শেখ হাসিনার জাপান সফর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরটি নানা কারণে গুরুত্ববহ ও তাৎপর্যপূর্ণ বলে আমরা মনে করি৷ জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও তিনি সে দেশের ব্যবসায়ী নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সুহৃদ ও তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন৷ এসব মতবিনিময়ে যে সহযোগিতার দুয়ার খুলে যায় তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ জাপানি প্রধানমন্ত্রী আবের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকের পর ঢাকা ও টোকিও থেকে প্রকাশিত যৌথ ইশতেহারে দুই দেশের মধ্যে অংশীদারির নবযুগের সূচনা হয়েছে বলে যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তাকে গতানুগতিক ভাবার কারণ নেই৷ দুই নেতা বিশ্ব শান্তি, স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, আঞ্চলিক সমৃদ্ধি অর্জনে একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করার পাশাপাশি যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন৷ এখন থেকে নিয়মিত দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবেরা বসবেন৷ এ ছাড়া বিনিয়োগ, বাণিজ্য, শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা নিয়েও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে৷ ১৯৭২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর জাপান বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে একক দেশ হিসেবে সর্বাধিক সহায়তা দিয়েছে, যার পরিমাণ প্রায় ১১০০ কোটি ডলার৷
তবে প্রধানমন্ত্রীর এ সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, জাপানের কাছ থেকে অবকাঠামো উন্নয়নে আরও ৬০০ কোটি ডলার সহায়তার ঘোষণা৷ দেশটি গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণ, যমুনার নিচ দিয়ে বহুমুখী টানেল নির্মাণ, যমুনায় পৃথক রেলসেতু নির্মাণ, ঢাকায় ইস্টার্ন বাইপাস নির্মাণ প্রভৃতি প্রকল্পে এই সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে, যদিও এর বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শেষ হতে চার থেকে পাঁচ বছর লেগে যাবে৷ স্মরণীয় যে বর্তমান যুগে কেবল বিদেশি সহায়তা দিয়ে কোনো দেশ স্বাবলম্বী হতে পারে না৷ এ জন্য প্রধানমন্ত্রী যথার্থই জাপানের ব্যবসায়ীদের প্রতি অধিক হারে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন৷ তিনি জাপানি ব্যবসায়ীদের জন্য রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় ৪০টি শিল্প প্লট নির্দিষ্ট রাখারও ঘোষণা দেন৷ কিন্তু যে বিষয়টি এখানে গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো, জাপানের এই সহায়তা পেতে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও বিনিয়োগ অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে৷ যেকোনো প্রকল্প বাস্তবায়নে যে অবকাঠামোগত সুবিধা, তথা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ প্রয়োজন, সেটি সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে৷
তবে প্রধানমন্ত্রীর এ সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, জাপানের কাছ থেকে অবকাঠামো উন্নয়নে আরও ৬০০ কোটি ডলার সহায়তার ঘোষণা৷ দেশটি গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণ, যমুনার নিচ দিয়ে বহুমুখী টানেল নির্মাণ, যমুনায় পৃথক রেলসেতু নির্মাণ, ঢাকায় ইস্টার্ন বাইপাস নির্মাণ প্রভৃতি প্রকল্পে এই সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে, যদিও এর বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শেষ হতে চার থেকে পাঁচ বছর লেগে যাবে৷ স্মরণীয় যে বর্তমান যুগে কেবল বিদেশি সহায়তা দিয়ে কোনো দেশ স্বাবলম্বী হতে পারে না৷ এ জন্য প্রধানমন্ত্রী যথার্থই জাপানের ব্যবসায়ীদের প্রতি অধিক হারে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন৷ তিনি জাপানি ব্যবসায়ীদের জন্য রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় ৪০টি শিল্প প্লট নির্দিষ্ট রাখারও ঘোষণা দেন৷ কিন্তু যে বিষয়টি এখানে গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো, জাপানের এই সহায়তা পেতে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও বিনিয়োগ অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে৷ যেকোনো প্রকল্প বাস্তবায়নে যে অবকাঠামোগত সুবিধা, তথা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ প্রয়োজন, সেটি সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে৷
পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়নে সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির পাশাপাশি দক্ষ জনশক্তির বিকল্প নেই৷ অন্যদিকে, রাজনৈতিক স্থিতি না এলে যেকোনো বৃহৎ প্রকল্পের বাস্তবায়ন মাঝপথে থেমে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়৷ তাই জাপানের সহায়তাকে স্বাগত জানিয়েও যে কথাটি বলা জরুরি, তা হলো, সেই সহায়তা আনা এবং তার সদ্ব্যবহারের ওপরই নির্ভর করবে প্রতিশ্রুত জাপানি সহায়তা দেশের জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কতটা ভূমিকা রাখবে৷ আমরা এ প্রসঙ্গে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কথা স্মরণ করতে পারি৷ ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রাথমিক পর্যায়েই অস্বচ্ছতা ও অনিয়মের অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়, যার মধ্যে জাপানের বৈদেশিক সহায়তা সংস্থা জাইকাও ছিল৷ জাপানের সহায়তার খবরটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য এক বড় প্রাপ্তি, তবে এই সহায়তা কাজে লাগানোর দিকেই সর্বাত্মক চেষ্টা চালাতে হবে৷
No comments