যেভাবে সৌদি তরুণীকে রক্ষা করলো টুইটার
কুয়েতে
অবস্থানরত সৌদি তরুণী রাহাফ মুহাম্মদ আল কুনুন তার পরিবার থেকে পালিয়ে
থাইল্যান্ডে পৌঁছান। শনিবার বিকালে ব্যাংকক এয়ারপোর্টের একটি হোটেল রুমে
নিজেকে আবদ্ধ করে রাহাফ সাহায্য চেয়ে একের পর এক টুইট করতে থাকেন। তখন সদ্য
খোলা ওই টুইটার অ্যাকাউন্ট ফলো করছিলেন মাত্র ২৪ জন। আরবি ভাষায় লেখা
প্রথম টুইটে রাহাফ বলেন, ‘আমি থাইল্যান্ডে পালিয়ে আসা এক মেয়ে। আমি আসলেই
বিপদের মধ্যে আছি। কেননা সৌদি দূতাবাস আমাকে জোরপূর্বক ফিরিয়ে নিতে চায়।’
এর পরে তিনি যা বলেন তা অগ্রাহ্য করা কঠিন। রাহাফ লেখেন, ‘পরিবার আমাকে
হত্যা করবে। আমি আতঙ্কিত।’
টুইটারে তার এ সাহায্যের আকুতি মানুষের নজরে পড়ে।
অনলাইন জগতে #সেভরাহাফ হ্যাশট্যাগ ছড়িয়ে পড়ে। কয়েক মিনিটের মধ্যে মিসরীয় বংশোদ্ভূত একজন মার্কিন অধিকারকর্মী রাহাফের আরবি টুইটের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করেন। মুহূর্তেই তা অধিকারকর্মী মনা এলতাহাওয়ে’র লাখ লাখ অনুসারীর কাছে পৌঁছে যায়। কয়েক ঘণ্টা পর রাহাফের বিষয়টি মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নজরে পড়ে। টুইটারে রাহাফের সঙ্গে সরাসরি বার্তা আদান-প্রদান করেন সংস্থাটির এশিয়া অঞ্চলের ডেপুটি ডিরেক্টর ফিল রবার্টসন। তাকে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেন রবার্টসন।
অবরুদ্ধ থাকার পরও রাহাফের অনবরত টুইট অনলাইন জগতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। প্রতি মুহূর্তে রাহাফ টুইটারে নিজের অবস্থা বিশ্ববাসীকে জানাতে থাকেন। তার টুইটগুলোতে যে আতঙ্ক ও সাহায্যের আকুতি ছিল, তা টুইটার ব্যবহারকারীদের সহযোগিতা ও সহানুভূতি আদায় করতে সক্ষম হয়। ক্ষণিকের মধ্যেই ‘সেভরাহাফ’ হ্যাশট্যাগ অনলাইনে ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ে। টুইটার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরেরদিন রোববার বিকাল পর্যন্ত পাঁচ লাখেরও বেশি টুইটার ব্যবহারকারী এই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে টুইট করেছেন। টুইটারে একেবারেই অপরিচিত সৌদি তরুণী রাহাফের অনুসারী ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে ২৪ জন থেকে ২৭ হাজারে পৌঁছে। ফিল রবার্টসন বলেন, যখন আমি শুনলাম যে রাহাফ প্রকাশ্য বিবৃতিতে তার ধর্মত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে, তখনই বুঝেছিলাম সৌদি আরবের ফেরত পাঠানো হলে তার পরিস্থিতি খুবই খারাপ হবে। এমন পরিস্থিতে তাকে সাহায্য করা ছাড়া অন্য কোনো চিন্তা আমার মাথায় ছিল না। সৌদি আরবে ইসলাম ধর্ম বা স্বধর্মত্যাগকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মনে করা হয়। রাহাফের সাহায্যের আকুতি টুইটারে তোলপাড় করার পর বিভিন্ন মহল তার সমর্থনে সোচ্চার হয়েছে। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া রাহাফের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এগিয়ে এসেছে। সেখানে তার শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে।
যা হোক, সোমবার সকালে রাহাফের হোটেল রুমে উপস্থিত হয় থাইল্যান্ডের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা। তারা রাহাফকে কুয়েতে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে জবরদস্তি করেন। টুইটারের মাধ্যমে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পক্ষ থেকে রাহাফকে কোনো অবস্থাতেই তার মোবাইল জমা না দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। রাহাফ এই নির্দেশনা মান্য করতে কঠোর অবস্থানে যান। কর্তৃপক্ষ তার পাসপোর্ট জব্দ করতে সক্ষম হলেও মোবাইল ফোন কেড়ে নিতে পারেনি। পরে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এই নির্দেশনার গুরুত্ব প্রমাণিত হয়। সোমবার তাকে কুয়েতগামী একটি ফ্লাইটে তুলে দিতে জোর প্রচেষ্টা চালায় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তিনি হোটেল রুমে নিজেকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। অনবরত তার সঙ্গে ঘটে চলা বিষয়গুলো টুইটারে প্রচার করতে থাকেন। সোমবার টুইটারে তার অনুসারী বেড়ে ৬৬ হাজারে পৌঁছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হঠাৎ পাওয়া জনপ্রিয়তা রাহাফের পক্ষে বড় ভূমিকা রেখেছে। ফিল রবার্টসন বলেন, রাহাফ মোহাম্মদ আল কুনুন আতঙ্কিত অল্পবয়সী এক নারী। তার সঙ্গে সংঘটিত ঘটনাগুলো টুইটারে ছড়িয়ে পড়ার কারণে তার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়তে থাকে। এটা ছিল বর্তমান সময়ের খুবই শক্তিশালী একটি ঘটনা। যার সমাপ্তি ছিল অনিশ্চিত। সংকটময় পরিস্থিতিতে সমর্থন ও সাহায্য লাভের জন্য রাহাফের কাছে উপযুক্ত মাধ্যম ছিল টুইটার। কেননা এতে যেকোনো তথ্য দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। টুইটারে ব্যাপক সমর্থন লাভের বিষয়টি থাইল্যান্ডের প্রধান গণমাধ্যমগুলোর নজরে পড়ে। রাহাফের টুইট স্থানীয় কূটনৈতিকসহ সরকারের উচ্চপর্যায় ও ইউএনএইচসিআরের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। রাহাফ স্বেচ্ছায় যাবেন না- এটা পরিষ্কার হওয়ার পর থাইল্যান্ড তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্বিবেচনা করে। এক্ষেত্রে উপরের বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বিবিসির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া প্রতিনিধি জোনাথন হেড বলেন, রোববার রাত পর্যন্ত থাইল্যান্ডের কর্মকর্তারা কঠোর অবস্থানে ছিলেন যে, রাহাফকে ফেরত পাঠানো হবে। তখনো থাই গণমাধ্যগুলো রাহাফের কোনো খবর প্রচার করেনি। কিন্তু সোমবার সকালে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। এখন জাতিসংঘ রাহাফ মোহাম্মদ আল কুনুনকে বৈধ শরণার্থী ঘোষণা করার ফলে তিনি নিরাপদে আছেন।
টুইটারে তার এ সাহায্যের আকুতি মানুষের নজরে পড়ে।
অনলাইন জগতে #সেভরাহাফ হ্যাশট্যাগ ছড়িয়ে পড়ে। কয়েক মিনিটের মধ্যে মিসরীয় বংশোদ্ভূত একজন মার্কিন অধিকারকর্মী রাহাফের আরবি টুইটের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করেন। মুহূর্তেই তা অধিকারকর্মী মনা এলতাহাওয়ে’র লাখ লাখ অনুসারীর কাছে পৌঁছে যায়। কয়েক ঘণ্টা পর রাহাফের বিষয়টি মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নজরে পড়ে। টুইটারে রাহাফের সঙ্গে সরাসরি বার্তা আদান-প্রদান করেন সংস্থাটির এশিয়া অঞ্চলের ডেপুটি ডিরেক্টর ফিল রবার্টসন। তাকে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেন রবার্টসন।
অবরুদ্ধ থাকার পরও রাহাফের অনবরত টুইট অনলাইন জগতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। প্রতি মুহূর্তে রাহাফ টুইটারে নিজের অবস্থা বিশ্ববাসীকে জানাতে থাকেন। তার টুইটগুলোতে যে আতঙ্ক ও সাহায্যের আকুতি ছিল, তা টুইটার ব্যবহারকারীদের সহযোগিতা ও সহানুভূতি আদায় করতে সক্ষম হয়। ক্ষণিকের মধ্যেই ‘সেভরাহাফ’ হ্যাশট্যাগ অনলাইনে ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ে। টুইটার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরেরদিন রোববার বিকাল পর্যন্ত পাঁচ লাখেরও বেশি টুইটার ব্যবহারকারী এই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে টুইট করেছেন। টুইটারে একেবারেই অপরিচিত সৌদি তরুণী রাহাফের অনুসারী ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে ২৪ জন থেকে ২৭ হাজারে পৌঁছে। ফিল রবার্টসন বলেন, যখন আমি শুনলাম যে রাহাফ প্রকাশ্য বিবৃতিতে তার ধর্মত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে, তখনই বুঝেছিলাম সৌদি আরবের ফেরত পাঠানো হলে তার পরিস্থিতি খুবই খারাপ হবে। এমন পরিস্থিতে তাকে সাহায্য করা ছাড়া অন্য কোনো চিন্তা আমার মাথায় ছিল না। সৌদি আরবে ইসলাম ধর্ম বা স্বধর্মত্যাগকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মনে করা হয়। রাহাফের সাহায্যের আকুতি টুইটারে তোলপাড় করার পর বিভিন্ন মহল তার সমর্থনে সোচ্চার হয়েছে। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া রাহাফের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এগিয়ে এসেছে। সেখানে তার শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে।
যা হোক, সোমবার সকালে রাহাফের হোটেল রুমে উপস্থিত হয় থাইল্যান্ডের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা। তারা রাহাফকে কুয়েতে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে জবরদস্তি করেন। টুইটারের মাধ্যমে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পক্ষ থেকে রাহাফকে কোনো অবস্থাতেই তার মোবাইল জমা না দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। রাহাফ এই নির্দেশনা মান্য করতে কঠোর অবস্থানে যান। কর্তৃপক্ষ তার পাসপোর্ট জব্দ করতে সক্ষম হলেও মোবাইল ফোন কেড়ে নিতে পারেনি। পরে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এই নির্দেশনার গুরুত্ব প্রমাণিত হয়। সোমবার তাকে কুয়েতগামী একটি ফ্লাইটে তুলে দিতে জোর প্রচেষ্টা চালায় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তিনি হোটেল রুমে নিজেকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। অনবরত তার সঙ্গে ঘটে চলা বিষয়গুলো টুইটারে প্রচার করতে থাকেন। সোমবার টুইটারে তার অনুসারী বেড়ে ৬৬ হাজারে পৌঁছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হঠাৎ পাওয়া জনপ্রিয়তা রাহাফের পক্ষে বড় ভূমিকা রেখেছে। ফিল রবার্টসন বলেন, রাহাফ মোহাম্মদ আল কুনুন আতঙ্কিত অল্পবয়সী এক নারী। তার সঙ্গে সংঘটিত ঘটনাগুলো টুইটারে ছড়িয়ে পড়ার কারণে তার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়তে থাকে। এটা ছিল বর্তমান সময়ের খুবই শক্তিশালী একটি ঘটনা। যার সমাপ্তি ছিল অনিশ্চিত। সংকটময় পরিস্থিতিতে সমর্থন ও সাহায্য লাভের জন্য রাহাফের কাছে উপযুক্ত মাধ্যম ছিল টুইটার। কেননা এতে যেকোনো তথ্য দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। টুইটারে ব্যাপক সমর্থন লাভের বিষয়টি থাইল্যান্ডের প্রধান গণমাধ্যমগুলোর নজরে পড়ে। রাহাফের টুইট স্থানীয় কূটনৈতিকসহ সরকারের উচ্চপর্যায় ও ইউএনএইচসিআরের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। রাহাফ স্বেচ্ছায় যাবেন না- এটা পরিষ্কার হওয়ার পর থাইল্যান্ড তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্বিবেচনা করে। এক্ষেত্রে উপরের বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বিবিসির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া প্রতিনিধি জোনাথন হেড বলেন, রোববার রাত পর্যন্ত থাইল্যান্ডের কর্মকর্তারা কঠোর অবস্থানে ছিলেন যে, রাহাফকে ফেরত পাঠানো হবে। তখনো থাই গণমাধ্যগুলো রাহাফের কোনো খবর প্রচার করেনি। কিন্তু সোমবার সকালে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। এখন জাতিসংঘ রাহাফ মোহাম্মদ আল কুনুনকে বৈধ শরণার্থী ঘোষণা করার ফলে তিনি নিরাপদে আছেন।
No comments