‘চাপ দিয়ে তামিমের কাছে সেরাটা পাওয়া যাবে না’ by রানা আব্বাস
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বসেই আজ ছোট ভাই তামিমের খেলা দেখলেন নাফিস ইকবাল, কোলে শিশুপুত্র নামির। ছবি: রানা আব্বাস। |
‘আপনার
সঙ্গে তামিম ইকবালের ব্যাটিং দেখতে চাই’—মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রস্তাবটা
শুনে হাসি মুখেই রাজি নাফিস ইকবাল। তবে জানালেন, আগামীকাল (আজ বুধবার)
সকালে নিশ্চিত করবেন, খেলাটা কোথায় দেখবেন-বাসায় নাকি স্টেডিয়ামে। সকালে
নিশ্চিত করলেন, স্টেডিয়ামেই দেখবেন।
দ্বিতীয় দিন সকালে ব্যাট হাতে নেমেছেন তামিম। প্রেসিডেন্টস বক্সে বসে ভাইয়ের খেলা দেখেছেন নাফিস। চোখে চশমা, পরনে টি-শার্ট, জিনস। দেখা হতেই বললেন, ‘চলেন ক্যাপ্টেনস বক্সে বসে কথা বলি। ওখানে তামিমের সবচেয়ে বড় ভক্ত বসে আছে। বাড়িতে এলে তার সঙ্গেই ও বেশি সময় কাটায়।’ কৌতূহলী দৃষ্টি দেখে নিজেই খোলাসা করলেন, ‘ভক্তের নাম নামির ইকবাল, আমার ছেলে।’ অবশ্য ক্যাপ্টেনস বক্সে উপস্থিত ছিলেন তাদের কয়েকজন নিকটাত্মীয়ও। লন্ডন ও দুবাই থেকে ঈদের ছুটি কাটাতে চট্টগ্রামে এসেছেন তারা।
তামিম সবে ইনিংস শুরু করেছেন, নাফিসের মনোযোগ একবার মাঠে আরেকবার প্রশ্নে। নাফিস-তামিম-দুজনের টেস্ট অভিষেক একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে-নিউজিল্যান্ড। টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরি পেতে নাফিসের চেয়ে বেশি সময় লেগেছে তামিমের। নাফিস প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিল ১২ ইনিংস পর আর তামিম ২০ ইনিংস। নাফিসের আগমনী বার্তা ছিল অসাধারণ। তবে যাত্রাটা দীর্ঘ হওয়ার আগে থেমে গেছে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। স্বপ্নযাত্রাটা থেমে যাওয়ার পেছনে বছর আটেক আগের চোটকেই দায়ী করেন নাফিস, ‘নিজের কিছুটা দুর্ভাগ্য তো ছিলই। বাজে একটা চোটে এক-দেড় বছর ক্রিকেটই খেলতে পারিনি। ওটাই একটা বড় গ্যাপ তৈরি করে দিল।’
দুই ভাইয়ের ব্যাটিংয়ে মূল পার্থক্য ছিল কোনটি? নাফিস খানিকটা সময় নিলেন। বললেন, ‘দুজন দুই ধরনের। আমার বেশি মনোযোগ ছিল টেকনিক্যাল দিকে আর তামিমের আক্রমণে।’ তবে তামিম কেবল আক্রমণ করেন না, সময়ের প্রয়োজনে উইকেট কামড়ে পড়ে থাকতেও জানেন। গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪৭৩ মিনিটে ৩৩২ বল খেলে করেছিলেন ১০৯ রান। গত বছর কেন, ধৈর্যের প্রতিমূর্তি হয়ে আজও তামিম খেললেন ধীরস্থির এক ইনিংস। দিনের শুরুতে ডেল স্টেইনকে পরপর দুই চার মেরে আক্রমণাত্মক হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, সেই তামিম ইনিংসের তৃতীয় চারটা মারলেন ১১১ বল পর। ১২৯ বলে খেলা ৫৭ রানের ইনিংসে চার ওই তিনটিই। তামিমের ব্যাটিংয়ে চোখ রেখে নাফিস বললেন, ‘ওর সবচেয়ে বড় দিক টেম্পারামেন্ট। রক্ষণাত্মক ও আক্রমণাত্মক-দুভাবেই খেলতে পারে। একজন বড় খেলোয়াড় হতে গেলে এ গুণটা থাকা খুব জরুরি।’
নাফিসের যখন থমকে দাঁড়াল আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার, তামিমে শুরু তখনই। নিজেকে ফিরে পেতে একজন নাফিসের প্রতিছোট ভাইয়ের কী কোনো পরামর্শ ছিল? বললেন, ‘হয়তো মনে হতে পারে এক পরিবারে তিনজন টেস্ট ক্রিকেটার; ক্রিকেট নিয়ে বুঝি অনেক কথা হয়। আসলে তা নয়। আমরা ক্রিকেট নিয়ে খুব কম কথা বলি। খুব সমস্যায় পড়লে আকরাম চাচার কাছে যাই। কিছু টিপস নেওয়া বা ব্যাটিং নিয়ে কিছু কথা হয়। তবে পারিবারিক আড্ডায় ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা একদমই কম হয়।’
তামিমের ভেতর অসম্পূর্ণ স্বপ্নটা কী দেখেন নাফিস? প্রশ্নটা শুনে কিছুটা থমকে যান। একদৃষ্টিতে দেখেন ২২ গজে ছোট ভাইয়ের ব্যাটিং। কল্প দৃষ্টিতে তামিমের অপরপ্রান্তে কি নিজেকে আবিষ্কার করছেন? দৃষ্টি ফিরিয়ে বললেন, ‘এখনো ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছি। অনেকে বলেন, দুই ভাইকে ওপেনিংয়ে দেখতে চাই। কখনো কখনো ভালো লাগে শুনতে। আবার খারাপও লাগে এ চাওয়াটা পূরণ করতে না পারায়। বাংলাদেশ দল যেভাবে পারফর্ম করছে, সুযোগ পাওয়াটা কঠিনই। বর্তমান স্কোয়াডে থাকা খেলোয়াড়দের মধ্যে এখন সুস্থ এক প্রতিযোগিতা। আর আমার স্বপ্নটা পূরণ না হলেও চাইব তামিম যেন টেস্টে ১০ হাজার রান করে। ও যদি ঠিকমতো খেলে এবং মানুষ যদি চাপ না দেয়, তবে অসম্ভবও নয়।’
‘মানুষের চাপ’? বলা মাত্র নাফিস যেন জমে থাকা ক্ষোভই উগরে দিলেন মুহূর্তেই। চোখেমুখে একরাশ বিরক্তি ছড়িয়ে বললেন, ‘দুটো টি-টোয়েন্টি আর ওয়ানডেতে ভালো না করার পর ওকে বাদ দিতে চারদিক থেকে যে আলোচনা-সমালোচনা, ভীষণ অবাক হয়েছি। কদিন আগেই না এই তামিমের কাছ থেকেই দারুণ কিছু ইনিংস পেল বাংলাদেশ? দেখেন যেকোনো কাজেই কাউকে চাপ দিয়ে সেরাটা বের করা যায় না। হয়তো চাপে পড়ে এক-দুইবার ক্লিক করতে পারে। তবে চাপ দিলে সে ভালো খেলবে, এ ধারণাটা একদমই ভুল। এটা যদি ক্রমাগত চলতে থাকে, বাংলাদেশ অনেক বড় প্রতিভা হারাবে। একটু খারাপ খেললেই ফেসবুকে তামিমকে নিয়ে নানা বাজে কমেন্ট, গালিগালাজ! ’ নাফিস একটু থামেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘কেন আমরা একটু সহনশীল হতে পারি না? বলছি না তাকে সাপোর্ট করতে হবে। তাকে কেবল তার মতো থাকতে দিতে হবে। তার নিজের খেলাটা খেলতে দিতে হবে।’
অনেকে বলবেন, সামাজিক যোগাযোগের সাইট না দেখলেই তো হয়। নাফিস অবশ্য একমত নন এ ব্যাপারে। মাথা ব্যথার জন্য নিশ্চয় মাথা কেটে ফেলাটা সমীচীন নয়। নাফিস তাই বললেন, ‘সবাই এখন সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয়। না থেকেও পারা যায় না। শচীন টেন্ডুলকার থেকে শুরু করে সবাই কম-বেশি সক্রিয় এ মাধ্যমে। ধরুন, ফেসবুক ব্যবহার করলাম না। তবুও দেখা গেল কোনো আড্ডা-আলোচনায় কেউ বলল, “দেখেছিস কী লিখেছে এটা”। কেউ না কেউ মনে করিয়ে দেবেই।’
তামিমকে বাইরে থেকে দেখে বিচার না করার অনুরোধ নাফিসের, ‘কেউ তারকা হয়ে গেলে তার সব কিছুর একটা সংবাদমূল্য তৈরি হয়। তখন খুব সাবধানে চলতে হয়। দেখা গেল, আড্ডার ছলে কিছু বলল, ওটাই ছড়িয়ে পড়ল চারদিকে। বাইরে থেকে অনেকে তামিমকে রাশভারী মনে করলেও আদপে সে তা নয়।। বরং পরিবার, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে সে অনেক হাসি-খুশি, ঠাট্টা-রসিকতায় মেতে থাকে। আড্ডা খুব ভালো জমাতে পারে। যথেষ্ট আবেগী। বাইরে থেকে এটা বোঝা যায় না। কেউ মনে মনে কাঁদে, কেউ প্রকাশ্যে। তামিম প্রথমটির দলে।’
হঠাৎ আলোচনা থেমে যায় ছোট্ট নামিরের উল্লাসে। দারুণ এক শটে তামিম বল পাঠিয়েছেন সীমানার কাছে। তবে বলটা বাউন্ডারি পার হয়নি। নামিরের আক্ষেপ, চাচা কেন ছক্কা মারছেন না! ছেলেকে কি ক্রিকেটার বানাবেন? মৃদু হাসলেন নাফিস, ‘ছেলের ভেতর যদি প্রতিভা থাকে, ক্রিকেটার হবে। বড় হচ্ছে, ভাবছি অনুশীলনে দেব। অবশ্য চাচার (তামিম) মতো এখনই ডাউন দ্য উইকেটে খেলার বিরাট ঝোঁক। আমাদের তো খেলার পরিবার। ক্রিকেটার হলে হতেও পারে।’
চাচার ব্যাট থেকে কিছুক্ষণ পরই এল ফিফটি-নামিরের উচ্ছ্বাস দেখে কে! নামিরের মতো উচ্ছ্বসিত গোটা জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম। তবে উচ্ছ্বাসটা পূর্ণতা পেল না ইনিংসটা ৫৭ রানে থামায়। সামনে নিশ্চয়ই আবারও বড় ইনিংস খেলে আনন্দের উপলক্ষ এনে দেবেন তামিম।
দ্বিতীয় দিন সকালে ব্যাট হাতে নেমেছেন তামিম। প্রেসিডেন্টস বক্সে বসে ভাইয়ের খেলা দেখেছেন নাফিস। চোখে চশমা, পরনে টি-শার্ট, জিনস। দেখা হতেই বললেন, ‘চলেন ক্যাপ্টেনস বক্সে বসে কথা বলি। ওখানে তামিমের সবচেয়ে বড় ভক্ত বসে আছে। বাড়িতে এলে তার সঙ্গেই ও বেশি সময় কাটায়।’ কৌতূহলী দৃষ্টি দেখে নিজেই খোলাসা করলেন, ‘ভক্তের নাম নামির ইকবাল, আমার ছেলে।’ অবশ্য ক্যাপ্টেনস বক্সে উপস্থিত ছিলেন তাদের কয়েকজন নিকটাত্মীয়ও। লন্ডন ও দুবাই থেকে ঈদের ছুটি কাটাতে চট্টগ্রামে এসেছেন তারা।
তামিম সবে ইনিংস শুরু করেছেন, নাফিসের মনোযোগ একবার মাঠে আরেকবার প্রশ্নে। নাফিস-তামিম-দুজনের টেস্ট অভিষেক একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে-নিউজিল্যান্ড। টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরি পেতে নাফিসের চেয়ে বেশি সময় লেগেছে তামিমের। নাফিস প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিল ১২ ইনিংস পর আর তামিম ২০ ইনিংস। নাফিসের আগমনী বার্তা ছিল অসাধারণ। তবে যাত্রাটা দীর্ঘ হওয়ার আগে থেমে গেছে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। স্বপ্নযাত্রাটা থেমে যাওয়ার পেছনে বছর আটেক আগের চোটকেই দায়ী করেন নাফিস, ‘নিজের কিছুটা দুর্ভাগ্য তো ছিলই। বাজে একটা চোটে এক-দেড় বছর ক্রিকেটই খেলতে পারিনি। ওটাই একটা বড় গ্যাপ তৈরি করে দিল।’
দুই ভাইয়ের ব্যাটিংয়ে মূল পার্থক্য ছিল কোনটি? নাফিস খানিকটা সময় নিলেন। বললেন, ‘দুজন দুই ধরনের। আমার বেশি মনোযোগ ছিল টেকনিক্যাল দিকে আর তামিমের আক্রমণে।’ তবে তামিম কেবল আক্রমণ করেন না, সময়ের প্রয়োজনে উইকেট কামড়ে পড়ে থাকতেও জানেন। গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪৭৩ মিনিটে ৩৩২ বল খেলে করেছিলেন ১০৯ রান। গত বছর কেন, ধৈর্যের প্রতিমূর্তি হয়ে আজও তামিম খেললেন ধীরস্থির এক ইনিংস। দিনের শুরুতে ডেল স্টেইনকে পরপর দুই চার মেরে আক্রমণাত্মক হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, সেই তামিম ইনিংসের তৃতীয় চারটা মারলেন ১১১ বল পর। ১২৯ বলে খেলা ৫৭ রানের ইনিংসে চার ওই তিনটিই। তামিমের ব্যাটিংয়ে চোখ রেখে নাফিস বললেন, ‘ওর সবচেয়ে বড় দিক টেম্পারামেন্ট। রক্ষণাত্মক ও আক্রমণাত্মক-দুভাবেই খেলতে পারে। একজন বড় খেলোয়াড় হতে গেলে এ গুণটা থাকা খুব জরুরি।’
নাফিসের যখন থমকে দাঁড়াল আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার, তামিমে শুরু তখনই। নিজেকে ফিরে পেতে একজন নাফিসের প্রতিছোট ভাইয়ের কী কোনো পরামর্শ ছিল? বললেন, ‘হয়তো মনে হতে পারে এক পরিবারে তিনজন টেস্ট ক্রিকেটার; ক্রিকেট নিয়ে বুঝি অনেক কথা হয়। আসলে তা নয়। আমরা ক্রিকেট নিয়ে খুব কম কথা বলি। খুব সমস্যায় পড়লে আকরাম চাচার কাছে যাই। কিছু টিপস নেওয়া বা ব্যাটিং নিয়ে কিছু কথা হয়। তবে পারিবারিক আড্ডায় ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা একদমই কম হয়।’
তামিমের ভেতর অসম্পূর্ণ স্বপ্নটা কী দেখেন নাফিস? প্রশ্নটা শুনে কিছুটা থমকে যান। একদৃষ্টিতে দেখেন ২২ গজে ছোট ভাইয়ের ব্যাটিং। কল্প দৃষ্টিতে তামিমের অপরপ্রান্তে কি নিজেকে আবিষ্কার করছেন? দৃষ্টি ফিরিয়ে বললেন, ‘এখনো ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছি। অনেকে বলেন, দুই ভাইকে ওপেনিংয়ে দেখতে চাই। কখনো কখনো ভালো লাগে শুনতে। আবার খারাপও লাগে এ চাওয়াটা পূরণ করতে না পারায়। বাংলাদেশ দল যেভাবে পারফর্ম করছে, সুযোগ পাওয়াটা কঠিনই। বর্তমান স্কোয়াডে থাকা খেলোয়াড়দের মধ্যে এখন সুস্থ এক প্রতিযোগিতা। আর আমার স্বপ্নটা পূরণ না হলেও চাইব তামিম যেন টেস্টে ১০ হাজার রান করে। ও যদি ঠিকমতো খেলে এবং মানুষ যদি চাপ না দেয়, তবে অসম্ভবও নয়।’
‘মানুষের চাপ’? বলা মাত্র নাফিস যেন জমে থাকা ক্ষোভই উগরে দিলেন মুহূর্তেই। চোখেমুখে একরাশ বিরক্তি ছড়িয়ে বললেন, ‘দুটো টি-টোয়েন্টি আর ওয়ানডেতে ভালো না করার পর ওকে বাদ দিতে চারদিক থেকে যে আলোচনা-সমালোচনা, ভীষণ অবাক হয়েছি। কদিন আগেই না এই তামিমের কাছ থেকেই দারুণ কিছু ইনিংস পেল বাংলাদেশ? দেখেন যেকোনো কাজেই কাউকে চাপ দিয়ে সেরাটা বের করা যায় না। হয়তো চাপে পড়ে এক-দুইবার ক্লিক করতে পারে। তবে চাপ দিলে সে ভালো খেলবে, এ ধারণাটা একদমই ভুল। এটা যদি ক্রমাগত চলতে থাকে, বাংলাদেশ অনেক বড় প্রতিভা হারাবে। একটু খারাপ খেললেই ফেসবুকে তামিমকে নিয়ে নানা বাজে কমেন্ট, গালিগালাজ! ’ নাফিস একটু থামেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘কেন আমরা একটু সহনশীল হতে পারি না? বলছি না তাকে সাপোর্ট করতে হবে। তাকে কেবল তার মতো থাকতে দিতে হবে। তার নিজের খেলাটা খেলতে দিতে হবে।’
অনেকে বলবেন, সামাজিক যোগাযোগের সাইট না দেখলেই তো হয়। নাফিস অবশ্য একমত নন এ ব্যাপারে। মাথা ব্যথার জন্য নিশ্চয় মাথা কেটে ফেলাটা সমীচীন নয়। নাফিস তাই বললেন, ‘সবাই এখন সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয়। না থেকেও পারা যায় না। শচীন টেন্ডুলকার থেকে শুরু করে সবাই কম-বেশি সক্রিয় এ মাধ্যমে। ধরুন, ফেসবুক ব্যবহার করলাম না। তবুও দেখা গেল কোনো আড্ডা-আলোচনায় কেউ বলল, “দেখেছিস কী লিখেছে এটা”। কেউ না কেউ মনে করিয়ে দেবেই।’
তামিমকে বাইরে থেকে দেখে বিচার না করার অনুরোধ নাফিসের, ‘কেউ তারকা হয়ে গেলে তার সব কিছুর একটা সংবাদমূল্য তৈরি হয়। তখন খুব সাবধানে চলতে হয়। দেখা গেল, আড্ডার ছলে কিছু বলল, ওটাই ছড়িয়ে পড়ল চারদিকে। বাইরে থেকে অনেকে তামিমকে রাশভারী মনে করলেও আদপে সে তা নয়।। বরং পরিবার, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে সে অনেক হাসি-খুশি, ঠাট্টা-রসিকতায় মেতে থাকে। আড্ডা খুব ভালো জমাতে পারে। যথেষ্ট আবেগী। বাইরে থেকে এটা বোঝা যায় না। কেউ মনে মনে কাঁদে, কেউ প্রকাশ্যে। তামিম প্রথমটির দলে।’
হঠাৎ আলোচনা থেমে যায় ছোট্ট নামিরের উল্লাসে। দারুণ এক শটে তামিম বল পাঠিয়েছেন সীমানার কাছে। তবে বলটা বাউন্ডারি পার হয়নি। নামিরের আক্ষেপ, চাচা কেন ছক্কা মারছেন না! ছেলেকে কি ক্রিকেটার বানাবেন? মৃদু হাসলেন নাফিস, ‘ছেলের ভেতর যদি প্রতিভা থাকে, ক্রিকেটার হবে। বড় হচ্ছে, ভাবছি অনুশীলনে দেব। অবশ্য চাচার (তামিম) মতো এখনই ডাউন দ্য উইকেটে খেলার বিরাট ঝোঁক। আমাদের তো খেলার পরিবার। ক্রিকেটার হলে হতেও পারে।’
চাচার ব্যাট থেকে কিছুক্ষণ পরই এল ফিফটি-নামিরের উচ্ছ্বাস দেখে কে! নামিরের মতো উচ্ছ্বসিত গোটা জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম। তবে উচ্ছ্বাসটা পূর্ণতা পেল না ইনিংসটা ৫৭ রানে থামায়। সামনে নিশ্চয়ই আবারও বড় ইনিংস খেলে আনন্দের উপলক্ষ এনে দেবেন তামিম।
No comments