মালদ্বীপে বিরোধীদের অভাবনীয় জয়
মালদ্বীপের
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অভাবনীয় জয় পেয়েছে মালদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টির
(এমডিপি) প্রার্থী মোহাম্মদ সোলিহ। প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, তার কাছে ১৬
শতাংশ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন বর্তমানে প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ
ইয়ামিন। তিনি চীনপন্থি হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে রোববারের নির্বাচনে বিজয়ী
মোহাম্মদ সোলিহ’র ওপর ভারত ও পশ্চিমা দেশগুলোর আশীর্বাদ রয়েছে। তাই
মালদ্বীপের নির্বাচন হলেও চীন ও ভারতের জন্য তা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। আর এতে
চূড়ান্তভাবে ভারতীয় আধিপত্যেরই বিজয়গাথা রচিত হয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এমডিপি ৫৮ শতাংশ ভোট পেয়ে সরকার গঠন করতে চলেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন এমডিপির প্রধান ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ। নির্বাচনের ফলাফল মেনে পরাজয় স্বীকার করেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিন। অনানুষ্ঠানিক ফলাফলে দেখা গেছে, মোহাম্মদ সোলিহ ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬১৬ ভোট পেয়েছেন। বিপরীতে প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন পেয়েছেন ৯৬ হাজার ১৩২ ভোট। নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, রোববারের নির্বাচনে মালদ্বীপের প্রায় ৮৯ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে হাজির হন। ব্যাপক ভোটারের উপস্থিতি দেখে নির্বাচন কমিশন ভোট গ্রহণের সময় তিন ঘণ্টা বাড়িয়ে দেয়। শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ শেষে গতকাল প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে নির্বাচন কমিশন এমডিপিকে বিজয়ী ঘোষণা করে। ফলাফল মেনে নিয়ে বিজয়ী দল এমডিপির প্রধান মোহাম্মদ সোলিহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে অভিনন্দন জানান বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন।
পরে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে আবদুল্লাহ ইয়ামিন বলেন, মালদ্বীপের জনগণের নিজস্ব মতামত রয়েছে। আমি হার মেনে নিচ্ছি। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, ক্ষমতাকালে তিনি তার সবটুকু দিয়ে মালদ্বীপের মানুষের জন্য কাজ করেছেন। বিশেষ করে দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন তিনি। ইয়ামিন জানান, তিনি তার ক্ষমতার মেয়াদ শেষ করবেন। সে অনুযায়ী এ বছরের ১৭ই নভেম্বর পর্যন্ত মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন তিনি। রাষ্ট্র পরিচালনায় ইসলামি আইনের ব্যাপক ব্যাবহার করেছেন ইয়ামিন। তার আমলে দেশটির উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হয়। তবে একইসঙ্গে কট্টোর আইন ও বিরোধী মত বন্ধে নানা পদক্ষেপ নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচিতও হয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মালদ্বীপে প্রভাব বিস্তার নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব রয়েছে। এবারের নির্বাচনী প্রচারণাতেও ভারত ও চীন সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পেয়েছে। এদিক দিয়ে মালদ্বীপের নির্বাচনে অনেকটা মুখোমুখি অবস্থানে ছিল ভারত ও চীন। তবে রোববারের নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপিয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র। তারা মালদ্বীপের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির যদি উন্নতি না হলে দেশটির বিরুদ্ধে অবরোধের হুমকি দিয়েছে।
এদিকে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের বিরুদ্ধে বিরোধীদের ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালানোর অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ভোটের আগে বিরোধীদের প্রধান কার্যালয়গুলো ঘেরাও করে তল্লাশি করেছে পুলিশ। এছাড়া, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মালদ্বীপে প্রবল রাজনৈতিক উত্তেজনা দেখা দেয়।
ফেব্রুয়ারিতে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট নির্বাসনে থাকা সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদসহ বিরোধীদলীয় ৯ জনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ বাতিল করে দেয়। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। ওই অভিযোগ বাতিল করে দেয়া দু’জন বিচারকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেন। তার গৃহীত কর্মকাণ্ডে সমালোচনার ঝড় ওঠে ওয়াশিংটন, লন্ডন ও নয়াদিল্লিতে। ভারতের অনেকে ছোট্ট এই দেশটিতে হস্তক্ষেপের দাবি জানান। এমনকি নির্বাসন থেকে সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ সামরিক হস্তক্ষেপের দাবি জানান ভারতের প্রতি।
কিন্তু ইয়ামিনের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় চীন। তারা এটিকে ভারত মহাসাগরে নতুন বাণিজ্যিক রুট তৈরি ও প্রভাব বিস্তারের জন্য বড় সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে। ক্রমেই মালদ্বীপের ওপর প্রভাব বৃদ্ধি করে চীন। অনেকদিন ধরেই দেশটি পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে। এর মধ্য দিয়ে এসব দেশের গুরুত্বপূর্ণ সব বন্দরের পরিচালনার দায়িত্ব নেয়ার চেষ্টা করে তারা। প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের অধীনে মালদ্বীপ বড় বড় প্রকল্পগুলোতে চীনা অর্থকে স্বাগত জানায়। তারা চীনের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করে। ফলে আবদুল্লাহ ইয়ামিনের শাসনামলে অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে চীন মালদ্বীপে অধিক প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ পায়। কিন্তু রোববারের নির্বাচনে মোহাম্মদ সোলিহ এর বিজয়ের ফলে চীনের এ আধিপত্য হুমকির মুখে পড়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এমডিপি ৫৮ শতাংশ ভোট পেয়ে সরকার গঠন করতে চলেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন এমডিপির প্রধান ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ। নির্বাচনের ফলাফল মেনে পরাজয় স্বীকার করেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিন। অনানুষ্ঠানিক ফলাফলে দেখা গেছে, মোহাম্মদ সোলিহ ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬১৬ ভোট পেয়েছেন। বিপরীতে প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন পেয়েছেন ৯৬ হাজার ১৩২ ভোট। নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, রোববারের নির্বাচনে মালদ্বীপের প্রায় ৮৯ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে হাজির হন। ব্যাপক ভোটারের উপস্থিতি দেখে নির্বাচন কমিশন ভোট গ্রহণের সময় তিন ঘণ্টা বাড়িয়ে দেয়। শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ শেষে গতকাল প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে নির্বাচন কমিশন এমডিপিকে বিজয়ী ঘোষণা করে। ফলাফল মেনে নিয়ে বিজয়ী দল এমডিপির প্রধান মোহাম্মদ সোলিহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে অভিনন্দন জানান বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন।
পরে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে আবদুল্লাহ ইয়ামিন বলেন, মালদ্বীপের জনগণের নিজস্ব মতামত রয়েছে। আমি হার মেনে নিচ্ছি। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, ক্ষমতাকালে তিনি তার সবটুকু দিয়ে মালদ্বীপের মানুষের জন্য কাজ করেছেন। বিশেষ করে দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন তিনি। ইয়ামিন জানান, তিনি তার ক্ষমতার মেয়াদ শেষ করবেন। সে অনুযায়ী এ বছরের ১৭ই নভেম্বর পর্যন্ত মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন তিনি। রাষ্ট্র পরিচালনায় ইসলামি আইনের ব্যাপক ব্যাবহার করেছেন ইয়ামিন। তার আমলে দেশটির উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হয়। তবে একইসঙ্গে কট্টোর আইন ও বিরোধী মত বন্ধে নানা পদক্ষেপ নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচিতও হয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মালদ্বীপে প্রভাব বিস্তার নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব রয়েছে। এবারের নির্বাচনী প্রচারণাতেও ভারত ও চীন সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পেয়েছে। এদিক দিয়ে মালদ্বীপের নির্বাচনে অনেকটা মুখোমুখি অবস্থানে ছিল ভারত ও চীন। তবে রোববারের নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপিয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র। তারা মালদ্বীপের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির যদি উন্নতি না হলে দেশটির বিরুদ্ধে অবরোধের হুমকি দিয়েছে।
এদিকে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের বিরুদ্ধে বিরোধীদের ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালানোর অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ভোটের আগে বিরোধীদের প্রধান কার্যালয়গুলো ঘেরাও করে তল্লাশি করেছে পুলিশ। এছাড়া, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মালদ্বীপে প্রবল রাজনৈতিক উত্তেজনা দেখা দেয়।
ফেব্রুয়ারিতে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট নির্বাসনে থাকা সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদসহ বিরোধীদলীয় ৯ জনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ বাতিল করে দেয়। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। ওই অভিযোগ বাতিল করে দেয়া দু’জন বিচারকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেন। তার গৃহীত কর্মকাণ্ডে সমালোচনার ঝড় ওঠে ওয়াশিংটন, লন্ডন ও নয়াদিল্লিতে। ভারতের অনেকে ছোট্ট এই দেশটিতে হস্তক্ষেপের দাবি জানান। এমনকি নির্বাসন থেকে সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ সামরিক হস্তক্ষেপের দাবি জানান ভারতের প্রতি।
কিন্তু ইয়ামিনের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় চীন। তারা এটিকে ভারত মহাসাগরে নতুন বাণিজ্যিক রুট তৈরি ও প্রভাব বিস্তারের জন্য বড় সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে। ক্রমেই মালদ্বীপের ওপর প্রভাব বৃদ্ধি করে চীন। অনেকদিন ধরেই দেশটি পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে। এর মধ্য দিয়ে এসব দেশের গুরুত্বপূর্ণ সব বন্দরের পরিচালনার দায়িত্ব নেয়ার চেষ্টা করে তারা। প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের অধীনে মালদ্বীপ বড় বড় প্রকল্পগুলোতে চীনা অর্থকে স্বাগত জানায়। তারা চীনের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করে। ফলে আবদুল্লাহ ইয়ামিনের শাসনামলে অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে চীন মালদ্বীপে অধিক প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ পায়। কিন্তু রোববারের নির্বাচনে মোহাম্মদ সোলিহ এর বিজয়ের ফলে চীনের এ আধিপত্য হুমকির মুখে পড়েছে।
No comments