প্লেবয় যুদ্ধে নেইমার
সাও পাওলোর একটি আদালত নেইমারের সাবেক
বান্ধবী প্যাট্রিসিয়া জর্দানের একটি সেক্সি পোজ সংবলিত প্লেবয় পত্রিকার
কপি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। অন্যথায় পত্রিকাটিকে প্রতিবেদনের জন্য
৪৫০০ ডলারের জরিমানা গুনতে হবে। রয়টার্স ও এপি’র মতো সংবাদ সংস্থা নেইমারের
‘প্লেবয়-যুদ্ধ নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিচারক
অ্যান্দ্রিয়া গালগার্দো পালমা তার আদেশে বলেছেন, প্লেবয়ের আর কোন কপি
বিক্রি করা যাবে না। বরং সমস্ত নিউজ স্ট্যান্ড থেকে প্লেবয় তুলে নিতে হবে।
প্লেবয় প্রকাশনা সংস্থা গ্রুপের অ্যাবরিল এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে
পারেন। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত কোন ঘোষণা দেননি।
ব্রাজিলের প্লেবয়ের সম্পাদক সের্গিও হাভিয়ার এক ই-মেইল প্রতিক্রিয়ায় এপিকে বলেন, কোন আইনি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত তারা কোন ফরমান পাননি। তাই জুন সংখ্যা সারা দেশের বাজারে আগের মতোই সহজলভ্য থাকবে। জুনের গোড়ায় প্লেবয় নিউজস্ট্যান্ডে হিট করার পর প্যাট্রিসিয়া বলেন, নেইমারের সঙ্গে তিনি একদা রোমান্টিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। ২০১৩ সালে তারা দুজনে একসঙ্গে তিন মাস ডেটিং করেছেন। এর অবসান ঘটেছিল যখন নেইমার তার বর্তমান বান্ধবী ব্রাজিলীয় টিভি তারকা ব্রুনা মার্কেজিনের প্রেমে পড়েন। অবশ্য ব্রুনোর সঙ্গে গত জানুয়ারিতে তার সম্পর্ক ভেঙে পড়ার খবর বেরিয়েছিল।
গত ১২ই জুন ব্রাজিল ও ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচের আগে নেইমার দু’জনের একটি ছবি অনলাইনে পোস্ট করলে অনুমান করা হয় যে, তারা আবারও জুটি বেঁধেছেন। অষ্টাদশী ব্রুনোকে অবশ্য প্যাট্রিসিয়া ঈর্ষা করেন। কারণ ‘ড্যান্সিং উইথ দ্যা টিয়ার্স’’ তারকা ব্রুনোর ৩০ লাখ ফ্যান রয়েছে তার ইন্সট্রাগ্রাম অ্যাকাউন্টে।
২১ বছর বয়সী জর্দান প্লেবয়কে বলেন, নেইমার মানুষ হিসেবে চমৎকার। তাঁর হাস্যরসবোধ অসামান্য। ওঁর সঙ্গে রিও তে আমার প্রথম চোখাচোখি হয়। সেটা ২০১২ সালের ডিসেম্বরের কথা। তখন কিছুই ঘটেনি। এরপর ওঁর সঙ্গে আবার সাক্ষাৎ হয় একটি সমুদ্র সৈকতে। কাকতালীয়ভাবে সেটা ছিল বর্ষবরণের উপলক্ষ। প্লোরিয়ানপলিসের বীচে দেখা হলো। কথা হলো। এরপর থেকে আমরা নিয়মিতভাবে মিলিত হতে থাকি। ব্রুনো ওর জীবনে প্রবেশের আগ পর্যন্ত আমরা ভালই ছিলাম।’
জর্দান আরও বলেন, খেলার মাঠে একটি বাধা-ধরা নিয়ম মেনে খেলতে হয়। কিন্তু শয্যায় কোন বাধা-ধরা নিয়ম নেই। যাকে তুমি পছন্দ করো তার সঙ্গে কোন রাখঢাক নেই। কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। সমালোচকরা বলছেন, ব্রাজিলীয় মিডিয়ার অনেকেই বলছেন, নেইমারের সঙ্গে ওর ঘনিষ্ঠতা বানানো, অতিরঞ্জিত।
তারা বলছেন, নেইমার কেবল মাঠের লড়াইয়ে জয় পাচ্ছেন তাই নয়, তিনি অব্যর্থ গোল করতে পেরেছেন আইনি লড়াইয়েও। ফুটবল প্লেবয় নেইমার ব্রাজিলের সাময়িকী প্লেবয়ের সঙ্গে যুদ্ধে আছেন। তবে এতে তিনি যে জয় পাবেনই সেটা বলা কঠিন।
আদালতে নেইমার আর্জি দিয়েছিলেন ব্রাজিল থেকে প্রকাশিত প্লেবয়ের চলতি সংখ্যা বাজার থেকে তুলে নিতে হবে। কারণ এতে তার সাবেক বান্ধবী, না ঠিক হলো না, কারণ নেইমার ভুলেও স্বীকার করেননি যে, মেয়েটি তার সাবেক বান্ধবী, বরং নেইমারের ফুটবল কেরিয়ারের আইনি অভিভাবক এন আর স্পোর্টস প্যাট্রিসিয়া জর্দানকে নেইমারের ইমপোস্টার গার্লফ্রেন্ড বা স্বঘোষিত বান্ধবী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। কিন্তু স্বঘোষিত বলে দিলেই তো হলো না। নেইমারের অসংখ্য রোমান্টিক ছবি রয়েছে প্যাট্রিসিয়ার সঙ্গে।
প্লেবয়ের কভারে তাকে দেখা যাচ্ছে সেক্সি ভঙ্গিতে। শরীরের বিশেষ ভাঁজে লেখা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, ‘‘প্যাট্রিসিয়া জর্দান, দি ব্রান্টি দ্যাট এনচ্যান্টেড নেইমার’’। এই আলোকচিত্র প্রকাশ করে প্লেবয় কোন অন্যায় করেনি। কারণ এটা মিথ্যা নয়। আর আদালত প্লেবয়ের এই সংখ্যাটি তুলে নিতে বললেও এই সংখ্যাটি যেভাবে ঝড় তুলেছে সে তুলনায় প্রতিদিন ৪৫০০ ডলারের জরিমানা তুচ্ছ মনে করা হচ্ছে। এমনকি মনে করা হচ্ছে প্লেবয় বাজার থেকে একটি কপিও না সরিয়ে তার পক্ষে পরবর্তী আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি লাভজনক মনে হতে পারে। ৪৫০০ ডলার করে জরিমানা অন্তত বিশ্বকাপ ফাইনাল পর্যন্ত ধরে রাখা হতে পারে। গত বুধবার আদালত ওই আদেশ দিলেও প্লেবয় এখনও পর্যন্ত তা তামিল করার কোন মনোভাব দেখাচ্ছে না।
নেইমারের পক্ষে প্রচারিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নেইমার জুনিয়রের ব্যক্তি জীবন সম্পর্কে প্লেবয় মিথ্যা ছড়িয়েছে। এটা করতে গিয়ে তারা নেইমারের আইনি অভিভাবক এন আর স্পোর্টের কাছ থেকে কোন অনুমতি নেয়নি। এতে আইনের লঙ্ঘন ঘটেছে। কারণ নেইমারের সুনাম, যশ, প্রভাব, প্রেস্টিজ সব কিছুই এন আর স্পোর্টের সঙ্গে বাঁধা। তারা অবশ্য বিস্তারিত আর কিছুই বলেনি।
No comments