ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে -মাহফুজ আনাম
ডিজিটাল
সিকিউরিটি আইন করতে গিয়ে স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে বলে
মন্তব্য করেছেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য ডেইলি
স্টার’-এর সম্পাদক মাহফুজ আনাম। তিনি বলেছেন, এই আইন সাংবাদিকতার মূলনীতির
পরিপন্থি। যে কারণে সম্পাদক পরিষদ আইনটি প্রত্যাখ্যান করেছে। গত বুধবার
বহুল আলোচিত ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৮’ সংসদে পাস হয়। সম্পাদক পরিষদ
সহ বিভিন্ন মহলের আপত্তি সত্ত্বেও আইনটি সংসদে ওঠে। বৃহস্পতিবার এই আইন
নিয়ে কথা বলতে চ্যানেল আই’য়ের টকশো তৃতীয় মাত্রাতে উপস্থিত ছিলেন মাহফুজ
আনাম। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করেন জিল্লুর রহমান।
মাহফুজ আনাম বলেন, সংবিধানে ৩৯ ধারার ২ এর এ এবং বি’তে আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। আমরা মনে করি এই আইন তার একেবারেই পরিপন্থি। দ্বিতীয়ত- আমরা মনে করি, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের যে মূল আদর্শ তার মধ্যে মত প্রকাশ, স্বাধীনতা ইত্যাদি ছিল তা ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং তা গণতান্ত্রিক কাঠামোর পরিপন্থি। সাংবাদিকতার যে নীতিমালা তাতেও সম্পূর্ণভাবে পরিপন্থি।
এই কারণেই আমরা সাংবাদপত্র পরিষদ থেকে প্রত্যাখ্যান করতে বাধ্য হয়েছি। অংশীজন এবং সংসদে একাধিক বিরোধীদলের সদস্যের মতামতকে উপেক্ষা করে আইনটি পাস করা হল। আপনার কী ধারণা সরকার কোনো বিবেচনায় কার স্বার্থে আইনটি করল? সামনে নির্বাচন এর ঠিক আগ মুহূর্তে গণমাধ্যমকে একটু ক্ষেপিয়ে তোলা এটি সরকারের বিবেচনায় নিশ্চয়ই কাজ করেছে। উপস্থাপকের এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি প্রথমেই বলতে চাই, এই আইনটির ব্যাপারে তাদের উদ্দেশ্য মহৎ। ডিজিটাল জগতের নিরাপত্তা নিয়ে তারা চিন্তিত।
ডিজিটাল প্লাটফর্মটা মানি ট্রান্সফার, ব্যাংকিং, সিকিউরিটি, হেলথ, পুলিশের ইনফরমেশন ইত্যাদি যুক্ত আছে। কিন্তু গণমাধ্যমের মূলমন্ত্র মুক্তচিন্তা তারাও এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন করতে গিয়ে স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। তারা এই আইন করতে গিয়ে জায়গাটি যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখেননি, দেখছেন না। আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করেই কি এটি করা হয়েছে?- উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের পরিপেক্ষিতে মাহফুজ আনাম বলেন, তারা আমাদের বারবার বলেছেন এই আইন সাংবাদিকতার পরিপন্থি হবে না, সাংবাদিকদের স্বাধীনতা খর্ব হবে না।
তখন আমি বলেছিলাম, তাহলে আইনে কোথাও একটা ডিসক্লেমার দেয়া যায় কিনা, যে এই আইনে যা আছে তা সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। একাত্তর টেলিভিশনের সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু বলেছিলেন, সংবাদ সংশ্লিষ্ট যাই আসবে এটা প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে আসুক। তাহলে একটা ফিল্টারিংয়ের জায়গা থাকবে। তারা দু’দিন শুনেছেন দু’সেশনে। তারপর মন্ত্রী বলছেন, আমাদের সব ব্যাপার উনি মেনে নিয়েছেন কিন্তু আমার স্মৃতিতে তা মিলছে না।
মাহফুজ আনাম বলেন, ফারমার্স ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক এই যে লোপাট করে নিচ্ছে। এই তথ্যগুলো আমরা বের করে নিয়ে এসেছি। তাহলে এগুলোও অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টে পড়ে। সড়ক নিরাপত্তা নতুন আইনে জণগণের সড়কে মৃত্যু হলে চালককে দেয়া হবে সর্বোচ্চ ৫ বছরের সাজা। আর আমি সাংবাদিক সিক্রেট অ্যাক্ট ভায়োলেট করলে সাজা হবে ১৪ বছর। তিনি বলেন, একটি ধারা খুবই দুশ্চিন্তার কারণ সেটা হলো, ৪৩ ধারা। ধরেন পুলিশের সন্দেহ হলো ডেইলি স্টারের সার্ভারের মধ্যে কিছু তথ্য-উপাত্ত আছে, যেটা ওনার জানা দরকার। সন্দেহবশত আমার সার্ভারটিকে জব্দ করলেন। তাহলে ওইদিন তো আর ডেইলি স্টার বের হবে না। সংবাদপত্র বন্ধের নির্দেশ ছাড়াও সংবাদপত্র বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া পুলিশ যদি সন্দেহ করে সে আমার একজন রিপোর্টার, এডিটর বা আমাকেও গ্রেপ্তার করতে পারবে।
আপনারা বলছেন, স্বাধীন মতপ্রকাশ ও গণতন্ত্রের জন্য একটি দুঃখজনক দিন আবার অন্যদিকে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, এই আইন স্বাধীন সাংবাদিকতার বাধা হবে না। ভবিষ্যতে ডিজিটাল যুদ্ধ হবে, এই যুদ্ধে পরাজিত হলে ক্ষতি আমাদেরই হবে। রাষ্ট্র নিরাপত্তা সাধনে আমরাও সহযোগিতা করতে চাই। কিন্তু রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে এটা কারো কী কাম্য হতে পারে। কেউ কেউ মনে করে সত্য কথাকে বন্ধ করে শুধু এক ধরনের কথা চালু রেখে রাষ্ট্র শক্তিশালী হয়। আর আমরা মনে করি ভিন্ন মত প্রকাশে রাষ্ট্র শক্তিশালী হয়।
ইতিহাস কী বলে এসব করার মাধ্যমে দেশ দুর্বল হয়। তিনি বলেন, গুজবের কারণে গ্রেপ্তার। কে গুজব রটালো, কোন গুজব রটালো এটা প্রমাণের কোনো প্রক্রিয়া নেই। আপনার বিচার কবে শুরু হবে তার কোনো ঠিক নেই। দেশের স্বাধীনতা যে অধিকার দিয়েছে সেটা নিয়মিত লঙ্ঘন হচ্ছে। এতো বছরের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতায় সাংবাদিকতার স্বাধীনতাকে কিভাবে বিচার করবেন? এমন প্রশ্নে মাহফুজ আনাম বলেন, একটা অনুচ্চারিত ঘটনা, ফোন আসে। এটা একটা অস্বাস্থ্যকর চর্চা। আর একটি ঘটনা, যেমন আমাদের বিজ্ঞাপন আসে না। প্রায় ৪০ শতাংশ বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
মাহফুজ আনাম বলেন, সংবিধানে ৩৯ ধারার ২ এর এ এবং বি’তে আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। আমরা মনে করি এই আইন তার একেবারেই পরিপন্থি। দ্বিতীয়ত- আমরা মনে করি, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের যে মূল আদর্শ তার মধ্যে মত প্রকাশ, স্বাধীনতা ইত্যাদি ছিল তা ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং তা গণতান্ত্রিক কাঠামোর পরিপন্থি। সাংবাদিকতার যে নীতিমালা তাতেও সম্পূর্ণভাবে পরিপন্থি।
এই কারণেই আমরা সাংবাদপত্র পরিষদ থেকে প্রত্যাখ্যান করতে বাধ্য হয়েছি। অংশীজন এবং সংসদে একাধিক বিরোধীদলের সদস্যের মতামতকে উপেক্ষা করে আইনটি পাস করা হল। আপনার কী ধারণা সরকার কোনো বিবেচনায় কার স্বার্থে আইনটি করল? সামনে নির্বাচন এর ঠিক আগ মুহূর্তে গণমাধ্যমকে একটু ক্ষেপিয়ে তোলা এটি সরকারের বিবেচনায় নিশ্চয়ই কাজ করেছে। উপস্থাপকের এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি প্রথমেই বলতে চাই, এই আইনটির ব্যাপারে তাদের উদ্দেশ্য মহৎ। ডিজিটাল জগতের নিরাপত্তা নিয়ে তারা চিন্তিত।
ডিজিটাল প্লাটফর্মটা মানি ট্রান্সফার, ব্যাংকিং, সিকিউরিটি, হেলথ, পুলিশের ইনফরমেশন ইত্যাদি যুক্ত আছে। কিন্তু গণমাধ্যমের মূলমন্ত্র মুক্তচিন্তা তারাও এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন করতে গিয়ে স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। তারা এই আইন করতে গিয়ে জায়গাটি যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখেননি, দেখছেন না। আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করেই কি এটি করা হয়েছে?- উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের পরিপেক্ষিতে মাহফুজ আনাম বলেন, তারা আমাদের বারবার বলেছেন এই আইন সাংবাদিকতার পরিপন্থি হবে না, সাংবাদিকদের স্বাধীনতা খর্ব হবে না।
তখন আমি বলেছিলাম, তাহলে আইনে কোথাও একটা ডিসক্লেমার দেয়া যায় কিনা, যে এই আইনে যা আছে তা সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। একাত্তর টেলিভিশনের সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু বলেছিলেন, সংবাদ সংশ্লিষ্ট যাই আসবে এটা প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে আসুক। তাহলে একটা ফিল্টারিংয়ের জায়গা থাকবে। তারা দু’দিন শুনেছেন দু’সেশনে। তারপর মন্ত্রী বলছেন, আমাদের সব ব্যাপার উনি মেনে নিয়েছেন কিন্তু আমার স্মৃতিতে তা মিলছে না।
মাহফুজ আনাম বলেন, ফারমার্স ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক এই যে লোপাট করে নিচ্ছে। এই তথ্যগুলো আমরা বের করে নিয়ে এসেছি। তাহলে এগুলোও অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টে পড়ে। সড়ক নিরাপত্তা নতুন আইনে জণগণের সড়কে মৃত্যু হলে চালককে দেয়া হবে সর্বোচ্চ ৫ বছরের সাজা। আর আমি সাংবাদিক সিক্রেট অ্যাক্ট ভায়োলেট করলে সাজা হবে ১৪ বছর। তিনি বলেন, একটি ধারা খুবই দুশ্চিন্তার কারণ সেটা হলো, ৪৩ ধারা। ধরেন পুলিশের সন্দেহ হলো ডেইলি স্টারের সার্ভারের মধ্যে কিছু তথ্য-উপাত্ত আছে, যেটা ওনার জানা দরকার। সন্দেহবশত আমার সার্ভারটিকে জব্দ করলেন। তাহলে ওইদিন তো আর ডেইলি স্টার বের হবে না। সংবাদপত্র বন্ধের নির্দেশ ছাড়াও সংবাদপত্র বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া পুলিশ যদি সন্দেহ করে সে আমার একজন রিপোর্টার, এডিটর বা আমাকেও গ্রেপ্তার করতে পারবে।
আপনারা বলছেন, স্বাধীন মতপ্রকাশ ও গণতন্ত্রের জন্য একটি দুঃখজনক দিন আবার অন্যদিকে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, এই আইন স্বাধীন সাংবাদিকতার বাধা হবে না। ভবিষ্যতে ডিজিটাল যুদ্ধ হবে, এই যুদ্ধে পরাজিত হলে ক্ষতি আমাদেরই হবে। রাষ্ট্র নিরাপত্তা সাধনে আমরাও সহযোগিতা করতে চাই। কিন্তু রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে এটা কারো কী কাম্য হতে পারে। কেউ কেউ মনে করে সত্য কথাকে বন্ধ করে শুধু এক ধরনের কথা চালু রেখে রাষ্ট্র শক্তিশালী হয়। আর আমরা মনে করি ভিন্ন মত প্রকাশে রাষ্ট্র শক্তিশালী হয়।
ইতিহাস কী বলে এসব করার মাধ্যমে দেশ দুর্বল হয়। তিনি বলেন, গুজবের কারণে গ্রেপ্তার। কে গুজব রটালো, কোন গুজব রটালো এটা প্রমাণের কোনো প্রক্রিয়া নেই। আপনার বিচার কবে শুরু হবে তার কোনো ঠিক নেই। দেশের স্বাধীনতা যে অধিকার দিয়েছে সেটা নিয়মিত লঙ্ঘন হচ্ছে। এতো বছরের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতায় সাংবাদিকতার স্বাধীনতাকে কিভাবে বিচার করবেন? এমন প্রশ্নে মাহফুজ আনাম বলেন, একটা অনুচ্চারিত ঘটনা, ফোন আসে। এটা একটা অস্বাস্থ্যকর চর্চা। আর একটি ঘটনা, যেমন আমাদের বিজ্ঞাপন আসে না। প্রায় ৪০ শতাংশ বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
No comments