নেপথ্যের শক্তিকে শনাক্ত করা দরকার
২৫ জুলাই ঢাকার কল্যাণপুরের তাজ মঞ্জিল নামের এক বাড়িতে পুলিশি অভিযান চালিয়ে নয় সন্দেহভাজন জঙ্গিকে হত্যা করার পর ২৭ আগস্ট সকালে নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ার একটি বাড়িতে একই রকমের অভিযানে আরও তিন সন্দেহভাজন জঙ্গিকে হত্যার ঘটনায় এটা পরিষ্কার যে, জঙ্গি দমনে সরকার জোরালোভাবে তৎপর রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর ভাষ্য অনুযায়ী, তাদের তৎপরতা ফলপ্রসূ হচ্ছে। হলি আর্টিজান ও শোলাকিয়ার জঙ্গি হামলার পর জনমনে যে ভীতি-আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল, একের পর এক পুলিশি অভিযানে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের মারা পড়ার ফলে সেই পরিস্থিতি অনেকটাই কাটতে শুরু করেছে। নারায়ণগঞ্জে নিহত তিনজনের মধ্যে আছেন তামিম চৌধুরী, যাঁকে হলি আর্টিজান হত্যাযজ্ঞের মাস্টারমাইন্ড বা পরিকল্পনাকারী হিসেবে বর্ণনা করে আসছিল পুলিশ। তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ২০ লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল। এখন যখন তাঁর নিহত হওয়ার খবর পুলিশ জানাল,
তখন এটা জঙ্গিবিরোধী তৎপরতার একটা বড় সাফল্য বলে বিবেচিত হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, জঙ্গি হামলায় সশরীরে অংশগ্রহণকারী মাঠপর্যায়ের জঙ্গিদের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ তাদের নেপথ্যের নেতারা, যাঁরা কিশোর-তরুণদের কচি মনকে বিভ্রান্ত করে এই ভয়ংকর বিভীষিকার পথে নিয়ে যান, হত্যাযজ্ঞের পরিকল্পনা করেন এবং তা বাস্তবায়ন করতে তাদেরকেই পাঠান। যে প্রক্রিয়ায় জঙ্গিবিরোধী তৎপরতা চলছে, তা অনেক ক্ষেত্রে জনমনে স্বস্তি দিলেও যে প্রশ্নটি উঠছে তা হচ্ছে, সন্দেহভাজন জঙ্গিদের কেন জীবিত অবস্থায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না? এর সঙ্গে বিচার ও আইনের শাসনের সম্পর্ক রয়েছে। এটা গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে পুলিশ ও র্যা বের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সন্দেহভাজন অপরাধীদের নিহত হওয়ার ঘটনাগুলো সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলোর বক্তব্যের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ। জঙ্গিবিরোধী অভিযানগুলোর ক্ষেত্রেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আচরণ ও বক্তব্য যেন একই রকমের সংশয়-সন্দেহ না জাগায়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
জঙ্গিবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকুক, জঙ্গিদের হাতে আর একটি প্রাণও ঝরবে না—এটা নিশ্চিত করা হোক।
জঙ্গিবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকুক, জঙ্গিদের হাতে আর একটি প্রাণও ঝরবে না—এটা নিশ্চিত করা হোক।
No comments