১৯৯৬ সালে কাতারে ব্যর্থ অভ্যুত্থান নিয়ে নয়া তথ্য
কাতারে
১৯৯৬ সালের ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টা সম্পর্কে নতুন বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ
পেয়েছে। যে ফরাসি সেনা কর্মকর্তা ওই সামরিক অভ্যুত্থান সফল করার দায়িত্বে
ছিলেন, তিনিই প্রকাশ করেছেন এসব। তিনি জানান, ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওই
অভ্যুত্থানের নেপথ্যে ছিল ৩ দেশ, যারা এখন কাতারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে।
আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পল ব্যারিল নামে ওই সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলেন, এতে সমর্থন ছিল সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের। এই তিন দেশ ও মিশর ২০১৭ সালের ৫ই জুন কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। তাদের অভিযোগ, কাতার সন্ত্রাসবাদে সমর্থন দেয়। তবে কাতার ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ব্যর্থ ওই সামরিক অভ্যুত্থানের নাম দেয়া হয়েছিল ‘অপারেশন আবু আলি’। ১৯৯৬ সালের রমজান মাসে, অর্থাৎ তৎকালীন আমির শেখ হামাদ বিন খলিফা আল থানির ক্ষমতায় আসার এক বছর বাদে তাকে উৎখাতে এই চেষ্টা চালানো হয়।
আমিরের কাজিন ও তৎকালীন পুলিশ প্রধান শেখ হামাদ বিন জসিম বিন হামাদ আল থানির সহযোগিতায় পরিকল্পনা করা হয়।
ব্যারিল জানান, পুরো প্রচেষ্টায় আরব আমিরাত তাকে ব্যাপক সহায়তা দিয়েছে। পুরো অভিযান সফল করতে তার সঙ্গে ছিল ৪০ জন উচ্চ প্রশিক্ষিত সেনা। পুরো দলকে রাখা হয়েছিল আবু ধাবির ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে। সেখানেই অনেক অস্ত্র রাখা হয়েছিল। পুরো দলকে ইউএই’র পাসপোর্ট দেন আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ জায়েদ আল-নাহিয়ান, যিনি তখন আরব আমিরাতের সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিলেন। ব্যারিল বলেন, অস্ত্রের যোগান এসেছিল মূলত মিশর থেকে। যে সামরিক দল অভিযান পরিচালনার দায়িত্বে ছিল তাদের মধ্যে নির্বাসিত কাতারি কর্মকর্তারাও ছিলেন।
পাশাপাশি সৌদি আরবও উপজাতীয় যোদ্ধাদের প্রস্তুত রেখেছিল। বাহরাইন ছিল ব্যারিল ও তার যোগাযোগ দলের অবস্থানস্থল। তারা সেখান থেকে আড়িপাতার মাধ্যমে কাতারের রাজধানী দোহায় চলমান ঘটনাপ্রবাহ জানবেন, এমনটাই কথা ছিল।
তিনি আরও জানান, ১৯৯৬ সালের শুরুর দিকে ওই অভিযান সফল করতে তিনি একা গোপনে সাগরপথে দোহায় যান। তার উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুর ছবি নেয়া। এর মধ্যে শেখ হামাদের বাসভবন, স্থানীয় টিভি স্টেশন ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ভবন অন্তর্ভূক্ত ছিল। রোববার ব্যারিলের তোলা ওই ছবি প্রথমবারের মতো আল জাজিরা প্রকাশ করে।
অভিযানে অংশ নিতে তিনি আফ্রিকার দেশ চাদ থেকে ৩ হাজার সেনা নিয়ে আসেন। বিনিময়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস দেবিকে ২ কোটি ডলার পরিশোধ করেন। পুরো অভিযানের খরচ ছিল প্রায় ১০ কোটি ডলারের কাছাকাছি।
যেভাবে ব্যর্থ হয় অভিযান
ব্যারিল জানান, অভিযান ব্যর্থ হওয়ার একটি কারণ ছিল, তৎকালীন ফরাসি প্রেসিডেন্ট জ্যাকস শিরাক নিজে ব্যক্তিগতভাবে তাকে ফোন দিয়ে অভিযান বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে অভিযান এগিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত রদ করেছিলেন কাতারের জাতির পিতা শেখ খলিফা বিন হামাদ আল থানি, যিনি ছিলেন তৎকালীন আমিরের পিতা। শেখ খলিফা যখন জানতে পারেন যে, তার ছেলের বিরুদ্ধে ওই অভিযান চালানো হলে প্রায় ১ হাজার মানুষ মারা যেতে পারে, তখন তিনি ক্ষান্তি দেন।
ব্যারিল বলেন, ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ‘হত্যাযজ্ঞ’ সম্পন্ন করতে হতো। কারণ, তার দলের অন্যতম দায়িত্ব ছিল আমির শেখ হামাদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সহ শাসক পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যকে আটক করা।
এদিকে জার্মানির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল জানান, ২০১৭ সালের জুনের দিকে যখন কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ওই চার প্রতিবেশী দেশ, তখন দেশটি সামরিক বহিঃআক্রমণের দ্বারপ্রান্তে ছিল।
আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই জার্মান রাজনীতিক জানান, তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন এই আক্রমণ প্রতিহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। তার হস্তক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ভেবেছিলেন যে তিনি এতে আমেরিকার পূর্ণ সমর্থন পাবেন।
তখন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা গ্যাব্রিয়েল সতর্ক করে বলেছিলেন যে, উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ বা জিসিসি’তে ফাটল ধরলে তাতে যুদ্ধ বেধে যেতে পারে।
আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পল ব্যারিল নামে ওই সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলেন, এতে সমর্থন ছিল সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের। এই তিন দেশ ও মিশর ২০১৭ সালের ৫ই জুন কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। তাদের অভিযোগ, কাতার সন্ত্রাসবাদে সমর্থন দেয়। তবে কাতার ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ব্যর্থ ওই সামরিক অভ্যুত্থানের নাম দেয়া হয়েছিল ‘অপারেশন আবু আলি’। ১৯৯৬ সালের রমজান মাসে, অর্থাৎ তৎকালীন আমির শেখ হামাদ বিন খলিফা আল থানির ক্ষমতায় আসার এক বছর বাদে তাকে উৎখাতে এই চেষ্টা চালানো হয়।
আমিরের কাজিন ও তৎকালীন পুলিশ প্রধান শেখ হামাদ বিন জসিম বিন হামাদ আল থানির সহযোগিতায় পরিকল্পনা করা হয়।
ব্যারিল জানান, পুরো প্রচেষ্টায় আরব আমিরাত তাকে ব্যাপক সহায়তা দিয়েছে। পুরো অভিযান সফল করতে তার সঙ্গে ছিল ৪০ জন উচ্চ প্রশিক্ষিত সেনা। পুরো দলকে রাখা হয়েছিল আবু ধাবির ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে। সেখানেই অনেক অস্ত্র রাখা হয়েছিল। পুরো দলকে ইউএই’র পাসপোর্ট দেন আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ জায়েদ আল-নাহিয়ান, যিনি তখন আরব আমিরাতের সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিলেন। ব্যারিল বলেন, অস্ত্রের যোগান এসেছিল মূলত মিশর থেকে। যে সামরিক দল অভিযান পরিচালনার দায়িত্বে ছিল তাদের মধ্যে নির্বাসিত কাতারি কর্মকর্তারাও ছিলেন।
পাশাপাশি সৌদি আরবও উপজাতীয় যোদ্ধাদের প্রস্তুত রেখেছিল। বাহরাইন ছিল ব্যারিল ও তার যোগাযোগ দলের অবস্থানস্থল। তারা সেখান থেকে আড়িপাতার মাধ্যমে কাতারের রাজধানী দোহায় চলমান ঘটনাপ্রবাহ জানবেন, এমনটাই কথা ছিল।
তিনি আরও জানান, ১৯৯৬ সালের শুরুর দিকে ওই অভিযান সফল করতে তিনি একা গোপনে সাগরপথে দোহায় যান। তার উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুর ছবি নেয়া। এর মধ্যে শেখ হামাদের বাসভবন, স্থানীয় টিভি স্টেশন ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ভবন অন্তর্ভূক্ত ছিল। রোববার ব্যারিলের তোলা ওই ছবি প্রথমবারের মতো আল জাজিরা প্রকাশ করে।
অভিযানে অংশ নিতে তিনি আফ্রিকার দেশ চাদ থেকে ৩ হাজার সেনা নিয়ে আসেন। বিনিময়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস দেবিকে ২ কোটি ডলার পরিশোধ করেন। পুরো অভিযানের খরচ ছিল প্রায় ১০ কোটি ডলারের কাছাকাছি।
যেভাবে ব্যর্থ হয় অভিযান
ব্যারিল জানান, অভিযান ব্যর্থ হওয়ার একটি কারণ ছিল, তৎকালীন ফরাসি প্রেসিডেন্ট জ্যাকস শিরাক নিজে ব্যক্তিগতভাবে তাকে ফোন দিয়ে অভিযান বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে অভিযান এগিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত রদ করেছিলেন কাতারের জাতির পিতা শেখ খলিফা বিন হামাদ আল থানি, যিনি ছিলেন তৎকালীন আমিরের পিতা। শেখ খলিফা যখন জানতে পারেন যে, তার ছেলের বিরুদ্ধে ওই অভিযান চালানো হলে প্রায় ১ হাজার মানুষ মারা যেতে পারে, তখন তিনি ক্ষান্তি দেন।
ব্যারিল বলেন, ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ‘হত্যাযজ্ঞ’ সম্পন্ন করতে হতো। কারণ, তার দলের অন্যতম দায়িত্ব ছিল আমির শেখ হামাদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সহ শাসক পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যকে আটক করা।
এদিকে জার্মানির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল জানান, ২০১৭ সালের জুনের দিকে যখন কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ওই চার প্রতিবেশী দেশ, তখন দেশটি সামরিক বহিঃআক্রমণের দ্বারপ্রান্তে ছিল।
আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই জার্মান রাজনীতিক জানান, তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন এই আক্রমণ প্রতিহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। তার হস্তক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ভেবেছিলেন যে তিনি এতে আমেরিকার পূর্ণ সমর্থন পাবেন।
তখন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা গ্যাব্রিয়েল সতর্ক করে বলেছিলেন যে, উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ বা জিসিসি’তে ফাটল ধরলে তাতে যুদ্ধ বেধে যেতে পারে।
No comments