শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি ওয়াশিংটনে, রচিত হচ্ছে নতুন ইতিহাস by মোহাম্মদ আবুল হোসেন
দৃশ্যত
দম বন্ধ হয়ে আছে ওয়াশিংটন ডিসির। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়
রচিত হচ্ছে যাচ্ছে আজ সোমবার। হোয়াইট হাউজে হিম বাতাস। কার হাতে পড়ছে হাত
কড়া! প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের জামাই ডারেড কুশনার, ছেলে ডনাল্ড
ট্রাম্প জুনিয়র, সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন, নির্বাচনী
প্রচারণায় ট্রাম্পের প্রচারণা বিষয়ক সাবেক ম্যানেজার পল ম্যানাফোর্ট নাকি
অন্য কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে রাশিয়া কানেকশনে! এ নিয়ে ওয়াশিংটনে শিহরণ।
যুক্তরাষ্ট্র তথা সারা বিশ্ব সচকিত তাকিয়ে আছে, কি ঘটছে যুক্তরাষ্ট্রের
রাজনীতিতে! কোন পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভাগ্য- তা
জানতে। এক কঠিন সমীকরণে দাঁড়িয়ে আছে পরিস্থিতি এখন।
যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ এবং এর সঙ্গে জড়িত ট্রাম্প টিমের গোপন তৎপরতা নিয়ে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার পর গত শুক্রবারই এ মামলায় প্রথম চার্জ গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সেই চার্জ বা অভিযোগে কাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, কি বলা হয়েছে- তা দৃশ্যত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পর্যন্তও জানতে দেয়া হয় নি। আজ সোমবার ফেডারেল গ্রান্ড জুরি প্রথমবারের মতো এ অভিযোগ অনুমোদন দেবেন। ফলে এক বা একাধিক জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিকে কারাগারে যেতে হতে পারে। তা-ই যদি হয় তাহলে আইন মন্ত্রণালয়ের স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুয়েলার রাশিয়াগেট কেলেঙ্কারিতে নতুন একটি অধ্যায় যুক্ত করবেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে। তা হবে হোয়াইট হাউচের জন্য বাস্তবেই এক বিপদজনক দুর্গতি। তবে রাশিয়া কানেকশন নিয়ে যেসব অভিযোগ উঠেছে, তা বরাবরই অস্বীকার করে এসেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার টিম। এ নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে চাকরি হারিয়েছেন এফবিআইয়ের সাবেক পরিচালক জেমস কমি। তাকে বরখাস্ত করে ট্রাম্প প্রশাসন স্পেশাল কাউন্সেল নিয়োগ করেছে রবার্ট মুয়েলারকে। এর বাইরে তদন্ত হচ্ছে কংগ্রেশনাল কমিটি থেকে। তদন্ত হচ্ছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তরফ থেকে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন আজ সোমবারই প্রথম ঘটতে যাচ্ছে। এতে যাকেই অভিযুক্ত করা হোক তাতে হোয়াইট হাউজ এক বিদঘুটে অস্বস্তিতে পড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ, তারা এতদিন বলে এসেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ ও ট্রাম্প টিমের জড়িত থাকার বিষয়ে বানোয়াট কাহিনীর জন্ম দিয়েছেন পরাজিত ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও তার টিম। এর সত্যতা, যথার্থতা প্রমাণ হয়ে যাচে আজ। এর মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠ বৃত্ত ও এর বাইরে পারিবারিক বৃত্তে আঘাত লাগতে পারে। এমনকি তার প্রেসিডেন্সিও পড়তে পারে মারাত্মক ঝুঁকিতে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে ওই রবার্ট মুয়েলারের ওপর। তার রিপোর্টে কাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে এবং তার প্রতিক্রিয়া কি তা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে যাবে। এমন অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়ার দিকে লক্ষ্য রাখবে যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ববাসী। মুয়েলার ‘গোলায়’ কে ঘায়েল হবেন! এ নিয়ে যখন চারদিকে কান সচেতন, চোখ স্থির হয়ে আছে পত্রিকার পাতায়, অনলাইন সংবাদ মাধ্যমগুলোতে ব্রেকিং দেখার জন্য সবাই উদগ্রিব তখন অনেকেরই দৃষ্টিতে পড়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি টুইট। তিনি রোববার এই টুইট করেছেন। তাতে তিনি লিখেছেন, দুষ্ট রাজনীতির জন্য যাদুবিদ্যার (উইচ হান্ট) এই ভয়াবহ বিষয়টি (যা দেশের জন্য খারাপ) ব্যবহার করছে ডেমোক্রেটরা। অন্যদিকে রিপাবলিকানরা তার বিরুদ্ধে ফাইট দিচ্ছেন, যা আগে কখনো হয় নি। আরেক টুইটে তিনি লিখেছেন, ডেমোক্রেটরা/ক্লিনটনরা অনেক বেশি দোষী। প্রকৃত সত্য এখন বেরিয়ে আসছে। কিছু একটা করুন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে বেশ কিছু বিষয়ে নজর দিয়েছেন রবার্ট মুয়েলার। খতিয়ে দেখা হয়েছে ট্রাম্পের সাবেক প্রচারণা বিষয়ক চেয়ারম্যান পল ম্যানাফোর্টের ব্যবসায়িক বিষয়। খতিয়ে দেখা হয়েছে প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী টিমের সদস্যদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ। তদন্ত করা হয়েছে বরখাস্ত হওয়া সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনের বিষয়টি। রাশিয়ার সাবেক রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলায়েক, ব্যাংকার সহ বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের গোপন বৈঠক, যোগাযোগের বিষয়ে হাত দিয়েছেন মুয়েলার। এফবিআইয়ের সাবেক পরিচালক জেমস কমিও এসব অভিযোগের তদন্ত করছিলেন। কিন্তু তাকে বরখাস্ত করেন ট্রাম্প। এতে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ করা হয়, বিচারে বাধা সৃষ্টি করতে ট্রাম্প এমনটি করেছেন। জেমস কমি যাতে রাশিয়া কানেকশন নিয়ে তদন্ত করতে না পারেন, তদন্তে ব্যাঘাত করে সে জন্য তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। জেমস কমিকে বরখাস্ত করার মধ্য দিয়ে বিচারে বাধা সৃষ্টি করেছেন কিনা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাও তলিয়ে দেখেছেন রবার্ট মুয়েলার। যদি সর্বশেষ এই অভিযোগটি সত্য প্রমাণিত হয় তাহলে চার্জশিট কার বিরুদ্ধে যাবে, কাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে! এমন প্রশ্নে চোখ আকাশে তুলছেন বিশ্লেষকরা। আতঙ্ক দেখা দিয়েছে অনেকের মাঝে। রোববার ট্রাম্প নিজেই কিছু প্রশ্ন সৃষ্টি করেছেন, যার উত্তর হয়তো নতুন সপ্তাহে পাওয়া যেতে পারে। তা হলো, অভিযোগ যা-ই হোক, ট্রাম্প কি তার সরাসরি ক্ষোভ নিবৃত করতে পারবেন? আইনী ও রাজনৈতিক ঝুঁকিতে নিমগ্ন হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারবেন? পারবেন স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুয়েলারের ওপর ক্ষোভ সামলাতে? রাশিয়া কানেকশনে অনেকবার ট্রাম্প নিজেকে গভীর ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তিনি জেমস কমিকে বরখাস্ত করে রবার্ট মুয়েলারকে নিয়োগ দিয়েছেন। একে অনেকে খাল কেটে কুমির আনার মতো বলে অভিহিত করেছেন। রোববার এনবিসি/ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের জনমত জরিপে দেখা গেছে ট্রাম্পের রাজনৈতিক পরিণাম ক্রমাগত খারাপের দিকে যাচ্ছে। এদিন তার জনপ্রিয়তা বা এপ্রুভাল রেটিং দাঁড়ায় শতকরা ৩৮ ভাগ। এটা তার প্রেসিডেন্সির মেয়াদে সর্বনি¤œ রেটিং। তার শীর্ষ পরামর্শক টাই কব পরিষ্কার করে বলেছেন, রোববার ট্রাম্পের টুইট কোনোভাবেই মুয়েলারকে ঘায়েল করতে করা হয় নি। সিএনএনের সাংবাদিক জেফ জেলেনি’কে তিনি বলেছেন, বরং অনেকেই বলতে পারেন প্রেসিডেন্টের রোববারের টুইট স্পেশাল কাউন্সেলের কর্মকান্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল না। তিনি তাকে সহাযোগিতা করে গেছেন। এমন অবস্থায় ওয়াশিংটনে কথা ছড়িয়ে পড়েছে যে, যদি ট্রাম্প এবার জেমস কমির মতো মুয়েলারকেও বরখাস্ত করার চেষ্টা করতেন তাহলে তাতে যুক্তরাষ্ট্রে সৃষ্টি হতো সাংবিধানিক সঙ্কট। এতে ক্ষমতাসীন দল রিপাবলিকান নেতারা কংগ্রেসে কঠিন এক রাজনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়তেন। বলা হচ্ছে, এখনও ট্রাম্প সেই কাজটিই করতে পারেন। এর প্রেক্ষিতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সম্পাদকীয় পরিষদ ও রক্ষণশীল অনেক কলামনিস্ট স্পেশাল কাউন্সেল মুয়েলারকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, রাশিয়া ‘নাটকে’ এফবিআইয়ের সুষ্ঠু তদন্ত তার অধীনে সম্ভব হবে না, ইতিহাস তাই বলে। তাহলে কি প্রথম অভিযোগটিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওপর ফোকাস করা হবে না? এসব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে নানা বিশ্লেষণ। তবে নিউ ইয়র্ক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এটর্নি প্রীত ভারারা বলছেন, সোমবার অভিযোগ প্রকাশ হওয়ার পর ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া কি হয় তার ওপরই নির্ভর করছে ‘নাটকের’ গুরুত্ব। তিনি বলেন, আমি কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দেবো। দেখবো ট্রাম্প কোনো প্রতিক্রিয়া দেখান কিনা। তিনি এমন কোনো কথা বলেন কিনা, যা তার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যায় ভবিষ্যতে। দ্বিতীয় যে বিষয়ে আমি দৃষ্টি দেবো তা হলোÑ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিবাদী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে গুরুতর কোনো বার্তা পাঠান কিনা। ওদিকে হোয়াইট হাউজ কিন্তু হিলারি ক্লিনটনকে ছেড়ে দিচ্ছে না। তিনি যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তখন রাশিয়ার বিনিয়োগকারীদের কাছে একটি ইউরেনিয়াম ফার্ম বিক্রি করে দিয়েছিলেন। এ বিষয়টি বড় করে দেখাতে চাইছে হোয়াইট হাউজ।
যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ এবং এর সঙ্গে জড়িত ট্রাম্প টিমের গোপন তৎপরতা নিয়ে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার পর গত শুক্রবারই এ মামলায় প্রথম চার্জ গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সেই চার্জ বা অভিযোগে কাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, কি বলা হয়েছে- তা দৃশ্যত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পর্যন্তও জানতে দেয়া হয় নি। আজ সোমবার ফেডারেল গ্রান্ড জুরি প্রথমবারের মতো এ অভিযোগ অনুমোদন দেবেন। ফলে এক বা একাধিক জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিকে কারাগারে যেতে হতে পারে। তা-ই যদি হয় তাহলে আইন মন্ত্রণালয়ের স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুয়েলার রাশিয়াগেট কেলেঙ্কারিতে নতুন একটি অধ্যায় যুক্ত করবেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে। তা হবে হোয়াইট হাউচের জন্য বাস্তবেই এক বিপদজনক দুর্গতি। তবে রাশিয়া কানেকশন নিয়ে যেসব অভিযোগ উঠেছে, তা বরাবরই অস্বীকার করে এসেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার টিম। এ নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে চাকরি হারিয়েছেন এফবিআইয়ের সাবেক পরিচালক জেমস কমি। তাকে বরখাস্ত করে ট্রাম্প প্রশাসন স্পেশাল কাউন্সেল নিয়োগ করেছে রবার্ট মুয়েলারকে। এর বাইরে তদন্ত হচ্ছে কংগ্রেশনাল কমিটি থেকে। তদন্ত হচ্ছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তরফ থেকে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন আজ সোমবারই প্রথম ঘটতে যাচ্ছে। এতে যাকেই অভিযুক্ত করা হোক তাতে হোয়াইট হাউজ এক বিদঘুটে অস্বস্তিতে পড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ, তারা এতদিন বলে এসেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ ও ট্রাম্প টিমের জড়িত থাকার বিষয়ে বানোয়াট কাহিনীর জন্ম দিয়েছেন পরাজিত ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও তার টিম। এর সত্যতা, যথার্থতা প্রমাণ হয়ে যাচে আজ। এর মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠ বৃত্ত ও এর বাইরে পারিবারিক বৃত্তে আঘাত লাগতে পারে। এমনকি তার প্রেসিডেন্সিও পড়তে পারে মারাত্মক ঝুঁকিতে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে ওই রবার্ট মুয়েলারের ওপর। তার রিপোর্টে কাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে এবং তার প্রতিক্রিয়া কি তা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে যাবে। এমন অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়ার দিকে লক্ষ্য রাখবে যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ববাসী। মুয়েলার ‘গোলায়’ কে ঘায়েল হবেন! এ নিয়ে যখন চারদিকে কান সচেতন, চোখ স্থির হয়ে আছে পত্রিকার পাতায়, অনলাইন সংবাদ মাধ্যমগুলোতে ব্রেকিং দেখার জন্য সবাই উদগ্রিব তখন অনেকেরই দৃষ্টিতে পড়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি টুইট। তিনি রোববার এই টুইট করেছেন। তাতে তিনি লিখেছেন, দুষ্ট রাজনীতির জন্য যাদুবিদ্যার (উইচ হান্ট) এই ভয়াবহ বিষয়টি (যা দেশের জন্য খারাপ) ব্যবহার করছে ডেমোক্রেটরা। অন্যদিকে রিপাবলিকানরা তার বিরুদ্ধে ফাইট দিচ্ছেন, যা আগে কখনো হয় নি। আরেক টুইটে তিনি লিখেছেন, ডেমোক্রেটরা/ক্লিনটনরা অনেক বেশি দোষী। প্রকৃত সত্য এখন বেরিয়ে আসছে। কিছু একটা করুন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে বেশ কিছু বিষয়ে নজর দিয়েছেন রবার্ট মুয়েলার। খতিয়ে দেখা হয়েছে ট্রাম্পের সাবেক প্রচারণা বিষয়ক চেয়ারম্যান পল ম্যানাফোর্টের ব্যবসায়িক বিষয়। খতিয়ে দেখা হয়েছে প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী টিমের সদস্যদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ। তদন্ত করা হয়েছে বরখাস্ত হওয়া সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনের বিষয়টি। রাশিয়ার সাবেক রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলায়েক, ব্যাংকার সহ বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের গোপন বৈঠক, যোগাযোগের বিষয়ে হাত দিয়েছেন মুয়েলার। এফবিআইয়ের সাবেক পরিচালক জেমস কমিও এসব অভিযোগের তদন্ত করছিলেন। কিন্তু তাকে বরখাস্ত করেন ট্রাম্প। এতে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ করা হয়, বিচারে বাধা সৃষ্টি করতে ট্রাম্প এমনটি করেছেন। জেমস কমি যাতে রাশিয়া কানেকশন নিয়ে তদন্ত করতে না পারেন, তদন্তে ব্যাঘাত করে সে জন্য তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। জেমস কমিকে বরখাস্ত করার মধ্য দিয়ে বিচারে বাধা সৃষ্টি করেছেন কিনা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাও তলিয়ে দেখেছেন রবার্ট মুয়েলার। যদি সর্বশেষ এই অভিযোগটি সত্য প্রমাণিত হয় তাহলে চার্জশিট কার বিরুদ্ধে যাবে, কাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে! এমন প্রশ্নে চোখ আকাশে তুলছেন বিশ্লেষকরা। আতঙ্ক দেখা দিয়েছে অনেকের মাঝে। রোববার ট্রাম্প নিজেই কিছু প্রশ্ন সৃষ্টি করেছেন, যার উত্তর হয়তো নতুন সপ্তাহে পাওয়া যেতে পারে। তা হলো, অভিযোগ যা-ই হোক, ট্রাম্প কি তার সরাসরি ক্ষোভ নিবৃত করতে পারবেন? আইনী ও রাজনৈতিক ঝুঁকিতে নিমগ্ন হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারবেন? পারবেন স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুয়েলারের ওপর ক্ষোভ সামলাতে? রাশিয়া কানেকশনে অনেকবার ট্রাম্প নিজেকে গভীর ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তিনি জেমস কমিকে বরখাস্ত করে রবার্ট মুয়েলারকে নিয়োগ দিয়েছেন। একে অনেকে খাল কেটে কুমির আনার মতো বলে অভিহিত করেছেন। রোববার এনবিসি/ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের জনমত জরিপে দেখা গেছে ট্রাম্পের রাজনৈতিক পরিণাম ক্রমাগত খারাপের দিকে যাচ্ছে। এদিন তার জনপ্রিয়তা বা এপ্রুভাল রেটিং দাঁড়ায় শতকরা ৩৮ ভাগ। এটা তার প্রেসিডেন্সির মেয়াদে সর্বনি¤œ রেটিং। তার শীর্ষ পরামর্শক টাই কব পরিষ্কার করে বলেছেন, রোববার ট্রাম্পের টুইট কোনোভাবেই মুয়েলারকে ঘায়েল করতে করা হয় নি। সিএনএনের সাংবাদিক জেফ জেলেনি’কে তিনি বলেছেন, বরং অনেকেই বলতে পারেন প্রেসিডেন্টের রোববারের টুইট স্পেশাল কাউন্সেলের কর্মকান্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল না। তিনি তাকে সহাযোগিতা করে গেছেন। এমন অবস্থায় ওয়াশিংটনে কথা ছড়িয়ে পড়েছে যে, যদি ট্রাম্প এবার জেমস কমির মতো মুয়েলারকেও বরখাস্ত করার চেষ্টা করতেন তাহলে তাতে যুক্তরাষ্ট্রে সৃষ্টি হতো সাংবিধানিক সঙ্কট। এতে ক্ষমতাসীন দল রিপাবলিকান নেতারা কংগ্রেসে কঠিন এক রাজনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়তেন। বলা হচ্ছে, এখনও ট্রাম্প সেই কাজটিই করতে পারেন। এর প্রেক্ষিতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সম্পাদকীয় পরিষদ ও রক্ষণশীল অনেক কলামনিস্ট স্পেশাল কাউন্সেল মুয়েলারকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, রাশিয়া ‘নাটকে’ এফবিআইয়ের সুষ্ঠু তদন্ত তার অধীনে সম্ভব হবে না, ইতিহাস তাই বলে। তাহলে কি প্রথম অভিযোগটিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওপর ফোকাস করা হবে না? এসব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে নানা বিশ্লেষণ। তবে নিউ ইয়র্ক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এটর্নি প্রীত ভারারা বলছেন, সোমবার অভিযোগ প্রকাশ হওয়ার পর ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া কি হয় তার ওপরই নির্ভর করছে ‘নাটকের’ গুরুত্ব। তিনি বলেন, আমি কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দেবো। দেখবো ট্রাম্প কোনো প্রতিক্রিয়া দেখান কিনা। তিনি এমন কোনো কথা বলেন কিনা, যা তার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যায় ভবিষ্যতে। দ্বিতীয় যে বিষয়ে আমি দৃষ্টি দেবো তা হলোÑ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিবাদী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে গুরুতর কোনো বার্তা পাঠান কিনা। ওদিকে হোয়াইট হাউজ কিন্তু হিলারি ক্লিনটনকে ছেড়ে দিচ্ছে না। তিনি যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তখন রাশিয়ার বিনিয়োগকারীদের কাছে একটি ইউরেনিয়াম ফার্ম বিক্রি করে দিয়েছিলেন। এ বিষয়টি বড় করে দেখাতে চাইছে হোয়াইট হাউজ।
No comments