পঞ্চাশ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এমন একপক্ষীয় অবস্থা দেখিনি -নূরে আলম সিদ্দিকী
একটি
অসহিষ্ণু অস্থিরতা নির্বাচনের সমস্ত সৌন্দর্য ও স্বাবলীলতাকে গ্রাস করেছে।
দেশের জনগণ ধরেই নিয়েছে ক্ষমতাসীনদের বেঁধে দেয়া গতানুগতিক রাস্তায়
নির্বাচনটি হবে। মানবজমিনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে এসব
কথা বলেন স্বাধীনতার অন্যতম সংগঠক, প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক
নূরে আলম সিদ্দিকী।
নির্বাচনের সামগ্রিক পরিস্থিতি কেমন দেখছেন এ প্রশ্নে তিনি বলেন, এই নির্বাচনে নিরপেক্ষতা, গ্রহণযোগ্যতা, জনগণের সংশ্লিষ্টতা সবকিছু মিলে একটি হতাশাব্যঞ্জক পরিস্থিতি আমি অবলোকন করছি, উপলব্ধি করছি এবং অনুভব করছি। বাস্তবে পরিবেশটি ছিমছাম এবং সরকারদলীয় প্রার্থীদের নির্বাচন প্রচারণার ডামাডোলে আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে নির্বাচন উৎসবমুখর হচ্ছে। কিন্তু একটি নির্বাচনের নিয়ামক শক্তি যারাÑ দেশের সাধারণ জনগণ, নির্বাচন নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো উদ্দীপনাতো নয়ই ন্যূনতম আশার ও উৎসাহের সঞ্চার করতে পারেনি। সমগ্র জনতার মনে একটা গা-ছাড়া ভাব। তারা ধরেই নিয়েছে নির্ধারিত ফলাফলের লক্ষ্যে ক্ষমতাসীনদের বেঁধে দেয়া গতানুগতিক রাস্তায় নির্বাচনটি হবে। আরো ৫ বছরের জন্য ক্ষমতাকে পোক্ত করার একটি নিমিত্ত ছাড়া এ নির্বাচনের আর কোনো উদ্দেশ্য নেই।
এই অবস্থাটির প্রতিবাদ করারও বাস্তব পরিস্থিতি বিরাজ করছে না। দেশে প্রার্থীদের বাদ্য বাজনা যতই বাজুক একটা গুমোট থমথমে ভাব সমাজের সর্বস্তরে বিরাজ করছে। একটা অসহিষ্ণু অস্থিরতা নির্বাচনের সমস্ত সৌন্দর্য ও স্বাবলীলতাকে গ্রাস করে ফেলেছে। এর মধ্যে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত ঐক্যফ্রন্ট একটা প্রতিবাদের পাদটিকা তৈরি করতে পারবে বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু কালের কশাঘাতে সে সম্ভাবনাও মলিন ও বিবর্ণ হয়ে গেল। অন্যদিকে বিরোধী দল বলতে যাদের বোঝায় সেই বিএনপি ছন্নছাড়া একটা দলে রূপ নিয়েছে। দলটি বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেবে কিভাবে? কারণ, দলটি আজ বলতে গেলে নেতৃত্ব শূন্য। যদিও কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত ঐক্যফ্রন্টটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের নিশ্চয়তা প্রদানের একটি দৃশ্যমান পরিবেশ সৃষ্টি করতে চলেছিল তা অভিযাত্রার প্রারম্ভেই দুমড়ে-মুচড়ে দেয়া হলো।
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে সর্বত্র আলোচনা। আপনি কিভাবে দেখছেন?
একটা নির্বাচন যে নিরপেক্ষতা ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড একান্ত জরুরি সেটা অনেকটাই অনুপস্থিত। প্রশাসনতো একচেটিয়াভাবে সরকারি দলের পক্ষে মাঠে নেমে গেছে। পুলিশ প্রশাসন এখন আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ক্যাডার। অনেক থানার ওসি পায়জামা, পাঞ্জাবি পরে, বঙ্গবন্ধু কোট গায়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতার মতো বক্তৃতা করছেন। দিনে বক্তৃতা করছেন, রাতে বিএনপি কর্মীদের দৌড়ের ওপর রাখছেন এবং বিএনপির নেতা-কর্মীরাও অনেকটা হাল ছেড়ে দেয়ার মতো অবস্থা। নির্বাচন হচ্ছে হোক তারাই এখন এটাকে গতানুগতিকভাবে নিয়েছেন তখন সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এই নির্বাচনে একটা সুদৃঢ় ভূমিকা পালন করার সুযোগ কোথায়?
নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য না হলে কি পরিস্থিতি হবে বলে মনে করেন?
শাসনতন্ত্র পরিবর্তনে ক্ষমতা অর্জনের জন্য ২০০ সংসদের আসন তারা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মনে হচ্ছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কি নাগরিক, কি নির্বাচন কমিশন, কি রাষ্ট্রীয় প্রশাসন কেউ যেন এটাকে প্রতিরোধ করার কোনো ভূমিকাতো রাখছেনই না, বরং তারাও পরম উৎসাহে তালে তাল দিচ্ছেন। আমার পঞ্চাশ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এমন একপক্ষীয় ও বেহাল অবস্থা কখনও দেখিনি।
বাষট্টি থেকে আইয়ুবের আমলে নির্বাচন দেখে আসছি, মৌলিক গণতন্ত্রী ধরনের নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের যে বিস্তীর্ণ সুযোগ ছিল তা যে তারা ব্যবহার করেননি তা নয় কিন্তু প্রশাসন প্রকাশ্যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে আজকের মতো আস্ফালন করেননি। দেশের এই ভয়াবহতা প্রশাসনের সরকারি পক্ষে উলঙ্গ অংশগ্রহণ এবং বিচারিক ব্যবস্থার এই নীরব নিথর নিস্তব্ধ ভূমিকা দেশকে; নির্বাচনকে ভয়াবহ অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে।
নির্বাচনের সামগ্রিক পরিস্থিতি কেমন দেখছেন এ প্রশ্নে তিনি বলেন, এই নির্বাচনে নিরপেক্ষতা, গ্রহণযোগ্যতা, জনগণের সংশ্লিষ্টতা সবকিছু মিলে একটি হতাশাব্যঞ্জক পরিস্থিতি আমি অবলোকন করছি, উপলব্ধি করছি এবং অনুভব করছি। বাস্তবে পরিবেশটি ছিমছাম এবং সরকারদলীয় প্রার্থীদের নির্বাচন প্রচারণার ডামাডোলে আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে নির্বাচন উৎসবমুখর হচ্ছে। কিন্তু একটি নির্বাচনের নিয়ামক শক্তি যারাÑ দেশের সাধারণ জনগণ, নির্বাচন নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো উদ্দীপনাতো নয়ই ন্যূনতম আশার ও উৎসাহের সঞ্চার করতে পারেনি। সমগ্র জনতার মনে একটা গা-ছাড়া ভাব। তারা ধরেই নিয়েছে নির্ধারিত ফলাফলের লক্ষ্যে ক্ষমতাসীনদের বেঁধে দেয়া গতানুগতিক রাস্তায় নির্বাচনটি হবে। আরো ৫ বছরের জন্য ক্ষমতাকে পোক্ত করার একটি নিমিত্ত ছাড়া এ নির্বাচনের আর কোনো উদ্দেশ্য নেই।
এই অবস্থাটির প্রতিবাদ করারও বাস্তব পরিস্থিতি বিরাজ করছে না। দেশে প্রার্থীদের বাদ্য বাজনা যতই বাজুক একটা গুমোট থমথমে ভাব সমাজের সর্বস্তরে বিরাজ করছে। একটা অসহিষ্ণু অস্থিরতা নির্বাচনের সমস্ত সৌন্দর্য ও স্বাবলীলতাকে গ্রাস করে ফেলেছে। এর মধ্যে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত ঐক্যফ্রন্ট একটা প্রতিবাদের পাদটিকা তৈরি করতে পারবে বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু কালের কশাঘাতে সে সম্ভাবনাও মলিন ও বিবর্ণ হয়ে গেল। অন্যদিকে বিরোধী দল বলতে যাদের বোঝায় সেই বিএনপি ছন্নছাড়া একটা দলে রূপ নিয়েছে। দলটি বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেবে কিভাবে? কারণ, দলটি আজ বলতে গেলে নেতৃত্ব শূন্য। যদিও কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত ঐক্যফ্রন্টটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের নিশ্চয়তা প্রদানের একটি দৃশ্যমান পরিবেশ সৃষ্টি করতে চলেছিল তা অভিযাত্রার প্রারম্ভেই দুমড়ে-মুচড়ে দেয়া হলো।
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে সর্বত্র আলোচনা। আপনি কিভাবে দেখছেন?
একটা নির্বাচন যে নিরপেক্ষতা ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড একান্ত জরুরি সেটা অনেকটাই অনুপস্থিত। প্রশাসনতো একচেটিয়াভাবে সরকারি দলের পক্ষে মাঠে নেমে গেছে। পুলিশ প্রশাসন এখন আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ক্যাডার। অনেক থানার ওসি পায়জামা, পাঞ্জাবি পরে, বঙ্গবন্ধু কোট গায়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতার মতো বক্তৃতা করছেন। দিনে বক্তৃতা করছেন, রাতে বিএনপি কর্মীদের দৌড়ের ওপর রাখছেন এবং বিএনপির নেতা-কর্মীরাও অনেকটা হাল ছেড়ে দেয়ার মতো অবস্থা। নির্বাচন হচ্ছে হোক তারাই এখন এটাকে গতানুগতিকভাবে নিয়েছেন তখন সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এই নির্বাচনে একটা সুদৃঢ় ভূমিকা পালন করার সুযোগ কোথায়?
নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য না হলে কি পরিস্থিতি হবে বলে মনে করেন?
শাসনতন্ত্র পরিবর্তনে ক্ষমতা অর্জনের জন্য ২০০ সংসদের আসন তারা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মনে হচ্ছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কি নাগরিক, কি নির্বাচন কমিশন, কি রাষ্ট্রীয় প্রশাসন কেউ যেন এটাকে প্রতিরোধ করার কোনো ভূমিকাতো রাখছেনই না, বরং তারাও পরম উৎসাহে তালে তাল দিচ্ছেন। আমার পঞ্চাশ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এমন একপক্ষীয় ও বেহাল অবস্থা কখনও দেখিনি।
বাষট্টি থেকে আইয়ুবের আমলে নির্বাচন দেখে আসছি, মৌলিক গণতন্ত্রী ধরনের নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের যে বিস্তীর্ণ সুযোগ ছিল তা যে তারা ব্যবহার করেননি তা নয় কিন্তু প্রশাসন প্রকাশ্যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে আজকের মতো আস্ফালন করেননি। দেশের এই ভয়াবহতা প্রশাসনের সরকারি পক্ষে উলঙ্গ অংশগ্রহণ এবং বিচারিক ব্যবস্থার এই নীরব নিথর নিস্তব্ধ ভূমিকা দেশকে; নির্বাচনকে ভয়াবহ অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে।
No comments