জীবনের হুমকিতে মানাস দ্বীপের শরণার্থীরা
মানাস দ্বীপে আটক শরণার্থীরা ভয়াবহ সঙ্কটে। তাদের জন্য মানবিক সেবা পুনঃস্থাপনের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে পাপুয়া নিউ গিনির একটি আদালত। এই দ্বীপে আশ্রয়গ্রহণকারী শরণার্থী শিবির পরিচালনা করতো অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু তারা এখন এটা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে দ্বীপটিতে অবস্থানরত শরণার্থীদেরকে স্বেচ্ছায় সেখান থেকে চলে যেতে হবে বাধ্য হয়েই। তাছাড়া এই শিবির ছেড়ে যেতে তাদেরকে সোমবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়।
কিন্তু প্রশ্নটা হচ্ছে, তারে আসলে যাবে কোথায়? এ অবস্থায় আতঙ্ক, বিষাদ গ্রাস করেছে শরণার্থীদের। মূলত নৌপথে অস্ট্রেলিয়ায় অনুপ্রবেশের সময় আটক শরণার্থীদের এই দ্বীপটিতে বন্দী করে রাখা হতো। আটক শরণার্থীদের শিবির পরিচালনা করা হতো অস্ট্রেলিয়া সরকারের পক্ষ থেকে। তবে, সাম্প্রতিককালে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে অস্ট্রেলিয়া। তারা দ্বীপটিতে সব ধরণের শরণার্থী কার্জক্রম গুটিয়ে নিচ্ছে। ইতিমধ্যেই বহু শরণার্থীকে তিনটি ট্রানজিট সেন্টারে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এখনো দ্বীপটিতে চার শতাধিক শরণার্থী অবস্থান করছেন। আশ্রয় শিবিরে বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। এমন কি খাবার পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে না। সোমবারের ভেতর তাদেরকে দ্বীপ ত্যাগ করতে বলা হয়। এমন অবস্থায় সেখানে মানবিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। দুইজন শরণার্থীর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছে বিবিসি। এই সাক্ষাৎকারে সামনের অনাগত ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা এবং বর্তমানের বেঁচে থাকার লড়াই- দুটোই উঠে এসেছে।
ওয়ালিদ জাজায়ি মানাস দ্বীপে বন্দী রয়েছেন চার বছরেরও বেশি সময়। তিনি আতঙ্কধরা গলায় বলেন, আমরা অত্যন্ত ভীত। জানি না কি হতে যাচ্ছে। জানি না তারা (উচ্ছেদকারি দল) কবে আসবে। হয়তোবা কাল সকালেই। তারা আমাদের বসবাস করা তাঁবুগুলো উঠিয়ে নিয়ে গেছে। আমরা খোলা আকাশের নিচে দিনাতিপাত করছি। রাতের বেলায় ঘুমাতে পারছি না। যখন আমাদের একদল ঘুমায়, অন্য দল পাহারা দেয়। ফলে কয়েক ঘণ্টার বেশি ঘুমানো যায় না। আমরা কেউ-ই জানি না আমাদের জীবনে কি হতে যাচ্ছে। অনিশ্চিত গন্তব্যের কথা ভাবতেই বার বার শরীর শিউরে উঠছে। কারণ অনিশ্চয়তা নিয়ে আমার অনেক নিষ্ঠুর অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিছুদিন পূর্বে আমরা একটা নতুন শহরে যাই। সেখানে আমাদেরকে মারধর করা হয়। কেড়ে নেয়া হয় আমাদের সহায়-সম্বল। অথচ, একটু আশ্রয়ের আশায় আমরা সেখানে গিয়েছিলাম! বিলাপরত জাজায়ি আরো বলেন, কয়েক মাসের ব্যবধানে আমার দু’বন্ধুকে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। অথচ, আমরা তো বাঁচার উদ্দেশ্যেই এখানে এসেছি। তারা নিজেরা আত্মহত্যা করে নি বলেই আমার ধারণা। তাদেরকে হত্যা করে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে বলে আমার সন্দেহ।
ওই দ্বীপের আরেকজন শরণার্থী আব্দুল আজিজ আদম। তিনি সুদান থেকে পালিয়ে এসেছেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আমি অনেকটাই নিশ্চিত যে, আমাদেরকে এখান থেকে হয়তো উৎখাত করা হবেই। অথচ, পাপুয়া নিউগিনির সরকার বিবৃতিতে বলেছিলো তারা আমাদের জোর করে সরিয়ে দেবে না। কিন্তু ঠিক দু’ঘণ্টা পার না হতেই তারা (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) এখানে এসে মাইকে উল্টো ঘোষণা দিয়েছে! তারা বলল- আমরা স্বেচ্ছায় না গেলে জোর করে তাড়িয়ে দেয়া হবে! এই অবস্থায় বেঁচে থাকার জন্য আমরা নিজেদের পক্ষে যা সম্ভব চেষ্টা করছি। আমরা জীবনের আশঙ্কায় দিনপাত করছি। এ ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই। আমাদের নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই। ১২ দিন ধরে আমাদের জীবন বাস্তবিকভাবেই নরকে পরিণত হয়েছে। না আছে খাদ্য, না আছে পানি, না আছে বিদ্যুৎ, না আছে ঘর; শুধু জীবনটাই আছে...
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা অক্টোবরে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলো যে, অস্ট্রেলিয়ার শরণার্থী শিবির বন্ধ করে দেবার সিদ্ধান্তে মানাস দ্বীপে মানবিক সঙ্কট তৈরি হতে পারে। আর সেই শঙ্কাই অবশেষে বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে।
কিন্তু প্রশ্নটা হচ্ছে, তারে আসলে যাবে কোথায়? এ অবস্থায় আতঙ্ক, বিষাদ গ্রাস করেছে শরণার্থীদের। মূলত নৌপথে অস্ট্রেলিয়ায় অনুপ্রবেশের সময় আটক শরণার্থীদের এই দ্বীপটিতে বন্দী করে রাখা হতো। আটক শরণার্থীদের শিবির পরিচালনা করা হতো অস্ট্রেলিয়া সরকারের পক্ষ থেকে। তবে, সাম্প্রতিককালে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে অস্ট্রেলিয়া। তারা দ্বীপটিতে সব ধরণের শরণার্থী কার্জক্রম গুটিয়ে নিচ্ছে। ইতিমধ্যেই বহু শরণার্থীকে তিনটি ট্রানজিট সেন্টারে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এখনো দ্বীপটিতে চার শতাধিক শরণার্থী অবস্থান করছেন। আশ্রয় শিবিরে বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। এমন কি খাবার পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে না। সোমবারের ভেতর তাদেরকে দ্বীপ ত্যাগ করতে বলা হয়। এমন অবস্থায় সেখানে মানবিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। দুইজন শরণার্থীর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছে বিবিসি। এই সাক্ষাৎকারে সামনের অনাগত ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা এবং বর্তমানের বেঁচে থাকার লড়াই- দুটোই উঠে এসেছে।
ওয়ালিদ জাজায়ি মানাস দ্বীপে বন্দী রয়েছেন চার বছরেরও বেশি সময়। তিনি আতঙ্কধরা গলায় বলেন, আমরা অত্যন্ত ভীত। জানি না কি হতে যাচ্ছে। জানি না তারা (উচ্ছেদকারি দল) কবে আসবে। হয়তোবা কাল সকালেই। তারা আমাদের বসবাস করা তাঁবুগুলো উঠিয়ে নিয়ে গেছে। আমরা খোলা আকাশের নিচে দিনাতিপাত করছি। রাতের বেলায় ঘুমাতে পারছি না। যখন আমাদের একদল ঘুমায়, অন্য দল পাহারা দেয়। ফলে কয়েক ঘণ্টার বেশি ঘুমানো যায় না। আমরা কেউ-ই জানি না আমাদের জীবনে কি হতে যাচ্ছে। অনিশ্চিত গন্তব্যের কথা ভাবতেই বার বার শরীর শিউরে উঠছে। কারণ অনিশ্চয়তা নিয়ে আমার অনেক নিষ্ঠুর অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিছুদিন পূর্বে আমরা একটা নতুন শহরে যাই। সেখানে আমাদেরকে মারধর করা হয়। কেড়ে নেয়া হয় আমাদের সহায়-সম্বল। অথচ, একটু আশ্রয়ের আশায় আমরা সেখানে গিয়েছিলাম! বিলাপরত জাজায়ি আরো বলেন, কয়েক মাসের ব্যবধানে আমার দু’বন্ধুকে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। অথচ, আমরা তো বাঁচার উদ্দেশ্যেই এখানে এসেছি। তারা নিজেরা আত্মহত্যা করে নি বলেই আমার ধারণা। তাদেরকে হত্যা করে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে বলে আমার সন্দেহ।
ওই দ্বীপের আরেকজন শরণার্থী আব্দুল আজিজ আদম। তিনি সুদান থেকে পালিয়ে এসেছেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আমি অনেকটাই নিশ্চিত যে, আমাদেরকে এখান থেকে হয়তো উৎখাত করা হবেই। অথচ, পাপুয়া নিউগিনির সরকার বিবৃতিতে বলেছিলো তারা আমাদের জোর করে সরিয়ে দেবে না। কিন্তু ঠিক দু’ঘণ্টা পার না হতেই তারা (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) এখানে এসে মাইকে উল্টো ঘোষণা দিয়েছে! তারা বলল- আমরা স্বেচ্ছায় না গেলে জোর করে তাড়িয়ে দেয়া হবে! এই অবস্থায় বেঁচে থাকার জন্য আমরা নিজেদের পক্ষে যা সম্ভব চেষ্টা করছি। আমরা জীবনের আশঙ্কায় দিনপাত করছি। এ ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই। আমাদের নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই। ১২ দিন ধরে আমাদের জীবন বাস্তবিকভাবেই নরকে পরিণত হয়েছে। না আছে খাদ্য, না আছে পানি, না আছে বিদ্যুৎ, না আছে ঘর; শুধু জীবনটাই আছে...
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা অক্টোবরে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলো যে, অস্ট্রেলিয়ার শরণার্থী শিবির বন্ধ করে দেবার সিদ্ধান্তে মানাস দ্বীপে মানবিক সঙ্কট তৈরি হতে পারে। আর সেই শঙ্কাই অবশেষে বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে।
No comments