‘সরকার আমারে ডরায়’
চট্টগ্রামে গাড়ি পোড়ানোর দুই মামলায় বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর অভিযোগ গঠনের শুনানি আগামী ১০ই
নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে তাকে জেলা ও দায়রা জজ
আদালতে হাজির করা হয়। এই সময় বিচারক একেএম নাসিরউদ্দিন মাহমুদ অভিযোগ গঠনের
শুনানির জন্য ওই তারিখ নির্ধারণ করেন। জেলা পিপি এডভোকেট আবুল হাশেম বলেন,
‘বিচারক ১০ই নভেম্বর নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছেন। আদালতে জামিনে থাকা অন্য
আসামিরাও উপস্থিত ছিলেন।’
সূত্র জানায়, ২০১০ সালের ৭ই নভেম্বর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া এলাকায় গাড়িতে আগুন দেয়া ও ভাঙচুরের ঘটনায় সালাহউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা করা হয়েছিল।
সীতাকুণ্ড থানার এসআই গোলাম ফারুক ভূঁইয়া বাদী হয়ে অন্তর্ঘাতমূলক কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩)/২৫-ঘ ধারায় সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরীসহ ১৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
২০১১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পুলিশ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ ৭ জনকে আসামি করে চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
পরে মামলাটি চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারের জন্য পাঠানো হয়। কেবল মাত্র সালাহউদ্দিন কাদের ছাড়া বাকি সব আসামিকে এই মামলার চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়।
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন আইনজীবী এডভোকেট আবদুস সাত্তার বলেন, ‘সীতাকুণ্ড থানায় দায়ের হওয়া এ সব মামলায় ইতিমধ্যে তিনিসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়েছিল। পরে তা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে চার্জশিট হয়ে দাখিল করা হয়। এতে স্থানীয় বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীসহ সাত আসামির নাম বাদ দেয়া হয়। কিন্তু সালাউদ্দিন সাহেবের নাম বাদ দেয়া হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মামলাটি সালাহউদ্দিন কাদের সাহেবকে হয়রানি করতে দায়ের করা হয়েছে। তার নাম মামলার এজাহারে ছিল না। পরে চার্জশিটে এক আসামির স্বীকারোক্তির কথা উল্লেখ করে যুক্ত করা হয়েছে।’
গতকাল বুধবার এজলাসে যাওয়ার পথে প্রচণ্ড ভিড়ের কবলে পড়েন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের। তার দলীয় কর্মীরা তাকে জড়িয়ে ধরতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাধা দেন। এর আগে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মামলার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তাকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।
সকালে আদালত প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, বিএনপির এই আলোচিত নেতাকে ঘিরে ছিল জনতার ভিড়। তাকে দেখার জন্য দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা আদালতে জড়ো হতে থাকেন। এই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরা।
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী এই সময় ভিড়ের মধ্য থেকে উপস্থিত দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন। তিনি বলেন, কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না। সরকার আমারে ডরায়। ভুয়া মামলা দিয়ে আমারে আটকে রাখছে। বাইর হলে গর্জন শুনতে হবে।
হাত নেড়ে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী আরও বলেন, ‘আমি নাই। তাই বিএনপিকে ভালভাবে কাবু করতে চাইছে। কোন কিছুই সফল হবে না। সময়ের স্রোতে সব বঙ্গোপসাগরে ভেসে যাবে।’
বেলা ১০টায় আদালতের এজলাসে উপস্থিত হন বিএনপির এই নেতা। চট্টগ্রাম কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. ছগির মিয়া জানান, গাড়ি পোড়ানোর মামলায় হাজির করতে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে গত মঙ্গলবার রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে তাকে চট্টগ্রাম আনা হয়। কারাগারে তাকে অন্য বন্দিদের মতোই ডাল-ভাত-মাছ খেতে দেয়া হয়।
No comments