‘মোদির বেলুন চুপসে যাবে বলে আমাকে কথা বলতে দিচ্ছে না’
দিন কয়েক আগে বলেছিলেন, মুখ খুললে ভূমিকম্প হয়ে যাবে। গতকাল বুধবার রাহুল গান্ধী বললেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত দুর্নীতির এমন তথ্য তাঁর কাছে আছে, যা জানাজানি হলে ওঁর বেলুন চুপসে যাবে। সেই জন্যই তাঁকে সংসদে বলতে দেওয়া হচ্ছে না। নোট-বন্দী নিয়ে এক মাস ধরে অচল সংসদ বুধবারও সচল না হওয়ায় অন্য বিরোধী নেতাদের পাশে নিয়ে কংগ্রেসের সহসভাপতি রাহুল গান্ধী সংসদ ভবনে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে কী কী তথ্য আছে, তা প্রধানমন্ত্রী জানেন। সবই তাঁর ব্যক্তিগত দুর্নীতির কাহিনি। এর মোক্ষম প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে। এসব জানেন বলেই তিনি ভয় পেয়ে গেছেন। তাই আমাকে সংসদে বলতে দেওয়া হচ্ছে না। অথচ আমরা সব বিরোধী এক জোট হয়ে আলোচনা চেয়েই আসছি।’ রাহুল বলেন, ‘আমি এসব তথ্য বাইরে প্রকাশ করতে চাই না। চাই নির্বাচিত সদস্য হিসেবে লোকসভায় বলতে। কারণ, এ দেশের গণতন্ত্র সেই অধিকারই আমাকে দিয়েছে। আমার অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী শুনুন। তারপর তাঁর জবাব দিন। মানুষ বুঝে নিন কে সত্য কে মিথ্যা। কিন্তু ভয়ে থরথর বিজেপি তা শুনতে চায় না। তাই আমাদের বলতেও তারা দিচ্ছে না।’ সারা দেশে ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিল করার পর পাঁচ সপ্তাহ কেটে গেছে। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনেরও এক মাস হয়ে গেল। এই এক মাসে ১৯টা কাজের দিন এই নোট-বন্দী নিয়েই ভেস্তে গেল। বাকি আর মাত্র দুই দিন। সেই দুই দিনেও নোট-বন্দী নিয়ে কোনো আলোচনাই যে হবে না, তা প্রায় নিশ্চিত হয়েই বলা যায়। বিরোধী ও সরকার দুই পক্ষই একে অপরকে সন্দেহ করছে। মনে করছে, এক পক্ষের বক্তব্য শেষ হলে তারা অন্য পক্ষকে কিছুতেই বলতে দেবে না।
এই কারণেই নোট-বন্দী নিয়ে কোনো কক্ষেই আর কোনো পক্ষ আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও আলোচনার রাস্তায় হাঁটতে চাইছে না। বুধবার অধিবেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরই তাই রাহুল সংবাদ সম্মেলন করে এই কথা বলেন। রাহুলের বক্তব্যকে বিজেপি উড়িয়ে দিয়েছে। দলের দুই নেতা অনন্ত কুমার ও প্রকাশ জাভড়েকর বলেছেন, রাহুল যা-ই বলুন, ওর কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। তাঁরা বলেন, রাহুল ও কংগ্রেস এসব আজগুবি কথাবার্তা বলতে শুরু করেছেন অগস্তা হেলিকপ্টার দুর্নীতি থেকে চোখ ফেরাতে। এই দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক বায়ুপ্রধান এস পি ত্যাগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কংগ্রেসের ভয়, এই দুর্নীতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং জড়িয়ে পড়বেন। তা চাপা দিতেই রাহুল এসব কল্পিত কাহিনি শুরু করেছেন। বিহার থেকে বিজেপির সদস্য নিশিকান্ত দুবে সন্ধ্যায় বলেন, রাহুল এত কথা না বলে যা তথ্য-প্রমাণ আছে তা প্রকাশ করুন। দেখা যাক সত্য-মিথ্যার মিশেল কতটা। নোট-বন্দী নিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও সরকারের বিরুদ্ধে সরব। কিন্তু রাহুলের বক্তব্যের পর তিনি বুধবার বলেছেন, কংগ্রেসের সহসভাপতির কাছে মোদির দুর্নীতির কোনো তথ্য-প্রমাণ থাকলে তা তিনি প্রকাশ করুন। হেঁয়ালির কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু তা তিনি করছেন না। বিজেপি যেমন অগস্তা ওয়েস্টল্যান্ড নিয়ে কংগ্রেসকে চাপে রাখতে চাইছে, কংগ্রেসও তেমন করছে। এটা আসলে ‘গট আপ গেম’।
No comments