ক্রসফায়ারে নিহত কালাম নিখোঁজ ছিলেন ৩৫ দিন
রাজধানীর রামপুরায় র্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত দু’যুবকের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম আবুল কালাম (৪০)। তিনি একজন গাড়িচালক। গত বছরের ২১শে ডিসেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। গতকাল সন্ধ্যায় আবুল কালামের লাশ শনাক্ত করেন তার স্বজনরা। তার স্ত্রী শাহিনুর বেগম জানান, আবুল কালাম পেশায় একজন প্রাইভেট কারচালক। গত বছরের ২১শে ডিসেম্বর সকালে বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এরপর বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও কালামের কোন সন্ধান পাননি তার স্ত্রী ও স্বজনরা। রোববার রাতে শাহিনুরের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি জানান, আবুল কালাম ঢামেক হাসপাতালে রয়েছেন। গতকাল সকালে তারা ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে খোঁজাখুঁজি করেন। দুপুরের পর একই ব্যক্তি কল দিয়ে রামপুরা থানায় যোগাযোগ করতে বললে তারা থানায় ছুটে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যায় তারা জানতে পারেন আবুল কালাম নিহত হয়েছেন। তার লাশ ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। আবুল কালাম নিখোঁজ হওয়ার কিছু দিন আগে গুলিস্তান থেকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাকে সন্দেহমূলকভাবে আটক করেছিল বলে শাহিনুর বেগম জানান। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তার স্বামীর নামে কয়েকটি ডাকাতির মামলা ছিল জানিয়ে শাহিনুর বেগম বলেন, এসব মামলা থেকে তিনি খালাস পেয়েছেন। তিনি ডাকাত ছিলেন না। তবু তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে ডাকাতির মামলা দেয়া হয়েছে। আবুল কালামের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ইয়াসমিন বেগম জানান, নিহতের লাশ তারা মিরপুরে দাফন করবেন। সেখানে কালামের অন্যান্য ভাইয়েরা পরিবারসহ থাকেন। র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আবুল কালামসহ দুজন নিহত হলেও অপর যুবককে চিনতে পারেননি আবুল কালামের স্বজনরা। নিহত আবুল কালামের বাড়ি ভোলা সদরের বাপতা গ্রামে। গাজীপুরের টঙ্গী উপজেলার সানকির ট্যাগ এলাকায় ভাড়া থাকতেন। তার পিতার নাম মৃত খোরশেদ আলম। তার তিন কন্যাসন্তান রয়েছে। র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত অপর যুবকের লাশ পরে আছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। ঘটনার দু’দিন পেরিয়ে গেলেও তার কোন পরিচয় পাওয়া যায়নি। রামপুরা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) টিপু সুলতান জানান, ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনায় র্যাব-৩ এর ডিএডি জাকির হোসেন বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেন। এর একটি অস্ত্র আইনে অন্যটি ডাকাতি-ছিনতাইয়ের প্রস্তুতি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা হয়। গতকাল সকালে নিহতদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন ঢামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা। গতকাল বিকাল পর্যন্ত তাদের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় নিহত দুজনের ডিএনএ নমুনা ও ছবি সংগ্রহে রাখে পুলিশ। রোববার রাত পৌনে ৩টায় দিকে রামপুরার বনশ্রী এলাকায় এই ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে। ভোরে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ। র্যাবের দাবি, ওই দুই যুবক দুষ্কৃতকারী।
No comments