আজাদি মার্চের পেছনে কী? by মাহফুজার রহমান
প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের
পদত্যাগের দাবিকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানে গত কয়েক দিন ধরে অস্থিতিশীল
পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক
দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী
নওয়াজ শরিফকে হটাতে গত ১৪ আগস্ট লাহোর থেকে শুরু করেন আজাদি মার্চ। সেই
দাবি আদায়ে রাজধানী ইসলামাবাদে ঘাঁটি গেড়ে বসেছেন পিটিআইয়ের নেতা-কর্মীরা।
নওয়াজ পদত্যাগ না করা পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণাও দিয়েছেন তাঁরা।
ইসলামাবাদের সুরক্ষিত রেড জোনেও তঁারা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। একই দাবিতে
পৃথকভাবে ‘ইনকিলাব মার্চ’ চালিয়ে যাচ্ছেন পাকিস্তান আওয়ামি তেহরিকের
(পিএটি) নেতা তাহির উল-কাদরি।
নওয়াজকে হটাতে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নতুন নতুন মাত্রা যোগ কেরছেন ইমরান। ডাক দিয়েছেন অসহযোগ আন্দোলনের। পরে জাতীয় পরিষদ ও তিনটি প্রাদেশিক পরিষদ থেকেও তাঁর দলের নেতাদের পদত্যাগের ঘোষণা এসেছে। কিন্তু কথা হলো, ইমরানের এই আজাদি মার্চে কি টলবে নওয়াজের মসনদ?
এই প্রশ্নের উত্তর সরাসরি দেওয়া কঠিন। পাকিস্তানে রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণে রাজনীতিকেরা ছাড়াও আরও কিছু নিয়ামক আছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো সামরিক বাহিনী ও বিচার বিভাগ। নওয়াজের ভাগ্য নির্ধারণে ইমরানের আজাদি মার্চের চেয়েও এই দুই প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন অনেকে।
আজাদি মার্চ কেন?
২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে নওয়াজের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজ (পিএমএল-এন)। এই নির্বাচনেই প্রথমবারের মতো বড় ধরনের সাফল্য পায় ইমরানের পিটিআই। জাতীয় পরিষদে তৃতীয় বৃহত্তম দলের মর্যাদা পাওয়ার পাশাপাশি খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আবির্ভূত হয় তারা। এই নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ইমরান। এ ছাড়া বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, অর্থনীতিতে গতি ফিরিয়ে আনা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে নওয়াজ ব্যর্থ হয়েছেন বলে অভিযোগ ইমরানের। তাই নওয়াজের পদত্যাগ দাবি করে নতুন নির্বাচন চেয়েছেন তিনি। নওয়াজের পদত্যাগ ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের সংস্কারসহ অন্তত ১০টি দাবি নিয়ে ১৪ আগস্ট আজাদি মার্চ শুরু করেন ইমরান।
অন্য রাজনীতিকদের অবস্থান
সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দেওয়া ইমরান সহযোগী হিসেবে পাকিস্তানের তাহির উল-কাদরির দল পাকিস্তান আওয়ামি তেহরিক (পিএটি) ছাড়া উল্লেখ করার মতো আর কাউকে পাননি। এ কারণে সমমনা বলে পরিচিত পিএমএল-কিউ (চৌধুরী সুজাত), আওয়ামী মুসলিম লিগ (শেখ রশিদ), মজলিশ ওয়াহদাতুল মুসলিমিন (রাজা নাসির আব্বাস) ও সুন্নি ইত্তেহাদের (সাহেবজাদা হামিদ রাজা) মতো দলগুলোও ইমরানের সাফল্য নিয়ে সন্দিহান।
নওয়াজের পদত্যাগের দাবিতে ইমরান ও কাদরির মার্চ লাহোর থেকে একই দিনে পৃথকভাবে ইসলামাবাদ অভিমুখে যাত্রা করে। ইমরান ও কাদরি আনুষ্ঠানিকভাবে জোটবদ্ধ হননি। তাঁদের মতানৈক্যের জায়গাটা হলো, নওয়াজের পদত্যাগের পর ইমরান নতুন করে পার্লামেন্ট নির্বাচনের দাবি তুললে কাদরি স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। যদিও এর আগে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনের প্রস্তাব ছিল তাঁর। এবার দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বক্তৃতায় কাদরি বলেছেন, শুধু সরকারের পদত্যাগ নয়, পুরো প্রক্রিয়ারই পরিবর্তন চান তিনি।
এদিকে প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) নওয়াজের পদত্যাগের দাবির সঙ্গে একমত নয়। বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন জাতীয় পরিষদে পিপিপির সংসদীয় দলের নেতা সৈয়দ খুরশিদ আহমেদ শাহ। আর পিপিপির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, গণতন্ত্রে অসহযোগ আন্দোলনের কোনো স্থান নেই। এর ফলে গণতন্ত্র ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। জারদারি আলোচনার মাধ্যমে দাবিদাওয়ার মীমাংসা করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।
কোনো কোনো বিশ্লেষকের মতে, পিপিপির এই অবস্থানের কারণ হলো জারদারির বিরুদ্ধে ঝুলে থাকা দুর্নীতির মামলা। পিপিপি আন্দোলনে গেলেই সরকার মামলা সচল করবে। সেই ঝুঁকি নিতে চায় না দলটি।
এদিকে শুরু থেকেই নওয়াজের পদত্যাগের দাবি নাকচ করে দিয়ে আসছেন পিএমএল-এনের নেতারা। তাঁরা এই দাবিকে ‘অসাংবিধানিক’ ও ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
সামরিক বাহিনীর ভূমিকা
পাকিস্তানের রাজনীতিতে সামরিক বাহিনী যে কত বড় খেলোয়াড়, তা বোঝার জন্য দুটি তথ্যই যথেষ্ট। ১৯৪৭ সালে দেশটির জন্মের পর সেখানে এখন পর্যন্ত বেশির ভাগ সময়ই ক্ষমতায় ছিলেন সরাসরি কোনো সামরিক শাসক কিংবা উর্দি ছেড়ে দিয়ে গণতন্ত্রকে ঢাল বানানো কোনো সামরিক নেতা। আর দেশটির ৬৭ বছরের ইতিহাসে গত বছরই কেবল গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কোনো সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং নতুন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ কারণেই প্রশ্ন উঠেছে, ইমরান কি সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে সাংঘর্ষিক অবস্থা সৃষ্টি করছেন? সামরিক বাহিনী কি পেছন থেকে উসকানি দিচ্ছে? যদিও সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যে সমঝোতার জন্য সরকার ও বিরোধী উভয়পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
সামরিক বাহিনী যে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজের ওপর আদৌ সন্তুষ্ট নয়, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। সাবেক সেনাশাসক পারভেজ মোশাররফকে বিচারের মুখোমুখি করেছেন তিনি। এটা পছন্দ হয়নি উর্দিধারীদের। ১৯৯৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলেন মোশাররফ। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা চলছে। এ ছাড়া তালেবানের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানোর বিষয়ে নওয়াজের সিদ্ধান্তহীনতা এবং চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের নীতিও ভালো লাগেনি শীর্ষ সামরিক সামরিক কর্মকর্তাদের।
পাকিস্তানি একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, হয় সামরিক বাহিনী নওয়াজকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য ইমরানকে সাহস দিয়েছে, নয়তো নওয়াজের প্রতি সামরিক নেতাদের নাখোশ হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে ইমরান নিজেই সেই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ওই বিশ্লেষক আরও বলেন, নওয়াজের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সম্পর্ক শূন্যের কোঠায় না পৌঁছে থাকলে আজাদি মার্চ থেকে কোনো ফায়দা নিতে পারবেন না ইমরান।
চলমান সংকট নিয়ে পরামর্শের জন্য সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরিফের কাছে দূত পাঠন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ। নওয়াজের দূতেরা জানিয়েছেন, সামিরক বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটাবেনা বলে আশ্বাস দিয়েছে। তবে এর বিনিময়ে তাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে কিছু জায়গায় ছাড় দিতে হবে। এই ছাড় দেওয়ার মানে হলো পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, নিরাপত্তা ও কৌশলগত নীতিতে জেনারেলদের কর্তৃত্ব বেড়ে যাওয়া। যার অর্থ দাঁড়ায়, আবারও চালকের আসনে আসীন হতে চাইছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী।
নওয়াজকে হটাতে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নতুন নতুন মাত্রা যোগ কেরছেন ইমরান। ডাক দিয়েছেন অসহযোগ আন্দোলনের। পরে জাতীয় পরিষদ ও তিনটি প্রাদেশিক পরিষদ থেকেও তাঁর দলের নেতাদের পদত্যাগের ঘোষণা এসেছে। কিন্তু কথা হলো, ইমরানের এই আজাদি মার্চে কি টলবে নওয়াজের মসনদ?
এই প্রশ্নের উত্তর সরাসরি দেওয়া কঠিন। পাকিস্তানে রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণে রাজনীতিকেরা ছাড়াও আরও কিছু নিয়ামক আছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো সামরিক বাহিনী ও বিচার বিভাগ। নওয়াজের ভাগ্য নির্ধারণে ইমরানের আজাদি মার্চের চেয়েও এই দুই প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন অনেকে।
আজাদি মার্চ কেন?
২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে নওয়াজের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজ (পিএমএল-এন)। এই নির্বাচনেই প্রথমবারের মতো বড় ধরনের সাফল্য পায় ইমরানের পিটিআই। জাতীয় পরিষদে তৃতীয় বৃহত্তম দলের মর্যাদা পাওয়ার পাশাপাশি খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আবির্ভূত হয় তারা। এই নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ইমরান। এ ছাড়া বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, অর্থনীতিতে গতি ফিরিয়ে আনা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে নওয়াজ ব্যর্থ হয়েছেন বলে অভিযোগ ইমরানের। তাই নওয়াজের পদত্যাগ দাবি করে নতুন নির্বাচন চেয়েছেন তিনি। নওয়াজের পদত্যাগ ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের সংস্কারসহ অন্তত ১০টি দাবি নিয়ে ১৪ আগস্ট আজাদি মার্চ শুরু করেন ইমরান।
অন্য রাজনীতিকদের অবস্থান
সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দেওয়া ইমরান সহযোগী হিসেবে পাকিস্তানের তাহির উল-কাদরির দল পাকিস্তান আওয়ামি তেহরিক (পিএটি) ছাড়া উল্লেখ করার মতো আর কাউকে পাননি। এ কারণে সমমনা বলে পরিচিত পিএমএল-কিউ (চৌধুরী সুজাত), আওয়ামী মুসলিম লিগ (শেখ রশিদ), মজলিশ ওয়াহদাতুল মুসলিমিন (রাজা নাসির আব্বাস) ও সুন্নি ইত্তেহাদের (সাহেবজাদা হামিদ রাজা) মতো দলগুলোও ইমরানের সাফল্য নিয়ে সন্দিহান।
নওয়াজের পদত্যাগের দাবিতে ইমরান ও কাদরির মার্চ লাহোর থেকে একই দিনে পৃথকভাবে ইসলামাবাদ অভিমুখে যাত্রা করে। ইমরান ও কাদরি আনুষ্ঠানিকভাবে জোটবদ্ধ হননি। তাঁদের মতানৈক্যের জায়গাটা হলো, নওয়াজের পদত্যাগের পর ইমরান নতুন করে পার্লামেন্ট নির্বাচনের দাবি তুললে কাদরি স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। যদিও এর আগে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনের প্রস্তাব ছিল তাঁর। এবার দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বক্তৃতায় কাদরি বলেছেন, শুধু সরকারের পদত্যাগ নয়, পুরো প্রক্রিয়ারই পরিবর্তন চান তিনি।
এদিকে প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) নওয়াজের পদত্যাগের দাবির সঙ্গে একমত নয়। বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন জাতীয় পরিষদে পিপিপির সংসদীয় দলের নেতা সৈয়দ খুরশিদ আহমেদ শাহ। আর পিপিপির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, গণতন্ত্রে অসহযোগ আন্দোলনের কোনো স্থান নেই। এর ফলে গণতন্ত্র ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। জারদারি আলোচনার মাধ্যমে দাবিদাওয়ার মীমাংসা করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।
কোনো কোনো বিশ্লেষকের মতে, পিপিপির এই অবস্থানের কারণ হলো জারদারির বিরুদ্ধে ঝুলে থাকা দুর্নীতির মামলা। পিপিপি আন্দোলনে গেলেই সরকার মামলা সচল করবে। সেই ঝুঁকি নিতে চায় না দলটি।
এদিকে শুরু থেকেই নওয়াজের পদত্যাগের দাবি নাকচ করে দিয়ে আসছেন পিএমএল-এনের নেতারা। তাঁরা এই দাবিকে ‘অসাংবিধানিক’ ও ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
সামরিক বাহিনীর ভূমিকা
পাকিস্তানের রাজনীতিতে সামরিক বাহিনী যে কত বড় খেলোয়াড়, তা বোঝার জন্য দুটি তথ্যই যথেষ্ট। ১৯৪৭ সালে দেশটির জন্মের পর সেখানে এখন পর্যন্ত বেশির ভাগ সময়ই ক্ষমতায় ছিলেন সরাসরি কোনো সামরিক শাসক কিংবা উর্দি ছেড়ে দিয়ে গণতন্ত্রকে ঢাল বানানো কোনো সামরিক নেতা। আর দেশটির ৬৭ বছরের ইতিহাসে গত বছরই কেবল গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কোনো সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং নতুন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ কারণেই প্রশ্ন উঠেছে, ইমরান কি সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে সাংঘর্ষিক অবস্থা সৃষ্টি করছেন? সামরিক বাহিনী কি পেছন থেকে উসকানি দিচ্ছে? যদিও সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যে সমঝোতার জন্য সরকার ও বিরোধী উভয়পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
সামরিক বাহিনী যে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজের ওপর আদৌ সন্তুষ্ট নয়, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। সাবেক সেনাশাসক পারভেজ মোশাররফকে বিচারের মুখোমুখি করেছেন তিনি। এটা পছন্দ হয়নি উর্দিধারীদের। ১৯৯৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলেন মোশাররফ। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা চলছে। এ ছাড়া তালেবানের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানোর বিষয়ে নওয়াজের সিদ্ধান্তহীনতা এবং চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের নীতিও ভালো লাগেনি শীর্ষ সামরিক সামরিক কর্মকর্তাদের।
পাকিস্তানি একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, হয় সামরিক বাহিনী নওয়াজকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য ইমরানকে সাহস দিয়েছে, নয়তো নওয়াজের প্রতি সামরিক নেতাদের নাখোশ হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে ইমরান নিজেই সেই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ওই বিশ্লেষক আরও বলেন, নওয়াজের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সম্পর্ক শূন্যের কোঠায় না পৌঁছে থাকলে আজাদি মার্চ থেকে কোনো ফায়দা নিতে পারবেন না ইমরান।
চলমান সংকট নিয়ে পরামর্শের জন্য সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরিফের কাছে দূত পাঠন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ। নওয়াজের দূতেরা জানিয়েছেন, সামিরক বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটাবেনা বলে আশ্বাস দিয়েছে। তবে এর বিনিময়ে তাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে কিছু জায়গায় ছাড় দিতে হবে। এই ছাড় দেওয়ার মানে হলো পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, নিরাপত্তা ও কৌশলগত নীতিতে জেনারেলদের কর্তৃত্ব বেড়ে যাওয়া। যার অর্থ দাঁড়ায়, আবারও চালকের আসনে আসীন হতে চাইছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী।
No comments