দলিতদের ডাকা ভারত বনধে অশান্তি, মৃত ৪
ভারত
বনধে বিভিন্ন রাজ্যে অশান্তি চরম আকার ধারন করেছে। ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রদেশে
মোরেনা ও গোয়ালিয়রে মোট চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। সোমবার
দেশব্যাপী এই বনধের ডাক দিয়েছে বিভিন্ন দলিত সংগঠন। এতে সমর্থন দিয়েছে
বামপন্থি ট্রেড ইউনিয়নগুলি। তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের নিরাপত্তায় সিডিউল
কাস্ট-সিডিউল ট্রাইব (প্রিভেনশন অব অ্যাট্রসিটিস) আইন লঘু করে দেওয়ার
অভিযোগে ডাকা বনধে রাজস্থান, পাঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, বিহার ও ওড়িশায় প্রবল
অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছে। জায়গায় জায়গায় অবরোধ করা হয়েছে রেল। মধ্যপ্রদেশের
মোরেনাতে বিক্ষোভ চলাকালীন প্রকাশ্যে গুলি চালাতে দেখা গিয়েছে এক
ব্যক্তিকে। গুলিতে জখম এক যুবকের মৃত্যুও হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে
সেখানে কারফিউ জারি করা হয়েছে। গোলমালের আশঙ্কায় পাঞ্জাব সরকার আজ সব
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে। মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবাও
বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাঞ্জাবে সিবিএসই দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা
বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। পাঞ্জাবে গোলমাল বৃদ্ধির আশঙ্কায় সেনাবাহিনীকেও
তৈরি রাখা হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে উত্তর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের
সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের বচসা, ধস্তাধস্তি হয়েছে। মেরঠ ও বারমেরে বেশ কয়েকটি
গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। বিহারের পাটনা সহ আশেপাশের বিভিন্ন
জায়গায় টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করেন ভীম আর্মির সদস্যরা। তারা জোর করে বহু
দোকানও বন্ধ করে দেয়। গত ২০ শে মার্চ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সরকারি
কর্মীদের বিরুদ্ধে তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের উপর অত্যাচার বন্ধের আইনের
যথেচ্ছ অপব্যবহার করা হচ্ছে। তাই এখন থেকে আর নিয়োগ কর্তৃপক্ষের অনুমতি
ছাড়া এই আইনে কোনও সরকারি কর্মীকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। সরকারি কর্মী
ছাড়া অন্যদের ক্ষেত্রে সিনিয়র পুলিশ সুপার মনে করলে গ্রেপ্তারের অনুমতি
দিতে পারেন। এই রায়ের বিরোধিতা করেই ভারত বনধের ডাক দিয়েছে পিস্যান্টস
অ্যান্ড ওয়ার্কার্স পার্টি, ভারিপ বহুজন মহাসঙ্ঘ, জাতি অন্ত সংঘর্ষ সমিতি,
রাষ্ট্রীয় সেবা দল, ন্যাশনাল দলিত মুভমেন্ট ফর জাস্টিস সহ বিভিন্ন সংগঠন।
কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য আন্দোলনের চাপে পড়ে সুপ্রিম কোর্টে
আবেদন করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। সামাজিক ন্যায়বিধান ও ক্ষমতায়ন বিভাগের
মন্ত্রী থবর চন্দ গেহলট ভারত বনধ প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে বলেছেন, ভারত
বনধের প্রয়োজন নেই। সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন
জানাচ্ছে। অপর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানও ভারত বনধের বিরোধিতা
করেছেন।
No comments