মিয়া তার মাকে হারান। মায়ের কবরে বাবা, বড় ভাই আর আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে একমুঠো মাটি দিয়ে তাকে শেষ বিদায় জানানোর সময়েও মনু মিয়া বুঝতে পারেননি, তাকে কতটা স্নেহবঞ্চিত করে চলে গেছেন মা!
খুব অল্পদিনেই যখন মায়ের অভাবটা বুঝতে শুরু করলেন, তখন থেকে মনু মিয়াও শামিল হলেন বদলে যাওয়ার মিছিলে। কারো মৃত্যু সংবাদ শুনলেই, তার মানস পর্দায় ভেসে ওঠতো স্নেহময়ী জননীর মুখ। মাটির ঘরের শেষ বিছানায় কেমন কাটছে তার দিন? কেমন আছেন মা? এসব খুব ভাবাতো মনু মিয়াকে। ব্যাকুল হৃদয়ে মায়ের কবর জিয়ারতের জন্য ছুটে যেতেন কবরস্থানে। কবরস্থানে এভাবে যাওয়া-আসা থেকেই স্থানীয় গোরখোদকদের সঙ্গে মনু মিয়া একদিন কবর খননের কাজে অংশ নেন।
প্রথম সেই দিনের কথা বলতে গিয়ে মনু মিয়া বলেন, আমি তখন কিছুই বুঝতে পারিনি। আমার কেবলই মনে হচ্ছিল, আমি যেন আমার মায়ের শেষ ঠিকানাটা সাজিয়ে দিচ্ছি। এরপর থেকে যখনই সুযোগ পেয়েছি, তখনই তাদের সঙ্গে কবর খননের কাজে অংশ নিয়েছি। এভাবে একসময় এ কাজটার প্রতি আমার অন্যরকমের একটি ভাললাগা জন্মে গেল। কোনো কারণে যদি একটি কবর খোদায় শরিক হতে না পারতাম, মনে হতো কি যেন মিস করেছি।
মনু মিয়া জানান, তিনি ছোটবেলায় স্থানীয় গোরখোদকদের সঙ্গে প্রথম প্রথম আত্মীয়স্বজনের কবর খননের কাজে অংশ নিতেন। ক্রমশ দক্ষতা বাড়তে বাড়তে এক সময় এ কাজটিকেই তিনি জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেন। এরপর থেকে টানা ৪২ বছর ধরে অকৃত্রিম আবেগে তিনি নিজেকে নিবেদিত রেখেছেন কবর খননের কাজে।
একজন নিখুঁত সুদক্ষ গোরখোদক হিসেবে তার সুনাম রয়েছে দুর্গম হাওর উপজেলা ইটনা, মিঠামইন, শাল্লা, আজমিরীগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহে। কবর খনন করার জন্য নিজের খরচায় তিনি খুন্তি, কোদাল, দা, করাতসহ সমস্ত প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তৈরি করে নিয়েছেন।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ কাজে তার পারদর্শিতা এবং আন্তরিকতা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। নিজ গ্রাম বা দূরবর্তী গ্রাম, যেখান থেকে যখনই কারো মৃত্যু সংবাদ পান, আবেগতাড়িত দরদ নিয়ে ছুটে যান মনু মিয়া। তিনি কবর খোঁড়ার বিনিময়ে কারো কাছ থেকে কোনো আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করেন না। এমনকি যাতায়াত খরচটুকুও না। আর এ কারণেও মনু মিয়া পাচ্ছেন মানুষের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা আর সম্মান। তিনি নিজেও বার্ধক্যের কিনারায় দাঁড়িয়ে। ফলে কবর খোঁড়ার কাজে তিনি নিয়োজিত হন এক বিষাদময় আবেগে।
মনু মিয়ার সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, তিনি ঢাকার বনানী কবরস্থানসহ দেশের নানা প্রান্তে গোর খনন করে এ পর্যন্ত ২৬৫০টি গোর খনন করেছেন। কোথাও বেড়াতে গিয়ে যদি কারো মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছেন তো তিনি সেখানে ছুটে গিয়ে গোর খননে শামিল হয়েছেন। এমনো হয়েছে, ভীষণ অসুস্থ অবস্থায় তিনি বিছানা ছেড়ে ওঠতে পারছেন না। কিন্তু কারো মৃত্যু সংবাদ তার কানে এসেছে, সে অবস্থায় তিনি কবরস্থানে ছুটে গিয়ে তার গোর খনন করেছেন। শুরুর দিকে তার স্ত্রী রহিমা বেগম মাঝে মাঝে এ বিষয়ে কথাবার্তা বললেও মনু মিয়ার এ কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও একাগ্রতার কারণে তিনিও স্বামীকে যতটা সম্ভব মানসিক সমর্থন দিয়ে চলেছেন।
উদাসীন ও সাদা মনের এ মানুষটি আমৃত্যু তার এ কাজ চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা রাখেন। তার মতে, মানুষের জন্য এমনিতে কিছু করতে না পারলেও তার শেষ ঠিকানাটা তো সাজিয়ে দিতে পারছেন। আর এটাই তার সুখ।
মনু মিয়া আরো জানান, এ কাজ করতে গিয়ে সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের নিকট থেকে যে ভালোবাসা পাচ্ছেন, এটাও তার পরম শান্তির। তাই শরীরে শক্তি-সামর্থ্য থাকলে আমৃত্যু এ কাজটি তিনি চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা রাখেন। দূরের যাত্রায় দ্রুত পৌঁছাতে নিজের ধানিজমি বিক্রি করে কিনেছেন একটি ঘোড়া। ঘোড়ার পিঠে যাবতীয় হাতিয়ার-যন্ত্র তুলে নিয়ে ঘোড়ায় সওয়ার হয়েই শেষ ঠিকানা সাজাতে মনু মিয়া এখন ছুটে চলেন গ্রাম থেকে গ্রামে। মনু মিয়া বলেন, আমি সেই দিনটির অপেক্ষায় আছি, যখন আমার কবর খনন করার জন্য আমারই মতো কেউ নিঃস্বার্থ মন নিয়ে খুন্তি-কোদাল হাতে এগিয়ে আসবেন।
মনু মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, এমনও হয়েছে, গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তিনি (মনু মিয়া) বিছানা ছেড়ে ওঠতে পারছেন না। এরকম অবস্থায়ও কারো মৃত্যু সংবাদ কানে এলে ছুটে গেছেন কবর খুঁড়তে। তাদের কোনো সন্তান নেই। মানুষের ভালোবাসাই সন্তানের চেয়েও তাদের বড় সম্পদ বলে মন্তব্য করেন রহিমা বেগম।
ব্যতিক্রমী পন্থায় মানুষের প্রতি নিঃস্বার্থ সেবাপরায়ণতার এক অনন্য প্রতীক- জীবনের অন্তিম যাত্রায় মাটিরঘরের নিবেদিত শিল্পী মনু মিয়া। দূরের যাত্রায় দ্রুত পৌঁছাতে নিজের ধানীজমি বিক্রি করে কিনেছেন একটি ঘোড়া। ঘোড়ার পিঠে তুলে নেন তার যাবতীয় হাতিয়ার-যন্ত্র।
সেই ঘোড়ায় সওয়ার হয়েই শেষ ঠিকানা সাজাতে মনু মিয়া এখন ছুটে চলেন গ্রাম থেকে গ্রামে।
কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের এক কৃষক পরিবারে জন্ম মনু মিয়ার। পিতা আবদুল হেকিম মিয়া এবং মাতা সারবানুর দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে মনু মিয়া তৃতীয়।
ছোটবেলায় মনু মিয়া ছিলেন অত্যন্ত ডানপিটে ও দুরন্ত স্বভাবের। সে কারণে বাবা আবদুল হেকিম মিয়া ছেলেকে স্কুলে পাঠালেও লেখাপড়ায় এগোতে পারেননি। বরং স্কুল কামাই করে বন্ধুদের সঙ্গে হা-ডু-ডু, ডাংগুলি ও ফুটবল নিয়ে মাঠে পড়ে থাকার পাশাপাশি নানা রকম দুষ্টুমিই ছিল তার কাজ। এরপরও ছোট ছেলে হিসেবে বাবা-মায়েরর খুব আদরের ছিলেন মনু মিয়া। কৈশোরেই তার আবদার রক্ষা করতে বাবা আবদুল হেকিম মিয়াকে ঘোড়া পর্যন্ত কিনে দিতে হয়েছিল। হাসিখুশি আর হৈ-হল্লায় মেতে থাকা মনু মিয়ার জীবনে হঠাৎ করেই ঘটে ছন্দপতন। মাত্র ১৮ বছর বয়সে মনু মিয়া তার মাকে হারান। মায়ের কবরে বাবা, বড় ভাই আর আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে একমুঠো মাটি দিয়ে তাকে শেষ বিদায় জানানোর সময়েও মনু মিয়া বুঝতে পারেননি, তাকে কতটা স্নেহবঞ্চিত করে চলে গেছেন মা!
খুব অল্পদিনেই যখন মায়ের অভাবটা বুঝতে শুরু করলেন, তখন থেকে মনু মিয়াও শামিল হলেন বদলে যাওয়ার মিছিলে। কারো মৃত্যু সংবাদ শুনলেই, তার মানস পর্দায় ভেসে ওঠতো স্নেহময়ী জননীর মুখ। মাটির ঘরের শেষ বিছানায় কেমন কাটছে তার দিন? কেমন আছেন মা? এসব খুব ভাবাতো মনু মিয়াকে। ব্যাকুল হৃদয়ে মায়ের কবর জিয়ারতের জন্য ছুটে যেতেন কবরস্থানে। কবরস্থানে এভাবে যাওয়া-আসা থেকেই স্থানীয় গোরখোদকদের সঙ্গে মনু মিয়া একদিন কবর খননের কাজে অংশ নেন।
প্রথম সেই দিনের কথা বলতে গিয়ে মনু মিয়া বলেন, আমি তখন কিছুই বুঝতে পারিনি। আমার কেবলই মনে হচ্ছিল, আমি যেন আমার মায়ের শেষ ঠিকানাটা সাজিয়ে দিচ্ছি। এরপর থেকে যখনই সুযোগ পেয়েছি, তখনই তাদের সঙ্গে কবর খননের কাজে অংশ নিয়েছি। এভাবে একসময় এ কাজটার প্রতি আমার অন্যরকমের একটি ভাললাগা জন্মে গেল। কোনো কারণে যদি একটি কবর খোদায় শরিক হতে না পারতাম, মনে হতো কি যেন মিস করেছি।
মনু মিয়া জানান, তিনি ছোটবেলায় স্থানীয় গোরখোদকদের সঙ্গে প্রথম প্রথম আত্মীয়স্বজনের কবর খননের কাজে অংশ নিতেন। ক্রমশ দক্ষতা বাড়তে বাড়তে এক সময় এ কাজটিকেই তিনি জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেন। এরপর থেকে টানা ৪২ বছর ধরে অকৃত্রিম আবেগে তিনি নিজেকে নিবেদিত রেখেছেন কবর খননের কাজে।
একজন নিখুঁত সুদক্ষ গোরখোদক হিসেবে তার সুনাম রয়েছে দুর্গম হাওর উপজেলা ইটনা, মিঠামইন, শাল্লা, আজমিরীগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহে। কবর খনন করার জন্য নিজের খরচায় তিনি খুন্তি, কোদাল, দা, করাতসহ সমস্ত প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তৈরি করে নিয়েছেন।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ কাজে তার পারদর্শিতা এবং আন্তরিকতা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। নিজ গ্রাম বা দূরবর্তী গ্রাম, যেখান থেকে যখনই কারো মৃত্যু সংবাদ পান, আবেগতাড়িত দরদ নিয়ে ছুটে যান মনু মিয়া। তিনি কবর খোঁড়ার বিনিময়ে কারো কাছ থেকে কোনো আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করেন না। এমনকি যাতায়াত খরচটুকুও না। আর এ কারণেও মনু মিয়া পাচ্ছেন মানুষের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা আর সম্মান। তিনি নিজেও বার্ধক্যের কিনারায় দাঁড়িয়ে। ফলে কবর খোঁড়ার কাজে তিনি নিয়োজিত হন এক বিষাদময় আবেগে।
মনু মিয়ার সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, তিনি ঢাকার বনানী কবরস্থানসহ দেশের নানা প্রান্তে গোর খনন করে এ পর্যন্ত ২৬৫০টি গোর খনন করেছেন। কোথাও বেড়াতে গিয়ে যদি কারো মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছেন তো তিনি সেখানে ছুটে গিয়ে গোর খননে শামিল হয়েছেন। এমনো হয়েছে, ভীষণ অসুস্থ অবস্থায় তিনি বিছানা ছেড়ে ওঠতে পারছেন না। কিন্তু কারো মৃত্যু সংবাদ তার কানে এসেছে, সে অবস্থায় তিনি কবরস্থানে ছুটে গিয়ে তার গোর খনন করেছেন। শুরুর দিকে তার স্ত্রী রহিমা বেগম মাঝে মাঝে এ বিষয়ে কথাবার্তা বললেও মনু মিয়ার এ কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও একাগ্রতার কারণে তিনিও স্বামীকে যতটা সম্ভব মানসিক সমর্থন দিয়ে চলেছেন।
উদাসীন ও সাদা মনের এ মানুষটি আমৃত্যু তার এ কাজ চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা রাখেন। তার মতে, মানুষের জন্য এমনিতে কিছু করতে না পারলেও তার শেষ ঠিকানাটা তো সাজিয়ে দিতে পারছেন। আর এটাই তার সুখ।
মনু মিয়া আরো জানান, এ কাজ করতে গিয়ে সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের নিকট থেকে যে ভালোবাসা পাচ্ছেন, এটাও তার পরম শান্তির। তাই শরীরে শক্তি-সামর্থ্য থাকলে আমৃত্যু এ কাজটি তিনি চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা রাখেন। দূরের যাত্রায় দ্রুত পৌঁছাতে নিজের ধানিজমি বিক্রি করে কিনেছেন একটি ঘোড়া। ঘোড়ার পিঠে যাবতীয় হাতিয়ার-যন্ত্র তুলে নিয়ে ঘোড়ায় সওয়ার হয়েই শেষ ঠিকানা সাজাতে মনু মিয়া এখন ছুটে চলেন গ্রাম থেকে গ্রামে। মনু মিয়া বলেন, আমি সেই দিনটির অপেক্ষায় আছি, যখন আমার কবর খনন করার জন্য আমারই মতো কেউ নিঃস্বার্থ মন নিয়ে খুন্তি-কোদাল হাতে এগিয়ে আসবেন।
মনু মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, এমনও হয়েছে, গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তিনি (মনু মিয়া) বিছানা ছেড়ে ওঠতে পারছেন না। এরকম অবস্থায়ও কারো মৃত্যু সংবাদ কানে এলে ছুটে গেছেন কবর খুঁড়তে। তাদের কোনো সন্তান নেই। মানুষের ভালোবাসাই সন্তানের চেয়েও তাদের বড় সম্পদ বলে মন্তব্য করেন রহিমা বেগম।
No comments