যেভাবে ডায়রিয়াকে পরাভূত করেছে বাংলাদেশ by মাহমুদ ফেরদৌস
ত্রিশালের
একটি বিদ্যালয়ে ২৭ বছর ধরে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন মোহাম্মদ
ইকবাল বাহার। এই দীর্ঘ পরিক্রমায় নিজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশ কিছু
পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন তিনি। ক্ষেত-খামারে পিতামাতাকে সাহায্য করতে গিয়ে
ছেলে-মেয়ে উভয়েই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকে। কিন্তু আগের চেয়ে অসুস্থতাজনিত
কারণে অনুপস্থিতর হার এখন অনেক কম। গত ১০ বছরে কলেরার প্রাদুর্ভাব হয়েছে
বলে মনে করতে পারেন না তিনি। আরেকটি পরিবর্তনের ব্যাপারে তিনি পুরোপুরি
নিশ্চিত নন, তবে তার ধারণা এখনকার শিক্ষার্থীরা আগের শিক্ষার্থীদের তুলনায়
লম্বা।
ইকবাল বাহারের পর্যবেক্ষণ সত্য হয়ে থাকলে, তা হয়তো হয়েছে কারণ আগের চেয়ে এখন শিশুরা স্বাস্থ্যবান হয় বেশি। ১৯৯৩-৯৪ সালে, বাংলাদেশের ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ১৪ শতাংশ শিশুই দুই সপ্তাহ অন্তর অন্তর একবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতো। ওই বয়স একটি শিশুর বিকাশের ক্ষেত্রে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পাকস্থলির জীবাণুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও তখন থাকে বেশি। ২০০৪ সালের দিকে আক্রান্ত শিশুর পরিমাণ কমে ১২ শতাংশে নেমে আসে। ২০১৪ সালে তা নেমে আসে ৭ শতাংশে। বয়সের তুলনায় শরীরের আকার কম হওয়ার হারও কমেছে আনুপাতিক হারে। টাইফয়েড হ্রাস পাওয়া ও স্যালাইন ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে বেঁচেছে অনেক প্রাণ।
বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য খাতে অগ্রগতি নিয়ে লন্ডনের ইকোনমিস্ট ম্যাগাজিনের ২২শে মার্চ ইস্যুতে দুইটি নিবন্ধ ছাপা হয়েছে। ‘হাউ বাংলাদেশ ভ্যাংকুইশড ডায়রিয়া’ শিরোনামে একটি নিবন্ধে এসব বলা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের মতলব উপজেলার বাসিন্দাদের নিয়ে ভালো স্বাস্থ্য উপাত্ত রয়েছে। সেখানে ডায়রিয়া ও আমাশয় থেকে মৃত্যুর হার নব্বইয়ের দশকের পর থেকে ৯০ শতাংশ কমেছে। এখান থেকেই বোঝা সম্ভব কীভাবে বাংলাদেশ এই বিরাট সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশ এখনও এশিয়ার দরিদ্র্যতম দেশগুলোর একটি। ভারতের চেয়ে এখানে মাথাপিছু আয় অর্ধেক। তবুও বাংলাদেশের শিশুমৃত্যুর হার ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে কম। আর বৈশ্বিক গড় হারের চেয়ে কম তো বটেই।
বাংলাদেশের সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় ব্যাখ্যা হলো ত্রিশালের মতো গ্রামে গ্রামে পাকা পায়খানার বিস্তার। ২০০৬ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে, ব্র্যাকের পরিচালিত স্যানিটেশন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ৫০ লাখেরও বেশি ঘরে টয়লেট স্থাপিত হয়েছে। প্রথমে ব্র্যাকের মতো দাতব্য সংস্থা চালু করলেও, স্থানীয়রা তার বিস্তার ঘটিয়েছেন। ত্রিশালের একদল নারী ব্যাখ্যা করেছেন যে, ঘরে টয়লেট থাকা এখন মান-সম্মানের বিষয়। টয়লেট না থাকা নিয়ে বিয়ের কথা পাকা থাকলেও তা ভেঙ্গে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ব্র্যাকের কর্মকান্ড আছে এমন জেলাতেও ২০০৬ থেকে ২০১৫ সালে যত পায়খানা তৈরি করা হয়েছে, সেগুলোর দুই-তৃতীয়াংশই বানিয়েছেন জনসাধারণ।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, মানুষজন টয়লেট বানিয়েই ক্ষান্ত হননি, ঠিকঠাক তা ব্যবহারও করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, খোলা জায়গায় মলত্যাগ করে এমন পরিবারের সংখ্যা বাংলাদেশে শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। এটা হয়তো বাড়িয়ে বলা কোনো তথ্য। অন্যান্য গবেষণায় ইঙ্গিত মিলেছে যে, ৫ শতাংশ পরিবার এখনও খোলা জায়গায় অথবা খাল বা নদীর ওপর নির্মিত ভাসমান টয়লেটে মলত্যাগ করে। কিন্তু বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই অন্যান্য দরিদ্র্য দেশের চেয়ে এই ক্ষেত্রে ভালো করেছে। যেমন, ডব্লিউএইচও’র মতে, ৪০ শতাংশ ভারতীয়ই খোলা স্থানে মলত্যাগ করে। ভারতের সরকার অবশ্য এই দাবির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে। বর্তমানে প্রকাশ্যে মলত্যাগের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারাভিযান চালাচ্ছে সরকার। তাদের দাবি, প্রত্যন্ত অঞ্চলে খোলা স্থানে মলত্যাগকারীদের সংখ্যা ২০১৪ সালে ৫৫ কোটি ছিল। এখন তা ২৫ কোটি। যে-ই দাবিই সত্য ধরা হোক, তা বাংলাদেশের চেয়ে বহু পিছিয়ে।
ব্র্যাকের স্যানিটেশন বিশেষজ্ঞ জনির আহমেদ বলেন, গ্রামবাসীরা প্রথম প্রথম পাকা পায়খানা ব্যবহারে অনিচ্ছুক ছিল। তারা গন্ধ ও বদ্ধ পরিবেশ নিয়ে অনুযোগ করতো। কিন্তু ব্র্যাক বুঝতে পারে যে, সমাজের সবচেয়ে দরিদ্র্যতম জনগোষ্ঠীই সবচেয়ে বেশি বিশেষজ্ঞদের কথা শোনেন। ব্র্যাক প্রথমে পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর জন্য ল্যাট্রিন নির্মান করে। এরপর একটু বিত্তশালী বাসিন্দারা লজ্জায় পড়ে নিজেরাই টয়লেট নির্মান করতে শুরু করেন।
আমেরিকার ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ মুশফিক মোবারক স্যানিটেশন নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি বলেন, সচ্ছল লোকজনই দরিদ্র্যদের অনুকরণ করেন। উল্টোটা ঘটে কম। কোনো ধনী ব্যক্তির যদি কিছু থেকে থাকে, নিজের কাছে তা না থাকায় আপনি লজ্জা বোধ করবেন না। কিন্তু দরিদ্র্যদের কাছে আছে, এমন কিছু যদি বিত্তশালীর কাছে না থাকে, তাহলে তারা লজ্জাবোধ করবেন।
ত্রিশাল গ্রামের আরেকটি দারুণ বিষয় হলো এখানে খাবার পানির কোনো স্বল্পতা নেই। ২৭০ পরিবারের এই গ্রামে ৩৩টি পানির পাম্প আছে। পাকা পায়খানার মতো, এই পানির পাম্পও বেশিরভাগ পরিবারই বসিয়েছে নিজ খরচায়। তবে বেশিরভাগ ওয়াটার পাম্পই বসানো হয়েছে পাকা পায়খানার নিকটে। তবে এতে কোনো সমস্যা নেই বলে মত দিয়েছেন বাংলাদেশের ইন্টারনেশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিসিজ রিসার্চের (আইসিডিডিআর) গবেষক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। ল্যাট্রিনের চারপাশের ভূগর্ভস্থ পানি পরীক্ষা করে তিনি দেখেছেন যে, মাটির নিচে জীবানু ২ মিটারের বেশি দূরে যেতে পারে না।
সিরাজুল ইসলাম আরেক জিনিসও আবিষ্কার করেছেন। তিনি দেখেছেন যে, ভূগর্ভস্থ পানি বেশ পরিষ্কার হলেও, পাম্পের মাধ্যমে যেই পানি উঠে আসে, তা পরিষ্কার নয়। এছাড়া ঘরে সংরক্ষিত পানিও প্রায়ই নোংরা থাকে। যেমনটা থাকে বাচ্চাদেরকে খাওয়ানোর জন্য মায়ের আলাদা করে রাখা খাবার। বাংলাদেশীদেরকে যদি পানির পাম্প, থালা-বাসন ও হাত পরিষ্কার রাখা ও ঠান্ডা হয়ে যাওয়া খাবার গরম করে খাওয়ার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করা যায়, অন্ত্র-সংক্রান্ত রোগের হার আরও কমবে। যেই ডায়রিয়া রোগে আগে গণহারে মানুষ মারা যেত, সেই রোগ এখন মাঝারি মানের ঝুঁকি। সেখান থেকে এই রোগকে স্রেফ অনিয়মিত উৎপাতের মাত্রায় নামিয়ে আনা সম্ভব।
ইকবাল বাহারের পর্যবেক্ষণ সত্য হয়ে থাকলে, তা হয়তো হয়েছে কারণ আগের চেয়ে এখন শিশুরা স্বাস্থ্যবান হয় বেশি। ১৯৯৩-৯৪ সালে, বাংলাদেশের ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ১৪ শতাংশ শিশুই দুই সপ্তাহ অন্তর অন্তর একবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতো। ওই বয়স একটি শিশুর বিকাশের ক্ষেত্রে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পাকস্থলির জীবাণুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও তখন থাকে বেশি। ২০০৪ সালের দিকে আক্রান্ত শিশুর পরিমাণ কমে ১২ শতাংশে নেমে আসে। ২০১৪ সালে তা নেমে আসে ৭ শতাংশে। বয়সের তুলনায় শরীরের আকার কম হওয়ার হারও কমেছে আনুপাতিক হারে। টাইফয়েড হ্রাস পাওয়া ও স্যালাইন ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে বেঁচেছে অনেক প্রাণ।
বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য খাতে অগ্রগতি নিয়ে লন্ডনের ইকোনমিস্ট ম্যাগাজিনের ২২শে মার্চ ইস্যুতে দুইটি নিবন্ধ ছাপা হয়েছে। ‘হাউ বাংলাদেশ ভ্যাংকুইশড ডায়রিয়া’ শিরোনামে একটি নিবন্ধে এসব বলা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের মতলব উপজেলার বাসিন্দাদের নিয়ে ভালো স্বাস্থ্য উপাত্ত রয়েছে। সেখানে ডায়রিয়া ও আমাশয় থেকে মৃত্যুর হার নব্বইয়ের দশকের পর থেকে ৯০ শতাংশ কমেছে। এখান থেকেই বোঝা সম্ভব কীভাবে বাংলাদেশ এই বিরাট সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশ এখনও এশিয়ার দরিদ্র্যতম দেশগুলোর একটি। ভারতের চেয়ে এখানে মাথাপিছু আয় অর্ধেক। তবুও বাংলাদেশের শিশুমৃত্যুর হার ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে কম। আর বৈশ্বিক গড় হারের চেয়ে কম তো বটেই।
বাংলাদেশের সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় ব্যাখ্যা হলো ত্রিশালের মতো গ্রামে গ্রামে পাকা পায়খানার বিস্তার। ২০০৬ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে, ব্র্যাকের পরিচালিত স্যানিটেশন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ৫০ লাখেরও বেশি ঘরে টয়লেট স্থাপিত হয়েছে। প্রথমে ব্র্যাকের মতো দাতব্য সংস্থা চালু করলেও, স্থানীয়রা তার বিস্তার ঘটিয়েছেন। ত্রিশালের একদল নারী ব্যাখ্যা করেছেন যে, ঘরে টয়লেট থাকা এখন মান-সম্মানের বিষয়। টয়লেট না থাকা নিয়ে বিয়ের কথা পাকা থাকলেও তা ভেঙ্গে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ব্র্যাকের কর্মকান্ড আছে এমন জেলাতেও ২০০৬ থেকে ২০১৫ সালে যত পায়খানা তৈরি করা হয়েছে, সেগুলোর দুই-তৃতীয়াংশই বানিয়েছেন জনসাধারণ।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, মানুষজন টয়লেট বানিয়েই ক্ষান্ত হননি, ঠিকঠাক তা ব্যবহারও করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, খোলা জায়গায় মলত্যাগ করে এমন পরিবারের সংখ্যা বাংলাদেশে শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। এটা হয়তো বাড়িয়ে বলা কোনো তথ্য। অন্যান্য গবেষণায় ইঙ্গিত মিলেছে যে, ৫ শতাংশ পরিবার এখনও খোলা জায়গায় অথবা খাল বা নদীর ওপর নির্মিত ভাসমান টয়লেটে মলত্যাগ করে। কিন্তু বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই অন্যান্য দরিদ্র্য দেশের চেয়ে এই ক্ষেত্রে ভালো করেছে। যেমন, ডব্লিউএইচও’র মতে, ৪০ শতাংশ ভারতীয়ই খোলা স্থানে মলত্যাগ করে। ভারতের সরকার অবশ্য এই দাবির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে। বর্তমানে প্রকাশ্যে মলত্যাগের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারাভিযান চালাচ্ছে সরকার। তাদের দাবি, প্রত্যন্ত অঞ্চলে খোলা স্থানে মলত্যাগকারীদের সংখ্যা ২০১৪ সালে ৫৫ কোটি ছিল। এখন তা ২৫ কোটি। যে-ই দাবিই সত্য ধরা হোক, তা বাংলাদেশের চেয়ে বহু পিছিয়ে।
ব্র্যাকের স্যানিটেশন বিশেষজ্ঞ জনির আহমেদ বলেন, গ্রামবাসীরা প্রথম প্রথম পাকা পায়খানা ব্যবহারে অনিচ্ছুক ছিল। তারা গন্ধ ও বদ্ধ পরিবেশ নিয়ে অনুযোগ করতো। কিন্তু ব্র্যাক বুঝতে পারে যে, সমাজের সবচেয়ে দরিদ্র্যতম জনগোষ্ঠীই সবচেয়ে বেশি বিশেষজ্ঞদের কথা শোনেন। ব্র্যাক প্রথমে পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর জন্য ল্যাট্রিন নির্মান করে। এরপর একটু বিত্তশালী বাসিন্দারা লজ্জায় পড়ে নিজেরাই টয়লেট নির্মান করতে শুরু করেন।
আমেরিকার ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ মুশফিক মোবারক স্যানিটেশন নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি বলেন, সচ্ছল লোকজনই দরিদ্র্যদের অনুকরণ করেন। উল্টোটা ঘটে কম। কোনো ধনী ব্যক্তির যদি কিছু থেকে থাকে, নিজের কাছে তা না থাকায় আপনি লজ্জা বোধ করবেন না। কিন্তু দরিদ্র্যদের কাছে আছে, এমন কিছু যদি বিত্তশালীর কাছে না থাকে, তাহলে তারা লজ্জাবোধ করবেন।
ত্রিশাল গ্রামের আরেকটি দারুণ বিষয় হলো এখানে খাবার পানির কোনো স্বল্পতা নেই। ২৭০ পরিবারের এই গ্রামে ৩৩টি পানির পাম্প আছে। পাকা পায়খানার মতো, এই পানির পাম্পও বেশিরভাগ পরিবারই বসিয়েছে নিজ খরচায়। তবে বেশিরভাগ ওয়াটার পাম্পই বসানো হয়েছে পাকা পায়খানার নিকটে। তবে এতে কোনো সমস্যা নেই বলে মত দিয়েছেন বাংলাদেশের ইন্টারনেশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিসিজ রিসার্চের (আইসিডিডিআর) গবেষক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। ল্যাট্রিনের চারপাশের ভূগর্ভস্থ পানি পরীক্ষা করে তিনি দেখেছেন যে, মাটির নিচে জীবানু ২ মিটারের বেশি দূরে যেতে পারে না।
সিরাজুল ইসলাম আরেক জিনিসও আবিষ্কার করেছেন। তিনি দেখেছেন যে, ভূগর্ভস্থ পানি বেশ পরিষ্কার হলেও, পাম্পের মাধ্যমে যেই পানি উঠে আসে, তা পরিষ্কার নয়। এছাড়া ঘরে সংরক্ষিত পানিও প্রায়ই নোংরা থাকে। যেমনটা থাকে বাচ্চাদেরকে খাওয়ানোর জন্য মায়ের আলাদা করে রাখা খাবার। বাংলাদেশীদেরকে যদি পানির পাম্প, থালা-বাসন ও হাত পরিষ্কার রাখা ও ঠান্ডা হয়ে যাওয়া খাবার গরম করে খাওয়ার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করা যায়, অন্ত্র-সংক্রান্ত রোগের হার আরও কমবে। যেই ডায়রিয়া রোগে আগে গণহারে মানুষ মারা যেত, সেই রোগ এখন মাঝারি মানের ঝুঁকি। সেখান থেকে এই রোগকে স্রেফ অনিয়মিত উৎপাতের মাত্রায় নামিয়ে আনা সম্ভব।
No comments