বার্ন ইউনিটে নতুন ১০ চিকিৎসক, দুই রোগী আইসিইউতে- চিকিৎসা শেষে আটজনকে ছুটি

(বিয়ে হয়েছে মাত্র কয়েক দিন। এর মধ্যে স্বামী সালাহউদ্দিন দগ্ধ পেট্রলবোমায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্বামীর পরিচর্যায় ব্যস্ত নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের পঁাচরুখী গ্রামের বধূ ঊর্মি আখতার l ছবি: সাহাদাত পারভেজ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের রোগীদের চিকিৎসা-সুবিধার জন্য সেখানে সাময়িকভাবে ১০ জন চিকিৎসক দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করে। যাত্রাবাড়ীতে বাসে পেট্রলবোমা হামলায় দগ্ধ দুজনকে গতকাল নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়েছে। এদিকে অবরোধ চলাকালে আগুনে দগ্ধ আটজনকে চিকিৎসা শেষে ছুটি দেওয়া হয়েছে। যে ১০ জন চিকিৎসককে বার্ন ইউনিটে সাময়িকভাবে দেওয়া হয়েছে তাঁরা সারুলিয়া ইউনিয়ন সাব-সেন্টার, সুলতানগঞ্জ ইউনিয়ন সাব-সেন্টার, তেজগাঁও থানা কমপ্লেক্স, মুগদা ও কুর্মিটোলা ৫০০ শয্যার হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। গতকাল বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত শুক্রবার যাত্রাবাড়ীর কাঠের পুল এলাকায় বাসে পেট্রলবোমা হামলায় দগ্ধ ২৯ যাত্রীর মধ্যে নূরে আলম ও নিরঞ্জনকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। ব্রিফিংয়ে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের শিক্ষক সাজ্জাদ খন্দকার আরও জানান, হরতাল-অবরোধের সময় আগুনে দগ্ধ রোগীদের মধ্যে আটজনকে চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন টিটন, জয়নাল, শহীদুল, মোশাররফ, সালাউদ্দিন, তানভীর ও স্বপ্না। এঁদের মধ্যে চারজন যাত্রাবাড়ীর কাঠের পুলে বাসে দগ্ধ হয়েছিলেন। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক উপদেষ্টা সামন্ত লাল সেন পরামর্শ দিয়েছেন, দগ্ধ হওয়ার পর থেকে আধা ঘণ্টা পর্যন্ত পোড়া জায়গায় পানি ঢালতে হবে। পাশাপাশি তিনি দরিদ্র অগ্নিদগ্ধ ব্যক্তিদের পুনর্বাসনে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, বাস, ট্রাক, অটোরিকশাচালকদের বেশির ভাগেরই হাত পুড়ে গেছে। এঁরা পুরোনো পেশায় ফিরে যেতে পারবেন কি না সংশয় আছে। পুনর্বাসনের উদ্যোগ না নিলে এঁদের অনেকেই ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নিতে বাধ্য হবেন। সংবাদ সম্মেলনে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারির বিভাগীয় প্রধান আবুল কালাম বলেন, একটি প্রতিষ্ঠান ১০ জনের দায়িত্ব নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। গতকাল ব্রিফিংয়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের আওয়ামী লীগের সাংসদ গাজী গোলাম দস্তগীর উপস্থিত ছিলেন। শুক্রবার যাত্রাবাড়ীর কাঠের পুল এলাকায় গুলিস্তান থেকে ভুলতাগামী বাসে যাঁরা দগ্ধ হয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই গোলাম দস্তগীর গাজীর নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা। তিনি বলেন, আহত ব্যক্তিদের একজন রূপগঞ্জের বিএনপির নেতা কাজী মনিরের কারখানার শ্রমিক। হামলা হয় এমন বাসে আওয়ামী লীগ, বিএনপির সমর্থক এমনকি বোমাবাজের স্বজনও থাকতে পারেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা যাঁরা স্যুট-টাই পরা রাজনীতি করি, আমরা তো পথে নামি না। টাকা দিয়ে ভাড়াটে লোককে কাজে লাগাই।’
অবরোধে দগ্ধ নতুন কোনো রোগী গতকাল বার্ন ইউনিটে ভর্তি হননি।

No comments

Powered by Blogger.