‘মুরগির ব্যবসায় চুরিটাই লাভ’
রাজধানীর
মালিবাগ বাজার। রেললাইনের পাশ ঘেষে প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ বাজার। সারি
সারি দোকানে বিক্রি হচ্ছে সবরকম নিত্যপণ্য। ডিজিটাল পাল্লার ছড়াছড়ির এ
সময়েও অধিকাংশ দোকানি পণ্য বিক্রি করছেন সনাতন পদ্ধতির মিটার পাল্লায়। কয়েক
ডজন মুরগির দোকান থাকলেও প্রত্যেকেই বেছে নিয়েছেন ওই পাল্লাই। মাথায় চড়ানো
থাকে মস্ত বড় বালতি।
বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মিটার পাল্লা ও বালতির ওপর ভর করে গড়ে ওঠা এ ব্যবসায় ক্রেতাদের অবস্থান খুবই দূর্বল। তারা চাইলেও যাচাই-বাছাই করে ক্রয়কৃত পণ্যের পরিমাপ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বালতি ভর্তি মুরগির পরিমাণ সম্পর্কে বিক্রেতা যা বলবেন সেটাই চূড়ান্ত। নিরূপায় ক্রেতা সাধারণ বাধ্য হয়েই মেনে নিচ্ছেন বিক্রেতার ঘোষণা।
তবে এমন ঘটনার ব্যাত্যয় যে ঘটে না তা নয়। আজ শুক্রবার সময় বেলা সাড়ে ১১টা। এক ব্যক্তি ১৪০ টাকা কেজিদরে কিনলেন দু’টি ফার্মের সাদা মুরগি। বালতি থেকে নামিয়ে বিক্রেতা জানালেন, চার কেজি ৩৫০ গ্রাম হয়েছে। দাম ৬১০ টাকা। অবাক ক্রেতা প্রশ্ন করলেন, এতো টাকা এসেছে? অনেকটা জোর করেই বালতি থেকে নামিয়ে নিলেন মুরগিগুলো। পাশের সবজি দোকানি ছিল তার পূর্ব পরিচিত। পা বেধে মুরগি দুইটি তুলে দিলেন ওই দোকানির ডিজিটাল পাল্লায়। মিটারে উঠলো তিন কেজি ৫১২ গ্রাম।
বিক্রেতার হাতে ৪৯০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে মুরগি নিয়ে হাটতে শুরু করলেন ক্রেতা। বিক্রেতার দাবি, আরো ১২০ টাকা দিতে হবে।
দীর্ঘ বিতর্কের পর বিক্রেতা সুমন অকপটে জানালেন, ‘চুরি না করলে মুরগির ব্যবসা করা সম্ভব নয়।’
এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সুমনের বক্তব্য, ‘এ মুরগি ১৪০ টাকা দরেই কিনতে হয়েছে। দুই জন লোকের বেতন, দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, বিভিন্ন গ্রুপের চাঁদাসহ দৈনিক অন্তত দুই হাজার টাকা খরচ আছে। পুরো টাকাটাই এখান থেকে তুলতে হয়।’
১৪০ টাকায় মুরগি কিনে একই দামে বিক্রি করার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সুমন জানায়, ‘কমপিটিশনের ব্যবসা। চাইলেও অন্যদের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করা যায় না। তাছাড়া মুরগির ব্যবসায় চুরিটাই লাভ। এই টাকা দিয়াই সব খরচ মিটাতে হয়।’
তার দাবি, ‘সারা ঢাকা শহরে একটা মুরগির দোকানও পাইবেন না যেখানে মাপে কম দেয়া হয় না।’ ১০০টা মুরগি আনলে ১০টা মরে যায় উল্লেখ করে সুমন জানায়, চুরি না করলে কেনা দামে বিক্রি করে কীভাবে?’
অনুসন্ধানে দেখা যায়, মালিবাগ বাজারের ন্যায় রাজধানী ঢাকার প্রায় সব বাজারেই মুরগির পরিমাপ হয় মিটারের পাল্লায়। দুর্বোধ্য এ পাল্লার ক্ষেত্রে বিএসটিআইর আপত্তি থাকলেও বিক্রেতারা তাতে পাত্তা দিচ্ছে না। এ নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে প্রতিনিয়ত বচসা লেগে থাকতে দেখা যায়। আবার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিবেচনায় তাদের বিরুদ্ধে বিএসটিআইও কোনো অভিযান পরিচালনা করে না। ফলে প্রতিনিয়তই প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলেছেন লাখ লাখ ক্রেতা।
এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। শীতকালে বিয়ে-শাদির অনুষ্ঠান বেশি থাকায় এ বাড়তি দাম বলে জানান তারা। বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। আগের মতোই ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গরুর গোশত। খাসী বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকায়।
মাছ বিক্রেতারা জানান, মওসুমি কারণেই হাওর-বাওরে এখন প্রচুর পরিমাণ মাছ ধরা পড়ছে। এ কারণে বাজারে মাছের দাম কিছুটা কম বলে জানান বিক্রেতারা। খুচরা বাজারে গতকাল প্রতি কেজি মাঝারি আকারের রুই ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, বড় দেশি রুই ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, আমদানি করা রুই ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ২০০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৮০ টাকা, চাষের কৈ ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা, মাঝারি আকারে ইলিশের জোড়া ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, চিংড়ি, বেলে, বাইম, টেংরা, পোয়া প্রভৃতি মাছ ৪০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়। প্রতি কেজি গরুর গোশতের দাম ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা, খাসি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকা, লেয়ার ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।
খুচরা বাজারে আজ প্রতি কেজি দেশি রসুন ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, তিন দানা রসুন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, একদানা রসুন ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ও চীনা রসুন ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, দেশি আদা ১০০ থেকে ১১০ টাকা এবং চীনা আদা ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়। চিনি বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৪২ টাকা কেজিদরে। এছাড়া মশুরের ডাল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, ছোলার ডাল ৭২ থেকে ৮০ টাকা, ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি হালি ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা, দেশি মুরগি ডিম ৪৫ টাকা, হাঁসের ডিম ৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।
বাজারে আজ অধিকাংশ সবজিই আগের সপ্তাহের দামে বিক্রি করতে দেখা যায়। অপরিবর্তিত আছে অধিকাংশ মুদিপণ্যের দামও। চালের মধ্যে মিনিকেট প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৪৫ থেকে ৪৮ টাকায়। মোটা চাল (স্বর্ণা) ৩২ থেকে ৩৫ টাকা, পাইজাম ৩২ থেকে ৩৫ টাকা, কাটারিভোগ ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, আঠাশ ৩৮ থেকে ৪২, উনত্রিশ ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়
বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মিটার পাল্লা ও বালতির ওপর ভর করে গড়ে ওঠা এ ব্যবসায় ক্রেতাদের অবস্থান খুবই দূর্বল। তারা চাইলেও যাচাই-বাছাই করে ক্রয়কৃত পণ্যের পরিমাপ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বালতি ভর্তি মুরগির পরিমাণ সম্পর্কে বিক্রেতা যা বলবেন সেটাই চূড়ান্ত। নিরূপায় ক্রেতা সাধারণ বাধ্য হয়েই মেনে নিচ্ছেন বিক্রেতার ঘোষণা।
তবে এমন ঘটনার ব্যাত্যয় যে ঘটে না তা নয়। আজ শুক্রবার সময় বেলা সাড়ে ১১টা। এক ব্যক্তি ১৪০ টাকা কেজিদরে কিনলেন দু’টি ফার্মের সাদা মুরগি। বালতি থেকে নামিয়ে বিক্রেতা জানালেন, চার কেজি ৩৫০ গ্রাম হয়েছে। দাম ৬১০ টাকা। অবাক ক্রেতা প্রশ্ন করলেন, এতো টাকা এসেছে? অনেকটা জোর করেই বালতি থেকে নামিয়ে নিলেন মুরগিগুলো। পাশের সবজি দোকানি ছিল তার পূর্ব পরিচিত। পা বেধে মুরগি দুইটি তুলে দিলেন ওই দোকানির ডিজিটাল পাল্লায়। মিটারে উঠলো তিন কেজি ৫১২ গ্রাম।
বিক্রেতার হাতে ৪৯০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে মুরগি নিয়ে হাটতে শুরু করলেন ক্রেতা। বিক্রেতার দাবি, আরো ১২০ টাকা দিতে হবে।
দীর্ঘ বিতর্কের পর বিক্রেতা সুমন অকপটে জানালেন, ‘চুরি না করলে মুরগির ব্যবসা করা সম্ভব নয়।’
এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সুমনের বক্তব্য, ‘এ মুরগি ১৪০ টাকা দরেই কিনতে হয়েছে। দুই জন লোকের বেতন, দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, বিভিন্ন গ্রুপের চাঁদাসহ দৈনিক অন্তত দুই হাজার টাকা খরচ আছে। পুরো টাকাটাই এখান থেকে তুলতে হয়।’
১৪০ টাকায় মুরগি কিনে একই দামে বিক্রি করার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সুমন জানায়, ‘কমপিটিশনের ব্যবসা। চাইলেও অন্যদের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করা যায় না। তাছাড়া মুরগির ব্যবসায় চুরিটাই লাভ। এই টাকা দিয়াই সব খরচ মিটাতে হয়।’
তার দাবি, ‘সারা ঢাকা শহরে একটা মুরগির দোকানও পাইবেন না যেখানে মাপে কম দেয়া হয় না।’ ১০০টা মুরগি আনলে ১০টা মরে যায় উল্লেখ করে সুমন জানায়, চুরি না করলে কেনা দামে বিক্রি করে কীভাবে?’
অনুসন্ধানে দেখা যায়, মালিবাগ বাজারের ন্যায় রাজধানী ঢাকার প্রায় সব বাজারেই মুরগির পরিমাপ হয় মিটারের পাল্লায়। দুর্বোধ্য এ পাল্লার ক্ষেত্রে বিএসটিআইর আপত্তি থাকলেও বিক্রেতারা তাতে পাত্তা দিচ্ছে না। এ নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে প্রতিনিয়ত বচসা লেগে থাকতে দেখা যায়। আবার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিবেচনায় তাদের বিরুদ্ধে বিএসটিআইও কোনো অভিযান পরিচালনা করে না। ফলে প্রতিনিয়তই প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলেছেন লাখ লাখ ক্রেতা।
এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। শীতকালে বিয়ে-শাদির অনুষ্ঠান বেশি থাকায় এ বাড়তি দাম বলে জানান তারা। বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। আগের মতোই ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গরুর গোশত। খাসী বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকায়।
মাছ বিক্রেতারা জানান, মওসুমি কারণেই হাওর-বাওরে এখন প্রচুর পরিমাণ মাছ ধরা পড়ছে। এ কারণে বাজারে মাছের দাম কিছুটা কম বলে জানান বিক্রেতারা। খুচরা বাজারে গতকাল প্রতি কেজি মাঝারি আকারের রুই ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, বড় দেশি রুই ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, আমদানি করা রুই ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ২০০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৮০ টাকা, চাষের কৈ ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা, মাঝারি আকারে ইলিশের জোড়া ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, চিংড়ি, বেলে, বাইম, টেংরা, পোয়া প্রভৃতি মাছ ৪০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়। প্রতি কেজি গরুর গোশতের দাম ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা, খাসি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকা, লেয়ার ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।
খুচরা বাজারে আজ প্রতি কেজি দেশি রসুন ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, তিন দানা রসুন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, একদানা রসুন ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ও চীনা রসুন ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, দেশি আদা ১০০ থেকে ১১০ টাকা এবং চীনা আদা ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়। চিনি বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৪২ টাকা কেজিদরে। এছাড়া মশুরের ডাল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, ছোলার ডাল ৭২ থেকে ৮০ টাকা, ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি হালি ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা, দেশি মুরগি ডিম ৪৫ টাকা, হাঁসের ডিম ৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।
বাজারে আজ অধিকাংশ সবজিই আগের সপ্তাহের দামে বিক্রি করতে দেখা যায়। অপরিবর্তিত আছে অধিকাংশ মুদিপণ্যের দামও। চালের মধ্যে মিনিকেট প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৪৫ থেকে ৪৮ টাকায়। মোটা চাল (স্বর্ণা) ৩২ থেকে ৩৫ টাকা, পাইজাম ৩২ থেকে ৩৫ টাকা, কাটারিভোগ ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, আঠাশ ৩৮ থেকে ৪২, উনত্রিশ ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়
No comments