দিল্লির গদিতে বসছেন আম আদমি-অরবিন্দ
সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দিল্লিতে গঠিত হতে যাচ্ছে আম-আদমি পার্টির সরকার। রাজধানীর সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সরকার গঠনের জন্য ব্যাপক সমর্থন পায় দলটি। অবশেষে কেন্দ্রীয় সরকারের সমর্থনে সরকার গঠন করতে চলেছে আম-আদমি পার্টি।সোমবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানিয়েছিলেন আম-আদমি পার্টির (এএপি) নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। মুখ্যমন্ত্রীও যে তিনি হচ্ছেন জানানো হয়েছিল সে কথাও। এরপর দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর নাজিব জংয়ের সঙ্গে দেখা করে এএপির তরফে এক চিঠিতে অরবিন্দ জানান, বেশির ভাগ মানুষের রায় মেনে তারা দিল্লিতে সরকার গঠনে প্রস্তুত। পরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার নয়, এ জয় আম-আদমির (সাধারণ মানুষ) জয়, আমি নই- ভারতের আম-আদমিই হবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন সকালে এএপির রাজনীতিবিষয়ক কমিটির বৈঠক বসে। আলোচনা শেষে আম-আদমি পার্টির নেতা মণীশ সিসোদিয়া সংবাদ বৈঠকে জানান, ইন্টারনেটের মাধ্যমে গোটা দেশ থেকে প্রায় ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৮৪ জন তাদের মতামত জানিয়েছেন।
এর মধ্যে ২ লাখ ৬৫ হাজার ৯৬৬ জন দিল্লিবাসী। এই বিপুলসংখ্যক মানুষের ৭৪ শতাংশই মনে করেন এএপির সরকার গঠন করা উচিত। সংখ্যাটা প্রায় ১ লাখ ৫৭ হাজার। এছাড়া দিল্লিতে রোববার রাত পর্যন্ত যে ২৮০টি সভা করেছে এএপি, তার মধ্যে ২৫৭টি সভাতেই মানুষের রায়, এএপির সরকার গঠনের পক্ষে। এরপর, এএপির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানান, গত ১৪ ডিসেম্বর দিল্লির উপ-রাজ্যপাল সরকার গঠন বিষয়ে পরামর্শ করতে তাদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন। ১০ দিন সময় চেয়েছিলেন তারা। এর মধ্যে দিল্লির মানুষের কাছে এএপির তরফে এ বিষয়ে মতামত জানতে চাওয়া হয়। বিপুলসংখ্যক মানুষের মত, এএপির দিল্লিতে সরকার গঠন করুক। সেই রায়কে সম্মান জানাতেই এএপি সরকার গঠন করতে প্রস্তুত বলে জানান অরবিন্দ। এরপর, মণীশ সিসোদিয়া জানান, সর্বসম্মতিক্রমে এএপির ২৮ বিধায়কই অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে তাদের নেতা হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। নতুন সরকারের মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দই হচ্ছেন বলে জানান মণীশ। উল্লেখ্য, ৪৫ বছর বয়সী অরবিন্দ মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলে তিনিই হবেন দিল্লির সর্বকনিষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রী। দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত এএপির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘কংগ্রেস এই সরকারকে শর্তহীনভাবে সমর্থন করছে না। তবুও অরবিন্দের জন্য আমার শুভকামনা রইল।
দিল্লিবাসীকে যে প্রতিশ্র“তি এএপি দিয়েছিল, সেগুলো অবশ্যই পূরণ করা উচিত।’ যদিও বিজেপি নেতা হর্ষবর্ধন মনে করেন, এএপি জনসাধারণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। যে কংগ্রেসকে মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে, তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এএপি পেছনের দরজা দিয়ে সরকারে যাচ্ছে বলে জানান তিনি। অন্যদিকে, নাজিব জংয়ের সঙ্গে দেখা করে অরবিন্দ কেজরিওয়াল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে চিঠি লিখে সরকার গঠনের কথা জানানো হয়েছে। এরপর তিনি বলেন, ‘লেফটেন্যান্ট গভর্নর ওই চিঠি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে নির্দেশ এলেই শপথ গ্রহণের দিন নির্ধারণ করা হবে। তবে প্রাথমিক আলোচনায় ঠিক হয়েছে, দুর্নীতি দমন বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে যেখান থেকে অরবিন্দর রাজনৈতিক জীবনের উত্থান সেই রামলীলা ময়দানেই জনগণের উপস্থিতিতে প্রাথমিকভাবে তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। তবে ঠিক কোন দিন এই শপথ অনুষ্ঠিত হবে তা এখনও জানা যায়নি। দলীয় নেতাদের ধারণা আসছে শুক্রবারই হতে পারে সেই দিন।
No comments