কুশিয়ারার বুকে গোচারণ ভূমি by এম আর চৌধুরী মাছুম
এক
কালের খরস্রোতা কুশিয়ারা এখন গোচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। অস্তিত্ব সংকটে
রয়েছে শাখা নদীগুলোও। সিলেটের বালাগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলায়
কুশিয়ারা নদীর বিশাল এলাকাজুড়ে বড় বড় চর ও অসংখ্য ছোট ছোট ডুবোচর জেগে
উঠেছে। নদী শুকিয়ে যাওয়ায় মিঠা পানির প্রায় ৬৫ প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হতে
চলেছে। নৌপথে পণ্য পরিবহন খরছ কম হওয়া সত্ত্বেও নাব্য না থাকায় নৌপরিবহন
ব্যবস্থা ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে। একদিকে নদী খননের অভাবে বিভিন্ন স্থানে
জেগে উঠেছে চর। অন্যদিকে হুমকির মুখে রয়েছে সিলেট বিভাগের বৃহত্তর হাওর
হাকালুকিসহ বিভিন্ন ছোট-বড় হাওর ও জলাশয়গুলো। তাছাড়া কুশিয়ারা নদীর সঙ্গে
যুক্ত নদীগুলো পরিণত হয়েছে ‘মরা খালে’। ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন
হাওর এলাকার মানুষ। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে জেনারেল আতাউল গনী ওসমানী
মন্ত্রী থাকাবস্থায় বালাগঞ্জ-ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকায় নদীর কিছু অংশে ড্রেজিং
করেছিলেন। এতে সুফলও পাওয়া গিয়েছিল বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। কুশিয়ারা নদীর
বর্তমান চিত্র এতই করুণ মাঘ, ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে ছোট দ্বীপের অবয়ব নিয়ে
কোনো রকম যেন জেগে আছে তার শূন্য বুক।
কুশিয়ারা নদী একদিন আপন ঐশ্বর্যে ভরপুর ছিল। ছোট-বড় ডলফিন, শুশুক ইলিশসহ বহু প্রজাতির মাছ যেখানে খেলা করতো। উত্তাল স্রোতে চলতো পালতোলা নৌকা। লঞ্চ, স্টিমার ও জাহাজ চলতো সারা বছর। ঘাটে ঘাটে ছিল নৌকার ভিড়। ছিল কুলি-শ্রমিকদের কোলাহল। কুশিয়ারা নদীকে কেন্দ্র করে বালাগঞ্জ বাজার, শেরপুর ঘাট ও ফেঞ্চুগঞ্চ বাজার ছিল সদা কর্মতৎপর সচল নৌবন্দর। বিস্তীর্ণ জনপদে কুশিয়ারা নদীর সেচের পানিতে হতো চাষাবাদ। অনেক পরিবারের জীবিকা নির্বাহের অবলম্বন ছিল এই কুশিয়ারা। কিন্তু এখন নদীর দিকে তাকানো যায় না। দিন দিন যেন সংকীর্ণ হয়ে আসছে তার গতিপথ। অথৈ জলের পরিবর্তে কেবল কান্নার সুরই যেন ভেসে আসে কুশিয়ারার বুক থেকে। তাইতো বছরের অধিকাংশ সময় স্রোতহীন অবস্থায় থাকছে কুশিয়ারা। তাছাড়া বিগত কয়েক বছর ধরে নদীতে চর জেগে ওঠায় প্রভাবশালী মহল বালু ব্যবসায় মেতে উঠে। আর অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করার কারণে নদী পাড়ে দেখা দেয় ভয়াবহ ভাঙন।
সূত্র মতে, ১৮২২ সালে আসামে চা-শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে চালু করা হয় আসাম-কলিকাতা নৌরুট। কলিকাতা-করিমগঞ্জ ভায়া প্রায় ১২৮৫ কিলোমিটারব্যাপী বিস্তৃত কুশিয়ারা নৌপথে ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ ঘাটে স্টিমার ও জাহাজ নোঙর করত। এর মধ্যে ফেঞ্চুগঞ্জ স্টিমার ঘাটে যাত্রা বিরতি ছিল অধিকতরও বেশি। তৎকালীন সময়ে কুশিয়ারা নদী দিয়ে ৩টি গুরুত্বপূর্ণ সার্ভিস পারচালিত হতো। সেগুলো হলো ফেঞ্চুগঞ্চ-করিমগঞ্জ ডেইলি ফিডার সার্ভিস, ফেঞ্চুগঞ্জ-মৌলভীবাজার ভায়া মনু মুখ ফিডার সার্ভিস ও ফেঞ্চুগঞ্জ-মার্কুলী ফিডার সার্ভিস। এছাড়া স্থানীয় বিভিন্ন লঞ্চ ও নৌ সার্ভিসতো ছিলই। যা ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হওয়া পর্যন্ত তা চালু ছিল। কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী এলাকা ঘুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারতের বরাক নদীর একটি শাখা নদী হচ্ছে কুশিয়ারা। দীর্ঘ দিন ধরে কোনো প্রকার ড্রেজিং না হওয়ায় নদী নাব্য হারাচ্ছে। কুশিয়ারার এই করুণ অবস্থায় নৌযান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। অচল হয়ে পড়েছে অনেক ঘাট। নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে নৌপরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরাও বেকার হয়ে পড়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, উপযুক্ত সময়ে নদী ড্রেজিং করা হলে প্রতি বছর ফাল্গুন-চৈত্র মাসে এভাবে নদী শুকিয়ে যেত না। কুশিয়ারা-সুরমাসহ সিলেট বিভাগের সব নদ-নদীকে নৌপরিবহন চলাচলের উপযোগী করতে অবিলম্বে খননের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে সচেতন মহল দাবি জানিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল লতিফ বলেন, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর ও ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকায় কুশিয়ারা নদীর খননের কোনো পরিকল্পনা এখনো শুরু করা হয়নি। তবে কুশিয়ারা নদীর ভাটি এলাকায় খনন প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।
কুশিয়ারা নদী একদিন আপন ঐশ্বর্যে ভরপুর ছিল। ছোট-বড় ডলফিন, শুশুক ইলিশসহ বহু প্রজাতির মাছ যেখানে খেলা করতো। উত্তাল স্রোতে চলতো পালতোলা নৌকা। লঞ্চ, স্টিমার ও জাহাজ চলতো সারা বছর। ঘাটে ঘাটে ছিল নৌকার ভিড়। ছিল কুলি-শ্রমিকদের কোলাহল। কুশিয়ারা নদীকে কেন্দ্র করে বালাগঞ্জ বাজার, শেরপুর ঘাট ও ফেঞ্চুগঞ্চ বাজার ছিল সদা কর্মতৎপর সচল নৌবন্দর। বিস্তীর্ণ জনপদে কুশিয়ারা নদীর সেচের পানিতে হতো চাষাবাদ। অনেক পরিবারের জীবিকা নির্বাহের অবলম্বন ছিল এই কুশিয়ারা। কিন্তু এখন নদীর দিকে তাকানো যায় না। দিন দিন যেন সংকীর্ণ হয়ে আসছে তার গতিপথ। অথৈ জলের পরিবর্তে কেবল কান্নার সুরই যেন ভেসে আসে কুশিয়ারার বুক থেকে। তাইতো বছরের অধিকাংশ সময় স্রোতহীন অবস্থায় থাকছে কুশিয়ারা। তাছাড়া বিগত কয়েক বছর ধরে নদীতে চর জেগে ওঠায় প্রভাবশালী মহল বালু ব্যবসায় মেতে উঠে। আর অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করার কারণে নদী পাড়ে দেখা দেয় ভয়াবহ ভাঙন।
সূত্র মতে, ১৮২২ সালে আসামে চা-শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে চালু করা হয় আসাম-কলিকাতা নৌরুট। কলিকাতা-করিমগঞ্জ ভায়া প্রায় ১২৮৫ কিলোমিটারব্যাপী বিস্তৃত কুশিয়ারা নৌপথে ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ ঘাটে স্টিমার ও জাহাজ নোঙর করত। এর মধ্যে ফেঞ্চুগঞ্জ স্টিমার ঘাটে যাত্রা বিরতি ছিল অধিকতরও বেশি। তৎকালীন সময়ে কুশিয়ারা নদী দিয়ে ৩টি গুরুত্বপূর্ণ সার্ভিস পারচালিত হতো। সেগুলো হলো ফেঞ্চুগঞ্চ-করিমগঞ্জ ডেইলি ফিডার সার্ভিস, ফেঞ্চুগঞ্জ-মৌলভীবাজার ভায়া মনু মুখ ফিডার সার্ভিস ও ফেঞ্চুগঞ্জ-মার্কুলী ফিডার সার্ভিস। এছাড়া স্থানীয় বিভিন্ন লঞ্চ ও নৌ সার্ভিসতো ছিলই। যা ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হওয়া পর্যন্ত তা চালু ছিল। কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী এলাকা ঘুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারতের বরাক নদীর একটি শাখা নদী হচ্ছে কুশিয়ারা। দীর্ঘ দিন ধরে কোনো প্রকার ড্রেজিং না হওয়ায় নদী নাব্য হারাচ্ছে। কুশিয়ারার এই করুণ অবস্থায় নৌযান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। অচল হয়ে পড়েছে অনেক ঘাট। নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে নৌপরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরাও বেকার হয়ে পড়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, উপযুক্ত সময়ে নদী ড্রেজিং করা হলে প্রতি বছর ফাল্গুন-চৈত্র মাসে এভাবে নদী শুকিয়ে যেত না। কুশিয়ারা-সুরমাসহ সিলেট বিভাগের সব নদ-নদীকে নৌপরিবহন চলাচলের উপযোগী করতে অবিলম্বে খননের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে সচেতন মহল দাবি জানিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল লতিফ বলেন, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর ও ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকায় কুশিয়ারা নদীর খননের কোনো পরিকল্পনা এখনো শুরু করা হয়নি। তবে কুশিয়ারা নদীর ভাটি এলাকায় খনন প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।
No comments