খুলনায় ১৪শ’ ফুট নিচেও পাওয়া যাচ্ছে না পানি by রাশিদুল ইসলাম
গ্রীষ্মের
শুরুতে খুলনা নগরীর পাশাপাশি গ্রামীণ জনজীবনেও পানি সংকট তীব্র আকার ধারণ
করেছে। জেলার নয় উপজেলার পাঁচটিতেই এ সংকট তীব্র। পানি সংকট মোকাবেলায়
সরকারি ও বেসরকারিভাবে একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করলেও সেগুলো কাজে আসছে না। এ
সমস্যা সমাধানে নতুন করে একাধিক প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। গরম পড়তে না
পড়তেই নগরী বিভিন্ন এলাকার নলকূপে পানি উঠছে না। গভীর রাতে মটরের সাহায্যে
পানি তুলতে হচ্ছে নগরবাসীর।
ওয়াসার তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসে পানির স্তর নেমেছে দুই থেকে চার ফুট নিচে। ফলে অনেক এলাকায় নলকূপ ও পাম্পে পানি উঠছে না আগের মতো। সমস্যার কথা স্বীকার করে আগের তুলনায় বেশি সময় পাম্প চালানো এবং নতুন চারটি পাম্প বসানোর কথা জানিয়েছেন ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ পিইঞ্জ। খুলনা ওয়াসার পাম্প রয়েছে ৮৫টি এবং পানি সরবরাহ পাইপ লাইন ২৯০ কিলোমিটার। আর নলকূপ রয়েছে প্রায় নয় হাজার।
খুলনা জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার নয় উপজেলার মধ্যে কয়রা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, পাইকগাছা ও তেরখাদা উপজেলায় সংকট বেশি। শুকনো মওসুমে এসব এলাকার জনগণের পানযোগ্য পানির একমাত্র উৎস পুকুর। লবণাক্ততার প্রবণতা বেশি থাকায় এসব এলাকায় গভীর নলকূপের পানিও অনুপযোগী। সর্বশেষ গেল বছর সেপ্টেম্বর মাসে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে খুলনার সবগুলো উপজেলায় জরিপ চালানো হয়। ওই জরিপে দেখা যায়, ১২শ’ ফুটের মধ্যে পান করার উপযোগী কোনো পানির স্তর নেই। ১৪শ’ ফুট নিচেও পাওয়া যাচ্ছে না পানি। ফলে ওই সব এলাকায় ১৫শ’ ফিট গভীর নলকূপ বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকারি এ দপ্তরটি। এ লক্ষ্যে প্রায় ১৩০টি গভীর নলকূপ বসানোর জন্য একটি প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর খুলনা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিলে তবেই এ উদ্যোগ সফল করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহিদ পারভেজ। তিনি বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির স্তর পাওয়া একটু কঠিন। এজন্য আমরা ১৫শ’ ফিট গভীর নলকূপ বসানোর উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি পান উপযোগী ভালো পানি পাওয়া যাবে। দাকোপ, কয়রা, পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা এবং রূপসা উপজেলায় জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি বিচেনায় এনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, বিভিন্ন এনজিও ও সংগঠন এসব এলাকার পুকুরের পানিতে ফিল্টারিং-এর ব্যবস্থা করেছে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব পদ্ধতির বেশিরভাগই অকেজো হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে কয়রা উপজেলার ৫৩টি, বটিয়াঘাটার সুরখালী ইউনিয়নে ১৪টি, দাকোপ উপজেলার ১১৯টি পুকুরে পানি ফিল্টারিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। এরমধ্যে বর্তমানে ৫০টির মতো পুকুরে ফিল্টারিং ব্যবস্থা সচল আছে। এদিকে শুষ্ক মওসুমে উপকূলে সুপেয় পানির সকল উৎস ক্রমেই হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া এবং ভূ-উপরিস্থিত পানি দূষিত হয়ে যাচ্ছে। আর্সেনিকের প্রভাব ও লবণাক্ততা পুকুর এবং টিউবওয়েলের পানিতে। এরপর রয়েছে ফ্লোরাইডের হাতছানি। উপকূলের বিশেষ করে বাগেরহাটের মংলা, খুলনার দাকোপ, কয়রা, সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার মানুষ বছরে অন্তত ৬ মাস তীব্র সংকটকাল অতিবাহিত করে। এ সময় ৪-৫ বা ৮-১০ কিলোমিটার দূর থেকেও পানি সংগ্রহ করতে হয়। এক কলস খাওয়ার পানি সংগ্রহ করতে ক্ষেত্রবিশেষে প্রতিদিন এক ঘণ্টা বা তার চেয়েও বেশি সময় তাদের ব্যয় করতে হয়।
এসব এলাকায় যেসব টিউবওয়েল রয়েছে সেগুলোও শুষ্ক মওসুমে পানি স্বাভাবিক লেয়ারের নিচে নেমে যায়। যে কারণে ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলন করা সম্ভব হয় না। ফলে স্বাভাবিক অবস্থা বিবেচনায় এনে ও দাতা সংস্থা ইউনিসেফের অর্থায়নে বাংলাদেশ সরকার খুলনার চার উপজেলাসহ সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটে মোট ৯৪টি অ্যাকুইফার রিজার্ভ পরীক্ষামূলকভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মো. জাহিদ পারভেজ বলেন, খুলনায় ২৬টি অ্যাকুইফার রিজার্ভ পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি করা হয়েছে। এগুলোর সুফল পাচ্ছে স্থানীয় লোকজন। এছাড়াও ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ও পিএসএফগুলোও সচল করার চেষ্টা চলছে। দাকোপ ও কয়রাসহ অন্যান্য উপজেলায় সাড়ে ১২শ’ রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং চালু রয়েছে। পানি সংকটের বিষয়ে দাকোপ উপজেলার নলিয়ান গ্রামের স্কুল শিক্ষক আবুল কালাম বলেন, পৌষের মাঝামাঝি সময় থেকেই এলাকার অধিকাংশ পুকুরের পানি শুকিয়ে গেছে। নলকূপেও পানি উঠছে না। তিনি জানান, খাবার পানি আনার জন্য এখানকার নারীদের পায়ে হেঁটে দুই-তিন কিলোমিটার দূরে যেতে হচ্ছে। কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের হাফিজুল সানা জানান, তাদের এলাকায় কিছু এনজিও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করলেও তা অনেকের ভাগ্যেই জোটে না। এ ব্যাপারে কয়রা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রশান্ত কুমার পাল বলেন, উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় খাবার পানির সমস্যা রয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহযোগিতায় কয়েকটি পুকুর সংস্কার করা হয়েছে। এছাড়া বেশ কিছু এলাকায় টিউবওয়েলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরো ব্যবস্থা করা হবে।
ওয়াসার তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসে পানির স্তর নেমেছে দুই থেকে চার ফুট নিচে। ফলে অনেক এলাকায় নলকূপ ও পাম্পে পানি উঠছে না আগের মতো। সমস্যার কথা স্বীকার করে আগের তুলনায় বেশি সময় পাম্প চালানো এবং নতুন চারটি পাম্প বসানোর কথা জানিয়েছেন ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ পিইঞ্জ। খুলনা ওয়াসার পাম্প রয়েছে ৮৫টি এবং পানি সরবরাহ পাইপ লাইন ২৯০ কিলোমিটার। আর নলকূপ রয়েছে প্রায় নয় হাজার।
খুলনা জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার নয় উপজেলার মধ্যে কয়রা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, পাইকগাছা ও তেরখাদা উপজেলায় সংকট বেশি। শুকনো মওসুমে এসব এলাকার জনগণের পানযোগ্য পানির একমাত্র উৎস পুকুর। লবণাক্ততার প্রবণতা বেশি থাকায় এসব এলাকায় গভীর নলকূপের পানিও অনুপযোগী। সর্বশেষ গেল বছর সেপ্টেম্বর মাসে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে খুলনার সবগুলো উপজেলায় জরিপ চালানো হয়। ওই জরিপে দেখা যায়, ১২শ’ ফুটের মধ্যে পান করার উপযোগী কোনো পানির স্তর নেই। ১৪শ’ ফুট নিচেও পাওয়া যাচ্ছে না পানি। ফলে ওই সব এলাকায় ১৫শ’ ফিট গভীর নলকূপ বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকারি এ দপ্তরটি। এ লক্ষ্যে প্রায় ১৩০টি গভীর নলকূপ বসানোর জন্য একটি প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর খুলনা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিলে তবেই এ উদ্যোগ সফল করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহিদ পারভেজ। তিনি বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির স্তর পাওয়া একটু কঠিন। এজন্য আমরা ১৫শ’ ফিট গভীর নলকূপ বসানোর উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি পান উপযোগী ভালো পানি পাওয়া যাবে। দাকোপ, কয়রা, পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা এবং রূপসা উপজেলায় জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি বিচেনায় এনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, বিভিন্ন এনজিও ও সংগঠন এসব এলাকার পুকুরের পানিতে ফিল্টারিং-এর ব্যবস্থা করেছে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব পদ্ধতির বেশিরভাগই অকেজো হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে কয়রা উপজেলার ৫৩টি, বটিয়াঘাটার সুরখালী ইউনিয়নে ১৪টি, দাকোপ উপজেলার ১১৯টি পুকুরে পানি ফিল্টারিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। এরমধ্যে বর্তমানে ৫০টির মতো পুকুরে ফিল্টারিং ব্যবস্থা সচল আছে। এদিকে শুষ্ক মওসুমে উপকূলে সুপেয় পানির সকল উৎস ক্রমেই হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া এবং ভূ-উপরিস্থিত পানি দূষিত হয়ে যাচ্ছে। আর্সেনিকের প্রভাব ও লবণাক্ততা পুকুর এবং টিউবওয়েলের পানিতে। এরপর রয়েছে ফ্লোরাইডের হাতছানি। উপকূলের বিশেষ করে বাগেরহাটের মংলা, খুলনার দাকোপ, কয়রা, সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার মানুষ বছরে অন্তত ৬ মাস তীব্র সংকটকাল অতিবাহিত করে। এ সময় ৪-৫ বা ৮-১০ কিলোমিটার দূর থেকেও পানি সংগ্রহ করতে হয়। এক কলস খাওয়ার পানি সংগ্রহ করতে ক্ষেত্রবিশেষে প্রতিদিন এক ঘণ্টা বা তার চেয়েও বেশি সময় তাদের ব্যয় করতে হয়।
এসব এলাকায় যেসব টিউবওয়েল রয়েছে সেগুলোও শুষ্ক মওসুমে পানি স্বাভাবিক লেয়ারের নিচে নেমে যায়। যে কারণে ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলন করা সম্ভব হয় না। ফলে স্বাভাবিক অবস্থা বিবেচনায় এনে ও দাতা সংস্থা ইউনিসেফের অর্থায়নে বাংলাদেশ সরকার খুলনার চার উপজেলাসহ সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটে মোট ৯৪টি অ্যাকুইফার রিজার্ভ পরীক্ষামূলকভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মো. জাহিদ পারভেজ বলেন, খুলনায় ২৬টি অ্যাকুইফার রিজার্ভ পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি করা হয়েছে। এগুলোর সুফল পাচ্ছে স্থানীয় লোকজন। এছাড়াও ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ও পিএসএফগুলোও সচল করার চেষ্টা চলছে। দাকোপ ও কয়রাসহ অন্যান্য উপজেলায় সাড়ে ১২শ’ রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং চালু রয়েছে। পানি সংকটের বিষয়ে দাকোপ উপজেলার নলিয়ান গ্রামের স্কুল শিক্ষক আবুল কালাম বলেন, পৌষের মাঝামাঝি সময় থেকেই এলাকার অধিকাংশ পুকুরের পানি শুকিয়ে গেছে। নলকূপেও পানি উঠছে না। তিনি জানান, খাবার পানি আনার জন্য এখানকার নারীদের পায়ে হেঁটে দুই-তিন কিলোমিটার দূরে যেতে হচ্ছে। কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের হাফিজুল সানা জানান, তাদের এলাকায় কিছু এনজিও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করলেও তা অনেকের ভাগ্যেই জোটে না। এ ব্যাপারে কয়রা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রশান্ত কুমার পাল বলেন, উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় খাবার পানির সমস্যা রয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহযোগিতায় কয়েকটি পুকুর সংস্কার করা হয়েছে। এছাড়া বেশ কিছু এলাকায় টিউবওয়েলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরো ব্যবস্থা করা হবে।
No comments