উন্নয়নের স্বার্থে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ জরুরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পি জে আবদুল কালাম
টেকসই
উন্নয়নের জন্য আগে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পনা ঠিক
করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রধান লক্ষ্য হতে হবে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠন। কারণ,
আগে ক্ষমতার উত্স হিসেবে প্রাকৃতিক সম্পদকে বিবেচনা করা হলেও এখন বিবেচিত
হচ্ছে জ্ঞান।
গতকাল সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম বিশেষ বক্তৃতায় এ কথা বলেন। ৩৫ মিনিটব্যাপী বক্তৃতায় তিনি উন্নয়নের সঙ্গে জ্ঞান ও প্রযুক্তির সম্পর্ক এবং এর বাস্তবতা নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন।
আবদুল কালামের আগমন উপলক্ষে সিনেট ভবনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। গতকাল বিকেল চারটা ১০ মিনিটে তিনি ক্যাম্পাসে এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা হর্ষধ্বনির মাধ্যমে তাঁকে স্বাগত জানান। শিক্ষার্থীরা পাশের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ব্যালকনি ও ছাদে ভিড় করেন।
পাওয়ার পয়েন্টে উত্থাপিত বক্তব্যে আবদুল কালাম বলেন, আগে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতিকে প্রাধান্য দেওয়া হতো, আর আজ জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি বিশ্বব্যাপী প্রাধান্য পাচ্ছে। আগে শেয়ারহোল্ডাররা প্রাধান্য পেতেন আর আজ প্রাধান্য পাচ্ছেন ভোক্তারা। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, গতকাল যা কাজ করত, আজ তা কাজ করছে না। তাই উন্নয়ন চাইলে নিত্যনতুন উদ্ভাবন আর আবিষ্কারের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, যোগ্যতা নির্ধারণ করতে হবে সৃষ্টিশীলতা দিয়ে, জ্যেষ্ঠতা দিয়ে নয়।
তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য দরকার খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, তথ্য ও কম্পিউটার-প্রযুক্তির প্রসার, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের উন্নয়ন। তিনি ভারতের ‘ভিশন ২০২০’ সম্পর্কে বলেন, এ সময়ের মধ্যে দারিদ্র্য এবং শহর ও গ্রামের মানুষদের মধ্যে দূরত্ব কমানো, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য কমানো, আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে ভারত এগিয়ে যাচ্ছে।
আবদুল কালাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞানের উত্সকেন্দ্র। জ্ঞানচর্চা ও নতুন জ্ঞান সৃষ্টির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কেই নেতৃত্ব দিতে হবে। কারণ, এ প্রতিষ্ঠানটি অনুসন্ধিত্সু দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করবে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। এতে করে নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি যেমন হবে, তেমনি শিক্ষকেরা নিজেদের অর্জিত জ্ঞান শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারবেন। ফলে জ্ঞান আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে মান বাড়বে।
প্রশ্নোত্তরপর্বে বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তা ও নদী-নির্ভরতার প্রশ্নে তিনি বলেন, আন্তদেশীয় নদী-ব্যবস্থাপনায় কিছু সমস্যা আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকাসহ বিশ্বজুড়েই রয়েছে। এ ধরনের মোট নয়টি নদী বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এ ক্ষেত্রে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে দরকার যোগ্য নেতৃত্ব, নতুন ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বিদ্যমান সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। জ্বালানি নিরাপত্তার প্রশ্নে তিনি বলেন, বাংলাদেশের উচিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তি অর্জনের দিকে এগিয়ে যাওয়া।
স্বাগত ভাষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, সফল বিজ্ঞানী এবং রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালামের আগমনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গর্বিত। তিনি রাষ্ট্রপতি থাকাকালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের অনেক উন্নয়ন ঘটেছে। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ।
ইউআইটিএসের সমাবর্তন বক্তা: একবিংশ শতাব্দীর উন্নয়নের ভিত গড়তে শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিনিময়ের স্বার্থে বিভিন্ন দেশের মধ্যে ‘সীমান্তহীন’ সম্পর্ক গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন আবদুল কালাম। তিনি বলেন, একবিংশ শতাব্দীর শিক্ষা অবশ্যই ‘সীমান্তহীন’ হওয়া উচিত। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যৌথভাবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) কমপ্লেক্স স্থাপনের পরামর্শ দেন তিনি।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সের (ইউআইটিএস) প্রথম সমাবর্তন বক্তা হিসেবে তিনি এ কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
বাসস জানায়, আবদুল কালামকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমেই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিরাজমান সমস্যাগুলোর সমাধান সম্ভব।
আবদুল কালাম তাঁর বক্তৃতায় যোগাযোগ ও কৃষি খাতে আঞ্চলিক সম্পর্ক গড়ে তোলার পরামর্শ দেন। তিনি কৃষি খাতে বেশি বেশি গবেষণার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন। পাশাপাশি জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে সৌরশক্তির মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি।
সমাবর্তনে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা অধ্যাপক গওহর রিজভী, ইউআইটিএসের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান চৌধুরী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ বক্তৃতা করেন।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে: আবদুল কালাম গতকাল গিয়েছিলেন রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। তিনি কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। উপমহাদেশের এ জ্ঞানী ও গুণী ব্যক্তিত্বকে কলেজ চত্বরে অভ্যর্থনা জানানো হয়।
গতকাল সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম বিশেষ বক্তৃতায় এ কথা বলেন। ৩৫ মিনিটব্যাপী বক্তৃতায় তিনি উন্নয়নের সঙ্গে জ্ঞান ও প্রযুক্তির সম্পর্ক এবং এর বাস্তবতা নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন।
আবদুল কালামের আগমন উপলক্ষে সিনেট ভবনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। গতকাল বিকেল চারটা ১০ মিনিটে তিনি ক্যাম্পাসে এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা হর্ষধ্বনির মাধ্যমে তাঁকে স্বাগত জানান। শিক্ষার্থীরা পাশের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ব্যালকনি ও ছাদে ভিড় করেন।
পাওয়ার পয়েন্টে উত্থাপিত বক্তব্যে আবদুল কালাম বলেন, আগে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতিকে প্রাধান্য দেওয়া হতো, আর আজ জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি বিশ্বব্যাপী প্রাধান্য পাচ্ছে। আগে শেয়ারহোল্ডাররা প্রাধান্য পেতেন আর আজ প্রাধান্য পাচ্ছেন ভোক্তারা। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, গতকাল যা কাজ করত, আজ তা কাজ করছে না। তাই উন্নয়ন চাইলে নিত্যনতুন উদ্ভাবন আর আবিষ্কারের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, যোগ্যতা নির্ধারণ করতে হবে সৃষ্টিশীলতা দিয়ে, জ্যেষ্ঠতা দিয়ে নয়।
তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য দরকার খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, তথ্য ও কম্পিউটার-প্রযুক্তির প্রসার, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের উন্নয়ন। তিনি ভারতের ‘ভিশন ২০২০’ সম্পর্কে বলেন, এ সময়ের মধ্যে দারিদ্র্য এবং শহর ও গ্রামের মানুষদের মধ্যে দূরত্ব কমানো, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য কমানো, আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে ভারত এগিয়ে যাচ্ছে।
আবদুল কালাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞানের উত্সকেন্দ্র। জ্ঞানচর্চা ও নতুন জ্ঞান সৃষ্টির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কেই নেতৃত্ব দিতে হবে। কারণ, এ প্রতিষ্ঠানটি অনুসন্ধিত্সু দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করবে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। এতে করে নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি যেমন হবে, তেমনি শিক্ষকেরা নিজেদের অর্জিত জ্ঞান শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারবেন। ফলে জ্ঞান আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে মান বাড়বে।
প্রশ্নোত্তরপর্বে বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তা ও নদী-নির্ভরতার প্রশ্নে তিনি বলেন, আন্তদেশীয় নদী-ব্যবস্থাপনায় কিছু সমস্যা আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকাসহ বিশ্বজুড়েই রয়েছে। এ ধরনের মোট নয়টি নদী বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এ ক্ষেত্রে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে দরকার যোগ্য নেতৃত্ব, নতুন ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বিদ্যমান সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। জ্বালানি নিরাপত্তার প্রশ্নে তিনি বলেন, বাংলাদেশের উচিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তি অর্জনের দিকে এগিয়ে যাওয়া।
স্বাগত ভাষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, সফল বিজ্ঞানী এবং রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালামের আগমনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গর্বিত। তিনি রাষ্ট্রপতি থাকাকালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের অনেক উন্নয়ন ঘটেছে। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ।
ইউআইটিএসের সমাবর্তন বক্তা: একবিংশ শতাব্দীর উন্নয়নের ভিত গড়তে শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিনিময়ের স্বার্থে বিভিন্ন দেশের মধ্যে ‘সীমান্তহীন’ সম্পর্ক গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন আবদুল কালাম। তিনি বলেন, একবিংশ শতাব্দীর শিক্ষা অবশ্যই ‘সীমান্তহীন’ হওয়া উচিত। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যৌথভাবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) কমপ্লেক্স স্থাপনের পরামর্শ দেন তিনি।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সের (ইউআইটিএস) প্রথম সমাবর্তন বক্তা হিসেবে তিনি এ কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
বাসস জানায়, আবদুল কালামকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমেই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিরাজমান সমস্যাগুলোর সমাধান সম্ভব।
আবদুল কালাম তাঁর বক্তৃতায় যোগাযোগ ও কৃষি খাতে আঞ্চলিক সম্পর্ক গড়ে তোলার পরামর্শ দেন। তিনি কৃষি খাতে বেশি বেশি গবেষণার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন। পাশাপাশি জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে সৌরশক্তির মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি।
সমাবর্তনে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা অধ্যাপক গওহর রিজভী, ইউআইটিএসের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান চৌধুরী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ বক্তৃতা করেন।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে: আবদুল কালাম গতকাল গিয়েছিলেন রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। তিনি কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। উপমহাদেশের এ জ্ঞানী ও গুণী ব্যক্তিত্বকে কলেজ চত্বরে অভ্যর্থনা জানানো হয়।
No comments