গন্তব্য কোথায়?
যন্ত্রটি
দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। বাংলাদেশের জন্য বলতে গেলে এটা নজিরবিহীন ঘটনাই।
স্বাধীনতার পর এতো বছরে এই একটি যন্ত্রই চলেছে দিন-রাত। এই যন্ত্র থেকে
নিত্য তৈরি হয়েছে নানা গুজব। গত কয়েকবছর গুজবের মেশিন অনেকটাই নিষ্ক্রিয়
ছিল। বলতে গেলে, গুজব শোনাই যেতো না।
কিন্তু গত কিছুদিনে সে দৃশ্যে পরিবর্তন এসেছে। যন্ত্রটি আবার সক্রিয় পুরোদমে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে কেন্দ্র করেই প্রথম এ মেশিন সক্রিয় হয়। গুজবে কান দিবেন না- বহু পুরনো উপদেশ। কিন্তু কিছু গুজব যে সত্য হয় তার প্রমাণ দিয়ে এরইমধ্যে ছুটিতে চলে গেছেন প্রধান বিচারপতি। তার ফেরা, না ফেরা নিয়ে এখন তৈরি হচ্ছে নানা গুজব। কোন্টি সত্য আর কোন্টি মিথ্যা তা বুঝা দায়।
ভোটের বহুআগে ভোটের রাজনীতি চালু হয়ে গেছিল। কিন্তু রোহিঙ্গা সংকট সে আলোচনা অনেকটা থামিয়ে দেয়। রোহিঙ্গা ইস্যুতে ব্যস্ত সময় কাটান রাজনীতিবিদেরা। যদিও ১০ লাখের বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং নিরাপত্তার জন্য কতটা চ্যালেঞ্জ হবে তা এখনো খোলাসা নয়। তবে প্রায় তিন মাস পর বিরোধীনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার পর রাজনীতির ট্রেন আবার সচল হয়েছে। তার রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে যাওয়ার দীর্ঘপথে বিপুল শোডাউন করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। গাড়িবহরে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। দোষারোপের পুরনো রাজনীতিও পুরো মাত্রায় সক্রিয়। দুই দলের দুই সেক্রেটারি আলাদা মঞ্চ থেকে প্রতিদিনই বাহাসে জড়াচ্ছেন। এই যখন অবস্থা বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিবেশী দেশের ভূমিকাও ফের বিপুল আলোচনা তৈরি করেছে। সুষমা স্বরাজ তার সফরে কী বার্তা দিয়ে গেছেন দুই দলকে এ নিয়ে রাজনীতির অন্দরমহলে নানা আলোচনা। গুরুত্ব পাচ্ছে আন্তর্জাতিক রাজনীতির সমীকরণও। দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব কমাতে ভারতের সরনাপন্ন যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, চীন-ভারত দ্বন্ধ বহু পুরনো। যদিও চীনের বড় অর্থনীতির সঙ্গে ভারতের লড়াই অনেকটাই অসম।
অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকই মনে করেন, জটিল এক রাজনৈতিক সমীকরণের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে তার নির্বাচনী প্রস্তুতি অনেকদূর এগিয়ে নিয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যাপারে দফায় দফায় তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। চালানো হয়েছে একাধিক জরিপ। বিএনপিও নির্বাচনী রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছে। খালেদা জিয়ার কক্সবাজার সফরের সময় সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের উপস্থিতি জানান দিয়েছেন। বিএনপি নেত্রী সহসাই দেশের অন্য বিভাগীয় শহরগুলোতেও যেতে পারেন। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, এখন তাদের সব কর্মসূচির উদ্দেশ্য নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করা এবং বিএনপি’র দাবির পক্ষে জনমত সৃষ্টি করা। তিনি বলেন, গত দুই বছর আমরা আন্দোলনমুখী কোনো কর্মসূচি দেইনি। কিন্তু এখন তো সময় এসেছে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। তাঁর (খালেদা জিয়ার) এই সফরই মাত্র শুরু। এরপরেও আমরা কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করবো। সেখানে ব্যাপকভাবে সারা দেশে বিশেষ করে বিভাগীয় শহরগুলোতে তিনি সফরে যাবেন। মি. আহমদ বলেন, আগামী নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করবো। এ ব্যাপারে আমরা খুবই আন্তরিক। এবং আমাদের প্রস্তুতিও একইভাবে চলছে। কিন্তু নির্বাচনটা কিভাবে হবে? আমরা দেখেছি ১৯৭৩ সাল থেকে শুরু করে যখনই কোন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, তখন নির্বাচন কমিশন কোনো নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পারে না। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, বিএনপি’র মধ্যেও অনেকে ভাবেন যে আগামী নির্বাচনে যাওয়া ছাড়া তাদের কোনো গত্যন্তর নেই। কারণ বিএনপি এর আগে যে নির্বাচনগুলো বর্জন করেছিল- ১৯৮৬ এবং ১৯৮৮ সালে- সেটা তাদের জন্য খুবই ভালো হয়েছিল। এ কারণে তারা ১৯৯১ সালে অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে ক্ষমতায় আসতে পেরেছিল। কিন্তু গত নির্বাচনটা যে তারা বর্জন করেছে এটা তাদের জন্য অনেক এক্সপেনসিভ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আমি মনে করি বিএনপি যেভাবে কথা বলছে, নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছে এবং সকল প্রকার সহিংসতা থেকে যেভাবে দূরে আছে, এটা ভাবা স্বাভাবিক যে, তারা ইলেকশনে অংশ নেয়ার পথে যাচ্ছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে যদি খুবই বড় ধরনের আনসেটেলিং কিছু করা হয়, যেমন হঠাৎ করে বেগম জিয়াকে জেলে দিয়ে দিলো বা যদি বিএনপি’র বড় একটা অংশকে জেলে দিলো কিংবা যদি দেখা যায় বিএনপি’র মধ্যে একটা বড় ধরনের ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করলো বা সফল হলো, এই ধরনের বড় কোনো ঘটনা না ঘটলে আমি মনে করি বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেশকিছু বিষয় স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। বিএনপি-জামায়াত দূরত্ব বাড়ছে। দুই দলের সম্পর্ক ভোটের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকে কি-না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সিঙ্গাপুরে হার্টে অস্ত্রোপচার শেষে দেশে ফিরেছেন। রাজনীতিতে তিনি আর কতটা সক্রিয় থাকতে পারেন তাই হবে দেখার বিষয়। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পরবর্তী পদক্ষেপের দিকেও দৃষ্টি থাকবে পর্যবেক্ষকদের। আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে নির্বাচনী ট্রেনে উঠে পড়েছে। বিএনপি সে ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করছে। যদিও নানা গুজব। শেষ পর্যন্ত রাজনীতি কোনদিকে যায় কে জানে!
কিন্তু গত কিছুদিনে সে দৃশ্যে পরিবর্তন এসেছে। যন্ত্রটি আবার সক্রিয় পুরোদমে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে কেন্দ্র করেই প্রথম এ মেশিন সক্রিয় হয়। গুজবে কান দিবেন না- বহু পুরনো উপদেশ। কিন্তু কিছু গুজব যে সত্য হয় তার প্রমাণ দিয়ে এরইমধ্যে ছুটিতে চলে গেছেন প্রধান বিচারপতি। তার ফেরা, না ফেরা নিয়ে এখন তৈরি হচ্ছে নানা গুজব। কোন্টি সত্য আর কোন্টি মিথ্যা তা বুঝা দায়।
ভোটের বহুআগে ভোটের রাজনীতি চালু হয়ে গেছিল। কিন্তু রোহিঙ্গা সংকট সে আলোচনা অনেকটা থামিয়ে দেয়। রোহিঙ্গা ইস্যুতে ব্যস্ত সময় কাটান রাজনীতিবিদেরা। যদিও ১০ লাখের বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং নিরাপত্তার জন্য কতটা চ্যালেঞ্জ হবে তা এখনো খোলাসা নয়। তবে প্রায় তিন মাস পর বিরোধীনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার পর রাজনীতির ট্রেন আবার সচল হয়েছে। তার রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে যাওয়ার দীর্ঘপথে বিপুল শোডাউন করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। গাড়িবহরে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। দোষারোপের পুরনো রাজনীতিও পুরো মাত্রায় সক্রিয়। দুই দলের দুই সেক্রেটারি আলাদা মঞ্চ থেকে প্রতিদিনই বাহাসে জড়াচ্ছেন। এই যখন অবস্থা বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিবেশী দেশের ভূমিকাও ফের বিপুল আলোচনা তৈরি করেছে। সুষমা স্বরাজ তার সফরে কী বার্তা দিয়ে গেছেন দুই দলকে এ নিয়ে রাজনীতির অন্দরমহলে নানা আলোচনা। গুরুত্ব পাচ্ছে আন্তর্জাতিক রাজনীতির সমীকরণও। দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব কমাতে ভারতের সরনাপন্ন যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, চীন-ভারত দ্বন্ধ বহু পুরনো। যদিও চীনের বড় অর্থনীতির সঙ্গে ভারতের লড়াই অনেকটাই অসম।
অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকই মনে করেন, জটিল এক রাজনৈতিক সমীকরণের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে তার নির্বাচনী প্রস্তুতি অনেকদূর এগিয়ে নিয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যাপারে দফায় দফায় তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। চালানো হয়েছে একাধিক জরিপ। বিএনপিও নির্বাচনী রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছে। খালেদা জিয়ার কক্সবাজার সফরের সময় সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের উপস্থিতি জানান দিয়েছেন। বিএনপি নেত্রী সহসাই দেশের অন্য বিভাগীয় শহরগুলোতেও যেতে পারেন। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, এখন তাদের সব কর্মসূচির উদ্দেশ্য নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করা এবং বিএনপি’র দাবির পক্ষে জনমত সৃষ্টি করা। তিনি বলেন, গত দুই বছর আমরা আন্দোলনমুখী কোনো কর্মসূচি দেইনি। কিন্তু এখন তো সময় এসেছে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। তাঁর (খালেদা জিয়ার) এই সফরই মাত্র শুরু। এরপরেও আমরা কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করবো। সেখানে ব্যাপকভাবে সারা দেশে বিশেষ করে বিভাগীয় শহরগুলোতে তিনি সফরে যাবেন। মি. আহমদ বলেন, আগামী নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করবো। এ ব্যাপারে আমরা খুবই আন্তরিক। এবং আমাদের প্রস্তুতিও একইভাবে চলছে। কিন্তু নির্বাচনটা কিভাবে হবে? আমরা দেখেছি ১৯৭৩ সাল থেকে শুরু করে যখনই কোন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, তখন নির্বাচন কমিশন কোনো নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পারে না। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, বিএনপি’র মধ্যেও অনেকে ভাবেন যে আগামী নির্বাচনে যাওয়া ছাড়া তাদের কোনো গত্যন্তর নেই। কারণ বিএনপি এর আগে যে নির্বাচনগুলো বর্জন করেছিল- ১৯৮৬ এবং ১৯৮৮ সালে- সেটা তাদের জন্য খুবই ভালো হয়েছিল। এ কারণে তারা ১৯৯১ সালে অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে ক্ষমতায় আসতে পেরেছিল। কিন্তু গত নির্বাচনটা যে তারা বর্জন করেছে এটা তাদের জন্য অনেক এক্সপেনসিভ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আমি মনে করি বিএনপি যেভাবে কথা বলছে, নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছে এবং সকল প্রকার সহিংসতা থেকে যেভাবে দূরে আছে, এটা ভাবা স্বাভাবিক যে, তারা ইলেকশনে অংশ নেয়ার পথে যাচ্ছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে যদি খুবই বড় ধরনের আনসেটেলিং কিছু করা হয়, যেমন হঠাৎ করে বেগম জিয়াকে জেলে দিয়ে দিলো বা যদি বিএনপি’র বড় একটা অংশকে জেলে দিলো কিংবা যদি দেখা যায় বিএনপি’র মধ্যে একটা বড় ধরনের ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করলো বা সফল হলো, এই ধরনের বড় কোনো ঘটনা না ঘটলে আমি মনে করি বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেশকিছু বিষয় স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। বিএনপি-জামায়াত দূরত্ব বাড়ছে। দুই দলের সম্পর্ক ভোটের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকে কি-না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সিঙ্গাপুরে হার্টে অস্ত্রোপচার শেষে দেশে ফিরেছেন। রাজনীতিতে তিনি আর কতটা সক্রিয় থাকতে পারেন তাই হবে দেখার বিষয়। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পরবর্তী পদক্ষেপের দিকেও দৃষ্টি থাকবে পর্যবেক্ষকদের। আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে নির্বাচনী ট্রেনে উঠে পড়েছে। বিএনপি সে ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করছে। যদিও নানা গুজব। শেষ পর্যন্ত রাজনীতি কোনদিকে যায় কে জানে!
No comments