স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে সরকারে অস্থিরতা by সোহরাব হাসান
স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর নির্বাচন নিয়ে সাম্প্রতিককালে সরকার যেভাবে পরস্পরবিরোধী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তাতে বিষয়টি নিয়ে সরকারের মধ্যে বেশ অস্থিরতা লক্ষ করা যাচ্ছে।
মাস খানেক আগে কথা নেই, বার্তা নেই সরকার হঠাৎ করেই ধনুর্ভঙ্গ পণ করে দেশবাসীকে জানিয়ে দিল, এখন থেকে সব স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচন দলীয়ভাবে হবে। এ ব্যাপারে তারা বিশেষজ্ঞ, সাংসদ, রাজনৈতিক দল—কারও সঙ্গেই আলোচনার প্রয়োজন বোধ করল না। আর সব বিষয়ে যেমনটি হয়ে থাকে, ওয়েস্টমিনস্টার সিস্টেমের দোহাই পাড়তে গিয়ে নীতিনির্ধারকেরা ভারতের ও যুক্তরাজ্যের উদাহরণ দিলেন। সেখানে দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচন হতে পারলে বাংলাদেশে হতে দোষ কী?
না, দোষ নেই। কিন্তু এ রকম একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন ছিল। দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে হলে কী কী সমস্যায় পড়তে হতে পারে, সেগুলো আমলে নেওয়া জরুরি ছিল। কিন্তু সেসব না করে একদিন সকালে সরকার দেশবাসীকে জানিয়ে দিল, এখন থেকে সব স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচন দলীয়ভাবে হবে। যথা আজ্ঞা। এমনকি সরকার জাতীয় সংসদের অধিবেশন পর্যন্ত অপেক্ষা না করে রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে একটি অধ্যাদেশও জারি করিয়ে নিল।
আর অমাদের ‘জি হুজুর মার্কা’ নির্বাচন কমিশন সোৎসাহে বলে উঠল, কোনো অসুবিধা নেই। সরকার চাইলে তারা দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচন সুসম্পন্ন করতে প্রস্তুত আছে। আমাদের এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি এতই স্বাধীন যে, সরকারের আইন মন্ত্রণালয় যেখানে বলেছে স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচনে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী কিংবা তাঁদের পদমর্যাদার কেউ প্রচারে অংশ নেওয়া ঠিক হবে না, তারা বলে দিল অসুবিধা নেই। একে বলে ‘পোপের চেয়েও বেশি খ্রিষ্টান’। নির্বাচন কমিশন এখনো বলে যাচ্ছে, কুচ পরোয়া নেই। সরকার চাইলেই দলীয়ভাবে পৌরসভা নির্বাচনটি তারা করে দিতে পারবে এবং ডিসেম্বরেই। তবে তারা যে কথাটি বলেনি তা হলো, সেই নির্বাচনটি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের মতো হবে, না ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মতো। দুটোই করেছে নির্বাচন কমিশন।
দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচন করা দোষের কিছু নয়। কিন্তু সে জন্য কিছুটা প্রস্তুতির প্রয়োজন। এখন দেখা যাচ্ছে, ক্ষমতাসীনেরা যে দলীয় নেতা-কর্মীদের কথা মাথায় রেখে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে করার সিদ্ধান্ত নিল, তাঁরাই এতে সায় দিতে পারছেন না। আলোচনাকালে একটি বৃহৎ পৌরসভার বর্তমান মেয়র, যিনি আওয়ামী লীগের, তিনি জানান, গত পাঁচ বছর পৌরবাসীর জন্য কাজ করেছি। নির্দলীয় নির্বাচন হলে দলমত-নির্বিশেষে সবার ভোট পেতাম। কিন্তু এখন আর সেটি পাওয়া যাবে না। ক্ষমতাসীন দলের জন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে করার প্রধান সমস্যা হলো, দলের সব বদনাম ও ব্যর্থতার দায়ভারও সরকার-সমর্থক প্রার্থীকে নিতে হবে। শত ভালো প্রার্থী হলেও তাঁকে জিতিয়ে আনা কঠিন হবে।
কিন্তু সাংসদেরা চান না, দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হোক। কারণ, তাঁরা চান না, তাঁদের ওপর কেউ খবরদারি করুক। তাঁরা যেহেতু দলীয়ভাবে নির্বাচিত হয়ে প্রশাসনের ওপর এককভাবে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন, অন্য কাউকে সেই সুযোগ দিতে চান না।
সাংসদদের আপত্তির মুখে সরকার বলল, ভয় নেই। এই ব্যবস্থা কেবল পৌরসভা নির্বাচনের জন্য। অন্যান্য স্থানীয় সরকার সংস্থা নিয়ে সিদ্ধান্ত পরে হবে। একপর্যায়ে সাংসদদের চাপে প্রস্তাবিত আইনটি থেকে জেলা পরিষদ বাদ দেওয়া হলো। স্বাধীনতার পর সামরিক-বেসামরিক কোনো সরকারই জেলা পরিষদের নির্বাচন করেনি। বর্তমান সরকার অনির্বাচিত দলীয় লোকদের প্রশাসক নিয়োগ করে জেলা পরিষদ চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে সাংসদদের ভয় হলো, একটি জেলায় ২ থেকে ১২-১৪টি সংসদীয় নির্বাচনী এলাকা আছে। নির্বাচিত জেলা পরিষদ সাংসদদের ওপর কর্তৃত্ব করবে।
সাংসদ জেলা ও উপজেলা পরিষদের উপদেষ্টা হলেও পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনে এ রকম কোনো বিধান নেই। আইনগতভাবে তারা সাংসদের খবরদারিমুক্ত। তদুপরি দলীয়ভাবে নির্বাচিত হলে তাদের কর্তৃত্ব আরও কমে যাবে। দুজনেই দলের টিকিট পাওয়া, কেউ কারও অধীনতা মানবেন না।
সরকার দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচন করে যে বাড়তি সুবিধা নিতে চেয়েছিল, এখন মনে হচ্ছে সেটি বুমেরাং হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।
প্রথম আলোর খবর থেকে আমরা জানতে পারি, গত ১২ অক্টোবর মন্ত্রিসভা ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন, উপজেলা ও জেলা পরিষদের নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার প্রস্তাব অনুমোদন করে। পৌরসভা নির্বাচন আসন্ন বিধায় এর আইনটি সংশোধন করে অধ্যাদেশ আকারে জারির সিদ্ধান্ত হয়। তিন সপ্তাহ ধরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম শেষে ২ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি ওই অধ্যাদেশ অনুমোদন করেন । এত কিছুর পর সরকার হঠাৎ নতুন করে সিদ্ধান্ত নেয়, পৌরসভা অধ্যাদেশ নয়, আইন হবে। সেই অনুযায়ী স্থানীয় সরকারের বাকি চারটি সংশোধিত আইনের সঙ্গে পৌর আইনটি বিল আকারে সংসদে উত্থাপন করা হয়। পৌরসভা নির্বাচন আসন্ন হওয়ায় আইনের বদলে অধ্যাদেশ করার বিষয়ে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়ে তা রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নেওয়ার পর সেখান থেকে পিছিয়ে আসার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত আইনের খসড়ায় স্থানীয় সরকারের সব স্তরে দলীয়ভাবে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলা হয়। এর এক মাসের মাথায় সেখান থেকে পিছিয়ে আসে সরকার। এখন কিছুটা দলীয়, কিছুটা নির্দলীয় পন্থায় নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়ায় তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
একই পরিষদে কিছুটা দলীয়, কিছুটা নির্দলীয় ব্যবস্থা সোনার পাথরবাটির মতো। এই দোদুল্যমানতা থেকে বেরিয়ে এসে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আসলে তারা স্থানীয় সরকার সংস্থার স্বতন্ত্র অবস্থান চায় কি না। এই প্রশ্নের উত্তর ‘হ্যাঁ’ হলে স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর ওপর সাংসদদের খবরদারি কমাতেই হবে। আর ‘না’ হলে ভবিষ্যতে স্থানীয় সরকার বলে ‘কাজির গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই’ অবস্থা হবে। সেটি কেবল জনগণের ক্ষমতায়নের বিরোধী নয়, বাংলাদেশের সংবিধানেরও পরিপন্থী।
মাস খানেক আগে কথা নেই, বার্তা নেই সরকার হঠাৎ করেই ধনুর্ভঙ্গ পণ করে দেশবাসীকে জানিয়ে দিল, এখন থেকে সব স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচন দলীয়ভাবে হবে। এ ব্যাপারে তারা বিশেষজ্ঞ, সাংসদ, রাজনৈতিক দল—কারও সঙ্গেই আলোচনার প্রয়োজন বোধ করল না। আর সব বিষয়ে যেমনটি হয়ে থাকে, ওয়েস্টমিনস্টার সিস্টেমের দোহাই পাড়তে গিয়ে নীতিনির্ধারকেরা ভারতের ও যুক্তরাজ্যের উদাহরণ দিলেন। সেখানে দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচন হতে পারলে বাংলাদেশে হতে দোষ কী?
না, দোষ নেই। কিন্তু এ রকম একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন ছিল। দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে হলে কী কী সমস্যায় পড়তে হতে পারে, সেগুলো আমলে নেওয়া জরুরি ছিল। কিন্তু সেসব না করে একদিন সকালে সরকার দেশবাসীকে জানিয়ে দিল, এখন থেকে সব স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচন দলীয়ভাবে হবে। যথা আজ্ঞা। এমনকি সরকার জাতীয় সংসদের অধিবেশন পর্যন্ত অপেক্ষা না করে রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে একটি অধ্যাদেশও জারি করিয়ে নিল।
আর অমাদের ‘জি হুজুর মার্কা’ নির্বাচন কমিশন সোৎসাহে বলে উঠল, কোনো অসুবিধা নেই। সরকার চাইলে তারা দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচন সুসম্পন্ন করতে প্রস্তুত আছে। আমাদের এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি এতই স্বাধীন যে, সরকারের আইন মন্ত্রণালয় যেখানে বলেছে স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচনে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী কিংবা তাঁদের পদমর্যাদার কেউ প্রচারে অংশ নেওয়া ঠিক হবে না, তারা বলে দিল অসুবিধা নেই। একে বলে ‘পোপের চেয়েও বেশি খ্রিষ্টান’। নির্বাচন কমিশন এখনো বলে যাচ্ছে, কুচ পরোয়া নেই। সরকার চাইলেই দলীয়ভাবে পৌরসভা নির্বাচনটি তারা করে দিতে পারবে এবং ডিসেম্বরেই। তবে তারা যে কথাটি বলেনি তা হলো, সেই নির্বাচনটি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের মতো হবে, না ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মতো। দুটোই করেছে নির্বাচন কমিশন।
দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচন করা দোষের কিছু নয়। কিন্তু সে জন্য কিছুটা প্রস্তুতির প্রয়োজন। এখন দেখা যাচ্ছে, ক্ষমতাসীনেরা যে দলীয় নেতা-কর্মীদের কথা মাথায় রেখে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে করার সিদ্ধান্ত নিল, তাঁরাই এতে সায় দিতে পারছেন না। আলোচনাকালে একটি বৃহৎ পৌরসভার বর্তমান মেয়র, যিনি আওয়ামী লীগের, তিনি জানান, গত পাঁচ বছর পৌরবাসীর জন্য কাজ করেছি। নির্দলীয় নির্বাচন হলে দলমত-নির্বিশেষে সবার ভোট পেতাম। কিন্তু এখন আর সেটি পাওয়া যাবে না। ক্ষমতাসীন দলের জন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে করার প্রধান সমস্যা হলো, দলের সব বদনাম ও ব্যর্থতার দায়ভারও সরকার-সমর্থক প্রার্থীকে নিতে হবে। শত ভালো প্রার্থী হলেও তাঁকে জিতিয়ে আনা কঠিন হবে।
কিন্তু সাংসদেরা চান না, দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হোক। কারণ, তাঁরা চান না, তাঁদের ওপর কেউ খবরদারি করুক। তাঁরা যেহেতু দলীয়ভাবে নির্বাচিত হয়ে প্রশাসনের ওপর এককভাবে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন, অন্য কাউকে সেই সুযোগ দিতে চান না।
সাংসদদের আপত্তির মুখে সরকার বলল, ভয় নেই। এই ব্যবস্থা কেবল পৌরসভা নির্বাচনের জন্য। অন্যান্য স্থানীয় সরকার সংস্থা নিয়ে সিদ্ধান্ত পরে হবে। একপর্যায়ে সাংসদদের চাপে প্রস্তাবিত আইনটি থেকে জেলা পরিষদ বাদ দেওয়া হলো। স্বাধীনতার পর সামরিক-বেসামরিক কোনো সরকারই জেলা পরিষদের নির্বাচন করেনি। বর্তমান সরকার অনির্বাচিত দলীয় লোকদের প্রশাসক নিয়োগ করে জেলা পরিষদ চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে সাংসদদের ভয় হলো, একটি জেলায় ২ থেকে ১২-১৪টি সংসদীয় নির্বাচনী এলাকা আছে। নির্বাচিত জেলা পরিষদ সাংসদদের ওপর কর্তৃত্ব করবে।
সাংসদ জেলা ও উপজেলা পরিষদের উপদেষ্টা হলেও পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনে এ রকম কোনো বিধান নেই। আইনগতভাবে তারা সাংসদের খবরদারিমুক্ত। তদুপরি দলীয়ভাবে নির্বাচিত হলে তাদের কর্তৃত্ব আরও কমে যাবে। দুজনেই দলের টিকিট পাওয়া, কেউ কারও অধীনতা মানবেন না।
সরকার দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচন করে যে বাড়তি সুবিধা নিতে চেয়েছিল, এখন মনে হচ্ছে সেটি বুমেরাং হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।
প্রথম আলোর খবর থেকে আমরা জানতে পারি, গত ১২ অক্টোবর মন্ত্রিসভা ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন, উপজেলা ও জেলা পরিষদের নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার প্রস্তাব অনুমোদন করে। পৌরসভা নির্বাচন আসন্ন বিধায় এর আইনটি সংশোধন করে অধ্যাদেশ আকারে জারির সিদ্ধান্ত হয়। তিন সপ্তাহ ধরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম শেষে ২ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি ওই অধ্যাদেশ অনুমোদন করেন । এত কিছুর পর সরকার হঠাৎ নতুন করে সিদ্ধান্ত নেয়, পৌরসভা অধ্যাদেশ নয়, আইন হবে। সেই অনুযায়ী স্থানীয় সরকারের বাকি চারটি সংশোধিত আইনের সঙ্গে পৌর আইনটি বিল আকারে সংসদে উত্থাপন করা হয়। পৌরসভা নির্বাচন আসন্ন হওয়ায় আইনের বদলে অধ্যাদেশ করার বিষয়ে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়ে তা রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নেওয়ার পর সেখান থেকে পিছিয়ে আসার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত আইনের খসড়ায় স্থানীয় সরকারের সব স্তরে দলীয়ভাবে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলা হয়। এর এক মাসের মাথায় সেখান থেকে পিছিয়ে আসে সরকার। এখন কিছুটা দলীয়, কিছুটা নির্দলীয় পন্থায় নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়ায় তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
একই পরিষদে কিছুটা দলীয়, কিছুটা নির্দলীয় ব্যবস্থা সোনার পাথরবাটির মতো। এই দোদুল্যমানতা থেকে বেরিয়ে এসে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আসলে তারা স্থানীয় সরকার সংস্থার স্বতন্ত্র অবস্থান চায় কি না। এই প্রশ্নের উত্তর ‘হ্যাঁ’ হলে স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর ওপর সাংসদদের খবরদারি কমাতেই হবে। আর ‘না’ হলে ভবিষ্যতে স্থানীয় সরকার বলে ‘কাজির গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই’ অবস্থা হবে। সেটি কেবল জনগণের ক্ষমতায়নের বিরোধী নয়, বাংলাদেশের সংবিধানেরও পরিপন্থী।
No comments