রোহিঙ্গা নিয়ে সু চির তত্ত্বাবধানে বৈঠক
ইয়াঙ্গুনে কফি আনান এবং অং সান সু চি। এএফপি |
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের ঘটনার পর সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত একটি উপদেষ্টা প্যানেলের সদস্যরা গতকাল সোমবার ইয়াঙ্গুনে প্রথম বৈঠক করেছেন। দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি এ বৈঠকের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান। রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখতে আজ মঙ্গলবার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে যাবেন আনান। কিন্তু তাঁর এই সফরের বিরোধিতা করছেন সেখানকার কট্টরপন্থী বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতারা। তাঁরা এ নিয়ে বিক্ষোভের হুমকি দিয়েছেন। রাখাইনে বৌদ্ধ এবং সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতার ইতি টেনে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করাই কফি আনানের ওই উপদেষ্টা প্যানেল বা কমিশনের লক্ষ্য। রোহিঙ্গা সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকারের প্রতি সু চির অঙ্গীকার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাঁর রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসিও (এনএলডি) রোহিঙ্গা সমস্যাকে সংবেদনশীল মনে করে। মিয়ানমারের বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে গতকালের বৈঠকে সু চি রোহিঙ্গা সমস্যা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা সমস্যার সঠিক সমাধান খুঁজে পাইনি। আশা করি, এই কমিশন এ বিষয়ে সহায়ক হবে।’
মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে ২০১২ সালে সহিংসতায় অন্তত ১০০ জন নিহত হয়। বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়শিবিরে চলে যেতে বাধ্য হয় প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম। সেখানে তাদের চলাফেরা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে কর্তৃপক্ষ। নিপীড়ন থেকে বাঁচতে হাজার হাজার মানুষ নৌপথে পালিয়ে গেছে। সু চি চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্র সফরের পরিকল্পনা করেছেন। সেখানে তিনি নিজ দেশের ওপর থেকে আরও কিছু অবরোধ তুলে নেওয়ার চেষ্টা চালাবেন। সে ক্ষেত্রে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের লক্ষ্যে তিনি কী কী উদ্যোগ নিয়েছেন, সেই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে পারেন। কমিশনের সদস্যরা আনানের নেতৃত্বে রাখাইনের রাজধানী সিতোয়ে সফরে যাবেন। সেখানে আনান আজ মঙ্গলবার ভাষণ দিতে পারেন। স্থানীয় রোহিঙ্গা ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎও করবে কমিশন। আনান বলেন, রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে করণীয় নিয়ে তাঁরা আগামী কয়েক মাসে কিছু প্রস্তাব দেবেন। তিনি রাখাইনবাসীকে আশ্বাস দিচ্ছেন, বিদ্যমান সমস্যাগুলো মোকাবিলায় কমিশন অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে সর্বোচ্চ চেষ্টা সহযোগে কাজ করবে।
No comments