সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানতের ৫০ ভাগ বেসরকারি ব্যাংকে দেয়া হচ্ছে: ‘নেতিবাচক’ খবরে নিয়ন্ত্রণ আরোপের আবদার
অর্থমন্ত্রী
আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানতের ৫০ শতাংশ
বেসরকারি ব্যাংকে রাখার সিদ্ধান্ত দ্রুত কার্যকর করা হবে। এতে করে বেসরকারি
ব্যাংকগুলোর লিকুইডিটি বাড়বে। মুহিত বলেন, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে
বাধ্যতামূলকভাবে তাদের আমানতের ২৫ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখতে হতো, সেটি
আমরা বাড়ানোর চিন্তা করেছি। শনিবার সিদ্ধান্ত দিয়েছি এবং সেটি অতি দ্রুত
কার্যকর হচ্ছে। বেসরকারি ব্যাংকে সরকারি প্রতিষ্ঠানের এই বাধ্যবাধকতা ৫০
শতাংশ করা হবে। সরকারি আমানতের অর্ধেক বেসরকারি ব্যাংকে রাখতে দাবি জানিয়ে
আসছিল বেসরকারি ব্যাংকাররা। গতকাল রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে রাষ্ট্রায়ত্ত
ব্যাংক জনতা ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে (এজিএম) তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান
অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এই বছরটি নির্বাচনের বছর। নির্বাচনী
বছরে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হয়। কিন্তু এবার তেমন কোনো সম্ভাবনা
নেই। তিনি বলেন, বর্তমান অর্থনীতিতে যে স্থিতিশীলতা রয়েছে, সেক্ষেত্রে
অন্যরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ নেই।
অর্থমন্ত্রী জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকবে এবং প্রবৃদ্ধি বাড়তে পারে ২-৩ শতাংশ। মুহিত বলেন, আমরা এ বছর দেখলাম হঠাৎ ব্যাংকগুলোর সুদের হার বাড়তে লাগল। এই সুদের হার বাড়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। কারণ যথেষ্ট লিকুইডিটি রয়েছে। অনেকে বলেছেন, তাদের হাতে লিকুইডিটি রয়েছে, পয়সা রয়েছে তারা সেটা ব্যবহার করে না। তিনি বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে ব্যাংকের সুদহার দুই অঙ্ক থেকে এক অঙ্কে নামিয়ে আনবেন ব্যাঙ্কাররা। প্রধান অতিথি বলেন, আমাদের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ইনভেস্টমেন্ট ফাইন্যান্স করে। নিয়মানুযায়ী এটা স্বাস্থ্যকর অবস্থা নয়। এর কারণ হলো, আমরা ক্যাপিটাল মার্কেট তৈরি করতে পারিনি। ব্যাংক খাতে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ক্যাপিটাল মার্কেট সৃষ্টি করা। এই ক্যাপিটাল মার্কেট সৃষ্টি করতে আগামী দুই মাসের মধ্যে একটা ছোট্ট গ্রুপকে দায়িত্ব দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের চাকরিজীবীদের ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী বলেন, তাদের সরকারি কর্মকর্তার মনোভাব থাকা উচিত নয়। তিনি বলেন, সরকারি চাকরি হুকুম দেয়ার জন্য নয়, এটা জনগণকে সেবা দেয়ার জন্য। সরকারি চাকরিজীবীদের সেবা দেয়ার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের ২৫ শতাংশ আমানত বেসরকারি ব্যাংকে রাখতে হয় আর ৭৫ শতাংশ আমানত রাখতে হয় সরকারি ব্যাংকে। গতাকাল (শনিবার) একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন থেকে ৫০ শতাংশ আমানত বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে যাবে। এতে করে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর লিকুইডিটি বাড়বে। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো স্বল্পমেয়াদে অর্থ নিয়ে দীর্ঘমিয়াদে ঋণ দিচ্ছে, এটা ভালো নয়। এ ব্যাপারে তিনি ক্ষুদ্র ঋণের ওপর জোর দেন। এতে ঝুঁকি কম থাকে বলেও উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, শ্রেণিকৃত মূলধন এবং খেলাফি ঋণ জনতা ব্যাংকের চ্যালেঞ্জ। ব্যাংকটির লোকসানি শাখা রয়েছে ৫৭টি। ঋণ জালিয়াতি নিয়েও গণমাধ্যমে নানা খবর বেরিয়েছে। এগুলোও বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, বড় অঙ্কের ঋণ দেয়ার ব্যাপারে আগ্রহী না হলেও চলবে। তাদের কুটির শিল্পের ক্ষেত্রে ঋণ দিতে আগ্রহী হতে হবে। এতে একদিকে যেমন দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে তেমনি কর্ম সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। রিটেইল ব্যাংকিংয়ের ওপর জোর দিতে হবে। খেলাফি ঋণ আদায় জোরদার করতে হবে। গভর্নর বলেন, খেলাফি ঋণের মামলা করার আগে ঋণদাতার সঙ্গে আলাপ করতে হবে। তাদের কাছ থেকে ঋণ আদায়ের চেষ্টা করতে হবে। কারণ ঋণখেলাফির মামলা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। ফজলে কবির বলেন, যেকোনো ব্যাংকের জন্য গভর্ন্যান্স ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন এবং জনতা ব্যাংকের জন্য সেটা অবশ্যই প্রয়োজন। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমান, অর্থ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, ব্যাংকের চেয়ারম্যান লুনা সামসুদ্দোহা, সিইও ও এমডি মো. আবদুছ ছালাম আজাদসহ অন্য কর্মকর্তারা।
বেসরকারি ব্যাংকের সিআরআর কমছে এক শতাংশ: অর্থমন্ত্রী
বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখা বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও বা সিআরআর (নগদ জমা সংরক্ষণ) এক শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। খুব দ্রুতই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে আগামী জুনে এর ফলাফল সম্পর্কে একটি পর্যালোচনা আগামী জুন মাসে দেয়া হবে। গতকাল রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অর্থমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংক মালিকদের সংগঠন (বিএবি) এক যৌথ বৈঠকে এ এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টা এস কে সুর চৌধুরী, বিএবি’র সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে অনেকগুলো বিষয় আলোচনা হয়েছে। তার মধ্যে একটি সিআরআর কমানো। বর্তমান সিআরআর সাড়ে ৬ শতাংশ। তারা এটা ৩ শতাংশ করার দাবি করেছিলো। আমরা সার্বিক বিবেচনা করে এক শতাংশ কমিয়েছি। অর্থ্যাৎ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর জমা রাখা সিআরআর এর ১ শতাংশ টাকা ব্যাংকগুলো ব্যবহার করতে পারবে। এর ফলে ১০ হাজার কোটি টাকা বেসরকারি ব্যাংকগুলোর হাতে চলে আসবে। এতে তারল্য সংকট কমে গেলে সুদের হারও কমে যাবে। এত পরিমাণ টাকা বেসরকারি ব্যাংকগুলোর কাছে দেয়া হলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি বাড়বে না, কোনোভাবেই বাড়বে না। পরে বিএবি’র সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদারও সিআরআর-এর টাকা পেলে তারল্য সংকট কিছুটা কমে যাবে বলে মন্তব্য করেন। এ সময় অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আগামী এক মাসের মধ্যেই সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, অতি দ্রুত সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে আসবে। আগামী এক মাসের মধ্যে এটা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এটা বাস্তবসম্মত নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে টোটাল যে ইনভেস্টমেন্ট তার ৭০ শতাংশ করছে বেসরকারি ব্যাংক। আমরা যদি সবচেয়ে বেশি ইনভেস্ট করি তাহলে সরকারি টাকা কেনো চাইতে পারবো না? তিনি বলেন, দু’একটা ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা হতেই পারে, তার মানে এই নয় যে, অর্থনীতির বিপর্যয় ঘটে গেছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টাকা বিভিন্ন জায়গায় পড়ে আছে এটা সুষম বণ্টন করতে হবে।
ব্যাংক নিয়ে ‘নেতিবাচক’ খবরে নিয়ন্ত্রণ আরোপের আবদার
ব্যাংক খাত নিয়ে ‘নেতিবাচক’ খবর প্রকাশে নিয়ন্ত্রণ আরোপের আবদার জানিয়েছে ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। ফাইন্যান্সিয়াল ইনফরমেশন অ্যাক্ট প্রণয়ন করে ব্যাংক সম্পর্কে নেতিবাচক সংবাদ প্রচার বন্ধের দাবি করছে সংগঠনটি। ব্যাংকিং খাতের অর্থ সংকট ও উচ্চসুদ সমস্যা সমাধানে করণীয় নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই দাবি জানিয়েছে বিএবি। চিঠিতে ব্যাংকিং খাতের চলমান সংকটের জন্য ৯টি সমস্যার কথা উল্লেখ করে সেগুলো সমাধানের জন্য অর্থমন্ত্রীর সুপারিশ চাওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রোববার অর্থমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এখন এটি বলার সময় নয়; আগামী বাজেট ঘোষণার সময় বিষয়টি নিয়ে সংসদে আলোচনা হবে।
বিএবি ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গণমাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হলে গ্রাহক ও জনসাধারণের মধ্যে ভীতি তৈরি হয়। তারা ব্যাংকের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেন। ব্যাংকিং খাতে আমানত বৃদ্ধি করতে হলে সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে গ্রাহকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিতে হবে। ব্যাংক সম্পর্কে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ ঠেকাতে আর্থিক তথ্য আইন (ফাইন্যান্সিয়াল ইনফরমেশন অ্যাক্ট) প্রণয়ন করতে হবে। এই আইন প্রয়োগের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক মিলে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যাংকিং খাত নিয়ে গণমাধ্যমে নেতিবাচক প্রচারণার কারণে জনজনে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। গ্রাহকরা ব্যাংকের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন। ওই উদ্যোগ জনমনে আস্থা বাড়াতে সহায়ক হবে বলে চিঠিতে আশা প্রকাশ করা হয়েছে। ওই চিঠিতে বেসরকারি ব্যাংক যাতে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ পায় তার সুযোগ; বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত নগদ জমা সংরক্ষণ (ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও (সিআরআর) থেকে ৩ শতাংশ ফেরতসহ সুনির্দিষ্ট ৯টি প্রস্তাব রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের তথ্য গণমাধ্যমের কল্যাণেই জানা গেছে। রিজার্ভের অর্থ চুরি ছাড়াও বেশ কয়েকটি বড় কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রথম জানা যায় গণমাধ্যমের কল্যাণে। হল-মার্ক গ্রুপ, বিসমিল্লাহ গ্রুপ ও বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির তথ্য মিডিয়াই প্রথম প্রকাশ করে। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে প্রতিনিয়ত ছোট-বড় ঋণে অনিয়ম এবং কেলেঙ্কারির ঘটনাও গণমাধ্যমের কল্যাণে দেশের মানুষ জানতে পারছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংক খাতে অনিয়ম বন্ধ না করে গণমাধ্যম বন্ধ করার উদ্যোগ মোটেও ভালো লক্ষণ নয়। তিনি বলেন, ব্যাংকের নেতিবাচক সংবাদ বন্ধে ফাইন্যান্সিয়াল ইনফরমেশন আইনের আওতায় আলাদা কোনো প্রতিষ্ঠান গঠনের কোনো যৌক্তিকতা নেই। সংবাদমাধ্যমে অপপ্রচার হলে তার জন্য আইন রয়েছে, প্রেস কাউন্সিল অ্যাক্ট রয়েছে এবং প্রতিবাদের ব্যবস্থা রয়েছে।
বিএবির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ব্যাংকিং খাত মূলত টিকে থাকে আস্থার ওপর। এই খাত নিয়ে অব্যাহতভাবে নেতিবাচক সংবাদ প্রচার হলে মানুষের মধ্যে ভয় তৈরি হয়। নেতিবাচক সংবাদ জনগণের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে। ব্যাংক নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ বন্ধে ফাইন্যান্সিয়াল ইনফরমেশন আইনের আওতায় একটি প্রতিষ্ঠান গঠনের লিখিত প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি এখনও প্রাথমিক আলোচনা। আরও আলোচনার পর এটি নিয়ে বলা যাবে।
বেসরকারি ব্যাংকের তারল্য সংকট, ঋণের সুদহার বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে গত শুক্রবার অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবি ও ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি। বৈঠকে ৩৮টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রায় ২৫টি ব্যাংকের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে অর্থমন্ত্রীর কাছে চিঠির প্রস্তাবগুলো তুলে ধরা হয়।
এদিকে চিঠিতে ব্যাংক মালিকদের প্রধান দাবি ছিল, ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট সমাধানে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ যাতে বেসরকারি ব্যাংকে আসে। ব্যাংক মালিকদের এই দাবি মেনে নেন অর্থমন্ত্রী। ব্যাংক মালিকদের দাবি মেনে নেয়া হয়েছে বলে রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী নিজেই জানান। বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখা বেসরকারি ব্যাংকগুলোর সিআরআর ১ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী জুন পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। এছাড়া, বেসরকারি ব্যাংকগুলোয় সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানত ৫০ শতাংশ রাখা হবে। ইতিমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যন ও ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, গণমাধ্যমে যেটি এসেছে সেটি মিস কোট করা হয়েছে। এসব বিষয় আলোচনা করা হয়নি। আমরা আলোচনা করেছি মিডিয়া যেন ইতিবাচক রোল প্লে করে। এগুলো নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকবে এবং প্রবৃদ্ধি বাড়তে পারে ২-৩ শতাংশ। মুহিত বলেন, আমরা এ বছর দেখলাম হঠাৎ ব্যাংকগুলোর সুদের হার বাড়তে লাগল। এই সুদের হার বাড়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। কারণ যথেষ্ট লিকুইডিটি রয়েছে। অনেকে বলেছেন, তাদের হাতে লিকুইডিটি রয়েছে, পয়সা রয়েছে তারা সেটা ব্যবহার করে না। তিনি বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে ব্যাংকের সুদহার দুই অঙ্ক থেকে এক অঙ্কে নামিয়ে আনবেন ব্যাঙ্কাররা। প্রধান অতিথি বলেন, আমাদের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ইনভেস্টমেন্ট ফাইন্যান্স করে। নিয়মানুযায়ী এটা স্বাস্থ্যকর অবস্থা নয়। এর কারণ হলো, আমরা ক্যাপিটাল মার্কেট তৈরি করতে পারিনি। ব্যাংক খাতে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ক্যাপিটাল মার্কেট সৃষ্টি করা। এই ক্যাপিটাল মার্কেট সৃষ্টি করতে আগামী দুই মাসের মধ্যে একটা ছোট্ট গ্রুপকে দায়িত্ব দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের চাকরিজীবীদের ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী বলেন, তাদের সরকারি কর্মকর্তার মনোভাব থাকা উচিত নয়। তিনি বলেন, সরকারি চাকরি হুকুম দেয়ার জন্য নয়, এটা জনগণকে সেবা দেয়ার জন্য। সরকারি চাকরিজীবীদের সেবা দেয়ার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের ২৫ শতাংশ আমানত বেসরকারি ব্যাংকে রাখতে হয় আর ৭৫ শতাংশ আমানত রাখতে হয় সরকারি ব্যাংকে। গতাকাল (শনিবার) একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন থেকে ৫০ শতাংশ আমানত বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে যাবে। এতে করে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর লিকুইডিটি বাড়বে। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো স্বল্পমেয়াদে অর্থ নিয়ে দীর্ঘমিয়াদে ঋণ দিচ্ছে, এটা ভালো নয়। এ ব্যাপারে তিনি ক্ষুদ্র ঋণের ওপর জোর দেন। এতে ঝুঁকি কম থাকে বলেও উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, শ্রেণিকৃত মূলধন এবং খেলাফি ঋণ জনতা ব্যাংকের চ্যালেঞ্জ। ব্যাংকটির লোকসানি শাখা রয়েছে ৫৭টি। ঋণ জালিয়াতি নিয়েও গণমাধ্যমে নানা খবর বেরিয়েছে। এগুলোও বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, বড় অঙ্কের ঋণ দেয়ার ব্যাপারে আগ্রহী না হলেও চলবে। তাদের কুটির শিল্পের ক্ষেত্রে ঋণ দিতে আগ্রহী হতে হবে। এতে একদিকে যেমন দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে তেমনি কর্ম সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। রিটেইল ব্যাংকিংয়ের ওপর জোর দিতে হবে। খেলাফি ঋণ আদায় জোরদার করতে হবে। গভর্নর বলেন, খেলাফি ঋণের মামলা করার আগে ঋণদাতার সঙ্গে আলাপ করতে হবে। তাদের কাছ থেকে ঋণ আদায়ের চেষ্টা করতে হবে। কারণ ঋণখেলাফির মামলা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। ফজলে কবির বলেন, যেকোনো ব্যাংকের জন্য গভর্ন্যান্স ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন এবং জনতা ব্যাংকের জন্য সেটা অবশ্যই প্রয়োজন। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমান, অর্থ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, ব্যাংকের চেয়ারম্যান লুনা সামসুদ্দোহা, সিইও ও এমডি মো. আবদুছ ছালাম আজাদসহ অন্য কর্মকর্তারা।
বেসরকারি ব্যাংকের সিআরআর কমছে এক শতাংশ: অর্থমন্ত্রী
বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখা বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও বা সিআরআর (নগদ জমা সংরক্ষণ) এক শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। খুব দ্রুতই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে আগামী জুনে এর ফলাফল সম্পর্কে একটি পর্যালোচনা আগামী জুন মাসে দেয়া হবে। গতকাল রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অর্থমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংক মালিকদের সংগঠন (বিএবি) এক যৌথ বৈঠকে এ এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টা এস কে সুর চৌধুরী, বিএবি’র সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে অনেকগুলো বিষয় আলোচনা হয়েছে। তার মধ্যে একটি সিআরআর কমানো। বর্তমান সিআরআর সাড়ে ৬ শতাংশ। তারা এটা ৩ শতাংশ করার দাবি করেছিলো। আমরা সার্বিক বিবেচনা করে এক শতাংশ কমিয়েছি। অর্থ্যাৎ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর জমা রাখা সিআরআর এর ১ শতাংশ টাকা ব্যাংকগুলো ব্যবহার করতে পারবে। এর ফলে ১০ হাজার কোটি টাকা বেসরকারি ব্যাংকগুলোর হাতে চলে আসবে। এতে তারল্য সংকট কমে গেলে সুদের হারও কমে যাবে। এত পরিমাণ টাকা বেসরকারি ব্যাংকগুলোর কাছে দেয়া হলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি বাড়বে না, কোনোভাবেই বাড়বে না। পরে বিএবি’র সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদারও সিআরআর-এর টাকা পেলে তারল্য সংকট কিছুটা কমে যাবে বলে মন্তব্য করেন। এ সময় অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আগামী এক মাসের মধ্যেই সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, অতি দ্রুত সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে আসবে। আগামী এক মাসের মধ্যে এটা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এটা বাস্তবসম্মত নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে টোটাল যে ইনভেস্টমেন্ট তার ৭০ শতাংশ করছে বেসরকারি ব্যাংক। আমরা যদি সবচেয়ে বেশি ইনভেস্ট করি তাহলে সরকারি টাকা কেনো চাইতে পারবো না? তিনি বলেন, দু’একটা ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা হতেই পারে, তার মানে এই নয় যে, অর্থনীতির বিপর্যয় ঘটে গেছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টাকা বিভিন্ন জায়গায় পড়ে আছে এটা সুষম বণ্টন করতে হবে।
ব্যাংক নিয়ে ‘নেতিবাচক’ খবরে নিয়ন্ত্রণ আরোপের আবদার
ব্যাংক খাত নিয়ে ‘নেতিবাচক’ খবর প্রকাশে নিয়ন্ত্রণ আরোপের আবদার জানিয়েছে ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। ফাইন্যান্সিয়াল ইনফরমেশন অ্যাক্ট প্রণয়ন করে ব্যাংক সম্পর্কে নেতিবাচক সংবাদ প্রচার বন্ধের দাবি করছে সংগঠনটি। ব্যাংকিং খাতের অর্থ সংকট ও উচ্চসুদ সমস্যা সমাধানে করণীয় নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই দাবি জানিয়েছে বিএবি। চিঠিতে ব্যাংকিং খাতের চলমান সংকটের জন্য ৯টি সমস্যার কথা উল্লেখ করে সেগুলো সমাধানের জন্য অর্থমন্ত্রীর সুপারিশ চাওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রোববার অর্থমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এখন এটি বলার সময় নয়; আগামী বাজেট ঘোষণার সময় বিষয়টি নিয়ে সংসদে আলোচনা হবে।
বিএবি ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গণমাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হলে গ্রাহক ও জনসাধারণের মধ্যে ভীতি তৈরি হয়। তারা ব্যাংকের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেন। ব্যাংকিং খাতে আমানত বৃদ্ধি করতে হলে সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে গ্রাহকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিতে হবে। ব্যাংক সম্পর্কে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ ঠেকাতে আর্থিক তথ্য আইন (ফাইন্যান্সিয়াল ইনফরমেশন অ্যাক্ট) প্রণয়ন করতে হবে। এই আইন প্রয়োগের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক মিলে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যাংকিং খাত নিয়ে গণমাধ্যমে নেতিবাচক প্রচারণার কারণে জনজনে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। গ্রাহকরা ব্যাংকের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন। ওই উদ্যোগ জনমনে আস্থা বাড়াতে সহায়ক হবে বলে চিঠিতে আশা প্রকাশ করা হয়েছে। ওই চিঠিতে বেসরকারি ব্যাংক যাতে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ পায় তার সুযোগ; বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত নগদ জমা সংরক্ষণ (ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও (সিআরআর) থেকে ৩ শতাংশ ফেরতসহ সুনির্দিষ্ট ৯টি প্রস্তাব রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের তথ্য গণমাধ্যমের কল্যাণেই জানা গেছে। রিজার্ভের অর্থ চুরি ছাড়াও বেশ কয়েকটি বড় কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রথম জানা যায় গণমাধ্যমের কল্যাণে। হল-মার্ক গ্রুপ, বিসমিল্লাহ গ্রুপ ও বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির তথ্য মিডিয়াই প্রথম প্রকাশ করে। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে প্রতিনিয়ত ছোট-বড় ঋণে অনিয়ম এবং কেলেঙ্কারির ঘটনাও গণমাধ্যমের কল্যাণে দেশের মানুষ জানতে পারছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংক খাতে অনিয়ম বন্ধ না করে গণমাধ্যম বন্ধ করার উদ্যোগ মোটেও ভালো লক্ষণ নয়। তিনি বলেন, ব্যাংকের নেতিবাচক সংবাদ বন্ধে ফাইন্যান্সিয়াল ইনফরমেশন আইনের আওতায় আলাদা কোনো প্রতিষ্ঠান গঠনের কোনো যৌক্তিকতা নেই। সংবাদমাধ্যমে অপপ্রচার হলে তার জন্য আইন রয়েছে, প্রেস কাউন্সিল অ্যাক্ট রয়েছে এবং প্রতিবাদের ব্যবস্থা রয়েছে।
বিএবির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ব্যাংকিং খাত মূলত টিকে থাকে আস্থার ওপর। এই খাত নিয়ে অব্যাহতভাবে নেতিবাচক সংবাদ প্রচার হলে মানুষের মধ্যে ভয় তৈরি হয়। নেতিবাচক সংবাদ জনগণের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে। ব্যাংক নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ বন্ধে ফাইন্যান্সিয়াল ইনফরমেশন আইনের আওতায় একটি প্রতিষ্ঠান গঠনের লিখিত প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি এখনও প্রাথমিক আলোচনা। আরও আলোচনার পর এটি নিয়ে বলা যাবে।
বেসরকারি ব্যাংকের তারল্য সংকট, ঋণের সুদহার বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে গত শুক্রবার অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবি ও ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি। বৈঠকে ৩৮টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রায় ২৫টি ব্যাংকের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে অর্থমন্ত্রীর কাছে চিঠির প্রস্তাবগুলো তুলে ধরা হয়।
এদিকে চিঠিতে ব্যাংক মালিকদের প্রধান দাবি ছিল, ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট সমাধানে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ যাতে বেসরকারি ব্যাংকে আসে। ব্যাংক মালিকদের এই দাবি মেনে নেন অর্থমন্ত্রী। ব্যাংক মালিকদের দাবি মেনে নেয়া হয়েছে বলে রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী নিজেই জানান। বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখা বেসরকারি ব্যাংকগুলোর সিআরআর ১ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী জুন পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। এছাড়া, বেসরকারি ব্যাংকগুলোয় সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানত ৫০ শতাংশ রাখা হবে। ইতিমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যন ও ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, গণমাধ্যমে যেটি এসেছে সেটি মিস কোট করা হয়েছে। এসব বিষয় আলোচনা করা হয়নি। আমরা আলোচনা করেছি মিডিয়া যেন ইতিবাচক রোল প্লে করে। এগুলো নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে।
No comments