সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ-ওবামার মিয়ানমার সফর এবং ঢাকার পূর্বমুখী কূটনীতির চ্যালেঞ্জ by হুমায়ুন কবির
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আমাদের নিকট প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার সফর করে গেলেন মধ্য নভেম্বরে। আমাদের এত কাছে তিনি এসে গেলেন, অথচ ঢাকায় কেন পা ফেললেন না_ এমন প্রশ্ন কেউ তুলতে পারেন। কেউ বাংলাদেশের কূটনৈতিক দক্ষতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারেন।
তবে এটা মনে রাখতে হবে যে, সামরিক ও অর্থনৈতিক বিচারে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটির প্রচণ্ড ক্ষমতাবান ব্যক্তির এ সফর ছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংস্থা আসিয়ানের নমপেন শীর্ষ বৈঠককে কেন্দ্র করে। দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার প্রভৃতি দেশের এ সংস্থা এখন শক্তিশালী অর্থনৈতিক জোট হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এটা রেওয়াজ যে তারা তাদের সম্মেলনে পালাক্রমে কোনো না কোনো পার্টনার দেশের প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রীকে বক্তব্য রাখা ও সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানায়। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও জাপান, ভারত, চীন প্রভৃতি দেশের নেতারা বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এটা তাদের চতুর্থ সংলাপ। বারাক ওবামার মিয়ানমার সফরসূচি নমপেন বৈঠকের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চূড়ান্ত হয়েছিল।দ্বিতীয়ত যে বিষয়টি মনে রাখতে হবে যে, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে মনোযোগ। গত বছর অস্ট্রেলিয়া সফরকালে ওবামা এ অঞ্চলে তাদের স্বার্থের প্রসঙ্গ টেনে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিজেও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ। তাদের নিরাপত্তার সঙ্গেও জড়িয়ে আছে এ অঞ্চল। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় তাদের সরাসরি সামরিক উপস্থিতি রয়েছে এবং তা থেকে সরে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই বলেই তিনি নিশ্চিত করতে চেয়েছেন।
চীন ও ভারত এবং আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো যে বিশ্বে নতুন অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, বারাক ওবামা সেটাও বিবেচনায় রেখেছেন। এসব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র বিশেষভাবে আগ্রহী। বিশেষ করে তার আগ্রহ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য রফতানি বাড়ানো। কারণ এতে স্বদেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে এবং তার সরাসরি প্রভাব পড়বে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে। বেকারত্ব যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান সমস্যা। এটাই ছিল তার পুনর্নির্বাচনের পথে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক। যুক্তরাষ্ট্রে এখন রেকর্ডসংখ্যক বেকার এবং অতীতে এ ধরনের সমস্যা নিয়ে কোনো প্রেসিডেন্ট পুনর্নির্বাচিত হতে পারেননি। উদীয়মান এশীয় বাজারের সুবিধাকে ঘিরে তার রয়েছে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। ২০১০ সালে ভারত সফরকালে কয়েকটি অর্থনৈতিক চুক্তি সম্পাদনের পর তিনি বলেছিলেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন ৫৪ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারায় যুক্তরাষ্ট্রকে সংশ্লিষ্ট করায় তার আগ্রহের প্রধান লক্ষ্য অবশ্যই স্বদেশের বৃহত্তর স্বার্থ। এটাও মনে রাখতে হবে, অনেক বিশ্লেষকই চীনের সামরিক-অর্থনৈতিক ক্রমবর্ধমান ক্ষমতাকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি হিসেবে গণ্য করছেন। এর মোকাবেলায় তারা সামরিক উপস্থিতির পাশাপাশি রিব্যালান্সিংয়ের কথাও বলছেন। তারা অসামরিক বন্ধু খুঁজতে শুরু করেছে। ভারত এর তালিকায় রয়েছে। সত্তরের দশকে ভিয়েতনামে তারা সামরিকভাবে পরাজিত হয়েছিল। কিন্তু এ তিক্ত অতীত ভুলে গিয়ে এখন অর্থনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করায় তারা মনোযোগী। বাংলাদেশও তাদের নজরে রয়েছে। মিয়ানমার এবং কম্বোডিয়াও তাদের নতুন মিত্রের তালিকায়। বিশেষ করে তারা গণতান্ত্রিক ধারায় চলতে থাকা দেশগুলোর প্রতি নজর রাখছে। এসব দেশ যেন চীনের প্রভাব বলয়ে চলে না যায় সেটা নিশ্চিতকরণে নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছেন বারাক ওবামা এবং তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন।
মিয়ানমার চীনের সংলগ্ন দেশ। সামরিক শাসনের কারণে বহু বছর তারা বাকি বিশ্ব থেকে একরকম বিচ্ছিন্ন ছিল। যুক্তরাষ্ট্র তাদের ওপর আরোপ করে রেখেছিল অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু এই কঠিন সময়ে চীন ছিল তাদের পাশে। তারা গণতন্ত্রের পথ পরিহার করে চলতে থাকে। জনগণের অভাব-কষ্ট এবং অর্থনৈতিক বিভিন্ন সমস্যাকেও তারা আমলে নেয়নি। দুই দশক আগে সাধারণ নির্বাচনে অং সান সু চির দল জয়ী হয়েছিল। কিন্তু তার হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর তো করা হয়নি, উপরন্তু তাকে এই দীর্ঘ সময়ে কাটাতে হয়েছে বন্দির জীবন। এখন মিয়ানমারের পরিস্থিতিতে পরিবর্তন এসেছে। সু চি এখন মুক্ত। পার্লামেন্টের অনেক আসনের উপনির্বাচনে তার দল বিপুলভাবে জয়ী হয়েছে এবং এর ফল সামরিক জান্তা মেনে নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এই পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগ নিতে যে কতটা তৎপর তার প্রমাণ প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর। বারাক ওবামা স্পষ্টতই বলেছেন, মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া জোরদারে তার দেশের বিপুল আগ্রহ রয়েছে এবং এতে তার দেশ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে। সামরিক সরকার কিংবা তাদের প্রভাবাধীন কোনো দল নয় বরং অং সান সু চি এবং তার দলের হাতেই যে মিয়ানমারের ভবিষ্যৎ, সেটাও তিনি আকারে-ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন। মিয়ানমারের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিধিনিষেধও ক্রমে উঠে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের প্রধান সমস্যা হয়ে উঠেছে রোহিঙ্গা। ওবামা তার সফরকালে ইয়াঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদত্ত ভাষণে এই জনগোষ্ঠীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে মূল সমাজে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রাখাইন রাজ্যের মুসলমানদের ওপর অত্যাচার চালানোর কোনো অজুহাত থাকতে পারে না। শুধু রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চলে নয়, আরও কয়েকটি এলাকায় চলছে সংঘাত। ওবামা সবাইকে নিয়ে এগিয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন মিয়ানমারের শাসকদের।
রোহিঙ্গা সমস্যার কারণে বাংলাদেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। মিয়ানমারের শাসকদের নিপীড়নের শিকার হয়ে তারা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফলে অর্থনৈতিক চাপ পড়ছে আমাদের ওপর। সামাজিক ও নিরাপত্তা সমস্যাও সৃষ্টি হচ্ছে। মানবিক সমস্যাও কম নয়। অত্যাচারিত রোহিঙ্গা নারী-শিশুরা নদী-সমুদ্রে ভেসে বেড়াচ্ছে_ এরকম দৃশ্য বিশ্বের গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে এবং তাদের আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানানোর জন্য বাংলাদেশকেও অনেকের সমালোচনা সহ্য করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ নতুন করে কোনো শরণার্থী গ্রহণ করতে চাইছে না এবং আমাদের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় সরকারের এ অবস্থান সঠিক বলেই জনগণ মনে করে। বারাক ওবামা মিয়ানমারের সব নাগরিককে সমান দৃষ্টিতে দেখার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তার এ অবস্থান বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমার সফরে গিয়েছিলেন। ফিরতি সফরে আসার কথা ছিল সে দেশের প্রেসিডেন্টের। ইতিমধ্যে তাদের সঙ্গে সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত মামলায় আন্তর্জাতিক আদালতে বাংলাদেশের জয় হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নবলব্ধ সমুদ্র এলাকা বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে, সেটা স্বীকৃত। তবে সমুদ্র সম্পদ যথাযথ কাজে লাগাতে হলে মিয়ানমারের সঙ্গেও সহযোগিতার সম্পর্ক দরকার। তা ছাড়া দুই দেশের বাণিজ্যিক ও অন্যান্য সম্পর্ক বাড়ানোরও ভালো সুযোগ রয়েছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জন্য পূর্বমুখী কূটনীতির যে নয়াদিগন্ত খুলে দিতে তৎপর হয়েছেন, তার সফলতার জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করা অপরিহার্য শর্ত। এ জন্য তাদের সঙ্গে খোলামনে আলোচনায় বসা চাই। এ ক্ষেত্রে প্রধান বাধা অবশ্যই রোহিঙ্গা সমস্যা। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক অবস্থান কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ নতুন করে কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে। ইতিমধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকাস্থ মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে সে দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের অবস্থান আমাদের জন্য অস্বস্তিকর। শুধু সামরিক বাহিনীর প্রভাবাধীন সরকার নয়, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী অং সান সু চি এ বিষয়ে যেসব বক্তব্য রাখছেন তাতে বিভ্রান্তি বাড়ছে। সম্প্রতি দিলি্ল সফরকালে তিনি এ বিষয়ে যে অভিমত দিয়েছেন তাতে মনে হয়, ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি রোহিঙ্গা তাস খেলতে চাইছেন। জাতিগত বিরোধ অবসানের লক্ষ্যে ইতিবাচক কোনো ভূমিকা তার তরফে না আসা দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বিশ্বসমাজে সমাদৃত নেত্রী এবং নোবেল পুরস্কার বিজয়ী। স্বদেশের জনগণের একটি বড় অংশ তার প্রতি আস্থা পোষণ করে। রোহিঙ্গা ইস্যুকে তিনি নির্বাচনী রাজনীতির হাতিয়ার করবেন না এবং যুগ যুগ ধরে এই অত্যাচারিত জনগোষ্ঠী কোনোভাবেই যেন বলির পাঁঠা না হয়, এটাই আমরা প্রত্যাশা করব। তিনি অবস্থানে পরিবর্তন আনবেন সেটা চাইব আমরা। এ জন্য তার সঙ্গে সরাসরি উচ্চপর্যায়ের আলোচনা দরকার। একই সঙ্গে 'ট্র্যাক-টু' কূটনীতির ওপরও জোর দিতে হবে। ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার, সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি দলের সফর বিনিময় এবং সিভিল সোসাইটির সদস্যদের যোগাযোগ বাড়ানো ও মতবিনিময় গুরুত্বপূর্ণ। আসিয়ান দেশগুলোর নেতাদের মধ্যেও বাংলাদেশের একাধিক ঘনিষ্ঠ বন্ধু রয়েছেন। তাদেরও মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য কাজে লাগানো যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার কথা আমি বলতে চাই। এ দুটি দেশ রোহিঙ্গা সমস্যার সঙ্গেও কিছুটা জড়িত হয়ে পড়েছে। ইসলামী সম্মেলন সংস্থাকেও কাজে লাগানোর কথা ভাবা যেতে পারে। সৌদি আরবের শ্রমবাজারে রোহিঙ্গারা সমস্যা সৃষ্টি করছে এবং তার প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের ওপরও। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্রও এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। ওবামা মিয়ানমার সফরকালে রোহিঙ্গা ইস্যুতে যে বক্তব্য রেখেছেন তা বাংলাদেশের অবস্থান ভালোভাবে তুলে ধরায় সহায়ক হবে বলে আমি মনে করি।
মিয়ানমার জ্বালানি সম্পদে সমৃদ্ধ। তাদের প্রাকৃতিক গ্যাস বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে এবং বাংলাদেশ এর গন্তব্য হতে পারে। চীন এবং ভারতও এ সম্পদ পেতে আগ্রহী প্রতিবেশী ওই দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে গিয়ে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের এ বিষয়টি গভীর বিবেচনায় রাখতে হবে। সে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি জটিল পথ ধরে অগ্রসর হচ্ছে। তারা গণতন্ত্রের পথে চলেছে। বিশ্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইছে। বাংলাদেশও তাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী। কিন্তু প্রধান সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের মূল যে সমস্যা সেটাকে জড়িয়ে ফেলা হচ্ছে নির্বাচনী রাজনীতির সঙ্গে। আবার এ সমস্যার করণে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নানাবিধ জটিলতা তৈরি হয়েছে এবং কখনও কখনও তা গুরুতর সমস্যারও সৃষ্টি করে। রামুর সাম্প্রতিক সহিংসতার সঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের একটি অংশ জড়িত ছিল বলে অভিযোগ এসেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশকে সাবধানে পা ফেলতে হবে; কিন্তু একই সঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে, পথ যত কণ্টকাকীর্ণই হোক_ কোনোভাবেই থেমে থাকা চলবে না।
হুমায়ুন কবির :যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত
No comments