সাঁথিয়ায় টবে ড্রাগন ফল চাষে সাফল্য
আমেরিকান ফল ড্রাগন, অন্যান্য ফসলের তুলনায় উৎপাদন খরচ কম, লাভ বেশি। জমির পাশাপাশি বাড়ির ছাদেও ফলটি চাষ করা য়ায়। বাড়ির ছাদে টবে চাষ করে সাফল্য লাভ করেছেন উপজেলা কৃষি অফিসার আবদুস ছালাম। পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বনগ্রাম বাজারের পাশে আলহাজ শাহজাহান উদ্দিন মিয়ার একতলা দালানের ছাদে টবে চাষ করছেন তিনি। ফুলে-ফলে ভরে গেছে ছাদের বাগান। ড্রাগন ফলটি আমেরিকায় উৎপত্তি হলেও ২০০৭ সালে বাংলাদেশে এর চাষ শুরু হয়। এটি তিন শিরা বিশিষ্ট, পাতাবিহীন, কাঁটাযুক্ত ক্যাকটাস গোত্রের গাছ। গোলাকার গোলাপি রঙের সুস্বাদু ফলটি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, খনিজ লবণ ও উচ্চ আঁশযুক্ত। এটি বাণিজ্যিকভাবে মাঠেও চাষ করা যায়। তবে শহর বা গ্রামের বাসিন্দা যারা দালান কোঠায় বসবাস করেন তারা অতি সহজেই ছাদে বা বারান্দায় মাটির টবে, প্লাস্টিকের পাত্রে, এমনকি হাফ ড্রামেও এ ফলটির চাষ করতে পারেন।
আবদুস ছালাম ২০১১ সালে এপ্রিল মাসে গাজীপুর জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি (নাটা) হতে ৩টি চারা এনে টবে লাগিয়েছিলেন। এক বছর পর ২০১২ সালে ফুল ফুটে ফল হয়। বর্তমান সময় পর্যন্ত তার কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এপ্রিলের শেষ হতে নভেম্বর মাস পর্যন্ত গাছে ফুল ধরে। সন্ধ্যা রাতে সাদা ফুল ফোটে, ভোরেই বন্ধ হয়ে যায়। তাই অনেকে একে নাইট কুইনও বলে। ফুল ফোটার এক মাস পরই ফল পেকে লোভনীয় গাঢ় গোলাপি রং হয়, তখনই ফল সংগ্রহ করতে হয়। টবে লাগানো একেকটি ফলের ওজন ১৫০ গ্রাম হতে ৩০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। ফলের দাম ৬০০ হতে ১০০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। সাঁথিয়া তথা পাবনা জেলার মধ্যে তিনিই প্রথম দালানের ছাদে সফলভাবে ড্রাগনফল চাষ করেছেন। তার এ ফলের বাগান দেখতে প্রতিদিন লোকজন ভিড় করছেন। বাণিজ্যিকভাবে জমিতে চাষ সম্পর্কে কৃষিবিদ আবদুস ছালাম আরও জানান, পানি জমে না এমন উঁচু জমিতে ড্রাগনফল চাষ করতে হবে। এক বিঘা জমিতে ১২০- ১৩০টি পিলার পুঁতে প্রতি পিলারে ৪টি করে চারা রোপণ করতে হয়। এতে প্রায় ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা খরচ হবে। জমিতে ফলের ওজন ১৫০ গ্রাম হতে ৫০০ গ্রাম হয়। এ ফলে রোগ বালাই ও পোকার আক্রমণ নেই বললেই চলে। গাছ রোপণের এক-দেড় বছরের মধ্যেই ফল আসতে শুরু করে।
No comments