ক্রীড়াপল্লীতে খেলোয়াড় বিদ্রোহ
নারকেল আর কাঁঠালগাছের ছায়াঢাকা মিরপুর ক্রীড়াপল্লী কাল বৃষ্টিভেজা দিনেও ছিল বেশ উত্তপ্ত। গেটের সামনেই ফার্নিচারের অনেকগুলো দোকান। দোকানের সামনে অবস্থান নিয়েছেন হ্যান্ডবলের আমজাদ, ভলিবলের শাজাহান, কারাতের শামীম ওসমান, উশুর সুমনসহ প্রায় সব খেলোয়াড়। ওই সময় তাঁদের থাকার কথা ছিল মিরপুর শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামের অনুশীলনে। কিন্তু দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় তাঁরা ক্রীড়াপল্লীর প্রশাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান ধর্মঘটে গেছেন। অবরুদ্ধ করে রাখেন কর্মকর্তাদের। একপর্যায়ে পল্লীর গেটেও তালা ঝুলিয়ে দেন কোনো এক খেলোয়াড়।
সাংবাদিক পরিচয় দিতেই অভিযোগের মিছিল। কেউ বলছেন খাবারের মান ভালো না, পরিমাণও কম। কেউ বলছেন আবাসন সমস্যার কথা, কেউ বলছেন, শাওয়ার নষ্ট, পানি নেই, গোসল করতে পারছেন না ঠিকমতো। জন্ডিস আর ফ্লুতেও নাকি ভুগছেন অনেকে। সব অভিযোগ মিলে যেটা দাঁড়াচ্ছে—এস এ গেমসের ক্যাম্পে ভালো নেই খেলোয়াড়েরা।
মিরপুর ক্রীড়াপল্লীতে আবাসিক ক্যাম্পে রয়েছেন পাঁচটি ফেডারেশনের (বাস্কেটবল, ভলিবল, হ্যান্ডবল, কারাতে ও উশু) খেলোয়াড়েরা। হ্যান্ডবলে ২৪ জন, কারাতেতে ২৫ জন, উশুতে ২০ জন, বাস্কেটবলে ৮ জন এবং ভলিবলের ২০ জন খেলোয়াড় গত ৩ জানুয়ারি থেকে এই পল্লীতে অনুশীলন করছেন।
খেলোয়াড়দের মূল দাবি, তাঁদের আবাসন ব্যবস্থা ঠিক করে দিতে হবে। হ্যান্ডবলের মাহবুব হোসেন বললেন, ‘একটা রুমে সাত-আটজন গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। অনেকেই ফ্লোরিং করছে। এখন যেভাবে থাকি সেটা আসলেই অমানবিক। গোয়ালঘরের মতো অবস্থা। বৃষ্টি হলেই ওপর থেকে অঝোরে পানি পড়ে সিঁড়িতে। এভাবে চললে এস এ গেমসে ভালো ফল আসবে কীভাবে?’ পানি সমস্যা নিয়ে উশুর রাকিব বললেন, ‘ক্রীড়াপল্লীর পানির ব্যবস্থা এতটাই অপর্যাপ্ত যে প্রতিদিন অনুশীলন শেষে কেউই ঠিকমতো গোসল করতে পারে না। সেখানে যেসব নির্মাণশ্রমিক কাজ করছে তাদের সঙ্গে ভবনের বাইরের নোংরা পানি দিয়ে গোসল করতে হয় আমাদের।’
খাবারের মান নিয়েও ক্ষোভের শেষ নেই। হোস্টেল সুপার কাজী আরিফ আহমেদকে চাপ দিলে খাবারের মানের একটু উন্নতি হয়, আবার কয়েক দিন পর তথৈবচ। এমনিতেই খেলোয়াড় অনুপাতে টয়লেটগুলোর সংখ্যা খুব কম। প্রতি ফ্লোরে থাকা ৩০-৩৫ জন খেলোয়াড়ের জন্য মাত্র চার-পাঁচটি টয়লেট। সেগুলো এত দুর্গন্ধময় আর নোংরা যে সেখানে স্বচ্ছন্দে বসে টয়লেট করাও দুষ্কর। সম্প্রতি টয়লেটের ময়লা ভেসে ওঠায় গোটা পরিবেশই অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ খেলোয়াড়দের।
দুই সপ্তাহ আগে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার গিয়েছিলেন ক্রীড়াপল্লী পরিদর্শনে। তিনি নিজেও নাকি এসব অব্যবস্থাপনা দেখে অসন্তুষ্ট। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি মিজানুর রহমান মানু বলছেন, ‘আমরা নিজেরাও কয়েক দিন আগে দেখে এসেছি। ক্রীড়াপল্লীর খেলোয়াড়েরা মানবেতর জীবনযাপন করছে, এটা সত্যি। এখন যে সমস্যা দেখা দিয়েছে সেগুলো দেখার বিষয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি)। আর আবাসনের সমস্যা আছে, এ জন্য বাধ্য হয়েই বেশি বেশি খেলোয়াড়কে এক কক্ষে রাখতে হচ্ছে।’
প্রায় একই কথা বললেন বিওএ মহাসচিব কুতুবউদ্দিন আহমেদও, ‘আসলে সবকিছু দেখার দায়িত্ব আমাদের নয়। এ ছাড়া সব সমস্যা সমাধানের ক্ষমতাও আমাদের হাতে নেই। আর খাবার-দাবারের বিষয়টা দেখে ফেডারেশন। তবে এটা নিয়ে আমরা আলোচনায় বসেছি।’
জানা গেছে, কাল খেলোয়াড়দের বিদ্রোহের পর এনএসসির পরিকল্পনা বিভাগ থেকে বিওএ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করা হয়, বিষয়টা যেন তাঁরা একটু দেখেন। কিন্তু বিওএ কর্মকর্তারা জানান, তাঁদের পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। এনএসসিকেই যা করার করতে হবে। এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এনএসসির পরিকল্পনা বিভাগকে বললে তারা তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজটা হয় না। হলেও অনেক দেরিতে।’
এনএসসির সচিব শফিক আনোয়ারের কথা, ‘আমি ঘটনাটি শুনেছি। আসলে খেলোয়াড়েরা কাউকে অবরুদ্ধ করে রাখেনি। কয়েক ঘণ্টা বাগিবতণ্ডা করেছে মাত্র। আর যেসব সমস্যার কথা শুনলাম এগুলো সময়মতো আমাদের জানানো হয়নি। আশা করি, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই সব সমস্যার সমাধান করা হবে।
সাংবাদিক পরিচয় দিতেই অভিযোগের মিছিল। কেউ বলছেন খাবারের মান ভালো না, পরিমাণও কম। কেউ বলছেন আবাসন সমস্যার কথা, কেউ বলছেন, শাওয়ার নষ্ট, পানি নেই, গোসল করতে পারছেন না ঠিকমতো। জন্ডিস আর ফ্লুতেও নাকি ভুগছেন অনেকে। সব অভিযোগ মিলে যেটা দাঁড়াচ্ছে—এস এ গেমসের ক্যাম্পে ভালো নেই খেলোয়াড়েরা।
মিরপুর ক্রীড়াপল্লীতে আবাসিক ক্যাম্পে রয়েছেন পাঁচটি ফেডারেশনের (বাস্কেটবল, ভলিবল, হ্যান্ডবল, কারাতে ও উশু) খেলোয়াড়েরা। হ্যান্ডবলে ২৪ জন, কারাতেতে ২৫ জন, উশুতে ২০ জন, বাস্কেটবলে ৮ জন এবং ভলিবলের ২০ জন খেলোয়াড় গত ৩ জানুয়ারি থেকে এই পল্লীতে অনুশীলন করছেন।
খেলোয়াড়দের মূল দাবি, তাঁদের আবাসন ব্যবস্থা ঠিক করে দিতে হবে। হ্যান্ডবলের মাহবুব হোসেন বললেন, ‘একটা রুমে সাত-আটজন গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। অনেকেই ফ্লোরিং করছে। এখন যেভাবে থাকি সেটা আসলেই অমানবিক। গোয়ালঘরের মতো অবস্থা। বৃষ্টি হলেই ওপর থেকে অঝোরে পানি পড়ে সিঁড়িতে। এভাবে চললে এস এ গেমসে ভালো ফল আসবে কীভাবে?’ পানি সমস্যা নিয়ে উশুর রাকিব বললেন, ‘ক্রীড়াপল্লীর পানির ব্যবস্থা এতটাই অপর্যাপ্ত যে প্রতিদিন অনুশীলন শেষে কেউই ঠিকমতো গোসল করতে পারে না। সেখানে যেসব নির্মাণশ্রমিক কাজ করছে তাদের সঙ্গে ভবনের বাইরের নোংরা পানি দিয়ে গোসল করতে হয় আমাদের।’
খাবারের মান নিয়েও ক্ষোভের শেষ নেই। হোস্টেল সুপার কাজী আরিফ আহমেদকে চাপ দিলে খাবারের মানের একটু উন্নতি হয়, আবার কয়েক দিন পর তথৈবচ। এমনিতেই খেলোয়াড় অনুপাতে টয়লেটগুলোর সংখ্যা খুব কম। প্রতি ফ্লোরে থাকা ৩০-৩৫ জন খেলোয়াড়ের জন্য মাত্র চার-পাঁচটি টয়লেট। সেগুলো এত দুর্গন্ধময় আর নোংরা যে সেখানে স্বচ্ছন্দে বসে টয়লেট করাও দুষ্কর। সম্প্রতি টয়লেটের ময়লা ভেসে ওঠায় গোটা পরিবেশই অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ খেলোয়াড়দের।
দুই সপ্তাহ আগে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার গিয়েছিলেন ক্রীড়াপল্লী পরিদর্শনে। তিনি নিজেও নাকি এসব অব্যবস্থাপনা দেখে অসন্তুষ্ট। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি মিজানুর রহমান মানু বলছেন, ‘আমরা নিজেরাও কয়েক দিন আগে দেখে এসেছি। ক্রীড়াপল্লীর খেলোয়াড়েরা মানবেতর জীবনযাপন করছে, এটা সত্যি। এখন যে সমস্যা দেখা দিয়েছে সেগুলো দেখার বিষয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি)। আর আবাসনের সমস্যা আছে, এ জন্য বাধ্য হয়েই বেশি বেশি খেলোয়াড়কে এক কক্ষে রাখতে হচ্ছে।’
প্রায় একই কথা বললেন বিওএ মহাসচিব কুতুবউদ্দিন আহমেদও, ‘আসলে সবকিছু দেখার দায়িত্ব আমাদের নয়। এ ছাড়া সব সমস্যা সমাধানের ক্ষমতাও আমাদের হাতে নেই। আর খাবার-দাবারের বিষয়টা দেখে ফেডারেশন। তবে এটা নিয়ে আমরা আলোচনায় বসেছি।’
জানা গেছে, কাল খেলোয়াড়দের বিদ্রোহের পর এনএসসির পরিকল্পনা বিভাগ থেকে বিওএ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করা হয়, বিষয়টা যেন তাঁরা একটু দেখেন। কিন্তু বিওএ কর্মকর্তারা জানান, তাঁদের পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। এনএসসিকেই যা করার করতে হবে। এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এনএসসির পরিকল্পনা বিভাগকে বললে তারা তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজটা হয় না। হলেও অনেক দেরিতে।’
এনএসসির সচিব শফিক আনোয়ারের কথা, ‘আমি ঘটনাটি শুনেছি। আসলে খেলোয়াড়েরা কাউকে অবরুদ্ধ করে রাখেনি। কয়েক ঘণ্টা বাগিবতণ্ডা করেছে মাত্র। আর যেসব সমস্যার কথা শুনলাম এগুলো সময়মতো আমাদের জানানো হয়নি। আশা করি, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই সব সমস্যার সমাধান করা হবে।
No comments