এমন নির্বাচন হওয়া উচিত যাতে বৈধতার সংকট থেকে শাসনব্যবস্থা মুক্ত হয় by মরিয়ম চম্পা
অংশগ্রহণমূলক,
সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন দেখতে চায় দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক
সম্প্রদায়। এমনটাই মনে করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবং
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন
এমন হওয়া উচিত যাতে বৈধতার সংকট থেকে শাসন ব্যবস্থা মুক্ত হয়। তবে এখন
নির্বাচন হবে কি-না এখানেও প্রকৃতপক্ষে অনেক অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। কারণ আমরা
দেখতে পাচ্ছি যে, ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর ওপরও এবার এক ধরনের চাপ রয়েছে।
সরকারের মধ্যে এক ধরনের দ্বিধা কাজ করছে যে, পরিপূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের ফলাফল কি হতে পারে? আওয়ামী লীগ যদি বিএনপিকে দুর্বল করার পরেও বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক। এতে তাদের বিজয়টা আরো নিশ্চিত হতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে তারা এখনো সার্বিকভাবে নিজেদের সফল মনে করতে পারছে না। কারণ প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে ওভাবে ভাঙা বা দুর্বল করা যায় নি।
বরং উল্টো আমরা সম্প্রতি দেখেছি যে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন হয়েছে। আমাদের মতো দেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে মূলত দুইটা শক্তি থাকে।
একটি রাজনৈতিক শক্তি আরেকটি সামাজিক শক্তি। দুইটা মিলে রাজনৈতিক শক্তিটা আরো বেড়ে যায়। ঐক্যফ্রন্ট হওয়ার ফলে মনে হচ্ছে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনাটা একটু বেড়েছে।
সম্প্রতি ধানমন্ডির পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) কার্যালয়ে মানবজমিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। পিপিআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান, লেখক, গবেষক ড. হোসেন জিল্লুর রহমান দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক সংকটসহ নানা ইস্যুতে খোলামেলা আলোচনা করেন।
হোসেন জিল্লুর বলেন, বর্তমান সরকার আইনসম্মত নির্বাচিত সরকার। সেই অর্থে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন আছে। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনের সমস্যা সাংবিধানিক বা আইনি সমস্যা নয়। ওটা ছিল একধরনের বৈধতার সংকট। অংশগ্রহণ অনেক কম ছিল। ১৫৩ জন বিনা নির্বাচনে সংসদ সদস্য হয়ে গেছেন। সব মিলিয়ে আগামী নির্বাচনটা এমন হওয়া উচিত যাতে করে বৈধতার সংকট থেকে বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা ভালোভাবে মুক্ত হয়। সেই ধরনের একটি নির্বাচন হওয়া উচিত। যারা প্রতিযোগিতা করতে চায় তারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে থেকে যেন প্রতিযোগিতা করতে পারে। আবার প্রতিযোগী যারা তাদের বিষয়ে বলতে চাই যে, নিছক ক্ষমতার পালাবদলের জন্য যেন নির্বাচনটা না হয়। ওই ধরনের প্রতিযোগীদের সামনে আশা উচিত যারা এটাকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখবে। এবং বিভিন্ন খাতে প্রবাহিত বিচ্যুতিগুলোকে পাশ কাটিয়ে সঠিক পথে যেন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারে।
ঐক্যফ্রন্ট গঠনের কারণে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফলাফল কোন্ দিকে যাবে সেটা অনেক পরের বিষয়। তবে ক্ষমতাসীন দল এই প্রতিযোগিতার বিষয় নিয়ে কতটুকু স্বস্তির মধ্যে থাকবে বা সাহস করে এগিয়ে যাবে এই অনিশ্চয়তা কাজ করছে। ইতিমধ্যে প্রতিযোগিতামূলক একটি আবহাওয়া তৈরি হয়েছে। এতে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হতে পারে আবার নাও হতে পারে। আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে ক্ষমতাসীনরা নির্বাচন ইস্যুতে কতটুকু বদ্ধপরিকর থাকবে। প্রথমে আমরা শুনেছি ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। আবার শুনেছি নাও হতে পারে। তার মানে এখনো আমরা একটি দ্বিধাদ্বন্দ্ব এবং অনিশ্চয়তার জায়গায় আছি। অর্থাৎ প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা যেমন বেড়েছে আবার দ্বিধাদ্বন্দ্ব অনিশ্চয়তাও বেড়েছে।
স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে সাধারণ জনগণের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানুষ যাদের ভোট দেবে সেই ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বী সবাই অংশগ্রহণ করতে পারছে না। অনেক সময় মূল প্রতিদ্বন্দ্বীদের অংশগ্রহণই করতে দিচ্ছে না। ভোট দেয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা দেখা যায়। সেখানে সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড দেখা যায়। ’৮০-র দশকে এই সংস্কৃতিটা ছিল। সন্ত্রাসনির্ভর রাজনীতি, দখল, জালভোট ইত্যাদির একটি সংস্কৃতি ছিল। মাঝের দুই দশকে আমরা এগুলোকে বিতাড়িত করতে পেরেছিলাম। কিন্তু এখন আবার সেগুলো পুরোদমে ফিরে এসেছে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখা যায় ইদানীং নির্বাচনগুলোতে জালভোট পড়েছে। কেন্দ্রে যেতে দেয়া হয়নি। এজেন্ট বের করে দেয়া হয়েছে। এগুলোর অন্যতম উপসর্গ হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা। সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করার সাংবিধানিক দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু তাদের ভূমিকাটা আমরা দেখি যে অত্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশন হয় আগ বাড়িয়ে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীকে সহায়তার চেষ্টা করে। অথবা তাদের যে সাংবিধানিক দায়িত্ব সেটা পালন না করে স্বেচ্ছা নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে থাকে। চোখ-কান বন্ধ করে কিছু শুনবে না, দেখবে না। তিনি বলেন, ভোটাধিকারের একটি ক্রাইসিস তৈরি হয়েছে। এটার কু-প্রভাব কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গন ছাড়িয়ে পেশাজীবী অঙ্গনেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিজনেস চেম্বারগুলোতে এখন আর ভোট হয় না। যেটা হয় তার নাম হচ্ছে সমঝোতা।
অর্থনৈতিক অগ্রগতি প্রসঙ্গে প্রখ্যাত এই অর্থনীতিবিদ বলেন, আমরা যে অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা চিন্তা করি তার নানা সূচক আছে। একটি হচ্ছে খণ্ডিত সূচক আরেকটি হচ্ছে সার্বিকভাবে মূল্যায়ন করা। সার্বিক মূল্যায়নে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিষয়ে বলতে গেলে বলা যায় যে, স্বাধীনতার সময়ে আমাদের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও একটি ভঙ্গুর অর্থনীতি ছিল। সে অবস্থা থেকে এক ধরনের টেকসই ভিত্তি তৈরি করা গেছে বর্তমান অর্থনীতিতে। যার ফলে আমাদের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দিক তৈরি হয়েছে। যেমন প্রবৃদ্ধির মাত্রাগুলো কোনো সময় ঠিক ওলটপালটের দিকে যায় নি। মোটামুটি একটি গতি ধরে এগিয়েছে। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে আমাদের চাওয়ার জায়গাটায় একটি পরিবর্তন এসেছে। এক্ষেত্রে যে অবস্থা থেকে শুরু করেছিলাম সেটা দিয়ে অর্থনীতি কীভাবে চলছে তা পরিমাপ করা যাবে না। ৭০ দশকে আমাদের প্রবৃদ্ধি ১ থেকে ২ শতাংশে ছিল। এখন সেটা ৬ থেকে ৭-এর দিকে চলে গেছে। সরকারি এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এত কিছুর পরেও ২০১৮তে প্রায় ৩৯ মিলিয়ন মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে। আমরা এগিয়েছি কিন্তু চার কোটি মানুষ এখনো দরিদ্রসীমার নিচে। এই বিষয়গুলো আমাদের জানান দেয় যে, এগিয়েছে কিন্তু চ্যালেঞ্জটা কি পর্যায়ে সেটা জানা বা বোঝা দরকার। এক্ষেত্রে গতি বাড়ানো প্রয়োজন এবং এগুবার ধরনটাও উন্নত করা দরকার।
তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নে বেশি উন্নয়ন কম গণতন্ত্র- এই কথাটিই আসলে সঠিক নয়। গণতন্ত্রের অন্যতম সূচক যেটা অর্থনীতির ওপর নির্ভর করে। যেমন ধরে নিলাম কম গণতন্ত্র তার মানে নির্বাচন হচ্ছে না। কিন্তু গণতন্ত্রের আরেকটি অন্যতম সূচক হচ্ছে জবাবদিহিতা। জবাবদিহিতা নেই সে জন্য এখন ব্যাংক কলাপস করছে। সেটার প্রভাব কিন্তু সরাসরি অর্থনীতির ওপর পড়ছে। সুতরাং গণতন্ত্রে জবাবদিহিতার অভাবে আমাদের প্রকল্পগুলো সঠিক সময়ে শেষ হচ্ছে না। জবাবদিহিতার অভাবকে যদি আমরা গণতন্ত্রের অন্যতম সূচক ধরি তাহলে বুঝতে পারছি উন্নয়নের জন্য এটা অত্যাবশ্যক। অন্যথায় প্রকল্প বিলম্ব, অযৌক্তিক প্রকল্প ব্যয় হতেই থাকবে। এগুলোর জন্য ব্যাংকিং ক্রাইসিস হতেই থাকবে। সুতরাং উন্নয়ন দরকার, গণতন্ত্রের দরকার নেই- এগুলো হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থেকে এক ধরনের ব্যাখ্যা চালু করার চেষ্টা।
ডিজিটাল নিরাপত্তা ও সম্প্রচার নীতিমালা আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা দেখেছি যে, সম্পাদক পরিষদসহ সচেতন নাগরিকরা এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন। সম্প্রতি সম্পাদক পরিষদের মানববন্ধন ছিল নজিরবিহীন। এটাও দেখছি যে, তুচ্ছ অজুহাতে আজকাল মানুষকে হয়রানি ও ধরপাকড় করা হচ্ছে। আমরা সবাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু নিরাপত্তার অজুহাতে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করা তো ঠিক নয়।
ক্ষমতা হস্তান্তরের শান্তিপূর্ণ উপায় সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাই যে, একটার পর একটা রাজনৈতিক সংকট হচ্ছে। কিন্তু তার সমাধান হচ্ছে না। এখন এই মুহূর্তে আমরা একটি বিশাল সংকটের মধ্যে আছি। এই সংকটের অন্যতম বিষয়গুলো হচ্ছে আমাদের এখানে একচ্ছত্র ক্ষমতার ধারণাটি ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর মধ্যে জেঁকে বসেছে। এবং চ্যালেঞ্জের জায়গাটা কিন্তু বৃহত্তর জনগণেরও ব্যর্থতার জায়গা বলা যেতে পারে। শিক্ষাঙ্গনে যে বিশৃঙ্খলা সেখানে শিক্ষক সম্প্রদায় কেনো দাঁড়ায় না। আইনজীবীরা সবাই এক বাক্যে কেনো দাঁড়ায় না। এখানে ব্যর্থতাটা দুটি জায়গায়। একটি হচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গনে যারা বিচরণ করছেন সেখানের ব্যর্থতা। অন্যতম আরেকটি সমস্যা হচ্ছে মূল্যবোধ সংবলিত নতুন নেতৃত্ব তৈরি করা। এ বিষয়টি গৌণ হয়ে গেছে।
কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে সুষ্ঠু ছাত্র রাজনীতি হচ্ছে না এ বিষয় থেকে আমাদের একধরনের ধারণা ছিল যে, এই ছাত্ররা কোনো ধরনের সমাজ সচেতনবিহীন একটি গোষ্ঠী হিসেবে গড়ে উঠছে। কিন্তু দুইটা আন্দোলনই নতুন করে সমাজ সচেতনতার বিস্তার ঘটিয়েছে এই যুব সমাজের মধ্যে। কোটা সংস্কার আন্দোলন বেকারত্ব বা তাদের অর্থনৈতিক প্রয়োজনে করেছে। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে সার্বিক জনগণের একটি ইস্যু আছে। কিন্তু এই দুটি আন্দোলনের মাধ্যমে যে রাজনীতিবিমুখ কিশোর তরুণ একটি সম্প্রদায় গড়ে উঠছিল তাদের মধ্যে নতুন করে সমাজ সচেতনতার একটি ঢেউ উঠেছে। সেদিক থেকে এটি অত্যন্ত ইতিবাচক দিক। দুটি আন্দোলনের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতিক্রিয়া হয়েছে নিপীড়নমুখী। এটা কাঙ্ক্ষিত ছিল না।
গায়েবি মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, গায়েবি মামলাটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, এটা রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার। মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক প্রতিযোগীকে প্রতিহত করার জন্য গায়েবি মামলা করা হচ্ছে। এটা ক্ষমতাসীনদের প্রতিপক্ষকে দুর্বল করার একটি কৌশল। যেটা থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশু এমনকি মৃত ব্যক্তিও। দুঃখের বিষয় হচ্ছে রাষ্ট্রযন্ত্র এবং এর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস যোগ্যতা কমে গেছে। যেটা কাম্য নয়। আসলে এটা যেহেতু জনসম্মুখে চলে এসেছে তাই ‘শেষ বিচারে জনগণের ওপর আস্থা রাখাটাই শ্রেয়’। সেটাই হচ্ছে টেকসই, দীর্ঘমেয়াদি, বৈধ নেতৃত্বের একটি রক্ষাকবজ।
সিভিল সোসাইটি সম্পর্কে তিনি বলেন, এখন সিভিল সোসাইটি কথাটা উইদইন কোড ব্যবহারের সময় হয়ে গেছে। এখানে দুটি বিষয় আছে। এক. ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর একচ্ছত্র ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষাটা তাদের রাজনৈতিক অঙ্গন পেরিয়ে পেশাজীবী এবং সিভিল জগৎ দুটিতেই ঢুকে গেছে। সিভিল সোসাইটিও এখন দু’ভাবে বিভক্ত। একটি গোষ্ঠী মূলত শ্রদ্ধার জায়গা থেকে সরে গিয়ে ক্ষমতার সুযোগ-সুবিধা ও তোষামোদকারী হিসেবে প্রতিযোগিতায় নেমে গেছে। আরেকটি গোষ্ঠীর চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দক্ষভাবে সমাজের বিষয়গুলো তুলে ধরা। ছাত্র আন্দোলন, সম্পাদকমণ্ডলীর কর্মসূচি এখানে সিভিল সোসাইটির একধরনের একটিভিটি রয়েছে। এখানে মূলত যেটা দরকার তা হলো সিভিল সোসাইটি আরো কার্যকরভাবে পরিবর্তনের জায়গায় নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারে। এখানে ঝুঁকি নেয়ার বিষয় থাকতে পারে। সাহসের বিষয় আছে। এখানে লেগে থাকার বিষয় আছে। এগুলো সিভিল সোসাইটির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। উৎপাদনশীল কর্মক্ষম শ্রমবাজার তৈরি করাও সিভিল সোসাইটির একটি বৃহৎ চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জটা একাধারে নাগরিক সমাজেরও যেমন একইভাবে রাজনৈতিক সমাজেরও সমান চ্যালেঞ্জ। কারণ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আমরা আছি।
সরকারের মধ্যে এক ধরনের দ্বিধা কাজ করছে যে, পরিপূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের ফলাফল কি হতে পারে? আওয়ামী লীগ যদি বিএনপিকে দুর্বল করার পরেও বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক। এতে তাদের বিজয়টা আরো নিশ্চিত হতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে তারা এখনো সার্বিকভাবে নিজেদের সফল মনে করতে পারছে না। কারণ প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে ওভাবে ভাঙা বা দুর্বল করা যায় নি।
বরং উল্টো আমরা সম্প্রতি দেখেছি যে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন হয়েছে। আমাদের মতো দেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে মূলত দুইটা শক্তি থাকে।
একটি রাজনৈতিক শক্তি আরেকটি সামাজিক শক্তি। দুইটা মিলে রাজনৈতিক শক্তিটা আরো বেড়ে যায়। ঐক্যফ্রন্ট হওয়ার ফলে মনে হচ্ছে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনাটা একটু বেড়েছে।
সম্প্রতি ধানমন্ডির পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) কার্যালয়ে মানবজমিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। পিপিআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান, লেখক, গবেষক ড. হোসেন জিল্লুর রহমান দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক সংকটসহ নানা ইস্যুতে খোলামেলা আলোচনা করেন।
হোসেন জিল্লুর বলেন, বর্তমান সরকার আইনসম্মত নির্বাচিত সরকার। সেই অর্থে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন আছে। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনের সমস্যা সাংবিধানিক বা আইনি সমস্যা নয়। ওটা ছিল একধরনের বৈধতার সংকট। অংশগ্রহণ অনেক কম ছিল। ১৫৩ জন বিনা নির্বাচনে সংসদ সদস্য হয়ে গেছেন। সব মিলিয়ে আগামী নির্বাচনটা এমন হওয়া উচিত যাতে করে বৈধতার সংকট থেকে বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা ভালোভাবে মুক্ত হয়। সেই ধরনের একটি নির্বাচন হওয়া উচিত। যারা প্রতিযোগিতা করতে চায় তারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে থেকে যেন প্রতিযোগিতা করতে পারে। আবার প্রতিযোগী যারা তাদের বিষয়ে বলতে চাই যে, নিছক ক্ষমতার পালাবদলের জন্য যেন নির্বাচনটা না হয়। ওই ধরনের প্রতিযোগীদের সামনে আশা উচিত যারা এটাকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখবে। এবং বিভিন্ন খাতে প্রবাহিত বিচ্যুতিগুলোকে পাশ কাটিয়ে সঠিক পথে যেন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারে।
ঐক্যফ্রন্ট গঠনের কারণে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফলাফল কোন্ দিকে যাবে সেটা অনেক পরের বিষয়। তবে ক্ষমতাসীন দল এই প্রতিযোগিতার বিষয় নিয়ে কতটুকু স্বস্তির মধ্যে থাকবে বা সাহস করে এগিয়ে যাবে এই অনিশ্চয়তা কাজ করছে। ইতিমধ্যে প্রতিযোগিতামূলক একটি আবহাওয়া তৈরি হয়েছে। এতে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হতে পারে আবার নাও হতে পারে। আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে ক্ষমতাসীনরা নির্বাচন ইস্যুতে কতটুকু বদ্ধপরিকর থাকবে। প্রথমে আমরা শুনেছি ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। আবার শুনেছি নাও হতে পারে। তার মানে এখনো আমরা একটি দ্বিধাদ্বন্দ্ব এবং অনিশ্চয়তার জায়গায় আছি। অর্থাৎ প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা যেমন বেড়েছে আবার দ্বিধাদ্বন্দ্ব অনিশ্চয়তাও বেড়েছে।
স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে সাধারণ জনগণের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানুষ যাদের ভোট দেবে সেই ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বী সবাই অংশগ্রহণ করতে পারছে না। অনেক সময় মূল প্রতিদ্বন্দ্বীদের অংশগ্রহণই করতে দিচ্ছে না। ভোট দেয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা দেখা যায়। সেখানে সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড দেখা যায়। ’৮০-র দশকে এই সংস্কৃতিটা ছিল। সন্ত্রাসনির্ভর রাজনীতি, দখল, জালভোট ইত্যাদির একটি সংস্কৃতি ছিল। মাঝের দুই দশকে আমরা এগুলোকে বিতাড়িত করতে পেরেছিলাম। কিন্তু এখন আবার সেগুলো পুরোদমে ফিরে এসেছে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখা যায় ইদানীং নির্বাচনগুলোতে জালভোট পড়েছে। কেন্দ্রে যেতে দেয়া হয়নি। এজেন্ট বের করে দেয়া হয়েছে। এগুলোর অন্যতম উপসর্গ হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা। সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করার সাংবিধানিক দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু তাদের ভূমিকাটা আমরা দেখি যে অত্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশন হয় আগ বাড়িয়ে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীকে সহায়তার চেষ্টা করে। অথবা তাদের যে সাংবিধানিক দায়িত্ব সেটা পালন না করে স্বেচ্ছা নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে থাকে। চোখ-কান বন্ধ করে কিছু শুনবে না, দেখবে না। তিনি বলেন, ভোটাধিকারের একটি ক্রাইসিস তৈরি হয়েছে। এটার কু-প্রভাব কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গন ছাড়িয়ে পেশাজীবী অঙ্গনেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিজনেস চেম্বারগুলোতে এখন আর ভোট হয় না। যেটা হয় তার নাম হচ্ছে সমঝোতা।
অর্থনৈতিক অগ্রগতি প্রসঙ্গে প্রখ্যাত এই অর্থনীতিবিদ বলেন, আমরা যে অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা চিন্তা করি তার নানা সূচক আছে। একটি হচ্ছে খণ্ডিত সূচক আরেকটি হচ্ছে সার্বিকভাবে মূল্যায়ন করা। সার্বিক মূল্যায়নে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিষয়ে বলতে গেলে বলা যায় যে, স্বাধীনতার সময়ে আমাদের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও একটি ভঙ্গুর অর্থনীতি ছিল। সে অবস্থা থেকে এক ধরনের টেকসই ভিত্তি তৈরি করা গেছে বর্তমান অর্থনীতিতে। যার ফলে আমাদের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দিক তৈরি হয়েছে। যেমন প্রবৃদ্ধির মাত্রাগুলো কোনো সময় ঠিক ওলটপালটের দিকে যায় নি। মোটামুটি একটি গতি ধরে এগিয়েছে। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে আমাদের চাওয়ার জায়গাটায় একটি পরিবর্তন এসেছে। এক্ষেত্রে যে অবস্থা থেকে শুরু করেছিলাম সেটা দিয়ে অর্থনীতি কীভাবে চলছে তা পরিমাপ করা যাবে না। ৭০ দশকে আমাদের প্রবৃদ্ধি ১ থেকে ২ শতাংশে ছিল। এখন সেটা ৬ থেকে ৭-এর দিকে চলে গেছে। সরকারি এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এত কিছুর পরেও ২০১৮তে প্রায় ৩৯ মিলিয়ন মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে। আমরা এগিয়েছি কিন্তু চার কোটি মানুষ এখনো দরিদ্রসীমার নিচে। এই বিষয়গুলো আমাদের জানান দেয় যে, এগিয়েছে কিন্তু চ্যালেঞ্জটা কি পর্যায়ে সেটা জানা বা বোঝা দরকার। এক্ষেত্রে গতি বাড়ানো প্রয়োজন এবং এগুবার ধরনটাও উন্নত করা দরকার।
তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নে বেশি উন্নয়ন কম গণতন্ত্র- এই কথাটিই আসলে সঠিক নয়। গণতন্ত্রের অন্যতম সূচক যেটা অর্থনীতির ওপর নির্ভর করে। যেমন ধরে নিলাম কম গণতন্ত্র তার মানে নির্বাচন হচ্ছে না। কিন্তু গণতন্ত্রের আরেকটি অন্যতম সূচক হচ্ছে জবাবদিহিতা। জবাবদিহিতা নেই সে জন্য এখন ব্যাংক কলাপস করছে। সেটার প্রভাব কিন্তু সরাসরি অর্থনীতির ওপর পড়ছে। সুতরাং গণতন্ত্রে জবাবদিহিতার অভাবে আমাদের প্রকল্পগুলো সঠিক সময়ে শেষ হচ্ছে না। জবাবদিহিতার অভাবকে যদি আমরা গণতন্ত্রের অন্যতম সূচক ধরি তাহলে বুঝতে পারছি উন্নয়নের জন্য এটা অত্যাবশ্যক। অন্যথায় প্রকল্প বিলম্ব, অযৌক্তিক প্রকল্প ব্যয় হতেই থাকবে। এগুলোর জন্য ব্যাংকিং ক্রাইসিস হতেই থাকবে। সুতরাং উন্নয়ন দরকার, গণতন্ত্রের দরকার নেই- এগুলো হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থেকে এক ধরনের ব্যাখ্যা চালু করার চেষ্টা।
ডিজিটাল নিরাপত্তা ও সম্প্রচার নীতিমালা আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা দেখেছি যে, সম্পাদক পরিষদসহ সচেতন নাগরিকরা এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন। সম্প্রতি সম্পাদক পরিষদের মানববন্ধন ছিল নজিরবিহীন। এটাও দেখছি যে, তুচ্ছ অজুহাতে আজকাল মানুষকে হয়রানি ও ধরপাকড় করা হচ্ছে। আমরা সবাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু নিরাপত্তার অজুহাতে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করা তো ঠিক নয়।
ক্ষমতা হস্তান্তরের শান্তিপূর্ণ উপায় সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাই যে, একটার পর একটা রাজনৈতিক সংকট হচ্ছে। কিন্তু তার সমাধান হচ্ছে না। এখন এই মুহূর্তে আমরা একটি বিশাল সংকটের মধ্যে আছি। এই সংকটের অন্যতম বিষয়গুলো হচ্ছে আমাদের এখানে একচ্ছত্র ক্ষমতার ধারণাটি ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর মধ্যে জেঁকে বসেছে। এবং চ্যালেঞ্জের জায়গাটা কিন্তু বৃহত্তর জনগণেরও ব্যর্থতার জায়গা বলা যেতে পারে। শিক্ষাঙ্গনে যে বিশৃঙ্খলা সেখানে শিক্ষক সম্প্রদায় কেনো দাঁড়ায় না। আইনজীবীরা সবাই এক বাক্যে কেনো দাঁড়ায় না। এখানে ব্যর্থতাটা দুটি জায়গায়। একটি হচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গনে যারা বিচরণ করছেন সেখানের ব্যর্থতা। অন্যতম আরেকটি সমস্যা হচ্ছে মূল্যবোধ সংবলিত নতুন নেতৃত্ব তৈরি করা। এ বিষয়টি গৌণ হয়ে গেছে।
কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে সুষ্ঠু ছাত্র রাজনীতি হচ্ছে না এ বিষয় থেকে আমাদের একধরনের ধারণা ছিল যে, এই ছাত্ররা কোনো ধরনের সমাজ সচেতনবিহীন একটি গোষ্ঠী হিসেবে গড়ে উঠছে। কিন্তু দুইটা আন্দোলনই নতুন করে সমাজ সচেতনতার বিস্তার ঘটিয়েছে এই যুব সমাজের মধ্যে। কোটা সংস্কার আন্দোলন বেকারত্ব বা তাদের অর্থনৈতিক প্রয়োজনে করেছে। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে সার্বিক জনগণের একটি ইস্যু আছে। কিন্তু এই দুটি আন্দোলনের মাধ্যমে যে রাজনীতিবিমুখ কিশোর তরুণ একটি সম্প্রদায় গড়ে উঠছিল তাদের মধ্যে নতুন করে সমাজ সচেতনতার একটি ঢেউ উঠেছে। সেদিক থেকে এটি অত্যন্ত ইতিবাচক দিক। দুটি আন্দোলনের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতিক্রিয়া হয়েছে নিপীড়নমুখী। এটা কাঙ্ক্ষিত ছিল না।
গায়েবি মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, গায়েবি মামলাটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, এটা রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার। মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক প্রতিযোগীকে প্রতিহত করার জন্য গায়েবি মামলা করা হচ্ছে। এটা ক্ষমতাসীনদের প্রতিপক্ষকে দুর্বল করার একটি কৌশল। যেটা থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশু এমনকি মৃত ব্যক্তিও। দুঃখের বিষয় হচ্ছে রাষ্ট্রযন্ত্র এবং এর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস যোগ্যতা কমে গেছে। যেটা কাম্য নয়। আসলে এটা যেহেতু জনসম্মুখে চলে এসেছে তাই ‘শেষ বিচারে জনগণের ওপর আস্থা রাখাটাই শ্রেয়’। সেটাই হচ্ছে টেকসই, দীর্ঘমেয়াদি, বৈধ নেতৃত্বের একটি রক্ষাকবজ।
সিভিল সোসাইটি সম্পর্কে তিনি বলেন, এখন সিভিল সোসাইটি কথাটা উইদইন কোড ব্যবহারের সময় হয়ে গেছে। এখানে দুটি বিষয় আছে। এক. ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর একচ্ছত্র ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষাটা তাদের রাজনৈতিক অঙ্গন পেরিয়ে পেশাজীবী এবং সিভিল জগৎ দুটিতেই ঢুকে গেছে। সিভিল সোসাইটিও এখন দু’ভাবে বিভক্ত। একটি গোষ্ঠী মূলত শ্রদ্ধার জায়গা থেকে সরে গিয়ে ক্ষমতার সুযোগ-সুবিধা ও তোষামোদকারী হিসেবে প্রতিযোগিতায় নেমে গেছে। আরেকটি গোষ্ঠীর চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দক্ষভাবে সমাজের বিষয়গুলো তুলে ধরা। ছাত্র আন্দোলন, সম্পাদকমণ্ডলীর কর্মসূচি এখানে সিভিল সোসাইটির একধরনের একটিভিটি রয়েছে। এখানে মূলত যেটা দরকার তা হলো সিভিল সোসাইটি আরো কার্যকরভাবে পরিবর্তনের জায়গায় নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারে। এখানে ঝুঁকি নেয়ার বিষয় থাকতে পারে। সাহসের বিষয় আছে। এখানে লেগে থাকার বিষয় আছে। এগুলো সিভিল সোসাইটির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। উৎপাদনশীল কর্মক্ষম শ্রমবাজার তৈরি করাও সিভিল সোসাইটির একটি বৃহৎ চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জটা একাধারে নাগরিক সমাজেরও যেমন একইভাবে রাজনৈতিক সমাজেরও সমান চ্যালেঞ্জ। কারণ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আমরা আছি।
No comments