আত্মহত্যা নয় প্রতিবাদী হও by সাবিকুন্নাহার চাঁদনী
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানার এক বখাটের জ্বালাতনে নিষ্পাপ রিমিকে জীবন দিতে হলো। নারী নির্যাতন বন্ধের জন্য রাষ্ট্র অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে, কিন্তু তাতে করে নির্যাতন কি কমছে? না কমে থাকলে তার কারণ কী? শুধু কঠোর আইন করেই সমাজের এ ব্যাধিগুলো দূরীভূত করা যাবে?
নারী নির্যাতনের প্রতিকার এবং সুফল পেতে হলে নিতে হবে দীর্ঘমেয়াদি কর্মকৌশল। খুঁজে বের করতে হবে বখাটেপনার উৎস। তার জন্য প্রয়োজন নৈতিকতা এবং আদর্শমূলক শিক্ষা ব্যবস্থা। বখাটেদের রুখে দাঁড়াতে হবে ঘর থেকে। বিদ্যাপীঠগুলোতে পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী বসাতে হবে। সোনারগাঁয় যে রিমি আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হলো তার জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু বখাটেকে শাস্তি দিলেই চলবে না। তার পরিবারকেও আইনের আওতায় আনতে হবে বখাটে ছেলেকে কেন সামলাতে পারল না।আমরা অনেক মেধাবী মুখ হারিয়েছি বখাটেদের কারণে। পঞ্চম শ্রেণীর সেই ছোট্ট মেয়ে তিষা পর্যন্ত রেহাই পায়নি। সিমিনকে আমরা হারিয়েছি বখাটেদের জন্য। রাষ্ট্রের তাহলে দায়িত্ব কী? পুলিশ কেন তাহলে বখাটেদের রুখতে পারল না? বখাটেদের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তারা নেশা করে প্রথমে নিজের পরিবারকে জ্বালায়। তারপর বাইরে এসে চুরি-ছিনতাই করে। তাদের নেশার টাকার জোগান দিতে যে কোনো অঘটন ঘটাতে তারা কুণ্ঠাবোধ করে না। তাদের দরকার শুধু নেশা কেনার জন্য টাকা। পুলিশের পক্ষে কি মাদক বিক্রি রোধ করা কোনো কষ্টসাধ্য ব্যাপার! কেন তাহলে তারা তা রোধ করে না! রিমি-সিমিনরা মারা গেলে মাঝে মধ্যে পুলিশকে কিছু ভোগান্তি পোহাতে হয়, তাদের কিছু কৈফিয়ত দিতে হয়। এটাই শুধু তাদের একটু ঝামেলা। সমাজের বখাটে এবং আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি ভালো রাখতে হলে মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। মাদক কারা বিক্রি করে তা পুলিশের না জানার কথা নয়। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মাদকের বিরুদ্ধে কিছু ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে করে সোনারগাঁ থানার অবস্থা এতটা খারাপ কী করে হলো সেটা তাকে আরও বিশদভাবে ভেবে দেখতে হবে। কেন আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি ভালো করতে পারল না তার জবাব দিতে সংশিল্গষ্ট থানাকে নির্দেশ দিতে হবে। আমরা সমাজের আর কোনো মেধাবী মুখ হারাতে চাই না। রিমি আত্মহত্যা করার পেছনে যাদের হাত রয়েছে তারা যাতে করে আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে পার পেতে না পারে সেটাই দেশবাসী দেখতে চায়।
য়দক্ষিণ চরমশুরা, রমজানবেগ, মুন্সীগঞ্জ
No comments