জম্মু-কাশ্মিরে ২০১৮ সালে ৩১১ গেরিলা ও ৮০ নিরাপত্তাকর্মী নিহত
কাশ্মিরে এক বেসামরিক ব্যক্তির মরদেহের পাশে স্বজনের কান্না |
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরে নিরাপত্তা বাহিনীর
সঙ্গে সংঘর্ষে গত একবছরে (২০১৮ সালে) ৩১১ জন গেরিলা সদস্য নিহত হয়েছে।
সেনাবাহিনীর লে. জেনারেল অনিল কুমার ভাট গতকাল (সোমবার) গণমাধ্যমকে ওই তথ্য
জানিয়েছেন। নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে অসাধারণ সমন্বয় ও অপারেশনের
স্বাধীনতার ফলেই ওই 'সাফল্য' বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ের তথ্য সূত্রে প্রকাশ, (গত ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত) সংঘর্ষজনিত
কারণে রাজ্যটিতে গত বছর ৭৭ জন বেসামরিক ব্যক্তি ও নিরাপত্তা বাহিনীর ৮০
সদস্য নিহত হয়েছে। ২০১৭ সালে ৪০ জন বেসামরিক ব্যক্তি ও নিরাপত্তা বাহিনীর
৮০ সদস্য নিহত হয়েছিলেন। অন্যদিকে, ২০১৭ সালে ৩৪২টি সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটলেও
একবছরে তা বেড়ে ৪২৯ হয়েছে।
কাশ্মিরে নিহত ৪ সেনা কর্মকর্তা
‘আলোচনা ছাড়া কাশ্মির সমস্যা সমাধানের পথ নেই’
এ প্রসঙ্গে ভারতের
পশ্চিমবঙ্গের ‘বন্দী মুক্তি কমিটি’র সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ভানু সরকার রেডিও
তেহরানকে বলেন, ‘মানুষের মৃত্যুর পরিসংখ্যান দিয়ে কাজের সফলতা মাপা হচ্ছে,
এর থেকে ভয়ংকর অমানবিক আর কিছু হতে পারে না! মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের চোখ
দিয়ে দেখলে যা হয় ঠিক তাই চলছে। ট্রাম্পকে যখন সেনেটে প্রশ্ন করা হয় সিরিয়া
বা মধ্যপ্রাচ্যে সেনাবাহিনী রাখার যৌক্তিকতা কোথায়, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট
বলে থাকেন আমরা এত আইএস জঙ্গি খতম করেছি। এত এসব নির্মূল করেছি। নির্মূলের
পরিসংখ্যান দিয়ে তাঁরা তাঁদের সফলতা বোঝান। ভারতেও ঠিক একই জিনিস চলছে।’
ভানু সরকার
তিনি বলেন, ‘আমরা মানবাধিকার সংগঠনের
কর্মীরা চিরকাল বলে এসেছি কাশ্মির রাজনৈতিক সমস্যা। ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু করে
আজ পর্যন্ত হাজার হাজার, লাখ লাখ মিলিটারি নামিয়ে হাজার হাজার মানুষকে
হত্যা করে, অসংখ্য মানুষকে গায়েব করে দিয়ে কাশ্মিরি স্বাধীনতা আন্দোলনকে
দমন করা যায়নি এবং এভাবে চলতে থাকলে তা কোনোদিনই দমন করা যাবে না। ফলে আমরা
মনে করি এটা রাজনৈতিক সমস্যা। আলোচনা ছাড়া ওই সমস্যা সমাধানের বিকল্প কোনো
পথ নেই। আমরা বন্দী মুক্তি কমিটি মনে করি আলোচনার মধ্য দিয়েই কাশ্মির
সমস্যার সমাধান করতে হবে। কোনোরকম বন্দুক ব্যবহার করা যাবে না। অবিলম্বে
কাশ্মির থেকে সমস্ত মিলিটারি, আধাসামরিক বাহিনীসহ যত প্রকার সেনাবাহিনী
সেখানে আছে তাঁদের প্রত্যাহার করতে হবে, আলোচনার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি
করতে হবে এবং আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংলাপে বসতে হবে।’
No comments