কোন পরিণতির দিকে দেশ?
হাওয়ায় নানা কথা ভাসছে ক’দিন ধরে।
প্রেসিডেন্ট হবেন হাসিনা, গ্রেফতার হবেন খালেদা, জারি হবে জরুরি অবস্থা,
‘আমার দেশ’ ‘নয়া দিগন্ত’ ‘দিগন্ত টিভি’ বন্ধ হবে, ‘আমাদের দেশ’-এর
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান গ্রেফতার হবেন... আরও অনেক কিছু।
এর
মধ্যে মাহমুদুর রহমানের গ্রেফতারের পর মনে হচ্ছে অন্য সব হাওয়ার কথাও হয়তো
স্রেফ কথা নয়, কিছু আছে মূলে। যা কিছু রটে, তা কিছু বটে - সেই পুরনো
কথাটাই তাহলে মিছে হয়ে যায় নি একেবারে।
গ্রেফতারের খবরে নতুনত্ব আর কিছু নেই, ক’ মাস ধরেই চলছে এ সব। বিরোধী শীর্ষ নেতা-কর্মীদের মধ্যে বলতে গেলে বাকি আর কেউ নেই, কারাগারেও আর নেই তিল ঠাঁই। মামলা আর পুলিশ দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক যন্ত্রগুলোকে প্রায় অকেজো করে ফেলেছে সরকার। বেশ দাপটের সঙ্গেই করেছে। করে চলেছেও। সরকারের হাতে সবসময়ই যন্ত্র থাকে বেশি, কাজেই একটু মাথা খাটিয়ে ওগুলো ব্যবহার করতে অসুবিধা হয় নি তেমন। তা ব্যবহার করা হয়েছে ভালভাবেই। বিএনপি-জামায়াত এখন না পারছে খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে চলতে, না পারছে মাথা বের করতে।
তবে বাংলাদেশে নব্বই দশক থেকে চলমান অনুদার গণতন্ত্রের মধ্যেও কোনও সরকারই ক্ষমতায় আসতে পারে নি দ্বিতীয় দফায়। এক দলের সরকারকে টপকে গঠিত হয়েছে আরেক দলের সরকার। এই টপকে যাওয়ার ক্ষেত্রে দেখা গেছে, এতে নতুন সরকারের কৃতিত্ব যতখানি তার চেয়ে কম নেই আগের সরকারের ভূমিকা। ভূমিকা না বলে অবদান বলাই ভাল। কারণ সরকারে যাওয়ার পর তারা কা-কীর্তি যা করেন তা বিরোধী পক্ষেরই ক্ষমতা পাওয়ার উপায় করে দেয় বেশি। বলা হয়, এ ভয়েই কখনও ক্ষমতায় যেতে চান নি মওলানা ভাসানী। আর ইয়াহিয়া খান যে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন তা এই ভেবে যে ছ’ মাসের মধ্যেই আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা তিনি হারাবেন!
কাজেই বর্তমান সরকার অনেকাংশে কাজ করে যান পরবর্তী সরকারের জন্য। এ সরকারও তা-ই করে চলেছেন। তবে তাদের ধারণা, পরবর্তী সরকারও হবে তাদের। তাহলে অবশ্যই এ দেশে স্থাপিত হবে এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত। কিন্তু কাজটা হবে কিভাবে? যুক্তির জোর না দেখিয়ে জোরের যুক্তি দিয়ে বিএনপি-জামায়াতকে কাবু করা গেলেও নতুন শক্তি হেফাজতে ইসলামকে কি সরানো যাবে মিষ্টি কথা বলে বা চোখ রাঙিয়ে। সরকার, মনে হয়, প্রয়োগ করতে চাইছে দুই অস্ত্রই। তাই একেক মন্ত্রীর মুখে শুনছি একেক রকম কথা।
যেমন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা, দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুব-উল-আলম হানিফ জানিয়েছেন, হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফার মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা, পাঠ্যপুস্তকের বিষয়সহ ৩-৪টি দাবি মেনে নেয়া হয়েছে এর মধ্যেই। এ ছাড়া আরও যে দু’-একটি যৌক্তিক দাবি রয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে সরকার ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ভেবে দেখা হচ্ছে। এসব দাবি নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে এবং চলমান সঙ্কটময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করছি আমি। তিনি বলেন, আলোচনার জন্য সরকার ও আওয়ামী লীগ প্রস্তুত। তবে নারী নীতি সহ আর যে সব দাবি তাঁরা তুলেছেন, সেগুলো আসলেই মধ্যযুগীয় দাবি। এটা তাঁরাও বুঝতে পারবেন। আর আলোচনা হলেও হেফাজতের নারী স্বাধীনতা, শিক্ষানীতি, ভাস্কর্য এসব বিষয়ে সমঝোতার কোনও সম্ভাবনা নেই।
তবে সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেছেন, ইসলামের হেফাজতের নামে তাঁরা যতই গর্জন করুক ততটা বর্ষণ হবে না। মাওলানা সাহেবদের সম্মান দেখাতে গিয়ে ‘হুজুর’ সম্বোধন করায় তাঁরা পেয়ে বসেছেন। তাঁরা ভেবেছেন হুঙ্কার দিলেই সরকার তাঁদের কাছে যাবে। কিন্তু না, ৩০শে এপ্রিলের মধ্যে তাঁরা দাবি বাস্তবায়নের হুমকি দিলেও এর আগেই তাঁদের আন্দোলনে ভাটা পড়ে যাবে। এ কারণেই সরকার বা আওয়ামী লীগ এটা নিয়ে চিন্তিত নয়। তবে এ সংগঠনটির কর্মকাণ্ডে সরকার গভীরভাবে নজরদারি করছে, তাঁদের গতিবিধি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে। তিনি বলেন, হেফাজতের ১৩ দফা দাবি জামায়াত বা বিএনপিও বাস্তবায়ন করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের তো প্রশ্নই ওঠে না। এমন কি তাঁরা নিজেরাও বাস্তবায়ন করতে পারবেন না। আমাদের জোটের ১৪ দলের আন্দোলন কর্মসূচি আরও বেগবান করার মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামসহ জামায়াত-বিএনপির যে কোনও আন্দোলন প্রতিহত করা হবে। কোনও পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নয়।
তাহলে আলোচনা বা সংলাপ না চললে কি জোরের যুক্তিই চলতে থাকবে এমন অব্যাহত ভাবে? ইরানের শাহ, পাকিস্তানের জুলফিকার ভুট্টো, আফগানিস্তানের মসকোপন্থি শাসকেরা, মিশরের হোসনি মোবারক যে ভুল করেছিলেন, যে পথে চলেছিলেন তার পরিণতি কি হয়েছে তা সকলেরই জানা। অমন বিপদের আশঙ্কা এখন করছেন অনেকেই।
গ্রেফতারের খবরে নতুনত্ব আর কিছু নেই, ক’ মাস ধরেই চলছে এ সব। বিরোধী শীর্ষ নেতা-কর্মীদের মধ্যে বলতে গেলে বাকি আর কেউ নেই, কারাগারেও আর নেই তিল ঠাঁই। মামলা আর পুলিশ দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক যন্ত্রগুলোকে প্রায় অকেজো করে ফেলেছে সরকার। বেশ দাপটের সঙ্গেই করেছে। করে চলেছেও। সরকারের হাতে সবসময়ই যন্ত্র থাকে বেশি, কাজেই একটু মাথা খাটিয়ে ওগুলো ব্যবহার করতে অসুবিধা হয় নি তেমন। তা ব্যবহার করা হয়েছে ভালভাবেই। বিএনপি-জামায়াত এখন না পারছে খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে চলতে, না পারছে মাথা বের করতে।
তবে বাংলাদেশে নব্বই দশক থেকে চলমান অনুদার গণতন্ত্রের মধ্যেও কোনও সরকারই ক্ষমতায় আসতে পারে নি দ্বিতীয় দফায়। এক দলের সরকারকে টপকে গঠিত হয়েছে আরেক দলের সরকার। এই টপকে যাওয়ার ক্ষেত্রে দেখা গেছে, এতে নতুন সরকারের কৃতিত্ব যতখানি তার চেয়ে কম নেই আগের সরকারের ভূমিকা। ভূমিকা না বলে অবদান বলাই ভাল। কারণ সরকারে যাওয়ার পর তারা কা-কীর্তি যা করেন তা বিরোধী পক্ষেরই ক্ষমতা পাওয়ার উপায় করে দেয় বেশি। বলা হয়, এ ভয়েই কখনও ক্ষমতায় যেতে চান নি মওলানা ভাসানী। আর ইয়াহিয়া খান যে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন তা এই ভেবে যে ছ’ মাসের মধ্যেই আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা তিনি হারাবেন!
কাজেই বর্তমান সরকার অনেকাংশে কাজ করে যান পরবর্তী সরকারের জন্য। এ সরকারও তা-ই করে চলেছেন। তবে তাদের ধারণা, পরবর্তী সরকারও হবে তাদের। তাহলে অবশ্যই এ দেশে স্থাপিত হবে এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত। কিন্তু কাজটা হবে কিভাবে? যুক্তির জোর না দেখিয়ে জোরের যুক্তি দিয়ে বিএনপি-জামায়াতকে কাবু করা গেলেও নতুন শক্তি হেফাজতে ইসলামকে কি সরানো যাবে মিষ্টি কথা বলে বা চোখ রাঙিয়ে। সরকার, মনে হয়, প্রয়োগ করতে চাইছে দুই অস্ত্রই। তাই একেক মন্ত্রীর মুখে শুনছি একেক রকম কথা।
যেমন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা, দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুব-উল-আলম হানিফ জানিয়েছেন, হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফার মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা, পাঠ্যপুস্তকের বিষয়সহ ৩-৪টি দাবি মেনে নেয়া হয়েছে এর মধ্যেই। এ ছাড়া আরও যে দু’-একটি যৌক্তিক দাবি রয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে সরকার ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ভেবে দেখা হচ্ছে। এসব দাবি নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে এবং চলমান সঙ্কটময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করছি আমি। তিনি বলেন, আলোচনার জন্য সরকার ও আওয়ামী লীগ প্রস্তুত। তবে নারী নীতি সহ আর যে সব দাবি তাঁরা তুলেছেন, সেগুলো আসলেই মধ্যযুগীয় দাবি। এটা তাঁরাও বুঝতে পারবেন। আর আলোচনা হলেও হেফাজতের নারী স্বাধীনতা, শিক্ষানীতি, ভাস্কর্য এসব বিষয়ে সমঝোতার কোনও সম্ভাবনা নেই।
তবে সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেছেন, ইসলামের হেফাজতের নামে তাঁরা যতই গর্জন করুক ততটা বর্ষণ হবে না। মাওলানা সাহেবদের সম্মান দেখাতে গিয়ে ‘হুজুর’ সম্বোধন করায় তাঁরা পেয়ে বসেছেন। তাঁরা ভেবেছেন হুঙ্কার দিলেই সরকার তাঁদের কাছে যাবে। কিন্তু না, ৩০শে এপ্রিলের মধ্যে তাঁরা দাবি বাস্তবায়নের হুমকি দিলেও এর আগেই তাঁদের আন্দোলনে ভাটা পড়ে যাবে। এ কারণেই সরকার বা আওয়ামী লীগ এটা নিয়ে চিন্তিত নয়। তবে এ সংগঠনটির কর্মকাণ্ডে সরকার গভীরভাবে নজরদারি করছে, তাঁদের গতিবিধি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে। তিনি বলেন, হেফাজতের ১৩ দফা দাবি জামায়াত বা বিএনপিও বাস্তবায়ন করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের তো প্রশ্নই ওঠে না। এমন কি তাঁরা নিজেরাও বাস্তবায়ন করতে পারবেন না। আমাদের জোটের ১৪ দলের আন্দোলন কর্মসূচি আরও বেগবান করার মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামসহ জামায়াত-বিএনপির যে কোনও আন্দোলন প্রতিহত করা হবে। কোনও পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নয়।
তাহলে আলোচনা বা সংলাপ না চললে কি জোরের যুক্তিই চলতে থাকবে এমন অব্যাহত ভাবে? ইরানের শাহ, পাকিস্তানের জুলফিকার ভুট্টো, আফগানিস্তানের মসকোপন্থি শাসকেরা, মিশরের হোসনি মোবারক যে ভুল করেছিলেন, যে পথে চলেছিলেন তার পরিণতি কি হয়েছে তা সকলেরই জানা। অমন বিপদের আশঙ্কা এখন করছেন অনেকেই।
No comments